শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

চীনের ভূগোল

পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র গণচীনের ভূগোল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

চীনের ভূগোল
Remove ads

চীন এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। চীনের স্থলভাগের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার।[] আয়তনের দিক থেকে চীন এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং রাশিয়াকানাডার পর চীন বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।

Thumb
নাসার উপগ্রহ থেকে তোলা চীনের আলোকচিত্র।

উত্তর-দক্ষিণে চীন মোহো অঞ্চলের উত্তরের হেইলুংচিয়াং (চীনা: 黑龙江省; ফিনিন: Hēilóngjiāng) নদীর কেন্দ্রস্থল অর্থাৎ ৫৩.৩০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে দক্ষিণে নানশা দ্বীপপুঞ্জের (চীনা: 南沙群岛) চেনমু-আনসা অর্থাৎ ৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের সর্বদক্ষিণ আর সর্বউত্তর প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫৫০০ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে চীন পূর্বের হেইলুংচিয়াং নদী আর উসুলিচিয়াং (চীনা: 乌苏里江) নদীর সঙ্গমস্থল অর্থাৎ ১৩৫.০৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে পশ্চিমে পামির মালভূমি অর্থাৎ ৭৩.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশটির পূর্ব আর পশ্চিম প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার।

চীনের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,৮০০ কিলোমিটার। চীনের পূর্ব দিকে উত্তর কোরিয়া, উত্তর দিকে মঙ্গোলিয়া, উত্তর -পূর্ব দিকে রাশিয়া, উত্তর-পশ্চিম দিকে কাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তাজিকিস্তান, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ও ভুটান, দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার, লাওসভিয়েতনাম। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়াইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চীনের সমুদ্র সীমানা রয়েছে।

Remove ads

জলসীমা ও দ্বীপসমূহ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

চীনের মূলভূভাগের তটরেখা উত্তর দিকের ইয়ালুচিয়াং (চীনা: 鸭绿江) নদীর মোহনা থেকে দক্ষিণ দিকের কুয়াংসি (চীনা: 广西) স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের পেইলুন হো (চীনা: 北仑河) নদীর মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত; এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার। চীনের উপকূলীয় অঞ্চলের ভূমিরূপ সমতল এবং এখানে বহু বিখ্যাত বন্দর অবস্থিত। এই বন্দরগুলির বেশির ভাগই সারা বছর বরফমুক্ত থাকে। চীনের নিকটে পোহাই সাগর, হুয়াংহাই সাগর, পূর্ব সাগর, নানহাই সাগর এবং তাইওয়ানের পূর্ব অঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সহ পাঁচটি সাগর রয়েছে। এগুলির মধ্যে পোহাই সাগর চীনের অভ্যন্তরীণ সাগর। তাইওয়ানের পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল পূর্বদিকে জাপানের রিইউকিয়ু দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমের সাখি সীমা দ্বীপপুঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিকের বাস প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত।  

চীনের অভ্যন্তরীণ নদী আর সামুদ্রিক জলসীমা নিয়ে গঠিত সামুদ্রিক অঞ্চলের মোট আয়তন ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। চীনের সামুদ্রিক অঞ্চলে ৫০০০-এরও বেশি দ্বীপ রয়েছে। এগুলির মোট আয়তন প্রায় ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বীপগুলির তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার। দ্বীপগুলির মধ্যে বৃহত্তম তাইওয়ান দ্বীপের আয়তন ৩৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বিতীয় বৃহত্তম হাইনান দ্বীপের আয়তন ৩৪ হজার বর্গকিলোমিটার। তাইওয়ান দ্বীপের উত্তর-পূর্ব সমুদ্রে অবস্থিত তিয়াও ইয়ু তাও দ্বীপ ও ছিওয়েই ইয়ু দ্বীপ চীনের সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ। দক্ষিণ চীন সমুদ্রে ছড়িয়ে থাকা দ্বীপ, ও প্রবাল-প্রাচীরগুলিকে নানহাই দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়। এটি চীনের সবচেয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপপুঞ্জ। অবস্থান অনুযায়ী এগুলোকে তুঙসা দ্বীপপুঞ্জ, সিসা দ্বীপপুঞ্জ,চুংসা দ্বীপপুঞ্জ এবং নানসা দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়।এছাড়াও চিনের

Remove ads

ভূমিরূপ

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
চীনের ভূগোল

চীন একটি পর্বতময় দেশ। এর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে চীনের ৩৩% উঁচু পর্বত,২৬% মালভূমি,১৯% অববাহিকা,১২% সমতলভূমি এবং প্রায় ১০% ক্ষুদ্র পাহাড়। কয়েক মিলিয়ন বছর আগে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি সৃষ্টি হয়। আকাশ থেকে দেখলে মনে হবে চীনের ভূভাগ সিঁড়ির মতো পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে। সমুদ্র সমতল থেকে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি বলে মালভূমিটি "বিশ্বের ছাদ" নামে পরিচিত; এটি চীনের ভূমিরূপের প্রথম সিঁড়ি গঠন করেছে। মালভূমিটিতে অবস্থিত হিমালয়ের অন্যতম প্রধান পর্বতশৃঙ্গ চুমোলাংমা শৃঙ্গের উচ্চতা ৮৮৪৮.১৩ মিটার। আন্তঃমঙ্গোলিয়া মালভূমি,দো-আঁশ মালভূমি,ইয়ুন্নান-কুইচৌ মালভূমি এবং থালিমু অববাহিকা, চুনগার অববাহিকা ও সিছুয়ান অববাহিকা নিয়ে চীনের ভূগোলের দ্বিতীয় সিড়ি গঠিত। এর গড় উচ্চতা ১০০০-২০০০ মিটার। দ্বিতীয় সিড়ির পূর্বপ্রান্ত অতিক্রম করে বড় সিং আনলিন পর্বত, থাইহান শ্যান পাহাড়, উশ্যান পাহাড়, আরস্যুয়ে ফোং শ্যান পাহাড় পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বিস্তৃত হয়েছ; এটি তৃতীয় সিঁড়ি। তৃতীয় সিঁড়ির ভূখণ্ড ৫০০-১০০০ মিটার নিচে নেমে গেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ দিক পর্যন্ত বিস্তৃত তৃতীয় সিঁড়িতে উত্তর-পূর্বসমতল-ভূমি, উত্তর চীন সমতল-ভূমি, ইয়াংসি নদীর মধ্য ও নিম্ন অববাহিকা সমতল-ভূমি আর সমতল-ভূমির প্রান্তে নিচু ও ক্ষুদ্র পাহাড় ছড়িয়ে আছে। এরও পূর্বদিকে চীনের মহাদেশীয় সোপান তথা স্বল্প গভীর সাগরীয় এলাকা অর্থাৎ চতুর্থ সিঁড়িটি বিস্তৃত; এর গভীরতা ২০০ মিটারের কিছু কম।

Remove ads

পর্বতমালা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

চীনের বৃহত্তম পর্বতমালাগুলির মধ্যে হিমালয় পর্বতমালা, খুনলুনশান পর্বতমালা (昆仑山), থিয়েনশান পর্বতমালা (天山), থাংকুলাশান পর্বতমালা (唐古拉山), ছিনলিন পর্বতমালা (秦岭), বৃহত্তর সিংআনলিন পর্বতমালা (大兴安岭), থাইহাংশান পর্বতমালা (太行山), ছিলিয়েনশান পর্বতমালা (祁连山) এবং হাংতুয়ানশান পর্বতমালা (横断山脉) উল্লেখযোগ্য।

হিমালয় পর্বতমালা

হিমালয় পর্বতমালা বক্রাকারে ভারত আর নেপাল-সংলগ্ন চীন সীমান্তে ২৪০০ কিলোমিটার ধরে বিস্তৃত। সমুদ্র সমতল থেকে এর গড় উচ্চতা ৬০০০ মিটার। এটি বিশ্বের উচ্চতম ও বৃহত্তম পর্বতমালা।

খুনলুনশান পর্বতমালা

পশ্চিমের পামির মালভূমি থেকে পূর্ব দিকে চীনের সিছুয়াং প্রদেশের উত্তর-পশ্চিম এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত খুনলুনশান পর্বতের দৈর্ঘ্য ২৫০০ কিলোমিটার। সমুদ্র সমতল থেকে এর গড় উচ্চতা ৫০০০-৭০০০ মিটার। এর উচ্চতম শৃঙ্গ কোংগার পর্বতের উচ্চতা হলো ৭৭১৯ মিটার।

থিয়েনশান পর্বতমালা

থিয়েনশান পর্বতমালা উত্তর-পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মধ্যাংশে বিস্তৃত। এর গড় উচ্চতা ৩০০০-৫০০০ মিটার এবং এর সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ থোমোরের উচ্চতা ৭৪৫৫.৩ মিটার।

থাংকুলাশান পর্বতমালা

থাংকুলাশান পর্বতমালা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির মধ্যাংশে অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা ৬০০০ মিটার। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কালাতানতং শৃঙ্গের উচ্চতা ৬৬২১ মিটার। এটি চীনের দীর্ঘতম নদী ছাংচিয়াং নদীর উৎস।

ছিনলিন পর্বতমালা

পশ্চিম চীনের কানসু প্রদেশের পূর্ব দিক থেকে পূর্ব চীনের হোনান প্রদেশের পশ্চিম দিক পর্যন্ত বিস্তৃত এই পর্বতমালার গড় উচ্চতা হলো ২০০০-৩০০০ মিটার। এর প্রধান শৃঙ্গ থাইপাইশানের উচ্চতা ৩৭৬৭ মিটার। ছিনলিন পর্বতমালা চীনের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক সীমারেখা গঠন করেছে।

বৃহত্তর সিং আনলিন পর্বতমালা

উত্তর দিকে উত্তর-পূর্ব চীনের হেইলুংচিয়াং প্রদেশের মোহো থেকে দক্ষিণ দিকে পুরানো হাহো নদীর উত্তর অববাহিকা পর্যন্ত বিস্তৃত বড় সিং আনলিন পর্বতমালার দৈর্ঘ্য ১০০০ কিলোমিটার। এর গড় উচ্চতা ১৫০০ মিটার। এর প্রধান শৃঙ্গ হুয়াংকাংলিয়াংয়ের সামুদ্রিক উচ্চতা ২০২৯ মিটার।

থাইহাং পর্বতমালা

থাইহাং পর্বতমালা উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে হুয়াংথু মালভূমির পূর্ব-প্রান্তে অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ৪০০ কিলোমিটার এবং গড় উচ্চতা ১৫০০-২০০০মিটার। এর প্রধান শৃঙ্গ ক্ষুদ্র উ থাইশ্যানের উচ্চতা ২৮৮২ মিটার।

ছিলিয়েনশান পর্বতমালা

ছিলিয়েনশ্যান পর্বতমালা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির উত্তর-পূর্ব প্রান্তে বিস্তৃত। এর গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি। ছিলিয়েনশ্যান পর্বতমালার প্রধান শৃঙ্গের সামুদ্রিক উচ্চতা ৫৫৪৭ মিটার।

হেংতুয়ানশান পর্বতমালা

হেংতুয়ানশ্যান পর্বতমালা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অর্থাৎ তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং সিছুয়ানইউন্নান প্রদেশের সংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা ২০০০-৬০০০মিটার। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোংগাশানের উচ্চতা ৭৫৫৬ মিটার।

তাইওয়ান পর্বতমালা

তাইওয়ান পর্বতমালা তাইওয়ান দ্বীপের পূর্ব দিকের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত। এর গড় উচ্চতা ৩০০০-৩৫০০ মিটার। এর প্রধান শৃঙ্গ ইয়ুশানের উচ্চতা ৩৯৫২ মিটার।

এছাড়াও হুয়াংশান, থাইশান, হুয়াশান, সোংশান, হেংশান, হ্যানশান, অ্যামেইশান, লুশান, উতাংশান, ইয়েনতাংশান, ইত্যাদি চীনের উল্লেখযোগ্য কিছু পর্বতমালা।

Remove ads

নদনদী

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
ছাংচিয়াং নদী, নানচিং শহরের কাছে (২০০৬ সালে তোলা ছবি)
Thumb
হুয়াংহো নদী, ছিংহাই প্রদেশ (২০০৪ সালে তোলা ছবি)

চীন একটি নদীবহুল দেশ। চীনের ১৫০০টিরও বেশি নদীর অববাহিকার আয়তন ১০০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি। চীনের নদীগুলিকে অভ্যন্তরীণ নদী ও বহির্গামী নদী---এই দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। সমুদ্রে প্রবাহিত হওয়া বহির্গামী নদীগুলোর অববাহিকার আয়তন চীনের স্থলভাগের মোট আয়তনের ৬৪%। ছাংচিয়াং নদী, হুয়াংহো নদী, হেইলুংচিয়াং নদী, চুচিয়াং নদী, লিয়াও হো নদী, হাইহো নদী, হুয়াইহো নদী, ইত্যাদি নদী পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগরে পতিত হয়েছে। তিব্বতের ইয়ালুচাংবু চিয়াং নদী পূর্ব দিক থেকে সীমান্ত পার হয়ে দক্ষিণ দিকে ভারত মহাসাগরে প্রবাহিত হয়েছে। ইয়ালুচাংবু নদী ৫০৪.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ; এটি ৬০০৯ মিটার গভীরতার বিশ্বের বৃহত্তম গিরিখাদ ইয়ালুচাংবু নদী গিরিখাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সিনচিয়াংয়ের আরচিস নদী উত্তর দিক থেকে সীমান্ত পার হয়ে উত্তর মহাসাগরে প্রবাহিত হয়েছে। যেসব অভ্যন্তরীণ নদী অভ্যন্তরীণ হ্রদে পতিত হয়েছে অথবা মরুভূমিতে বা লবণাক্ত সমুদ্র –সৈকতে অদৃশ্য হয়েছে, সেসব অভ্যন্তরীণ নদীর অববাহিকার আয়তন চীনের স্থলভাগের মোট আয়তনের প্রায় ৩৬%।

ছাংচিয়াং (চীনা লিপিতে: 长江 ফিনিন: Chang Jiang; ইংরেজি ভাষায়: Yangtze River) নদী চীনের দীর্ঘতম নদী।[] এর মোট দৈর্ঘ্য ৬৩০০ কিলোমিটার। আফ্রিকার নীল নদ আর দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান নদীর পর ছাংচিয়াং নদী বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম নদী। উঁচু পাহাড় আর গভীর গিরিখাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ছাংচিয়াং নদীর অববাহিকা পানি শক্তিসম্পদে সমৃদ্ধ। নদীটির মধ্য ও নিম্ন অববাহিকার আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র; এখানে প্রচুর বৃষ্টি হয়। মাটি উর্বর বলে অঞ্চলটি চীনের একটি কৃষি ও শিল্প সমৃদ্ধ অঞ্চল।

হুয়াংহো নদী চীনের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। এর মোট দৈর্ঘ্য ৫৪৬৪ কিলোমিটার। হুয়াংহো নদীর অববাহিকার পশুচারণ ভূমি বেশ উর্বর ও খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। এই নদীর অববাহিকাতে চীনের প্রাচীনতম সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।

হেইলুংচিয়াং নদী উত্তর চীনের একটি বড় নদী। এর মোট দৈর্ঘ্য ৪৩৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩১০১ কিলোমিটার চীনের অভ্যন্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

চুচিয়াং নদী দক্ষিণ চীনের একটি বড় নদী। এর মোট দৈর্ঘ্য ২২৪১ কিলোমিটার।

দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের থালিমো নদী চীনের দীর্ঘতম অভ্যন্তরীণ নদী। এর মোট দৈর্ঘ্য ২১৭৯ কিলোমিটার।

প্রাকৃতিক নদী ছাড়া চীনে মানুষের তৈরি একটি বিখ্যাত নদীও রয়েছে। এটি হল দক্ষিণ থেকে উত্তর-মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মহাখাল। পঞ্চম শতাব্দীতে মহাখালটির খনন কাজ শুরু হয়। উত্তর দিকের পেইচাং থেকে দক্ষিণ দিকের পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের হাংচৌ পর্যন্ত বিস্তৃত মহাখালটি হাইহো নদী, হুয়াংহো নদী, হুয়াইহো নদী, ছাংচিয়াং নদী এবং ছিয়েনথাংচিয়াং নদীন---এই পাঁচটি বড় নদীকে সংযুক্ত করেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ১৮০১ কিলোমিটার। মহাখালটি বিশ্বের দীর্ঘতম খালগুলির একটি।

Remove ads

ভৌত ভূগোল

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
Karst landscape around Yangshuo in Guangxi
Thumb
North slope of Changbaishan in Jilin Province, near the border with North Korea.
Thumb
Sand dunes of the Gobi Desert near Dunhuang, in Gansu Province.
Thumb
The Loess Plateau near Hunyuan in Shanxi Province.
Thumb
The tallest peak entirely within China is Shishapangma (8013m, 14th) of the Tibetan Himalayas in Nyalam County of Tibet Autonomous Region
Thumb
The north face of Mount Everest in the Himalayas from the Tibetan side of the China-Nepal border
Thumb
The Karakorum Range in Xinjiang

সাধারণতা

Thumb
চীনের ভূ-প্রকৃতির মানচিত্র

চীনের ভূ-প্রকৃতিকে চীন সরকার পাঁচটি সমজাতীয় ভৌত বৃহৎ অঞ্চলে বিভক্ত করেছে, যথা পূর্ব চীন (উত্তর-পূর্ব সমভূমি, উত্তর সমভূমি এবং দক্ষিণ পাহাড়ে বিভক্ত), জিনজিয়াং-মঙ্গোলিয়া এবং তিব্বতি উচ্চভূমি। [] এটি তুষারাবৃত পাহাড়, গভীর নদী উপত্যকা, প্রশস্ত অববাহিকা, উঁচু মালভূমি, ঢালু সমভূমি, সোপানযুক্ত পাহাড়, বালিয়াড়ি সহ আরও অনেক ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং অসংখ্য বৈচিত্র্যের অন্যান্য ভূমিরূপের সাথে বৈচিত্র্যময়। সাধারণত, জমিটি পশ্চিমে উঁচু এবং পূর্ব উপকূলে নেমে আসে। দেশের ভূমির প্রায় ৭০ শতাংশ পাহাড় (৩৩ শতাংশ), মালভূমি (২৬ শতাংশ) এবং পাহাড় (১০ শতাংশ) দ্বারা দখল করা হয়েছে। দেশের বেশিরভাগ আবাদযোগ্য জমি এবং জনসংখ্যা নিম্নভূমি সমভূমি (১২ শতাংশ) এবং অববাহিকা (১৯ শতাংশ) তে অবস্থিত, যদিও কিছু বৃহৎ অববাহিকা মরুভূমিতে ভরা। দেশের দুর্গম ভূখণ্ড স্থল পরিবহন অবকাঠামো নির্মাণে সমস্যা তৈরি করে এবং কৃষিকাজ টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যাপক টেরেসিং প্রয়োজন, তবে এটি বনজ, খনিজজলবিদ্যুৎ সম্পদের পাশাপাশি দেশে পর্যটনের উন্নয়নের জন্য সহায়ক।

পূর্ব চীন

উত্তর-পূর্ব সমভূমি

শানহাইগুয়ানের উত্তর-পূর্বে সমতল উপকূলীয় ভূমির একটি সরু অংশ বিস্তৃত উত্তর-পূর্ব চীন সমভূমিতে উন্মোচিত হয়েছে। সমভূমিগুলি "চীনা মোরগ" এর মুকুট পর্যন্ত উত্তরে বিস্তৃত, যেখানে গ্রেটার এবং লেসার হিংগান পর্বতমালা মিলিত হয় তার কাছাকাছি। পূর্বে চাংবাই পর্বতমালা চীনকে কোরীয় উপদ্বীপ থেকে পৃথক করেছে।

উত্তর সমভূমি

তাইহ্যাং পর্বতমালা ত্রিকোণাকার উত্তর চীন সমভূমির পশ্চিম পার্শ্ব গঠন করে। অন্য দুটি পার্শ্ব হলো পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ইয়াংজী নদী। এই ত্রিভুজটির কোণাগুলোর মধ্যে উত্তরদিকে বেইজিং, দক্ষিণ-পূর্বে সাংহাই এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ইয়িচাং অবস্থিত। হলুদ এবং ইয়াংজী নদী দ্বারা জলমগ্ন এই সমভূমি চীনের সবচেয়ে ঘন জনবসতির অঞ্চলের একটি। সমভূমির মধ্যে একমাত্র পর্বত হলো শানডংয়ের তাইশান এবং আংশুইয়ের ডাবিয়ে পর্বতমালা।

উত্তর চীন সমভূমির উত্তর প্রান্তে অবস্থিত বেইজিং, তাইহাং এবং ইয়ান পর্বতমালার সংযোগস্থল দ্বারা সুরক্ষিত। আরও উত্তরে অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলীয় মালভূমির শুষ্ক তৃণভূমি রয়েছে, যা ঐতিহ্যগতভাবে পশুপালকদের আবাসস্থল। দক্ষিণে কৃষিপ্রধান অঞ্চল রয়েছে, যেখানে ঐতিহ্যগতভাবে বসতিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বাস করে। চীনের মহাপ্রাচীরটি নির্মিত হয়েছিল অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলীয় মালভূমির দক্ষিণ প্রান্ত চিহ্নিত পাহাড় জুড়ে। মিং-যুগের দেয়ালগুলি ২,০০০ কিমি (১,২০০ মা) এরও বেশি লম্বা বোহাই উপকূলের শানহাইগুয়ান থেকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে গানসুর হেক্সি করিডোর পর্যন্ত।

দক্ষিণ (পাহাড়)

তিব্বত মালভূমির পূর্বে, গভীরভাবে ভাঁজ করা পাহাড়গুলি সিচুয়ান অববাহিকার দিকে প্রসারিত, যা ১,০০০-৩,০০০ মিটার উচ্চতার পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। অববাহিকার তলদেশের গড় উচ্চতা ৫০০ মিটার এবং এটি চীনের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং কৃষিকাজ করা অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। সিচুয়ান অববাহিকা উত্তরে কুনলুন পর্বতমালা, কিনলিং এবং দাবাশান পর্বতমালার পূর্বমুখী ধারাবাহিকতা দ্বারা বেষ্টিত। চীনের ঐতিহ্যবাহী মূল অঞ্চল চায়না প্রোপার জুড়ে কিনলিং এবং দাবাশান পর্বতমালা উত্তর-দক্ষিণে একটি প্রধান বিভাজন তৈরি করে। তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ-পূর্বে এবং সিচুয়ান অববাহিকার দক্ষিণে অবস্থিত ইউনান-গুইঝো মালভূমি, যা দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের বেশিরভাগ অংশ দখল করে আছে। এই মালভূমির গড় উচ্চতা ২০০০ মিটার, যা তার চুনাপাথরের কার্স্ট ভূদৃশ্যের জন্য পরিচিত।

ইয়াংজি নদীর দক্ষিণে, ভূদৃশ্য আরও রুক্ষ। উত্তরে শানসি প্রদেশের মতো, হুনান এবং জিয়াংসি উভয়েরই একটি প্রাদেশিক কেন্দ্র রয়েছে একটি নদী অববাহিকায় যা পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। উলিং পর্বতমালা গুইঝৌকে হুনান থেকে পৃথক করেছে। লুওশিয়াও এবং জিংগাং হুনানকে জিয়াংসি থেকে পৃথক করেছে, যা উয়ি পর্বতমালা দ্বারা ফুজিয়ান থেকে পৃথক। দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় প্রদেশ, ঝেজিয়াং, ফুজিয়ান এবং গুয়াংডং-এর উপকূলগুলি দুর্গম, নিম্নভূমি এবং পাহাড়ি অভ্যন্তরে বিস্তৃত। নানলিং, উত্তর গুয়াংডং জুড়ে একটি পূর্ব-পশ্চিম পর্বতমালা, গুয়াংডং থেকে হুনান এবং জিয়াংসিকে বন্ধ করে দেয়।

জিনজিয়াং-মঙ্গোলিয়া

তিব্বতীয় মালভূমির উত্তর-পশ্চিমে, কুনলুনের উত্তর ঢাল এবং তিয়ান শানের দক্ষিণ ঢালের মধ্যে, জিনজিয়াংয়ের বিশাল তারিম অববাহিকা অবস্থিত, যেখানে তাকলামাকান মরুভূমি রয়েছে। চীনের বৃহত্তম তারিম অববাহিকা, যার আয়তন ১,৫০০ কিমি (৯৩০ মা) পূর্ব থেকে পশ্চিমে এবং ৬০০ কিমি (৩৭০ মা) উত্তর থেকে দক্ষিণে এর প্রশস্ততম অংশে। অববাহিকার গড় উচ্চতা ১,০০০ মিটার। পূর্বে, অববাহিকাটি পূর্ব জিনজিয়াংয়ের হামি-তুর্পান নিম্নচাপে নেমে এসেছে, যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে -১৫৪ মিটার নীচে অবস্থিত আইডিং হ্রদের শুকনো হ্রদতল চীনের সর্বনিম্ন পৃষ্ঠতল এবং বিশ্বের তৃতীয় সর্বনিম্ন পৃষ্ঠতল । ৪৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা পৌঁছে যাওয়ায়, হ্রদের তলদেশ চীনের অন্যতম উষ্ণ স্থান হিসেবে স্থান পেয়েছে। তিয়ান শানের উত্তরে জিনজিয়াংয়ের দ্বিতীয় বৃহৎ অববাহিকা, জুঙ্গার, যেখানে গুরবানতুংগুত মরুভূমি রয়েছে। জঙ্গার অববাহিকা উত্তরে আলতাই পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত, যা জিনজিয়াংকে রাশিয়া এবং মঙ্গোলিয়া থেকে পৃথক করে।

তিব্বতীয় মালভূমির উত্তর-পূর্বে, আলতুন শান - কিলিয়ান পর্বতমালা কুনলুন থেকে শাখা-প্রশাখা হয়ে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত একটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী তৈরি করে। উত্তর কিংহাইয়ের মাঝখানে কাইদাম অববাহিকা রয়েছে, যার উচ্চতা ২,৬০০-৩,০০০ মিটার এবং অসংখ্য লোনা ও লবণাক্ত হ্রদ রয়েছে। কিলিয়ানের উত্তরে গানসুর হেক্সি করিডোর অবস্থিত, এটি জিনজিয়াং এবং চীনের মধ্যে একটি প্রাকৃতিক পথ যা প্রাচীন সিল্ক রোডের অংশ ছিল এবং আধুনিক মহাসড়ক এবং রেললাইন দ্বারা জিনজিয়াং পর্যন্ত অতিক্রম করে। আরও উত্তরে, ৯০০ থেকে ১,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলীয় মালভূমি, চীনের মেরুদণ্ডের উত্তরে প্রসারিত হয়ে উত্তর-পূর্ব চীনের বৃহত্তর হিংগান পর্বতমালায় পরিণত হয়।

কিনলিং এবং অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ান মালভূমির মধ্যে অবস্থিত লোয়েস মালভূমি, যা বিশ্বের বৃহত্তম, ৬,৫০,০০০ কিমি (২,৫০,০০০ মা) জুড়ে বিস্তৃত। শানসি, গানসু এবং শানসি প্রদেশের কিছু অংশ এবং নিংজিয়া -হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কিছু অংশে। মালভূমিটি ১,০০০-১,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং এটি লোয়েস, হলুদাভ, আলগা মাটিতে ভরা যা বাতাসে সহজেই চলাচল করে। ক্ষয়প্রাপ্ত লোয়েস পলির কারণেই হলুদ নদীর রঙ এবং নামকরণ হয়েছে। লোয়েস মালভূমি পূর্বে শানসির লুলিয়াং পর্বত দ্বারা আবদ্ধ, যার ফেন নদীর তীরে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত একটি সরু অববাহিকা রয়েছে। আরও পূর্বে হেবেইয়ের তাইহাং পর্বতমালা রয়েছে, যা উত্তর চীনের প্রধান ভূ-প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য।

Thumb
জিনজিয়াংয়ের বেইঙ্গোলিন মঙ্গোল স্বায়ত্তশাসিত প্রিফেকচারের হেজিং কাউন্টির বায়ান বুলাক তৃণভূমি
Remove ads

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads