শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
কনৌজ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
কনৌজ বা কন্নৌজ (হিন্দি: कन्नौज, উর্দু: قنوج; পূর্বতন ইংরেজি বানান: Cannodge) হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কনৌজ জেলার একটি মহানগর, প্রশাসনিক প্রধান কার্যালয় ও একটি নগর পালিকা পরিষদ। এই শহরের নামটি ধ্রুপদি সংস্কৃত নাম কান্যকুব্জ (কুব্জা রমণীগণের নগরী) নামটির আধুনিক রূপ।[১] মিহির ভোজের রাজত্বকালে এই শহরটি মহোদয় নামেও পরিচিত ছিল। কনৌজ একটি প্রাচীন শহর। প্রাচীনকালে এটি হর্ষবর্ধনের সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। কথিত আছে, কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণদের আদি নিবাস ছিল কনৌজ। কনৌজ সুগন্ধী উৎপাদন এবং তামাক, সুগন্ধী ও গোলাপ জলের বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। হিন্দি ভাষার একটি স্বতন্ত্র উপভাষার নাম কনৌজি। এই উপভাষাটির দুটি মান রয়েছে।
Remove ads
কনৌজ ত্রিভূজ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
খ্রিস্টীয় ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে কনৌজ ছিল গুর্জর-প্রতিহার, পাল ও রাষ্ট্রকূট নামে পরিচিত তিনটি শক্তিশালী রাজবংশের মধ্যে সংঘর্ষের প্রধান কেন্দ্র। অনেক ইতিহাসবিদ তিন রাজবংশের মধ্যে এই সংঘর্ষকে ত্রিপাক্ষিক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[২][৩]

কনৌজকে কেন্দ্র করে তিনটি সাম্রাজ্যের মধ্যে ঘোরতর সংঘাত চলেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গুর্জর-প্রতিহারেরাই এই শহরটি নিজ অধিকারে রাখতে সক্ষম হয়।[২] গুর্জর-প্রতিহারেরা অবন্তী (উজ্জয়িনী-ভিত্তিক) থেকে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। তাদের রাজ্যসীমার দক্ষিণ দিকে ছিল রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্য এবং পূর্ব দিকে ছিল পাল সাম্রাজ্য। গুর্জর-প্রতিহার শাসক বৎসরাজার হাতে ইন্দ্রায়ুধের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সংঘাতের সূচনা ঘটে।[২] পাল সম্রাট ধর্মপালও কনৌজে নিয়ন্ত্রণ স্থাপনে আগ্রহী ছিলেন। এর ফলে বৎসরাজা ও ধর্মপালের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। যদিও ধর্মপাল এই যুদ্ধে পরাজিত হন।[৪] এই অস্থির অবস্থার সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রকূট শাসক ধ্রুব উত্তর দিকে ধাবিত হন। তিনি বৎসরাজাকে পরাজিত করে কনৌজ দখল করেন। উল্লেখ্য, দক্ষিণ ভারতীয় শাসকদের মধ্যে তিনিই ভারতের উত্তর দিকে সর্বাধিক অগ্রসর হতে পেরেছিলেন।[৩][৫]
ধ্রুব দক্ষিণ ভারতে ফিরে গেলে ধর্মপাল কিছুকাল কনৌজ নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। উত্তর ভারতের দুই রাজবংশের মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকে। পাল নিযুক্ত শাসক চক্রায়ুধকে প্রতিহার শাসক দ্বিতীয় নাগভট্ট পরাজিত করেন এবং কনৌজে পুনরায় গুর্জর-প্রতিহার আধিপত্য স্থাপিত হয়। ধর্মপাল কনৌজ দখল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুঙ্গেরের যুদ্ধে গুর্জর-প্রতিহার বাহিনীর হাতে বিশ্রীভাবে পরাজিত হন।[২] এর কিছুকাল পরেই যদিও দ্বিতীয় নাগভট্ট উত্তর ভারত-আক্রমণকারী রাষ্ট্রকূট শাসক তৃতীয় গোবিন্দের হাতে পরাজিত হন। একটি উৎকীর্ণ লিপি থেকে জানা যায় যে, চক্রায়ুধ ও ধর্মপাল তৃতীয় গোবিন্দকে গুর্জর-প্রতিহারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও তারা দুজনেই তৃতীয় গোবিন্দের সহানুভূতি অর্জনের জন্য তার বশ্যতা স্বীকার করেন। পরাজয়ের পর কিছুকালের জন্য প্রতিহার শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিল। ধর্মপালের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় নাগভট্ট কনৌজ পুনরায় দখল করেন এবং এটিকে গুর্জর-প্রতিহার সাম্রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করেন। এই সময় রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছিল। তাই তারা কনৌজের দিকে নজর দেননি। পালেরাও আর কনৌজের দিকে তাকাননি।[২] তাই কনৌজ দখল করে গুর্জর-প্রতিহার সাম্রাজ্যই উত্তর ভারতের সর্বাধিক ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।[২]
১০১৮ সালে গজনির মামুদ কনৌজ দখল করেন। ১০৯০ সালে চন্দ্রদেব গহদবল রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। তার পৌত্র গোবিন্দচন্দ্র “কনৌজকে অতুলনীয় গৌরবশালী করে তোলেন”। মুহাম্মদ ঘোরি এই শহরের দিকে অগ্রসর হন এবং ১১৯৩ সালে জয়চন্দ্রকে পরাজিত করেন। “কনৌজ সাম্রাজ্যের গৌরব” পরিসমাপ্ত হয় ইলতুতমিসের বিজয়ের সঙ্গে সঙ্গে।[৬]:২১, ৩২–৩৩
Remove ads
ভূগোল
কনৌজ শহরটি ২৭.০৭° উত্তর ৭৯.৯২° পূর্ব অক্ষ-দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[৭] সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই শহরের গড় উচ্চতা ১৩৯ মিটার (৪৫৬ ফুট)।
জনপরিসংখ্যান
২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে,[৮] কনৌজ শহরের জনসংখ্যা ৭১,৫৩০। শহরের জনসংখ্যার ৫৩% পুরুষ ও ৪৭% মহিলা। কনৌজের গড় সাক্ষরতার হার ৫৮%, যা জাতীয় গড়ের (৫৯.৫%) তুলনায় কম। পুরুষ সাক্ষরতার হার ৬৪% ও নারী সাক্ষরতার হার ৫২%। কনৌজের জনসংখ্যার ১৫% অংশের বয়স ৬ বছরের কম।
শিক্ষাব্যবস্থা
- গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ, কনৌজ হল একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ। এটি কনৌজের তিরওয়া অঞ্চলে অবস্থিত। এই কলেজটি লখনউ-এর কিং জর্জে’স মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃক অনুমোদিত।
- গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কনৌজ হল একটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এটি লখনউ-এর ড. এ. পি. জে. আব্দুল কালাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশ। কানপুরের হারকোর্ট বাটলার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কলেজের একটি অস্থায়ী শিক্ষাপ্রাঙ্গন রয়েছে।
Remove ads
ভগিনী নগরী
দর্শনীয় স্থান

- দেবী অন্নপূর্ণা মন্দির, তিরওয়া শহর
উল্লেখযোগ্য মানুষ
- অমা, কান্নজের রাজা
- মালিনী অবস্থী, লোক সংগীতশিল্পী
- মিহির ভোজ, উত্তর ভারতের রাজা
- রাণী সংযুক্তা, কন্নৌজের রাজকন্যা
- যশোবর্মণ, কন্নৌজের রাজা
- শাহ জুহানা, পীর
- সাইয়দ মুহাম্মদ কানৌজী, সূফী
আরও দেখুন
- থাক্কার ফেরু
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads