শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি

পাকিস্তানী রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি
Remove ads

বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি (উর্দু: بلاول بھٹو زرداری, সিন্ধি: بلاول ڀٽو زرداري‎; জন্ম: ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮) হলেন একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ। তিনি ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ৩৭তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালের মায়ের মৃত্যুর পর থেকে তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো, এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির একমাত্র পুত্র।[]

দ্রুত তথ্য বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ...

মাতৃভাষায় কথা বলতে অনভস্ত্য হওয়া সত্ত্বেও তার মা বেনজির ভুট্টো মর্মান্তিকভাবে খুন হওয়ায় তাকে ৩০ ডিসেম্বর, ২০০৭ সালে তাকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি মনোনীত করা হয়।[] সিন্ধ প্রদেশে বেনজির ভূট্টোর পারিবারিক বাসভবনে বিলাওয়াল জারদারি পাকিস্তান পিপলস পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে বেনজিরের রেখে যাওয়া উইল পড়ে শোনান। বেনজির ভূট্টো তার উইলে দলের সভাপতি পদের জন্য তার স্বামী আসিফ আলি জারদারিকে মনোনীত করেছিলেন কিন্তু জারদারি নিজেই তার ছেলের নাম প্রস্তাব করেন এবং কমিটি তা গ্রহণ করে।[]

Remove ads

প্রারম্ভিক জীবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি রাষ্ট্রীয় সফরে বিলাওয়াল ভুট্টো
Thumb
বিলাওয়াল ভুট্টো ও তার পিতা আসিফ আলি জারদারি

বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির জন্ম ১৯৮৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর করাচির লেডি ডাফরিন হাসপাতালে। তার মা ছিলেন সাবেক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো এবং বাবা পাকিস্তানের বর্তমান রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি[] তিনি পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং তার স্ত্রী নুসরাত ভুট্টোর মাতামহের দিক থেকে নাতি। তার পিতামহ হাকিম আলী জারদারি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য। মায়ের দিক থেকে তিনি রাজনীতিবিদ মুর্তাজা ভুট্টো ও শাহনওয়াজ ভুট্টোর ভাগনে, আর বাবার দিক থেকে তার ফুফু হলেন রাজনীতিবিদ আজরা পিচুহো ও ফারিয়াল তালপুর।[] রাজনীতিবিদ ঘিনওয়া ভুট্টো তার বিয়ের মাধ্যমে ফুফু। লেখিকা ফাতিমা ভুট্টো ও সান ফ্রান্সিস্কো-ভিত্তিক শিল্পী জুলফিকার আলী ভুট্টো জুনিয়র তার মাতৃকুলের চাচাতো ভাইবোন।

তার মাতৃকুলে সিন্ধি ও কুর্দি বংশোদ্ভূত এবং পিতৃকুলে বেলুচ বংশোদ্ভূত।[]

প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিলাওয়াল করাচি গ্রামার স্কুলে এবং ইসলামাবাদের ফ্রোবেলস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়েন। ১৯৯৯ সালে মায়ের সাথে নির্বাসনে দুবাই চলে যান। সেখানে তিনি রশিদ স্কুল ফর বয়েজে ভর্তি হন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মা ও দাদার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ইতিহাস ও রাজনীতি পড়তে গৃহীত হন। ক্রাইস্ট চার্চে অধ্যয়ন করে ২০১২ সালে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেন (পরবর্তীতে সিনিয়রিটি অনুযায়ী মাস্টার অব আর্টসে উন্নীত হন)।[]

Remove ads

কর্মজীবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

পিপিপি'র চেয়ারম্যান এবং ২০১৮ সাধারণ নির্বাচন

বিলাওয়ালকে ২০০৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-এর সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়,[] যখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এই সময়ে তিনি শহীদ মায়ের কথা স্মরণ করে বলেন, "আমার মা সর্বদা বলতেন, গণতন্ত্রই সেরা প্রতিশোধ"।[]

২০১৮ সালের ২৮ জুন বিলাওয়ালের নেতৃত্বে পিপিপি ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশকারী প্রথম দল হয়ে ওঠে। এটি ছিল দলের ১০তম ইশতেহার, যার শিরোনাম ছিল বিবি কা ওয়াদা নিভানা হ্যায় পাকিস্তান বাচানা হ্যায় (বেনজিরের প্রতিশ্রুতি পূরণ ও পাকিস্তানকে বাঁচাতে হবে)। ইশতেহার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিলাওয়াল বলেন, সুযোগ পেলে দলটি দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়নের উপর মনোনিবেশ করবে।[১০] ৩০ জুন ২০১৮-এ করাচির লিয়ারি এলাকায় নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করে পিপিপি তাদের প্রচার শুরু করে।

২০১৮ সালের ২৫ জুলাই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বিলাওয়ালের নেতৃত্বে পিপিপি সিন্ধু প্রদেশে বৃহত্তম ও জাতীয়ভাবে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারা জাতীয় পরিষদে ৪৩টি আসন জিতে (২০১৩ সালের তুলনায় ৯টি বেশি)।[১১] বিলাওয়াল করাচি সাউথ (এনএ-২৪৬), মালাকান্দ (এনএ-৮) ও লারকানা (এনএ-২০০) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি লারকানা থেকে ৮৪,৪২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হলেও বাকি দুটি আসনে ইমরান খানের প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হন।[১১][১২]

পিপিপির এই উত্তরাধিকারী দাবি করেন, নির্বাচনের আগে ও পরে কারচুপি হয়েছে এবং পোলিং এজেন্টদের বিতাড়িত করা হয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা সংসদে গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে এসেছি, নির্বাচনী অনিয়ম উপেক্ষা করব," পাশাপাশি কারচুপির তদন্ত দাবি করেন।[১৩]

জাতীয় পরিষদের সদস্য

২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিলাওয়াল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য হন। সংসদে তার প্রথম বক্তৃতা দেওয়ার পর সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং পাকিস্তানের মানুষ তাকে প্রশংসা করে।[১৪] তার বক্তৃতায় তিনি ইমরান খানকে দুর্নীতি দূর করা, জল সংকট সমাধান এবং তার মেয়াদে জনগণকে এক কোটি কর্মসংস্থান ও ৫ লক্ষ বাসস্থান প্রদানের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান।[১৫] এ সময় তিনি ইমরান খানকে ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত' বলে উল্লেখ করেন।[১৩] তিনি আরও বলেন, ইমরান খান কেবল তার দলের জন্যই নন, বরং তিনি পাকিস্তানি জনগণের প্রধানমন্ত্রী, যাদের তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ‘গাধা’ ও ‘জীবন্ত লাশ’ বলে উল্লেখ করতেন।[১৩]

মানবাধিকার কমিটি

২০১৯ সালের ৫ মার্চ বিলাওয়াল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পরিষদ মানবাধিকার স্থায়ী কমিটির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন।[১৬] ১৮ এপ্রিল ২০১৯-এ কমিটির প্রথম সভায় মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত দ্য ICT রাইটস অফ পারসন্স উইথ ডিসঅ্যাবিলিটি বিল, ২০১৮ এবং দ্য ন্যাশনাল কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অফ উইমেন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮ নিয়ে আলোচনা হয়।[১৭][১৮]

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভী তার শপথবাক্য পাঠ করান।[১৯] তিনি পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।[২০]

২০২২ সালের ২১ মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সাথে গুয়াংজুতে বৈঠক করে পাকিস্তান-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং বলেন, 'চীনের উপর যে কোনো আক্রমণ পাকিস্তানের উপর আক্রমণ হিসাবে গণ্য হবে'।[২১]

২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি, পাকিস্তানের তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই বিলাওয়াল রাশিয়ার মস্কোতে সরকারি সফরে পৌঁছান।[২২]

Remove ads

রাজনৈতিক কর্মজীবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

পররাষ্ট্র নীতি

Thumb
২০২২ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল মার্কিন কূটনীতিকদের বলেছিলেন, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতার "রাজনৈতিক খেলনা" হতে চায় না।[২৩]
Thumb

২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর, মুলতানে দলীয় কর্মীদের সাথে কথা বলার সময় বিলাওয়াল বলেন, "আমি কাশ্মীর ফিরে নেব, সমস্ত কাশ্মীর, এক ইঞ্চিও ছাড়ব না, কারণ অন্যান্য প্রদেশের মতো এটি পাকিস্তানের অন্তর্গত।" স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত এই বক্তব্যকে কাশ্মীর ইস্যুতে তার অবস্থান চিহ্নিতকারী প্রথম বিবৃতি হিসেবে গণ্য করা হয়।[২৪][২৫][২৬]

২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, বিলাওয়াল ওয়াশিংটনে কাশ্মীর কাউন্সিলের সাথে বৈঠক করে কাশ্মীরি জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। বৈঠকে তিনি প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দেন, "নিরীহ ও নিরস্ত্র কাশ্মীরি জনগণের ওপর ভারতীয় বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব ফোরামে কণ্ঠস্বর উঁচু রাখবেন।" তিনি বলেন, "কাশ্মীরের প্রতি আনুগত্য আমার রক্তে মিশে আছে। স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ন্যায্য সংগ্রামে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনগণের পাশে থাকব।"

২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর, ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি'র ফান্ডরেইজারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাকিস্তানকে "বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জাতি" এবং "অসংগঠিত পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক" আখ্যা দিলে, বিলাওয়াল মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড ব্লোম-কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-এ তলব করে ব্যাখ্যা দাবি করেন এবং আনুষ্ঠানিক ডেমার্শ চান।[২৭][২৮]

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads