শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
বিশেষণ
বাংলা ভাষায় এক প্রকার পদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
বিশেষণ (উচ্চারণ: biʃeʃɔn (বি.শে.শন্))[নোট ১] [নোট ২] (ইংরেজি adjective (ল্যাটিন adjicere> adjectivus> ফরাসি adjectif> ইংরেজি adjective)) [নোট ৩] হচ্ছে বাংলা ব্যাকরণের একটি পদ যা বাক্যের অন্য কোন পদের (বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের) দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে।[১]
সংজ্ঞা
যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে।[২]
বাংলা ব্যাকরণ মতে– বাক্যে ব্যবহৃত যে পদ, বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদকে বিশেষিত করে, তাকেই বিশেষণ বলে। [নোট ৪] যেমন—
*বিশেষ্যের বিশেষণ - লাল রক্ত;
*সর্বনামের বিশেষণ - করুণাময় তুমি;
*ক্রিয়ার বিশেষণ - আস্তে যাও।
প্রকারভেদ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বিশেষণ পদ প্রধানত দুইভাগে বিভক্ত- নাম বিশেষণ এবং ভাব বিশেষণ।
নাম-বিশেষণ:

যে সকল শব্দ (বিশেষণ পদ) সর্বনাম ও বিশেষ্যকে বিশেষায়িত করে, তাকেই নাম বিশেষণ বলা হয়। যেমন— সুস্থ সবল দেহকে কে না ভালোবাসে?
মাহবুবা মারিয়া যেমনি রূপবান, তেমনি গুণবান।
ভাব বিশেষণ
যে সকল শব্দ বাক্যের বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ব্যতীত অন্যপদগুলোকে বা বাক্যকে বা উভয়ের অর্থকে বিশেষিত করে, তাকে ভাব-বিশেষণ বলে। ভাব বিশেষণকে চারভাগে ভাগ করা যায়-
- ক্রিয়া বিশেষণ
- বিশেষণের বিশেষণ
- অব্যয়ের বিশেষণ
- বাক্যের বিশেষণ [৩]
ক্রিয়া বিশেষণঃ
যে পদ ক্রিয়া সংঘটনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। যেমন- পরে একবার এসো। ক্রিয়া বিশেষণের বিভিন্ন ধরনের গঠন নিন্মেরূপ-
- বিভক্তিহীন শব্দযোগেঃ ভাবজ্ঞাপক - সে অবশ্য আসবে। সময়জ্ঞাপক - ক্রমাগত ভুল করো না। স্থানবাচক - হেথা আর এসো না।
- এ-বিভক্তি যোগেঃ সুখে থাকতে চাই। পরিস্থিতি চরমে উঠেছে।
- -পূর্বক, -ভাবে -রূপে, -সহকারে, সহিত, সাথে সমাসবদ্ধ হয়ে নতুন ধরনের ক্রিয়া- বিশেষণ তৈরি হয়। যেমনঃ যত্নপূর্বক কাজটি করো। এরূপ- ভালোভাবে, ভালোরূপে, মনোযোগ-সহকারে, আদবের সহিত, আদবের সাথে।
- তঃ, থা, ধা, শ, বত্, মত, মতন প্রত্যয়ান্ত শব্দ বিশেষণ হয়। যেমনঃ তঃ - সম্ভবতঃ তিনি আসবেন। ধা - জলস্রোতটি শতধায় বিভক্ত।শ - ক্রমশ বিষয়টি পরিষ্কার হলো। ত্র - ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান। মত - ঠিকমত কাজ করো। মতন - ঠিকমতন কাজ করো।
- করে - অসমাপিকা ক্রিয়াপদ যোগে: ভালো করে জেনে আস।
- মাত্র - যোগে: ট্রেনটি চলামাত্র আনিকা ঘুমিয়ে পড়লো
- শব্দ - দ্বৈতে: ধীরে ধীরে সাপটি চলে গেল। [১]
বিশেষণের বিশেষণ
যে পদ নাম বিশেষণ অথবা ক্রিয়া বিশেষণকে বিশেষিত করে, তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে। যেমনঃ সামান্য একটু দুধ দাও। রকেট অতি দ্রুত চলে।
অব্যয়ের বিশেষণ
যে ভাব-বিশেষণ অব্যয়পদ অথবা অব্যয় পদের অর্থকে বিশেষিত করে তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে। যেমনঃ ধিক্ তারে শত ধিক্ নির্লজ্জ যে জন।
বাক্যের বিশেষণ
কখনো কখনো কোনো বিশেষণ পদ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করতে পারে তখন তাকে বাক্যের বিশেষণ বলা হয়। যেমন—দুর্ভাগ্যক্রমে দেশ আবার নানা সমস্যাজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে।[৪] [নোট ৫]
Remove ads
বিশেষণের গঠনরীতি
কয়টি শব্দের মাধ্যমে বিশেষণটি তৈরি হতে পারে, তার উপর ভিত্তি করে বিশেষণকে দুটি ভাগ ভাগ করা যায়।
এক পদময় বিশেষণ
এটি মৌলিক বিশেষণ (একটির বেশি শব্দ নিয়ে তৈরি নয়): ছোট মাছ অল্প পানিতে লাফায় বেশি।
- কৃদন্ত প্রত্যয় দ্বারা তৈরি বিশেষণ : চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে নামলেন।
- তদ্ধিত প্রত্যয় দ্বারা তৈরি বিশেষণ : শক্তিমান পুরুষ।
- বিভক্তিযুক্ত বিশেষণ : ঘাটের মরা।
- উপসর্গযুক্ত বিশেষণ : প্রখর রৌদ্র। (প্র উপসর্গ যোগে প্রখর।)
বহুপদী বিশেষণ
এটি একাধিক পদ দ্বারা গঠিত বিশেষণ। এক্ষেত্রে পদগুলো পৃথকভাবে সজ্জিত থাকতে পারে, কিম্বা সমাস বা সন্ধিযোগে যুক্ত অবস্থায়ও থাকতে পারে।
- পদ পৃথক অবস্থায় : দশ দিনের পথ।
- সন্ধি বা সমাস-সিদ্ধ অবস্থায় : ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত একটু নুন।
বিশেষণের অতিশায়ন
বিশেষণ পদ যখন দুই বা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে গুণ, অবস্থা পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে। যেমনঃ যমুনা একটি দীর্ঘ নদী, পদ্মা দীর্ঘতর, কিন্তু মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী।
বিশেষণের অতিশায়নের ক্ষেত্রে দুটি ব্যাকরণগত পরিভাষা ব্যবহার করা হয়, উপমান এবং উপমেয়।
- উপমান: যার সাথে তুলনা করা হয়।
- উপমেয়: যাকে তুলনা করা হয়।
যেমনঃ রূপার চেয়ে সোনা দামী। এখানে রূপা উপমান এবং সোনা উপমেয়। [৫] অতিশায়ন দুইভাবে হতে পারে-
- দুয়ের মধ্যে অতিশায়ন: চেয়ে, চাইতে, হতে, অপেক্ষা প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন ‘‘গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম বেশি।’’
- বহুর মধ্যে অতিশায়ন: সবচাইতে, সবচেয়ে, সবথেকে, সর্বাপেক্ষা, সর্বাধিক প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন: ‘‘তিমি সবচেয়ে বড় প্রাণী।’’
Remove ads
আরোও দেখুন
নোট
- বানান বিশ্লেষণ: ব্+ই+শ্+এ+ষ্+অ+ণ্+অ।
- শব্দ-উৎস: সংস্কৃত विशेषणम् (বিশেষণম্) > বাংলা বিশেষণ।
- বিশেষিত অর্থঃ দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করা।
- উদ্দেশ্য-বিধেয় এবং নির্ধারক এর বিচারে ভাব বিশেষণের আরও দুইটি ভাগ রয়েছে।
- বিধেয়-বিশেষণঃ বাক্যের বিধেয় অংশে অবস্থিত বিশেষণকে বলা হয় বিধেয়-বিশেষণ। যেমনঃ "ছেলেটি ভালো বটে" এখানে ছেলেটি উদ্দেশ্য এবং ভালো বটে। এই বিচারে ভালো বিধেয়-বিশেষণ।
- নির্ধারক বিশেষণঃ দ্বিরুক্ত শব্দ যখন আধিক্য বা অল্পত্ব প্রকাশকে নির্দেশিত করে, তখন তাকে নির্ধারক বিশেষণ বলা হয়। যেমনঃ ছোট ছোট মাছ, বড় বড় পুকুর
- ধ্বন্যাত্মক বিশেষণঃ কিছু কিছু শব্দ দুইবার উচ্চারিত হয়ে ধ্বন্যাত্মক ধ্বনির সৃষ্টি করে এবং তা বিশেষ্যকে বিশেষিত করে। এই জাতীয় শব্দকে ধ্বন্যাত্মক বিশেষণ বলা হবে। যেমনঃ কলকল ধ্বনি, ছলছল চোখ।
Remove ads
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads