শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
দীন-ই-ইলাহি
সম্রাট আকবরের দ্বারা প্রচারিত মতবাদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
দীন-ই-ইলাহি, (ফার্সি: دین الهی lit. "ঈশ্বরের ধর্ম")[১][২] উচ্চারনভেদে দ্বীন-ই-ইলাহী ১৫৮২ সালে মুঘল বাদশাহ আকবর প্রবর্তিত একটি ধর্ম। তিনি ধর্মীয় বিষয়ে গবেষণার জন্য ১৫৭৫ খ্রী আকবর ফতেপুর সিক্রিতে একটা উপাসনা ঘর তৈরী করেন। যা 'ধর্ম সভা' নামে পরিচিত। সেখানে তিনি বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতদের কথা শুনতেন। অবশেষে সকল ধর্মের সারকথা নিয়ে তিনি নতুন একটি নিরপেক্ষ ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই 'দীন-ই-ইলাহি' (১৫৮২) নামে পরিচিত। যার পুরো অর্থ ঈশ্বরের (স্রষ্টা অর্থে) প্রতি বিশ্বাস।

Remove ads
মূল নীতিসমূহ
দীন-ই-ইলাহি আকবরের উদ্ভাবিত নতুন কোনো ধর্মমত নয়। ইবাদত খানার আলোচনা থেকে তিনি উপলব্ধি করেন সকল ধর্মই সত্য এবং এদের মূল উদ্দেশ্য মানুষের নৈতিক চরিত্র সুদৃঢ় করা। আকবরের সভাসদ আবুল ফজল দীন-ই-ইলাহি কথাটির পরিবর্তে তৌহিদ-ই-ইলাহি কথাটি ব্যবহার করেছেন। যার অর্থ ঐশ্বরিক একেশ্বরবাদ।[৩] এই ধর্মভাবনার মূল নীতিগুলি ছিল খুবই সরল এবং অনাড়ম্বর। মূলত এই ধর্ম গ্রহণের কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা। প্রত্যেক রবিবার (তার ও তার পিতার জন্মবারে) তিনি সকলকে এই ধর্মে দীক্ষিত করতেন। এই ধর্মমত অনুসারে সকল অনুগামীরা তার প্রতি অনুগত থাকবে, এবং সবকিছু কুরবান দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে। আরো বলা হয়, এই ধর্ম অনুসারে আকবর ঈশ্বরের ইচ্ছায় শাসন করছেন, এবং প্রজাদের প্রতি তিনি পিতৃসুলভ।
Remove ads
দীন-ই-ইলাহির শিষ্য
উল্লেখ্য, আকবরের এই সমন্বয়বাদী ধর্মমতের প্রাথমিক গ্রহণকারীরা ছিলেন তাঁরই সভাসদ। যদিও এই ধর্মমত খুব একটা প্রচলিত হয়নি। এটি আকবরের দরবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। দীন-ই-এলাহির প্রাথমিক শিষ্যরা হলেন:[২]
- বীরবল
- যুবরাজ সেলিম
- আবুল ফজল ইবন মুবারক
- যুবরাজ মুরাদ
- কাশিম খান
- আজম খান
- শেখ মুবারাক
- আবদুস সামাদ
- মোল্লা শেখ মোহাম্মদ শাহাদাত
- সুফি আহমেদ
- মির শরিফ আমল
- সুলতান খাজা
- মির্জা সদর-উদ-দিন
- তাকি সুস্তার
- শেখজাদা গোসলা বেনারসি
- সদর জাহান
- সদর জাহানের প্রথম ছেলে
- সদর জাহানের দ্বিতীয় ছেলে
- শেখ ফয়েজি
- জাফর বেগ
Remove ads
সমালোচনা
আকবরের দীন ই ইলাহি তাঁর ধর্মভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। আধুনিক ঐতিহাসিক এবং গবেষকেরা সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে একে ব্যাখ্যা করেন। তাঁদের মতে এটি আকবরের রাজনৈতিক সুবিধাবাদের একটি অঙ্গ ছিল। অধ্যাপক সতীশ চন্দ্রের মতে, দীন ই ইলাহির মূল উদ্দেশ্য ছিল সভাসদ এবং প্রজাদের আনুগত্য এবং বিশ্বাস আদায় করা। তিনি আবুল ফজলের বর্ণনা আলোচনা করে জানিয়েছেন, আকবর প্রত্যহ সাধারণ মানুষদের আনা জলের পেয়ালায় ফুঁ দিতেন, এর ফলে তাঁরা মনে করত সম্রাট যখন জল ফুঁ দিয়েছেন তখন অবশ্যই তাদের রোগ ভালো হয়ে যাবে।[৪] ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বলেন, দীন ই ইলাহি ছিল আকবরের মূর্খামির পরিচায়ক। এটি অস্বীকার করার কোনো স্থান নেই যে, বহু স্বার্থান্বেষী লোকজন নিজের সুবিধার জন্য এতে যোগদান করেন, তবুও বলা যায় আকবর পরিকল্পিতভাবে তাঁর সিংহাসনের চারিপাশে অনুগত আমলাদের একটি সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে পেরেছিলেন।[৫]
আরোও দেখুন
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads