শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
জন গডার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
জন ডগলাস ক্লদ গডার্ড, ওবিই (ইংরেজি: John Goddard; জন্ম: ২১ এপ্রিল, ১৯১৯ - মৃত্যু: ২৬ আগস্ট, ১৯৮৭) বার্বাডোসের সেন্ট মাইকেলের ফন্তাবেলে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৭ সালের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব করেন জন গডার্ড।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বার্বাডোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম ও অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি।
Remove ads
প্রারম্ভিক জীবন
সেন্ট মাইকেলের ফন্তাবেলে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী গডার্ডের পরিবার বার্বাডোসের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী।[১] বার্বাডোসের লজ স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি ক্রিকেট, ফুটবল ও অ্যাথলেটিকসে তার ক্রীড়ানৈপুণ্য তুলে ধরেন।[২]
১৯৩৬-৩৭ থেকে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুম পর্যন্ত বার্বাডোসের পক্ষে খেলেন। মাঝারীসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯৪২-৪৩ থেকে ১৯৪৬-৪৭ সময়কালের মধ্যে পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি করেন। এ সময়ে ১২ খেলায় অংশ নিয়ে ৬৭.৭২ গড়ে ১,২১৯ রান তুলেন। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২১৮ তুলেন ত্রিনিদাদের বিপক্ষে। ১৯৪৩-৪৪ মৌসুমের ঐ খেলায় ফ্রাঙ্ক ওরেলের সাথে চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ে ৪০৪ মিনিটে তারা অপরাজিত ৫০২ রান তুলেন।[৩] ১৯৪৬-৪৭ থেকে অবসরগ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত বার্বাডোসের অধিনায়কত্ব করেন তিনি।
Remove ads
টেস্ট ক্রিকেট
সারাংশ
প্রসঙ্গ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার টেস্ট অভিষেক হয়। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে ইংল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করে। সিরিজের চার টেস্টের প্রত্যেকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। তন্মধ্যে, তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে দলের অধিনায়কত্ব লাভের সুযোগ ঘটে তার। ব্যাটিংয়ের তুলনায় মিডিয়াম-পেস অফ-স্পিন বোলিংয়েই অধিকতর সফলতা পান। তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানদেরকে বিদায় করে ৫/৩১ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।[৪] সমগ্র সিরিজে ২৬.০৯ গড়ে ১১ উইকেট এবং ২৪.৪০ গড়ে ১২২ রান সংগ্রহ করেন তিনি। তবে, তার অধিনায়কত্বে দল প্রভূতঃ সফলকাম হয়। প্রথম দুই টেস্ট ড্রয়ে পরিণত হয়। তবে, তার অধিনায়কত্বে শেষ দুই টেস্টে খুব সহজেই সফরকারী দলকে পরাজিত করতে সক্ষম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। তৃতীয় টেস্টের পর উইজডেন মন্তব্য করে যে, প্রকৃত অর্থেই সুযোগ্য অধিনায়কের সন্ধান পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল।[৫] চতুর্থ টেস্টের পর উজ্জ্বীবনী শক্তি অধিকারী নেতৃত্বরূপে আখ্যায়িত করা হয় ও তাকে সেরা অধিনায়করূপে ঘোষণা করা হয়।[৬]
১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে গডার্ডের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। পাঁচ টেস্টের ঐ সিরিজে তারা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। উইজডেন মন্তব্য করে যে, গডার্ডের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ব্যাপক অনুপ্রেরণা পেয়েছে। বিবেচনাপ্রসূত দৃষ্টিভঙ্গী, প্রতিভাবান খেলোয়াড় ও দক্ষ মন্ত্রণাদাতা হিসেবে তিনি দলকে সূচারূরূপে পরিচালনা করেছেন ও তাদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে এনেছেন।[৭] সিরিজে ৪৭.৫০ গড়ে ১৯০ রান ও ৩৯.০০ গড়ে ৯ উইকেট পান তিনি।
১৯৫০ সালে ইংল্যান্ড সফরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। পূর্ববর্তী তিনটি সফরে তারা কোন টেস্টে জয়লাভ না করলেও এবার তারা ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ করায়ত্ত্ব করে। উইজডেন মন্তব্য করে যে, যে-কোন দলের অধিনায়কের জন্যেই দায়িত্ববোধ পালন করা বেশ কষ্টকর। গডার্ড তার ব্যক্তিত্বগুণে তা প্রদর্শন করেছেন ও মাঠ ও মাঠের বাইরে তার সঙ্গীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। তারা সকলেই তার প্রতি আস্থা রেখেছিল। কোন প্রশ্নই আসে না যে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্রিকেটের বিস্তারে তার নেতৃত্ববোধ অনেকাংশে প্রভাব ফেলেছে।[৮] আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬.৫০ গড়ে মাত্র ১০৬ রান তুলেন ও চার টেস্টে মাত্র ৭৪.৪ ওভার বোলিং করে ২০.৩৩ গড়ে ৬ উইকেট দখল করেন।
এ পর্যায়ে গডার্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ছয়টিতে জয় ও কেবলমাত্র একটিতে পরাজয়ের স্বাদ আস্বাদন করান। ১৯৫১ সালে সম্মানসূচক ওবিই উপাধি লাভ করেন জন গডার্ড।[৯]
১৯৫১-৫২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন ও দলকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে ভূমিকা রাখেন। পঞ্চম টেস্টে মাঠে নামেননি। ফলে, জেফ স্টলমেয়ার দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করলেও ২০২ রানে পরাজিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে দুই টেস্টের সিরিজ জয় করেন ১-০ ব্যবধানে। ছয় টেস্টে ২৬.০০ গড়ে ১৮২ রান ও ৩২.২০ গড়ে ৫ উইকেট পান তিনি।
Remove ads
বিতর্ক
সারাংশ
প্রসঙ্গ
এ সময় তার অধিনায়কত্ব নিয়ে গুঞ্জনের সূত্রপাত হতে থাকে। মেলবোর্নের চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক উইকেটের জয়ে বিতর্ক শুরু হয়। গডার্ড স্টলমেয়ারের সাথে ফিল্ডিং করা থেকে বিরত থাকেন ও জেরি গোমেজ বল করতে অস্বীকৃতি জানান ও ৩৯ ওভার বোলিংকারী সনি রামাদিন ৩ উইকেট পেলেও রাগে অগ্নিশর্মা ধারণ করে মাঠ থেকে চলে যান।[১০] এ সফরের পর ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে দলের সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকারী স্টলমেয়ার বলেন যে, ১৯৫০ সালের সফরে দলের সফলতায় গডার্ডই কেবলমাত্র নিজের কৃতিত্ব প্রদর্শনে অগ্রসর হয়েছেন। দলের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়েরা এ কৃতিত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তার এ মন্তব্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে দীর্ঘস্থায়ী মনোবল হারায় ও দ্বিধাবিভক্তিতে ফেলে দেয়।[১১] ১৯৫৭ সালে গডার্ডকে ইংল্যান্ড সফরে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হলে স্টলমেয়ার চিরতরে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানান।
১৯৫২-৫৩ সালে সফরকারী ভারত, ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ইংল্যান্ড কিংবা ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেননি। অধিকাংশ সময়ই স্টলমেয়ার দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরে দলের খেলোয়াড়-ব্যবস্থাপক হিসেবে তার দলে প্রত্যাবর্তন ঘটে। দলে ডেনিস অ্যাটকিনসন অধিনায়ক ছিলেন ও স্টলমেয়ার সফরে যাননি। চার খেলার সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে খেলেন তিনি। একবার আউট হয়ে সর্বমোট ১৪৭ রান তুলেন। ক্রাইস্টচার্চের দ্বিতীয় টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৩* রান করেন। দলের সংগ্রহ ১৬৯/৬ থাকাবস্থায় সপ্তম উইকেটে ডেনিস অ্যাটকিনসনের সাথে মূল্যবান ১৪৩ রান যুক্ত করেন।[১২] তিন টেস্টের সবগুলোতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় পায়। তবে, চতুর্থ টেস্টে দল হেরে যায় যাতে গডার্ড অংশ নেননি।
১৯৫৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান। পাঁচ খেলার সিরিজে দল ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। গডার্ড নিজেই করেন ১৬.০০ গড়ে মাত্র ১১২ রান ও ৬৪.০০ গড়ে মাত্র ২ উইকেট লাভ করেন। তবে, তার দৃঢ় প্রত্যয়ের ফলে প্রথম ও তৃতীয় টেস্ট ড্রয়ের দিকে নিয়ে যায়। তন্মধ্যে, তৃতীয় টেস্টে ২৪৭ রানের ফলো-অনে থাকা অবস্থায় দলের সংগ্রহ ১৯৪/৬ হয়। এ সময় গডার্ড মাঠে নামেন ও ২১৫ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে মহামূল্যবান ৬১ রান তুলেন। কোলি স্মিথের সাথে ১৫৪ রানের জুটি গড়েন তিনি। ফলে ইংল্যান্ডকে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান সংগ্রহে স্বল্প সময় নির্ধারণ করা হয়।[১৩]
Remove ads
খেলার ধরন
অধিনায়ক হিসেবে ২২ টেস্টের মধ্যে আট জয়, সাত পরাজয় ও সাত ড্রয়ের মধ্যে খেলোয়াড়ী জীবন সম্পন্ন করেন। তার অধিনায়কত্ববোধ, ব্যাটিং ও বোলিং বাদে তিনি চমৎকার ফিল্ডিং করতেন। উইকেটের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করেতেন, বিশেষ করে সিলি মিড-অফে।[১৪]
২৬ আগস্ট, ১৯৮৭ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে লন্ডনে জন গডার্ডের দেহাবসান ঘটে। এ সময় তিনি এমসিসির দ্বি-শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।[১৫]
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads