শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

বাতিঘর

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

বাতিঘর
Remove ads

বাতিঘর বা লাইট হাউজ হচ্ছে এমন এক ধরনের সুউচ্চ মিনার আকৃতির দালান যা থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় আলো ফেলে সমুদ্রের জাহাজের নাবিককে দিক নির্দেশনা দেয়া হয় এবং সেই সাথে সমুদ্রের অগভীর অঞ্চল সম্পর্কে নাবিককে সতর্ক করতে বাতিঘর ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সমুদ্র সৈকতের যেসকল এলাকায় প্রচুর প্রবাল রয়েছে এবং যেসকল প্রবালগঠন জাহাজের ক্ষতি সাধন করতে পারে এমন সব সৈকত চিহ্নিত করতে বাতিঘর ব্যবহার হয়ে আসছে।[]

Thumb
ডাঞ্জানিস নতুন বাতিঘর, ক্যান্ট, ইংল্যান্ড
Thumb
আর্জেন্টিনার উশুয়ায় পৃথিবীর শেষ প্রান্তে বাতিঘর
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

প্রাচীন কালের বাতিঘর

প্রাচীন কালে মানুষ সমুদ্রের অগভীর সৈকত আর প্রবাল সৈকত চিহ্নিত করতে পাহাড়ের উপরের আগুনের কুন্ডুলি প্রদর্শন করত। পরে একসময় কাঠ জ্বালিয়ে দূর সমুদ্রের নাবিককে সতর্কবার্তা দেয়া হত। এইভাবে ধীরে ধীরে মানুষ বাতিঘর তৈরি করে। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত ঐতিহাসিক লাইট হাউজ বা বাতিঘর হচ্ছে আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর। এছাড়াও টরিসিলির বাতিঘরের কথা উল্ল্যেখ করা যায়। এটি ১৮৮৭(কারোর মতে ১৮৯৭)সালে নির্মিতি হয়।

এটি(আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর) মিশরে নির্মাণ করা হয়েছিল। ধারণা করা হয় এটি টলেমীয় রাজবংশের সময়ে ২৮০ থেকে ২৪৭ খ্রিঃ পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছিল। এর উচ্চতা ছিল ১২০ থেকে ১৩৭ মিটার। নির্মাণের পর প্রায় শত বর্ষ ধরে এটি পৃথিবীর অন্যতম উচু দালান হিসাবে চিহ্নিত ছিল। পরে ৯৫৬ থেকে ১৩২৩ খ্রিষ্টাব্দে যে কয়টি ভুমিকম্প হয়েছিল তাতে এটি ভেঙ্গে পড়ে। এটি হালিকারণেসাসের মুসলিয়ম এবং গিজার মহা পিরামিডের পরে তৃতীয় মানব নির্মিত প্রাচীন কোন দালান যা পৃথিবীর বুকে টিকে ছিল। পরে এর ইট দিয়ে সিটাডেল অব কোয়েটবি দুর্গ নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে একজন ফরাসি নৃ-বিজ্ঞানি আলেকজান্দ্রিয়ার যে জায়গায় এটি নির্মাণ করা হয়েছিল সেখানকার সমুদ্রের নিচে এর কিছু অবশেষ খুঁজে পান।

এছাড়া প্রাচীনকালে নির্মিত বেশ কিছু বাতিঘর এখনও পৃথিবীর বুকে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে যাদের মধ্যে Tower of Hercules এবং রোমানদের সময়ে নির্মিত ইংল্যান্ডের কেন্টে অবস্থিত ডোবার দুর্গের রোমান লাইট হাউজ অন্যতম।

আধুনিক বাতিঘর

বাতিঘরের আধুনিকায়ন শুরু হয় মুলত ১৮শ শতাব্দী থেকে। তবে ১৬শ শতাব্দীর দিকে ইংলেন্ডের এডিস্টোন বাতিঘর ছিল প্রথম খোলা সমুদ্রের বাতিঘর। এটি প্রথমে কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়ে ছিল। পরে ঝড়ে এটি ভেঙ্গে গেলে পুনরায় এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

বিখ্যাত কয়েকজন বাতিঘর নির্মাতা

বাতিঘর নির্মাতাদের মধ্যে John Smeaton এর নাম প্রায় সকলের কাছেই পরিচিত। তিনি Eddystone Rocks লাইট হাউজের তৃতীয় সংস্করণের নির্মাতা। এছাড়া আরও অনেকে একাধিক লাইট হাউজ নির্মাণের জন্যে বিখ্যাত। তার মধ্যে Robert, Alan, David, Thomas, David Alan, এবং Charles একই পরিবারের সদস্য ছিলেন যারা বংশানুক্রমে বাতিঘর নির্মাতা ছিল।

Remove ads

বাংলাদেশের বাতিঘর

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বাংলাদেশে বাতিঘর মোট ৬ টি। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হচ্ছে কুতুবদিয়া যা একমাত্র দ্বীপ বাতিঘর৷

কুতুবদিয়া বাতিঘর

বাতিঘরের জন্য বিখ্যাত কুতুবদিয়া দ্বীপ। কুতুবদিয়ায় ১৮৪৬ সালে প্রথম বাতিঘর চালু হয়। ইটের সুউচ্চ গাঁথুনির ওপর বিশেষ কৌশলে নির্মিত মূল বাতিঘরটি সাগরে বিলীন হওয়ার পর কিছুটা দূরে লোহার এঙ্গেল দিয়ে বর্তমান বাতিঘরটি তৈরি করা হয়। বর্তমানে এটি ১২০ ফুট উচু। প্রতি ১০ সেকেন্ডে তিনটি সাদা আলোর ঝলকানি দেয় এ লাইট হাউস।

কর্ণফুলী নদীর মোহনার ৪০ মাইল দূরে কুতুবদিয়াতে ১৮৪৬ সালে বাতিঘরটি নির্মাণ করা হয়। জানা যায়, হেয়ার নামের একজন দক্ষ ক্যাপ্টেনের পরিচালনায় ইঞ্জিনিয়ার জেএইচ টু গুডের করা নকশায় এই বাতিঘর নির্মিত হয়েছে। তৎকালীন সময়ে এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৪২৮ টাকা। বাতিঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ভিত্তিভূমিতে পাথর স্থাপন করা হয় এবং ভিত্তির ওপর গড়ে তোলা হয় ১২০ ফুট উচ্চতার টাওয়ার। টাওয়ারটির মাটির নিচে একটি কক্ষ ছিল বলেও জানা যায়। এছাড়া টাওয়ারে ১৫ ফুট উচ্চতার ১৫টি কক্ষ ছিল। সেসময় প্রায় ২২০ কিলোমিটার দূর থেকে জাহাজের নাবিকরা রাতে বাতিঘরের আলো দেখে গন্তব্য ঠিক করতেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নে একটি নতুন বাতিঘর নির্মিত হয়। ইস্পাতের কৌণিক দণ্ড ব্যবহার করে বাতিঘরটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ২৯ এপ্রিল প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে পুনঃ নির্মিত বাতিঘরটি সাগরে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ডিজেলচালিত জেনারেটরের মাধ্যমে ১৫টি ব্যাটারিতে চার্জ করা হয় এবং ওই ব্যাটারির মাধ্যমে বাতিঘরে আলো জ্বালানো হয়।

সেন্টমার্টিন বাতিঘর

সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৯৭৬ সালে বাতিঘর নির্মাণ করা হয়। ফোকাল প্লেন ৩৯ মিটার (১২৮ ফুট); প্রতি ৩০ সেকেন্ডে দুটি সাদা ফ্ল্যাশ। লণ্ঠন এবং গ্যালারীসহ ৩৫ মিটার (১১৫ ফুট) বর্গাকার পিরামিডাল কঙ্কালের টাওয়ার।

কক্সবাজার বাতিঘর

১৯৭৬ সালে কক্সবাজার বাতিঘরটি স্থাপন করা হয়। ফোকাল প্লেন ৫৪ মিটার (১৭৭ ফুট); প্রতি ১৫ এস সাদা ফ্ল্যাশ যা প্রায় ২৪.৫ মাইল পর্যন্ত দেখা যায়৷ প্রায় ১০ মিটার (৩৩ ফুট) কাঠামো, একটি ২ বর্গক্ষেত্রের কংক্রিটের ভবনের ছাদকে কেন্দ্র করে লণ্ঠন এবং গ্যালারীসহ একটি ছোট বর্গাকার কঙ্কাল টাওয়ার।

নরম্যানস পয়েন্ট বাতিঘর

এই বাতিঘরের প্রতি ১৫ সেকেন্ডে বিচ্ছুরিত আলো ১১ মাইল পর্যন্ত দেখা যায়।

পতেঙ্গা বাতিঘর

এই বাতিঘরের প্রতি ৫০০সেকেন্ডে বিচ্ছুরিত সবুজ আলো ১৫ মাইল পর্যন্ত দেখা যায়।[][]

হিরোন পয়েন্ট বাতিঘর

এই বাতিঘর প্রায় ৩৫ মিটার (১১৫ ফুট) উঁচু ।

বাংলাদেশের বাতিঘর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলেঃ []

Remove ads

আরো দেখুন

আনিভা বাতিঘর

বার্ণেগাট বাতিঘর

এডিস্টোন বাতিঘর

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads