শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
কামিনী রায়
ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক, বাঙালি কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
কামিনী রায় (জন্ম: ১২ই অক্টোবর ১৮৬৪ - মৃত্যু: ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৯৩৩) একজন প্রথিতযশা বাঙালি মহিলা কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রিধারী ব্যক্তিত্ব। তিনি একসময় "জনৈক বঙ্গমহিলা" ছদ্মনামে লিখতেন।
Remove ads
জীবনী
কামিনী রায়ের জন্ম পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) বাকেরগঞ্জের বাসণ্ডা গ্রামে (বর্তমানে ঝালকাঠি জেলার অংশ)। তাঁর পিতা চণ্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী, বিচারক ও ঐতিহাসিক লেখক ছিলেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে চণ্ডীচরণ ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা লাভ করেন। পরের বছর তার স্ত্রী-কন্যাও কলকাতায় তার কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন।[১] তিনি ব্রাহ্ম সমাজের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। তাঁর ভগিনী যামিনী সেন লেডি ডাক্তার হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন।[২] ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে কামিনী রায়ের সাথে স্টাটুটারি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের বিয়ে হয়।[৩]
Remove ads
শিক্ষাজীবন
কন্যা কামিনী রায়ের প্রাথমিক শিক্ষার ভার চণ্ডীচরণ সেন নিজে গ্রহণ করেন। বার বৎসর বয়সে তাকে স্কুলে ভর্তি করে বোর্ডিংয়ে প্রেরণ করেন।[১] ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে এফ.এ বা ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।[২]
Remove ads
কর্মজীবন
স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ১৮৮৬ সালেই তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষিকা পদে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ঐ কলেজে অধ্যাপনাও করেছিলেন। যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তার অনেক প্রবন্ধেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২-২৩) এর সদস্য ছিলেন।
সাহিত্যকর্ম
সারাংশ
প্রসঙ্গ
শৈশবে তাঁর পিতামহ তাকে কবিতা ও স্তোত্র আবৃত্তি করতে শেখাতেন। এভাবেই খুব কম বয়স থেকেই কামিনী রায় সাহিত্য রচনা করেন ও কবিত্ব-শক্তির স্ফুরণ ঘটান। তাঁর জননীও তাকে গোপনে বর্ণমালা শিক্ষা দিতেন। কারণ তখনকার যুগে হিন্দু পুরমহিলাগণের লেখাপড়া শিক্ষা করাকে একান্তই নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।[১] মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। রচিত কবিতাগুলোতে জীবনের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ-বেদনার সহজ-সরল ও সাবলীল প্রকাশ ঘটেছে।[৩] পনেরো বছর বয়সে তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে। এ গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছিলেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রথমে এতে গ্রন্থকর্ত্রী হিসেবে কামিনী রায়ের নাম প্রকাশিত হয় নাই। গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে তার কবি খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।[১]' তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে -
- আলো ও ছায়া (১৮৮৯)
- নির্মাল্য (১৮৯১)
- পৌরাণিকী (১৮৯৭)
- গুঞ্জন (১৯০৫)
- মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩)
- অশোক সঙ্গীত (সনেট সংগ্রহ, ১৯১৪)
- অম্বা (নাট্যকাব্য, ১৯১৫)
- দীপ ও ধূপ (১৯২৯)
- জীবন পথে (১৯৩০)
- একলব্য
- দ্রোণ-ধৃষ্টদ্যুম্ন
- শ্রাদ্ধিকী
অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত মহাশ্বেতা ও পুণ্ডরীক তার দুটি প্রসিদ্ধ দীর্ঘ কবিতা।[২] এছাড়াও, ১৯০৫ সালে তিনি শিশুদের জন্য গুঞ্জন নামের কবিতা সংগ্রহ ও প্রবন্ধ গ্রন্থ বালিকা শিক্ষার আদর্শ রচনা করেন।
কামিনী রায় সবসময় অন্য সাহিত্যিকদের উৎসাহ দিতেন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বরিশাল সফরের সময় কবি সুফিয়া কামালকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে বলেন।
তার কবিতা পড়ে বিমোহিত হন সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায় এবং তাকে বিয়ে করেন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে কামিনী রায়ের স্বামীর অপঘাতে মৃত্যু ঘটেছিল।[১] সেই শোক ও দুঃখ তার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা তার কবিতায় প্রকাশ পায়। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সংস্কৃত সাহিত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
Remove ads
সম্মাননা
- ১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কামিনী রায়কে 'জগত্তারিণী পদক' প্রদান করে সম্মানিত করেন।[৩]
- তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
- ১৯৩২-৩৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদেরও সহ-সভাপতি ছিলেন কামিনী রায়।
মহাপ্রয়াণ
জীবনের শেষ ভাগে তিনি হাজারীবাগে বাস করেছেন। ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে তার জীবনাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads