শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
কৌমোদকী
হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর গদার নাম উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
কৌমোদকী (সংস্কৃত: कौमोदकी, অনুবাদ 'মনের মোহিতকারী') হলো হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর গদার নাম৷[১] অধিকাংশ চিত্র বর্ণনাতে বিষ্ণুর চতুর্বাহুর একটি বাহুতে কৌমোদকী গদাকে ফুটিয়ে তোলা হয়৷ তার অন্য তিনটি হাতে রয়েছে পাঞ্চজন্য শঙ্খ, সুদর্শন চক্র এবং পদ্ম৷ কৌমোদকী গদা প্রায়শই বিষ্ণুর অন্যান্য অবতারের মূর্ত্তিকল্পেও দেখা যায়৷
"কৌমোদকী" নামটির উল্লেখ সর্বপ্রথম ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতে পাওয়া যায়৷ সেখানে গদাটিকে বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের সহযোগী অস্ত্র বলে ফুটিয়ে তোলা হয়৷ ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে শ্রীবিষ্ণুর প্রতিকৃৃতির সাথে অস্ত্রহিসাবে গদা জড়িত করার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়৷ যদিও কৌমোদকী গদার আকার ও আকৃৃতি নিয়ে প্রাথমিকভাবে নানা মুনির নানা মত ছিলো৷ বিষ্ণুর বিস্তারিত চরিত্রচিত্রণে এবং তার গদার বিশ্লেষণ করলে সেটিকে তার বাঁশিরই বৃহৎ ও মারণাত্মক রূপ বলে মনে করা হয়৷
যদিও অন্যান্য দেবাস্ত্রগুলির মতোই এই গদাটিকেও নিষ্প্রাণ জড়বস্তু হিসাবে বর্ণনা করা হয়৷ কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিষ্ণুমূর্ত্তির সাথে "গদাদেবী" বা "গদানারী" হিসাবে এক নারীমূর্ত্তিরূপে কৌমোদকীকে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে৷ বিষ্ণুর প্রতিকৃৃতি কিছুটা এভাবেও চরিত্রচিত্রণ করা হয় যে, তিনি অনন্তশয্যায় শেষনাগের ওপর মাথায় একটি হাত দিয়ে শায়িত আছেন এবং গদাদেবী স্বয়ং গদা হয়ে আছেন অথবা তার কিরীটে কিংবা হাতে অঙ্কিত রয়েছে কৌমোদকী গদাটি৷
গদাকে আদিযুগের অন্যতম শক্তিধর ও আদিশস্ত্র বলে মনে করা হয়, যা শ্রীবিষ্ণুর শক্তিকে প্রতীকায়িত করে৷ বিভিন্ন প্রাচীন পুস্তকে বিষ্ণুর মূর্তিকল্পে কৌমোদকীকে বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে৷
Remove ads
নামকরণ
"কৌমোদকী" নামের উৎপত্তির ইতিহাস অস্পষ্ট৷ একটি পৌরাণিক জনপ্রিয় গল্পকথা অনুসারে, সংস্কৃত শব্দ "কুমুদ" থেকে কৌমোদকী শব্দটি এসে থাকতে পারে, যার অর্থ ইন্দিরব বা নীলোৎপল৷[২][৩] অপর একটি জনশ্রুতি অনুসারে গদাটির নাম শ্রী বিষ্ণুর একটি বিশেষণ "কুমোদক" থেকে এসে থাকতে পারে অথবা হয়তো কৌমোদকী নাম থেকেই বিষ্ণু কুমোদক নামে পরিচিতি পান৷ ব্যকরণগত বিশ্লেষণে কৌমুদকীর সমার্থক কৌমুদী শব্দের অর্থ "পৃৃথিবীর বুকে পতিত চন্দ্রকিরণ৷[৩][৪] বিষ্ণুপুরাণের ওপর ভিত্তি করে অ্যালেইন ডানিয়েলৌ কৌমোদকীকে প্রতীকীরূপে "মনের হতজ্ঞান" বলে বিশ্লেষণ করেছেন৷[৫]
Remove ads
মূর্তিকল্প
সারাংশ
প্রসঙ্গ


বিষ্ণুকে পুরাণমতে চতুর্বাহুযুক্ত দেবতা হিসাবে বর্ণিত করা হয়েছে, যার চার হাতে যথাক্রমে পাঞ্চজন্য শঙ্খ, সুদর্শন চক্র, পদ্ম, এবং কৌমোদকী গদা রয়েছে৷[২] বিষ্ণুকে বিবরণ করার বিশেষণ হিসাবে "শঙ্খচক্রগদাপাণি" বলা হয়ে থাকে৷[৬] সাধারণভাবে বিষ্ণুর মূর্তিতে গদাটি নিচের বাম সম্মুখহস্তে ধরা অবস্থায় কল্পনা করা হয়৷ শুধু শ্রীবিষ্ণু নয় তার একাধিক অবতার মৎস্য, কূর্ম, বরাহ ও নৃসিংহ দেবের মূর্তিতেও গদা অবস্থান দেখতে পাওয়া যায়৷
বিষ্ণুর চিহ্ন এবং তার অস্ত্র হিসাবে প্রাপ্ত ভাস্কর্য তথা মূর্তিগুলির মধ্যে সর্বাধিক প্রাচীন মূর্তিটি পাওয়া গেছে মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলার মলহারগড় থেকে, যা প্রায় দু'শত খ্রিস্টপূর্বাব্দ পূর্বের বলে অনুমান করা হয়৷[২] ৩০ থেকে ৩৭৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কুষাণ যুগের সময়ে তৈরী বিষ্ণুর অন্য আরেকটি প্রাচীন ভাস্কর্য পাওয়া যায় বর্তমান মথুরা থেকে৷ কিন্তু এক্ষেত্রে গদার উপস্থিতি থাকলেও তা বর্তমানকল্পের মতো অতটা কারুকার্যযুক্ত নয় বরং সাধারণ একটি ধারক ও সাধারণ গোলাকার আকৃতিযুক্ত এবং পেছনের উত্থিত ডানহাতে রয়েছে এবং গদাটিও কাঁধের ওপরে তোলা অবস্থায় রয়েছে৷[৭] কুষাণ যুগের সময়কালেই প্রাপ্ত অপর একটি মূর্তিতে গদাটিকে বিষ্ণুমূর্তিরই প্রায় সমান উচ্চতাবিশিষ্ট নলাকার এবং বিষ্ণুর পেছনের ডান হাতে উত্থিত অবস্থায় রয়েছে৷ এক্ষেত্রে এটিকে হামান দিস্তার একটি বৃৃহত্তর নুড়ির সাথে অনেকে তুলনা করে থাকেন৷[৮] উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ জেলার ঝুঁসি এলাকাতেও একইরকম মূর্তি পাওয়া গেছে৷ পশ্চিম ভারতের বিষ্ণুর মূর্তিতে তাকে পেছনের ডানহাতটিকে হয় মাথায় হাত রেখে বিশ্রামরত অবস্থায় বা ঐ হাতেই ওপরের দিক করে গদা ধরে থাকা অবস্থায় থাকতে দেখা যায়, যার প্রভাব পুরানো মূর্তিতে পাওয়া যায়৷[৭] গুপ্তযুগেও গদার অবস্থান ও আকৃতির একই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়৷[৯] এর পরবর্তীকালে গদাকে বিষ্ণুর বিভিন্ন মূর্তিতে বিভিন্ন হাতে দেখা যায়৷ তার চব্বিশটি প্রাপ্ত অন্যান্য ভাস্কর্যে কোনো অস্ত্রর অবস্থানই আর নির্দিষ্ট থাকে না৷[১০]
মূর্তিতে গদাধরা অবস্থায় নির্দিষ্ট হাত পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে গদাসহ অন্যান্য অস্ত্রের নকশাও বদলাতে থাকে৷ অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর অন্তিম মধ্যযুগে পাল সাম্রাজ্যের সময়কালে গদার হাতলের আকার ধীরে ধীরে কমতে থাকে ও শেষে বাঁশির আকার নেয় এবং তার শীর্ষটি উচ্চ নকশাযুক্ত গোলকবিশিষ্ট হয়ে ওঠে৷ উত্তর প্রদেশে হাতলটি বক্রাকৃতি পায় এবং তার বেধ উপরদিকে বৃদ্ধি পায় এবং গোলাকার মস্তকটিও আকার বদল করে৷ চালুক্য সাম্রাজ্যের সময়ে গদাটি মোটা ও নলাকৃতি পায়, পল্লব সাম্রাজ্যের সময়ে পূর্বের থেকে দৃৃঢ়তা ও প্রস্থ আরো বৃদ্ধি পায়৷ আবার চোল সাম্রাজ্যের সময়ে কৌমোদকীর আকার হ্রাস পায় এবং শিরাল কণ্টকযুক্ত এবং একাধিক খণ্ডে বিভক্ত করে আকার দেওয়া হয়৷[৮]

বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ শ্রীবিষ্ণুর মূর্তিকল্পের বিবরণ দেয়৷ পুস্তক অনুসারে তার পেছনের উত্থিত দুই হাতে রয়েছে যথাক্রমে "শঙ্খ" এবং "পদ্ম" আবার তার সামনের হাত দুটিতে রয়েছে বামনাকৃৃটির দুটি মানবকল্পিত "গদা" এবং "চক্র" মূর্তি৷ গদাটিকে মানবীকরণ করা হয়েছে একজন কৃৃশাঙ্গ কটিযুক্তা একজন নারী হিসাবে৷ মূর্তিকল্প অনুসারে তিনি তার অলঙ্কার পরিবৃত হাতে গদাদেবীরূপে বিষ্ণুর ডানদিকে চামর ধরে রয়েছেন আবার পুরুষরূপে বিষ্ণুর বাম দিকে সুঠামদেহে দাঁড়িয়ে রয়েছেন চক্র৷[১১][১২] মানবীকৃৃত অস্ত্রকে আয়ুধপুরুষ বলা হয়ে থাকে মূর্তিতে এর ব্যবহার ৩২০ থেকে ৫৫০ খ্রিষ্টাব্দের গুপ্তযুগে তৈরী ভাস্কর্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য৷ মানবীকৃত কৌমোদকী গদাদেবী বা গদানারী নামেও পরিচিত, যেখানে দেবী বা নারী শব্দটি একজন মহিলাকে নির্দেশিত করে৷ যেহেতু সংস্কৃৃত ভাষাতে গদা শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গরূপে ব্যবহৃৎ হয় তাই গদাকে নারী রূপে দেখানো হয়েছে৷[১৩] গুপ্তযুগে তৈরী উদয়গিরি গুহা থেকে প্রাপ্ত বিষ্ণুর খোদাই করা মূর্তিতে গদাদেবীকে এবং মানবকল্পিত চক্রকে তার অনুষঙ্গী হিসাবে তুলে ধরা হয়৷[৯] কাশ্মীর থেকে প্রাপ্ত বিষ্ণুমূর্তি এবং বিষ্ণুর চতুর্মুখযুক্ত বৈকুণ্ঠ চতুর্মূর্তিসহ বহুক্ষেত্রে গদাদেবীকে দেখতে পাওয়া যায়৷ তিনি তার হাতে একটি চিমর ধরে তার প্রভুকে উদ্দেশ্য করে দোলিত করছেন এবং শ্রীবিষ্ণুর একটি হাত রয়েছে গদাদেবীর মাথায়৷ তিনি তার এলোকেশে একটি কিরীট পরিহিতা৷ কটি আচ্ছাদক ছাড়াও তিনি অন্যান্য অলঙ্কার সহ বক্ষ-আচ্ছাদক এবং উন্মুক্ত স্কন্ধে অবস্থান করছেন৷[১৩]
গুপ্তযুগের অন্যতম প্যানেল বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের দেওগড়ে একটি মন্দির থেকে থেকে প্রাপ্ত "শেষশায়ী বিষ্ণু" মূর্তিতে গদাদেবীকে দেবতুল্যে বামন তথা এক সাধারণ মানবনারী হিসাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ মূর্তিটিতে তিনি গদাধারীনী অবস্থায় রয়েছেন৷[১৪] প্রসঙ্গত উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলার তৈরী ভাস্কর্যেই গদাদেবী তথা কৌমোদকীকে নারী প্রতিকৃতি না করে গদারূপেই প্রকাশ করা হয়ে থাকে৷ [১৫][১৬][১৭] অন্য আঞ্চলিক বৈচিত্রে কৌমোদকী তথা গদাদেবী বিষ্ণুর পাশে অঞ্জলি মুদ্রায় থাকতে দেখা যায়৷ এক্ষেত্রে গদাদেবীর মাথার মুকুটে কৌমোদকী অঙ্কিত থাকে৷ চোল সাম্রাজ্যের সময়ে ব্রোঞ্জের তৈরী বিভিন্ন মূর্তিতে এরকম মূর্তিকল্প পরিলক্ষিত হয়৷[১৫][১৬][১৭]
Remove ads
বিবর্তন ও প্রতীকতা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
গদা বা গদাযষ্ঠি ভারতীয় সংস্কৃতির কিছু পুরাতন অস্ত্রগুলির মধ্যে একটি৷[২] শ্রীবিষ্ণুর সাথে তার কৌমোদকী গদাটির জনপ্রিয়তার কারণে বৈষ্ণব ও বিষ্ণুপাদরা বিষ্ণুর চিত্রাঙ্কনে কৌমোদকীকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন৷ গদা হলো শক্তির প্রতীক এবং হাতে হাতে দ্বন্দ্বযুদ্ধের জন্য বহুল প্রচলিত শক্তিশালী অস্ত্রগুলির একটি৷ আমুনামিক চতুর্থ এবং পঞ্চম খ্রিস্টপুর্বাব্দে দুটি হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী তথা রামায়ণ ও মহাভারতে উল্লিখিত বিষ্ণুর দুই অবতার রাম ও কৃষ্ণের জনপ্রিয়তা বিষ্ণুর বিশেষণকে বর্ণিত করে৷ উভয় হিন্দু মহাকাব্যেই দেব, মানব তথা রাক্ষসদের যুদ্ধ বর্ণনাতে গদার ব্যবহারের বহুল উল্লেখ রয়েছে৷[২][১৮]
দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রীবিষ্ণুর সেবক বৈষ্ণব ধারার পৃষ্ঠপোষকদের ব্যাখ্যায় বিষ্ণুর গদা কৌমোদকী প্রতীকীভাবে মেধা বা ধীশক্তি, জ্ঞানের প্রকাশ ও সময়জ্ঞানকে প্রকাশ করে৷[২] আবার শ্রীবিষ্ণুর চতুর্বাহুতে চতুরাস্ত্রের প্রতীকী অর্থ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গোপাল তাপনী উপনিষদে কৌমোদকীকে ব্যাখ্যা করা হয় যে, বিষ্ণুর নিচের বামহাতে অবস্থিত গদাটি হলো আদিজ্ঞানের প্রতীক, যা ইহার একক অস্তিত্বকে দর্শায়৷[১৯] বিষ্ণু পুরাণে কৌমোদকীকে জ্ঞান শক্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ কৌমোদকী মনের প্রমত্ততারও প্রতীক৷[৫]
"বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ" অনুসারে কৌমোদকীর মাধ্যমে বিষ্ণুপত্নী শ্রীসৌন্দর্য ও ধনৈশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী ও বিষ্ণুর সহাবস্থানকে বোঝানো হয়৷[১৩] কৃষ্ণ উপনিষদে গদাকে সময়শক্তির দেবী কালীর সাথে তুলনা করা হয়েছে৷ উক্ত পুস্তকে আরো বলা হয় যে, অপরাজেয় সময়ের মতো কৌমোদকী সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বী কুশক্তি বিনাশ করার ক্ষমতা রাখে৷[২][৫]
ভিন্নমতে কৌমোদকী হলো জীবনীশক্তি বা প্রাণের প্রতীক, এবং এই শক্তি থেকেই শারীরিক ও মানষিক সমস্ত প্রকার শক্তি উদ্ভূত হয়৷[৫][১৯] বিষ্ণু গদা নিয়মানুবর্তিতা এবং পদ্ম প্রশংসাকে দর্শায়৷ আবার পদ্ম ও শঙ্খ এইদুটি একস্থানে জলজ প্রতীক তথা জীবন ও প্রেমকে দর্শায়৷ আবার গদা ও চক্র হলো অগ্নিরূপ অস্ত্র, যা সমাজ এবং প্রকৃৃতির নিয়মভঙ্গকারীর প্রতি পীড়া ও ধ্বংসকে সূচিত করে[২০] বরাহ পুরাণ মতে গদা হলো সমস্ত অধার্মিক ব্যক্তির কাছে কালস্বরূপ ও তাদের দণ্ড ও উচিত শিক্ষাদানের প্রতীক৷[৬] বলা হয় বিষ্ণু তার কৌমোদকী গদার মাধ্যমে নিজে মায়ামুক্ত হয়েছিলেন৷[১৩]
কিংবদন্তি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মহাভারতে, কৌমোদকীকে বজ্রপাতের মতো শব্দ করা হয়েছে এবং অনেক দৈত্যকে (রাক্ষস) বধ করতে সক্ষম ছিল। এটি সমুদ্রের দেবতা বরুণ কর্তৃক বিষ্ণু-কৃষ্ণকে দেওয়া হয়েছিল।[২][৩][২১] পাণ্ডব রাজকুমারদের তাদের রাজ্য গড়ে তোলার জন্য খণ্ডব বন দেওয়া হয়েছিল। অগ্নি-দেবতা অগ্নি তার বদহজম নিরাময়ের জন্য বনকে "খেতে" চেয়েছিলেন। .তিনি পাণ্ডব অর্জুন এবং তার বন্ধু কৃষ্ণকে সাহায্য করতে বলেছিলেন, কারণ তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে দেবতাদের রাজা এবং বনের রক্ষক ইন্দ্র হস্তক্ষেপ করবেন। অর্জুন ও কৃষ্ণ রাজি হয়েছিলেন এবং বরুণ তাকে স্বর্গীয় অস্ত্র দিয়েছিলেন। কৃষ্ণকে দেওয়া হয়েছিল সুদর্শন চক্র এবং কৌমোদকী গদা, আর অর্জুন পেয়েছিলেন ধনুক গান্ধীব এবং বিভিন্ন দিব্য তীর। ইন্দ্র ও অগ্নিকে পরাজিত করে জঙ্গল পুড়িয়ে দেয়, পাণ্ডব রাজধানী ইন্দ্রপ্রস্থের প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যায়।[২২]
মহাভারত বিষ্ণুর একটি গাদা এবং একটি চক্র ধারণ করে বর্ণনা করে, সম্ভবত বিষ্ণুর দুটি অস্ত্রধারী ছবি নির্দেশ করে।[২৩] মহাভারত চক্র-মুসালা যুদ্ধের সময়ও লিপিবদ্ধ করে, কৃষ্ণের কৌমোদকী এবং অন্যান্য অস্ত্র সহ যুদ্ধ দেখতে স্বর্গ থেকে মানুষের আকারে উপস্থিত হয়।[২৪] হরিবংশ, মহাভারতের একটি পরিশিষ্ট বর্ণনা করে যে বিষ্ণুর চারটি অস্ত্র স্বর্গ থেকে পড়ে কৃষ্ণ এবং তার ভাই বলরামকে জরাসন্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য। বলরাম লাঙ্গল এবং সৌনন্দা নামক ক্লাব ব্যবহার করে; যখন কৃষ্ণ কৌমোদকী এবং ধনুক শরঙ্গার সাথে যুদ্ধ করেন।[২৫]
সংস্কৃত নাট্যকার ব্যাসের (খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী-খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দী) মহাভারতের একটি পর্বের বর্ণনা দেন যখন কৃষ্ণ তাঁর বিশ্বরূপকে (সমস্ত বিস্তৃত "সর্বজনীন রূপ") হস্তিনাপুর আদালতে তুলে ধরেন এবং কওমোডাকি সহ মানুষ হিসেবে আবির্ভূত তার অস্ত্রগুলি তলব করে।কালিদাসের রঘুবংশে বিষ্ণুর গদাসহ বামন-সদৃশ আয়ুধাপুরুষের উল্লেখ আছে।[২৪]
Remove ads
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads