শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
পোল্যান্ড
ইউরোপ মহাদেশের মধ্যস্থলের একটি রাষ্ট্র ও ঐতিহাসিক অঞ্চল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
পোল্যান্ড (পোলীয়: Polska পল্স্কা), সরকারিভাবে পোল্যান্ড প্রজাতন্ত্র (রেচ্পস্পলিতা পল্স্কা) ইউরোপ মহাদেশের মধ্যস্থলের একটি রাষ্ট্র ও ঐতিহাসিক অঞ্চল। এর রাজধানীর নাম ওয়ার্শ। এর পশ্চিমে জার্মানি, দক্ষিণে চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়া, পূর্বে ইউক্রেন ও বেলারুস, এবং উত্তরে বাল্টিক সাগর, লিথুয়ানিয়া, ও রাশিয়া অবস্থিত। বাল্টিক সাগরে পোল্যান্ডের সাথে ডেনমার্কের জলসীমান্ত রয়েছে। পোল্যান্ড ২০০৪ সালের ১লা মে তারিখ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

রেচ্পস্পলিতা (rzeczpospolita) নামটির ঐতিহাসিক ভাবে ১৬শ শতক হতে পোল্যান্ড-লিথুয়ানিয়া কমনওয়েলথের সময় হতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কমিউনিস্ট শাসনামলে (১৯৫২-১৯৮৯) দেশটির সরকারি নাম ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী পোল্যান্ড (পোলীয় ভাষায় Rzeczpospolita Ludowa)।
Remove ads
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ

স্লাভিক উপজাতিরা প্রথম দেশটিতে বসতি স্থাপন করে। দশম শতাব্দীতে পিয়াস্ট রাজবংশের শাসনামলে রাজ্য হিসেবে পোল্যান্ড সর্বপ্রথম আত্মপ্রকাশ করে। ৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাপ্টিজম মতাবলম্বীরা দেশটিতে আসে এবং এ সময়ই তাদের প্রচেষ্টায় দেশটিতে খ্রিস্টধর্মের ব্যাপক প্রসার ঘটে।
ষোড়শ শতকের শেষের দিককে পোল্যান্ডের ইতিহাসে স্বর্ণযুগ বলা চলে। এ সময়ই জাগিয়েলনীয় রাজবংশের তত্ত্বাবধানে পোল্যান্ড ইউরোপের সবচেয়ে বৃহৎ, সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ১৩৮৫ সালে পোলিশদের হাত ধরে পাশের রাজ্য লুথিয়ানায়ও খ্রিস্টধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটে। তখন পোলিশ-লিথুনিয়ান ইউনিয়ন গঠিত হয়, যা ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজ্য পোল্যান্ড-লুথিয়ানার ওপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চেষ্টা করে।
১৭৯১ সালের দিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র রাশিয়া, অস্ট্রিয়া ও প্রুশিয়া পোল্যান্ডকে অধিকার করে নিজেদের মধ্যে পোল্যান্ড রাজ্যটি ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটি আবার স্বাধীনতার স্বাদ পায়। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আবার পোল্যান্ডের ওপর আঘাত আসে।
১৯২০ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত ডানজিগ একটি মুক্ত শহর হিসেবে বিরাজ করে।
নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণ
পোল্যান্ডের বিভাজন নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও নাৎসি জার্মানি-র মধ্যে ২৩ অগাস্ট, ১৯৩৯ সালে একটি অহিংস সন্ধি হয় , যা মলোটভ-রিব্বেনট্রপ চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তির সূত্র ধরে ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯ সালে নাৎসি জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে দখল করে নেয়। পোলিশরা ব্রিটিশ-ফরাসি সাহায্য চাইলে এর মধ্য দিয়ে সূত্রপাত ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। ১৭ সেপ্টেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন পোল্যান্ডে অপ্রত্যাশিত আক্রমণ করে। ২৮ সেপ্টেম্বর নাৎসি জার্মানি দ্বারা ওয়ারশ-এর পতন হয়। দেশটি আবার পূর্ব ও পশ্চিমে ভাগ হয়ে যায়। নির্বাসিত পোলিশ সরকার প্রথমে ফ্রান্স ও পরবর্তীতে লন্ডন থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে।
আডলফ হিটলার-এর নির্দেশে ৬টি জার্মান নির্মূল শিবির তৈরী করা হয়। ইহুদি প্রশ্নের সমাধানে এই নির্মূল শিবির-গুলো মৃত্যু কেন্দ্রে পরিণত হয়। শুরু হয় ইহুদি গণহত্যা । কেন্দ্রগুলোর মধ্যে প্রধান ছিলো অউশভিৎজ় নির্মূল শিবির যা বর্তমানে ক্ষুদ্রতর-পোল্যান্ড এর ক্রাকোউ থেকে ৬০ কিমি পশ্চিমে অঁস্বীসিম শহরে অবস্হিত । এর ৩টি মূল শাখা অউশভিৎজ়-১ , অউশভিৎজ়- ২-বির্কেনাউ এবং অউশভিৎজ়- ৩-মনোউইটজ। গ্যাস-চেম্বার, বিষাক্ত ইঞ্জেকশন— সর্বত্র মৃত্যুর আয়োজন। গ্যাস চেম্বারে পাঠিয়ে লক্ষ লক্ষ ইহুদিকে এখানে হত্যা করেছে স্চুত্জস্টাফেল(এসএস) গার্ডরা। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ এই পাঁচ বছরে ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল এখানে। ফ্রান্স, হল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ডের নানান প্রান্ত থেকে দলে দলে ইহুদিদের পাঠানো হত এই ক্যাম্পে। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকে আসার সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করা হত। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচেছিলেন যাঁরা, তাঁদের সংখ্যা নিহতদের তুলনায় নেহাতই অল্প। হিটলারের অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন রুডলফ হস ছিলেন ক্যাম্পের প্রথম প্রধানকর্তা এবং ইয়োসেফ ম্যাঙ্গেলা এই ক্যাম্পের প্রধান নিশৃংস চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৪৫-এর ২৭ জানুয়ারি সোভিয়েট সেনার হাতে মুক্তি পায় অউশভিৎজ়। [৯]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, পোল্যান্ড সোভিয়েত ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণাধীন এক রাজ্য কমিউনিস্ট পিপলস রিপাবলিক পোল্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকে। ফলে পোল্যান্ড তার বহু বছরের বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার যে সম্মিলিত ঐতিহ্য ছিল, তা থেকে বিচ্যুত হতে থাকে।
পরবর্তীকালে
১৯৮০ সালে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোতে প্রথম স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন পোলিশ নেতা লেচ ওয়ালিসা। মূলত তার নেতৃত্বে পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণ ভেঙে পড়ে। ১৯৮৯ সালে তৃতীয় পোলিশ প্রজাতন্ত্রের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পোল্যান্ড সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র থেকে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রবেশ করে, প্রতিষ্ঠিত হয় উদার সংসদীয় গণতন্ত্র। ১৯৯৭ সালে দেশটির নতুন সংবিধান রচিত হয়। ১৯৯৯ সালে ন্যাটোর সদস্য হয় দেশটি এবং ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করে।
Remove ads
রাজনীতি
প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
ভূগোল
সারাংশ
প্রসঙ্গ
- পজনান
পজনান পোল্যান্ডের পুরনো রাজধানী। শহরটির অন্যতম স্থান ওল্ড টাউন স্কোয়ার। এখানকার বিভিন্ন স্থাপনাতে প্রাচীনকালের গোথিক স্থাপত্য দেখা যায়, যা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। টাউন স্কয়ারের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় ছাগলের নানা স্থাপত্য। এই কারণে পজনান শহরকে বলা হয়ে থাকে, ‘দ্য সিটি অব হেড বাটিং গোটস।’
- ভ্রচুয়াব
ওডার নদীর ধারে অবস্থিত পশ্চিম পোল্যান্ডের এক বৃহত্তম শহর রক্লো । শতাব্দী ধরে প্রিসিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানি এবং বোহেমিয়াদের দ্বারা শাসিত হয়েছে এই শহর। কিন্তু ১৯৪৫ সালের পর থেকে শহরটি পোল্যান্ডের অংশ হয়ে গেছে। শহরটিতে রয়েছে অনন্যসাধারণ কিছু স্থাপত্য। তবে শহরের প্রধান আকর্ষণ মার্কেট স্কয়ার, ওল্ড টাউন হল ও সেন্ট এলিজাবেথ চার্চ। এই শহরটির চারপাশ দেখার জন্য চার্চের সাথে রয়েছে একটি অবজারভেশন টাওয়ার। এখানেই রয়েছে পোল্যান্ডের বৃহত্তম চিড়িয়াখানা। পর্যটকদের জন্য ওডার নদীতে নৌকায় চেপে শহরটির চারদিক ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
- ওয়ারস
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারস শাস্ত্রীয় সুরকার ফ্রেড্রিক চপ্পিনের জন্মস্থান। দ্বাদশ শতকের কাছকাছি সময়ে শহরটির গোড়াপত্তন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শহরটির অনেকটাই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। বিশ্বযুদ্ধের পর শহরটিকে আবার নতুনভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে শহরটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। শহরের ওল্ড টাউন স্কোয়ারের মাঝখানে রয়েছে ঢাল-তলোয়ার হাতে মারমুখী মৎস্যকন্যার এক বিশাল স্থাপত্য। এই স্থাপত্যের কারণে ওয়ারসকে বলা হয় ‘দ্য সিটি অফ মারমেইড’। এখানে রয়েছে কোপারনিকাস বিজ্ঞান কেন্দ্র।
- তোরুন
ভিস্তুলা নদীর ধারে অবস্থিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী কপারনিকাসের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত তোরান শহর। শহরটিতে এখনও মধ্যযুগের বেশ কয়েকটি পুরনো স্থাপনা রয়েছে। শহরের টাউন হলটি ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত। ঐ সময়ের অনেক পুরাতন গির্জা, ক্যাথেড্রাল পর্যটকদের দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় স্থান।
- চেষ্টোহোভা
জাস্না গোরা মনেস্ট্রিতে অবস্থিত শহরটির গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান ব্ল্যাক ম্যাডোনার স্থাপত্য।এটা পোল্যান্ডের জাতীয় ঐতিহাসিক মনুমেন্টগুলোর একটি। ব্ল্যাক ম্যাডোনা স্থাপত্যটিতে রয়েছে কুমারী মেরি এবং তার কোলে শিশু যীশু, দুজনেই কৃষ্ণাঙ্গ। পোলিশদের বিশ্বাস, ব্ল্যাক ম্যাডোনার কাছে কোনো কিছু তীব্রভাবে চাইলে তিনি তা পূরণ করেন।
- ক্র্যাকো
পোল্যান্ডে ওয়াওয়েল পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ক্র্যাকো শহরটি। ক্র্যাকোকে ধনীদের শহর বলা হয়ে থাকে। এটি পোল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। সপ্তম শতাব্দীতে একটি গ্রাম হিসেবে ক্র্যাকো পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে শহরটি সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্য অধিক পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, নাৎসিরা ইহুদীদের ধরে এনে ক্র্যাকোর একটি ঘাঁটিতে প্রাথমিকভাবে রাখার ব্যবস্থা করেছিল এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হতো। শহরটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভিস্তুলা নদী। পুরাতন শহরের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ক্র্যাকো।
- ম্যালবর্ক
মধ্যযুগের নিদর্শনের এক শহর ম্যালবর্ক এর জার্মানীদের দেয়া ‘মেনেনবুর্গ’ নামটি সর্বাধিক পরিচিত। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে টিউটনিক সাম্রাজ্য এখানে তাদের সদর দফতর প্রতিষ্ঠা করে। মধ্যযুগীয় নানা নিদর্শনের সাক্ষী এই ম্যালবর্ক। এখানে রয়েছে ইউরোপের বৃহত্তম গোথিক দুর্গ, যার নামকরণ করা হয়েছে ভার্জিন মেরির নামে। শহরটিতে রয়েছে তিনটি ঐতিহাসিক দুর্গ। এগুলো বিশ্বের প্রথম ইটের তৈরি দুর্গ। এই দুর্গ নির্মাণে নাকি আনুমানিক ২৩০ বছর লেগেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুর্গের অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে পেলিশ সরকার তা পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হয়।
- গ্ডানস্ক
ডানচিহ নামেও শহরটি পরিচিত। উত্তর পোল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর এবং প্রধান বন্দর এই গ্ডানস্ক। বাল্টিক সাগরের তীরে অবস্থিত দশম শতকের কাছাকাছি সময়ে নগরটি প্রতিষ্ঠিত। শহরটির এক মিশ্র রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। বিভিন্ন সময়ে শহরটি জার্মানি এবং পোল্যান্ডের অন্তর্গত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পোল্যান্ডের স্থায়ী এক অংশ হিসেবে শহরটি আত্মপ্রকাশ করে। শহরটিতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। পোলিশ রাজাদের ভ্রমণের জন্য নির্মিত রয়েল রোড, সেন্ট মেরি গির্জা এবং বিশ্বের বৃহত্তম ইট গির্জা অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
Remove ads
অর্থনীতি
জনসংখ্যা
সংস্কৃতি
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads