শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

ধর্মদর্শন

ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিত ধারণা এবং কেন্দ্রীয় বিষয় নিয়ে দার্শনিক অনুসন্ধান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

Remove ads

ধর্মদর্শন হলো ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে জড়িত কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু এবং ধারণার দার্শনিক চিন্তাভাবন।[] ধর্মদর্শন বিষয়ে দার্শনিক আলোচনা প্রাচীন কাল থেকেই হয় এবং দর্শনের এই বিষয় প্রাচীন গ্রন্থগুলিতেও পাওয়া যায়।

স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফিলোসফি অনুসারে, ধর্মদর্শন হচ্ছে, "ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্কিত ধারণা এবং কেন্দ্রীয় বিষয় নিয়ে দার্শনিক অনুসন্ধান"।[] এটি একটি প্রাচীন পাঠ্য বিষয়, যা অনেক প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে দার্শনিক আলোচনায় পাওয়া যায়, এবং এটি দর্শনের অন্যান্য শাখা যেমন অধিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্বনীতিশাস্ত্রের সাথে সম্পর্কিত।[]

ধর্মদর্শন ধর্মীয় দর্শন থেকে আলাদা কারণ ধর্মদর্শন ধর্মীয় দর্শনের মত কোন নির্দিষ্ট ধর্মব্যবস্থার সমস্যাগুলোর পরীক্ষা নীরিক্ষা করে না, বরং ধর্মদর্শন ধর্মের সামগ্রিক প্রকৃতি নিয়েই বিভিন্ন আলোচনা করে। ধর্মদর্শনের পাঠ এমনভাবে গড়ে উঠেছে যাতে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয়েই নিরাবেগভাবে এই বিষয়ে পাঠ করতে পারে।[]

Remove ads

পূর্বালোচনা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

দার্শনিক উইলিয়াম এল. রো ধর্মের দর্শনের সংজ্ঞা দেন এভাবেঃ “মৌলিক ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধারণার সমালোচনামূলক পরীক্ষণ”।[] ধর্মের দর্শনের আওতায় যেসব বিষয়াদি পরেঃ ঈশ্বরের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের বিশ্বাস, বিভিন্নরকমের ধর্মীয় অভিজ্ঞতা, বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যকার সম্পর্ক, ভালো ও খারাপ – এর প্রকৃতি ও পরিসর এবং জন্ম, ইতিহাস ও মৃত্যুর ধর্মীয় ব্যাখ্যা।[] ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার নৈতিক অর্থ, বিশ্বাসের এর সাথে যুক্তি, অভিজ্ঞতা আর ঐতিহ্যের সম্পর্ক; অলৌকিকতা, পবিত্র বাণী, বৈরাগ্যবাদ, ক্ষমতা আর পরিত্রাণ – এসব জিনিসও ধর্মের দর্শনের আওতায় পড়ে।[]

উনিশ শতক এর আগ পর্যন্ত ‘ধর্মের দর্শন’ শব্দটি পশ্চিমে ব্যবহার হয় নি।[] বেশিরভাগ পূর্বাধুনিক ও প্রথমদিককার আধুনিক দার্শনিক কাজসমূহ ধর্মীয় সারমর্ম ও ‘অ-ধর্মীয়’ দার্শনিক প্রশ্নসমূহের এক সংমিশ্রণ ছিল। উদাহরণস্বরূপ, এশিয়ায় হিন্দু উপনিষদ, দাওবাদ, কনফুসিয়াসবাদ আর বৌদ্ধধর্ম সংক্রান্ত কিতাবাদি ছিল।[] গ্রীক দর্শন, যেমন পিথাগোরাসবাদ, বৈরাগ্যদর্শন এর মধ্যে দেবতা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারণা ছিল, আর মধ্যযুগীয় দর্শন শক্তভাবে তিনটি ইব্রাহিমি এক ঈশ্বরবাদী ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত। পশ্চিম বিশ্বে প্রথম দিককার আধুনিক দার্শনিকগণ যথা থমাস হোব্‌স, জন লক আর জর্জ বার্কিলি নানধরনের ইহজাগতিক বিষয়ের পাশাপাশি ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়েও আলোচনা করেন।[]

ধর্মের দর্শন, ধর্মতত্ত্ব হতে এ দিক থেকে আলাদা যে, ধর্মতত্ত্বে “সমালোচনামূলক চিন্তাধারা ধর্মীয় বিশ্বাস এর উপর ভিত্তিকৃত”।[১০] আবার, “ধর্মতত্ত্ব কোন কর্তৃত্বশালীর উপর নির্ভর করে যে চিন্তাভাবনা, ভাবপ্রকাশ ও সাক্ষী হওয়ার ব্যাপার সমূহ নিয়ন্ত্রণ করে ... [যখন] দর্শন তার যুক্তিসমূহ ভিত্তি করে সময়হীন প্রমাণের উপর”।[১১]

প্রাচীন সেরামানের দার্শনিকগণ দ্বারা ধর্মের দর্শনের কিছু অংশকে অধিবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অ্যারিস্টটলের অধিবিদ্যায় অন্তহীন গতির জন্য মূল কারণ ছিল একটি অচালিত চালক, যে, প্রবৃত্তি বা চিন্তার ব্যবহার করে গতিকে গতিময় করে নিজে গতিশীল হওয়া ছাড়া।[১২] এই অচালিত চালক, অ্যারিস্টটল এর মতে, হলেন ঈশ্বর, যা ধর্মতত্ত্বের পড়ালেখার বিষয়বস্তু। যদিও দার্শনিকগণ একে ধর্মের দর্শনের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন আর স্বাভাবিকভাবে একে পড়ালেখার আলাদা এক বিষয় হিসেবে দেখা হয়, তবু কিছু মানুষ, বিশেষ করে ক্যাথলিক দার্শনিকগণ দ্বারা এখনও একে অধিবিদ্যার অংশ হিসেবে দেখা হয়।

Remove ads

অধিবিদ্যার অংশ হিসেবে

Thumb
এরিস্টোটল

ধর্মদর্শনের কিছু বিষয় প্রাচীন দর্শনের সময় থেকেই অধিবিদ্যার অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এরিস্টোটলের মেটাফিজিক্স-এ শাশ্বত গতির পূর্বজ কারণ হিসেবে |"নিশ্চল চালক"-কে (unmoved mover) দায়ী করেছেন, যিনি আকাঙ্খার বা চিন্তার বস্তুর মত, নিজে না চালিত হয়ে অন্য বস্তুকে চালিত করে।[১২] এরিস্টোটলের মতে, ঈশ্বর ধর্মতত্ত্বে আলোচনার বিষয়। যাইহোক, আজ দার্শনিকগণ এই ঈশ্বর নিয়ে আলোচনার জন্য "ধর্মদর্শন" শব্দটি ব্যবহার করেন, এবং একে আলোচনার ভিন্ন ক্ষেত্র হিসেবে দেখা হয়। যদিও একে অনেকে, বিশেষ করে ক্যাথলিক দার্শনিকগণ অধিবিদ্যার মধ্যে ফেলেন।

Remove ads

আরও দেখুন

টীকা ও তথ্যসূত্র

বহিঃস্থ সূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads