শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
চরমপন্থা
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
চরমপন্থা অর্থ হলো "কোনোকিছুর সীমার দিকে, চরম দিকে ধাবিত করা বা চরমপন্থী হওয়ার ধাপ বা বৈশিষ্ট্য, চরম মতবাদ বা দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষ সমর্থন করা"। [১][২] বর্তমান সময়ে, এই পরিভাষাটি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় চিন্তাধারায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, এমন একটি মতাদর্শকে বোঝাতে যা (সম্পর্কিত বক্তা অথবা পরোক্ষভাবে বিনিময়কৃত সামাজিক মতৈক্যের দ্বারা) সমাজের (গ্রহণযোগ্য) মূলধারার আচরণ বা মনোভাব হতে অত্যধিক বহির্ভূত হিসেবে বিবেচিত হয়।[১] কিন্তু চরমপন্থাবাদকে উদাহরণস্বরূপ কোন একটি অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সংজ্ঞার্থ করা হতে পারে।
চরমপন্থা পরিভাষাটি সাধারণত (দৃঢ়) অসমর্থন প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মর্যাদাহানিকর অর্থে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু পাশাপাশি একটি আরও পাণ্ডিত্যপূর্ণ, নির্ভেজালভাবে বিবৃত এবং অ-নিন্দাসূচক দৃষ্টিকোণ হতেও এর সংজ্ঞার্থ করা হতে পারে।
চরমপন্থীদের সাধারণত নরমপন্থী ও মধ্যপন্থীদের বিপরীতে তুলনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাশ্চাত্য দেশগুলোতে ইসলাম বা ইসলামী রাজনৈতিক আন্দোলনসমূহের সমসাময়িক আলোচনায়, চরমপন্থী ('মন্দ') এবং মধ্য নরমপন্থী ('ভালো') মুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকরণ স্বভাবতই বড় আকার ধারণ করেছে।[৩]
চরমপন্থী হিসেবে অনুভূত রাজনৈতিক এজেন্ডাসমূহ প্রায়শ ক্ষেত্রেই কট্টর বামপন্থা বা কট্টর ডানপন্থা, পাশাপাশি রাজনৈতিক আমূলসংস্কারবাদ, প্রতিক্রিয়াবাদ, মৌলবাদ ও অন্ধবিশ্বাস এ সকল মতবাদের ধারকদের কাছ থেকে আসে।
Remove ads
চরমপন্থা সংজ্ঞায়নে সমস্যাসমূহ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে চরমপন্থার বিভিন্ন আলাদা সংজ্ঞার্থ ছিল। ড. পিটার টি. কোলম্যান ও ড. আন্দ্রে বারটলি এই সংজ্ঞাগুলোর সংক্ষিপ্ত নিরীক্ষা প্রদান করেছেন:[৪]
“ | চরমপন্থা একটি জটিল বিষয়, যদিও প্রায়শই এর জটিলতা বোধগম্য হয় না। সবচেয়ে সহজভাবে, একে স্বাভাবিকের থেকে দুর বিচ্যুত একটি আচরণ বা কর্মকাণ্ডের সমষ্টি (বিশ্বাস, মনোভাব, অনুভূতি, কর্মকাণ্ড, কৌশল) হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। সংঘাত স্থাপনের ক্ষেত্রে এটি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার একটি তীব্র রূপ হিসেবে প্রতিভাত হয়। যাই হোক, কোন কর্মকাণ্ড, ব্যক্তি, এবং দলকে চরমপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং কোনটি "স্বাভাবিক" তা সংজ্ঞায়িত করা সর্বদাই একটি বিষয়ভিত্তিক ও রাজনৈতিক ব্যাপার। একারণে, আমরা মনে করি যে চরমপন্থা বিষয়ক যে কোন আলোচনায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো স্মরণে রাখা প্রয়োজন:
|
” |
Remove ads
আমূল সংস্কারবাদ ও চরমপন্থাবাদের সাদৃশ্য
চরমপন্থাবাদের তত্ত্বসমূহ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
অর্থনীতিবিদ রোনাল্ড উইনট্রোব[৫] মতপোষণ করেন যে, বহু চরমপন্থী আন্দোলন তাদের আদর্শিক দিক থেকে পরস্পর সম্পূর্ণ আলাদা হলেও এরা সকলেই কিছু একই রকম বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি "ইহুদি মৌলবাদীগণ" ও "হামাসের চরমপন্থীগণের" মাঝে নিম্নোক্ত সাধারণ মিলগুলো তুলে ধরেন:[৬]
- উভয়ই অপরপক্ষকে যে কোন প্রকারের ছাড় দেয়ার বিরোধী।
- উভয়ই তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত।
- উভয়ই তাঁদের দাবি অর্জনের জন্য সহিংসতাকে সমর্থন করে এবং অনেক সময় ব্যবহারও করে।
- উভয়ই স্বদেশপ্রেমী।
- উভয়ই তাঁদের নিজ দলের ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু।
- উভয়ই বিরোধীপক্ষকে খারাপ বা দুর্বৃত্ত হিসেবে তুলে ধরে।
মনস্তাত্ত্বিক
চরমপন্থার বিশ্লেষকদের মধ্যে একদল এটিকে মহামারি হিসেবে দেখেন।[৪] আরনো গ্রুয়েন বলেন, " চরমপন্থিদের স্বপরিচয়ের অভাববোধ হল আত্মবিধ্বংসী আত্মঘৃণার ফলস্বরূপ, যা তাঁদেরকে জীবনের প্রতি প্রতিশোধের অনুভূতির দিকে এবং নিজস্ব মানবতাবোধকে ধ্বংস করার দিকে পরিচালিত করে।" তাই, চরমপন্থাকে কোন যুদ্ধকৌশল, বা কোন মতাদর্শ হিসেবে নয় বরং একটি আবেগপূর্ণ অসুস্থতা হিসেবে দেখা হয় যা জীবন ধ্বংসের খোরাক যোগায়।[৪] ড. ক্যাথলিন টেইলর বিশ্বাস করেন যে মুসলিম মৌলবাদ একটি মানসিক অসুস্থতা এবং এটি "নিরাময়যোগ্য।"[৭]
আরেকটি অভিমত হল চরমপন্থা হল "নির্যাতনভোগ, নিরাপত্তাহীনতা, উপহাস, অপমানবোধ, ক্ষতি ও ক্রোধের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা"র অবদমিত তীব্র অনুভূতিসমূহের একটি আবেগপূর্ণ বহিঃনিঃসরণ যেগুলোকে ব্যক্তি ও দলকে সংঘাতে জড়ানোর কৌশল অনুসরণের দিকে পরিচালিত করার" কারণ বলে মনে করা হয়।[৪]
অন্যান্য গবেষকগণ আবার চরমপন্থাকে "ক্ষমতা নিয়ে খেলা করার একটি যৌক্তিক কৌশল" হিসেবে দেখেন।[৪] উদাহরণস্বরূপ এলি বারম্যান'র কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য।
"মূলধারা"র রাজনীতিতে পরিভাষাটির ব্যবহার
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ব্যারি গোল্ডওয়াটার ১৯৬৪ সালের রিপাবলিকান কনভেনশনে তার বক্তব্য রচয়িতা কার্ল হেস'র প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, "স্বাধীনতা প্রতিরক্ষার স্বার্থে চরমপন্থায় কোন দোষ নেই, ন্যায়বিচার অনুসরণে শিথিলতা প্রদর্শনে কোন গুণ নেই।"
রবার্ট এফ. কেনেডি বলেন, "চরমপন্থিদের ব্যাপারে যে বিষয়টি আপত্তিকর ও বিপজ্জনক তা তাঁদের চরমপন্থা নয় বরং তা তাঁদের অসহনশীলতা। তারা তাঁদের বিরোধী প্রতিপক্ষদের সম্পর্কে যা বলে সেটাই মূল সমস্যা, তারা নিজেদের স্বার্থে যা বলে তা নয়।"
১৯৯০ সাল থেকে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সিস্টার সউলজাহ আন্দোলন পরিভাষাটি কোন রাজনীতিবিদের নিজ দলের সাথে সম্পৃক্ত চরমপন্থি ব্যক্তি, দল, মন্তব্য, বা অবস্থানকে জনগণের সামনে অস্বীকার করাকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতো।
রাশিয়ায় চরমপন্থি কর্মকাণ্ড দমনকারী আইনকে অতি বিস্তৃত ও নমনীয় ব্যাখ্যার মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা রোধে ব্যবহার করা হয়।[৮] জনগণের যে সকল প্রকাশ্য কর্মকাণ্ডকে চরম্পথি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত ও বিচারাধীন করা হয়েছিলো তাদের মধ্যে অন্যতম হল বলতনায়া চত্বর মামলার রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল (বেআইনি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান), স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত মেয়াদ পর্যন্ত বহাল থাকা (কর্তৃপক্ষকে তিরস্কার করা), ইউক্রেনের সমর্থনে কবিতা রচনা (সহিংসতার উস্কানি),[৯][১০] লেখক পলিনা জেরেবকভার লেখা চেচনিয়ায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে খোলা চিঠি,[১১] রাশিয়ার জেহভাহর সাক্ষী আন্দোলন, [১২] রাফায়েল লেমকিন এবং ১০৪৮ সালের গণহত্যা সম্মেলনের প্রবক্তাদের লেখা নিবন্ধসমূহ।[১৩]
Remove ads
অন্যান্য পরিভাষা
"বিধ্বংসী" পরিভাষাটি প্রায়শই "চরমপন্থী"র সাথে আন্তঃপরিবর্তনশীলভাবে ব্যবহার করা হত, অন্তত যুক্তরাষ্ট্রে, স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে, যদিও এই দুটি শব্দ সমার্থক নয়।
আরও পড়ুন
- অনুবর্তিতাবাদ
- ঘরোয়া চরমপন্থাবাদ অভিধান
- মিথ্যা ঐকমত্য্য প্রতিক্রিয়া
- জাপানে রাজনৈতিক চরমপন্থা
- সুইজারল্যান্ডে রাজনৈতিক চরমপন্থা
- শিখ চরমপন্থাবাদ
- ইসলামী চরমপন্থাবাদ
- ইহুদি চরমপন্থাবাদ
- ইসরাইলী উপনিবেশিক সহিংসতা#উপনিবেশিক চরমপন্থাবাদ
- জিয়নবাদী চরমপন্থাবাদ
- ক্রমবর্ধমান চরমপন্থাবাদ
- সন্ত্রাসবাদ
- জাগরণবাদ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads