শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
বুদ্ধিজীবী
সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি দিয়ে যিনি চিন্তা করেন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
বুদ্ধিজীবী হল কোন ব্যক্তি যিনি সমাজ সম্পর্কিত জটিল চিন্তা, গবেষণা ও প্রভাব-বিস্তারের ন্যায় বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে জড়িত থাকেন। প্রাত্যহিক কর্মে সে সকল দ্ক্ষতায় বুদ্ধি প্রয়োগের প্রয়োজন হয় যেগুলোতে কোন মানসিক শিক্ষার উপাদান রয়েছে, যেমন চিকিৎসা কিংবা শিল্পকলার ক্ষেত্র, কিন্তু এ দুটি চিন্তার জগতের সঙ্গে পেশাদার হিসেবে অপরিহার্যভাবে জড়িত নয়। বুদ্ধিজীবীগণ প্রায়শই অন্যের চিন্তাভাবনা মূল্যায়নের জন্য মানব অনুসন্ধানের বিমূর্ত, দার্শনিক এবং রহস্যজনক দিকগুলি ব্যবহার করে সাংস্কৃতিক মতবাদ এবং লেখনীকে সূক্ষাতিসূক্ষ বিশ্লেষণ করেন। প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষাবৃত্তিধারী এবং বুদ্ধিজীবী উভয়ই পারস্পারিকভাবে সম্পর্কিত হতে পারে: একজন বুদ্ধিজীবী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ করতে পারেন এবং কোন পেশার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন।


প্রধানত তিন ধরনের ব্যক্তিত্বগণ বুদ্ধিজীবী হিসেবে সমাজে পরিচিতি পেতে পারেন। বুদ্ধিজীবী একজন ব্যক্তি, যিনি চিন্তা ও কারণকে ব্যবহার করেন। বুদ্ধি এবং সমালোচনা ও বিশ্লেষণাত্মক কারণও তার মানসিক দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে সম্পৃক্ত। পেশাদার অথবা ব্যক্তিগত চাহিদায় -
- একজন ব্যক্তি বিমূর্ত, চিন্তাধারা ও তাত্ত্বিক বিষয়ে জড়িত;
- দর্শনতত্ত্ব, সাহিত্যিক সমালোচনা, সমাজতত্ত্ব, আইন, রাজনৈতিক বিশ্লেষণকারী, তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী হিসেবে একজন ব্যক্তির পেশা একান্তই উৎপাদনমূখী ভাবনায় নিমজ্জ্বিত হবে;[১] অথবা,
- উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক এবং বিশেষজ্ঞ শিল্পবোদ্ধার জ্ঞান যা তাকে জনসমর্থন আদায়ে সক্ষম।
গণবুদ্ধিজীবীরা সমাজের মূল সমস্যাগুলোর সমাধান ও সমাধানের পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়ে থাকেন এবং এর মাধ্যমে একজন গণব্যক্ত্বিত্বের স্বীকৃতি অর্জন করেন।[২][৩] বুদ্ধিজীবীরা সংস্কৃতির জগৎ হতে এসে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন কোন বাস্তব বিষয়কে রক্ষা বা সমর্থন করার জন্য বা অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করার জন্য সৃজনশীল স্রষ্টা বা মধ্যস্ততাকারী হিসেবে, যা তারা করতে পারেন কোন মতবাদকে প্রত্যাখ্যান, সৃষ্টি অথবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে, অথবা কোন একটি মুল্যবোধ-ব্যবস্থাকে সমর্থন করার মাধ্যমে।[৪]
Remove ads
সংজ্ঞা
বুদ্ধিজীবী হলেন একধরনের বুদ্ধিমান ব্যক্তি যারা কার্যকারণ ও জটিল চিন্তাকে ব্যবহার করেন। বুদ্ধিবৃত্তি বলতে কোন ব্যক্তির নিজস্ব কর্ম, শিক্ষা, জীবনের প্রতিফলন কিংবা দর্শনবোধের মাধ্যমে সমাজকে প্রভাবান্বিত করার চিন্তাধারাকে বুঝানো হয়। এ ধরনের চিন্তাধারায় প্রশ্ন এবং উত্তরের যথার্থতার মাধ্যমে বৈশ্বিক মানদণ্ডে বিচিত্রমূখী ভাবধারার বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। তারা প্রধানত বুদ্ধিকে উপজীব্য করে পেশাদারিত্ব অথবা ব্যক্তি উদ্যোগকে কাজে লাগান। অর্থাৎ, সমাজ ও সংস্কৃতি সচেতন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষ সুশিক্ষিত মানুষ হিসেবে স্বীয় বুদ্ধির বলে বা বুদ্ধির কাজ দিয়ে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা জ্ঞান বা বুদ্ধিকৌশলকে যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন করেন। সাধারণতঃ লেখক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিল্পবোদ্ধা ব্যক্তিত্বগণ বুদ্ধিজীবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তারা তাদের ধ্যান-ধারণা অথবা সমালোচনাধর্মী চিন্তা-চেতনার যথার্থ প্রতিফলন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। বেশিরভাগ দার্শনিক বুদ্ধিজীবী হিসেবে আখ্যায়িত, পাশাপাশি শিল্পকলা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, বাণিজ্য, সমাজকল্যাণ সহ বিভিন্ন শ্রেণি থেকে আগত ব্যক্তি বুদ্ধিজীবী হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারে।
Remove ads
ঐতিহাসিক সংজ্ঞা
শিক্ষিত মানুষ (ম্যান অফ লেটারস)
"ম্যান অফ লেটারস" পরিভাষাটি ফরাসি পরিভাষা বেলেটারিস্ট বা হোমি ডি লেটারস নামক পরিভাষা থেকে উদ্ভূত, কিন্তু তা কেতাবী জ্ঞানীর সমার্থক নয়।[৫][৬] একজন "ম্যান অফ লেটারস" বলতে স্বাক্ষর লোককে বোঝানো হত ("পড়তে লিখতে সক্ষম") যা নিরক্ষর লোকের বিপরীতে ব্যবহার করা হত, এমন একটি সময়ে যখন স্বাক্ষরতা প্রধান সংস্কৃতির একটি বিরল রূপ ছিল। ১৭ ও ১৮ দশকে বেলিটারিস্ট ছিলেন লিটারেটিরা, ফরাসি ভাষায় রিপাবলিক অফ লেটারস বা শিক্ষিত প্রজাতন্ত্রের নাগরিকগণ, যা রুপান্তরিত হয় সেলুন নামক প্রতিষ্ঠানে। এটি ছিল একটি সামাজিক গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা একজন হোস্টেস বা সেবিকা দ্বারা পরিচালিত হত, এবং অংশগ্রহণকারীদের শিক্ষাদীক্ষা ও সাংষ্কৃতিক পরিশোধনে নিবেদিত হত।
Remove ads
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১৯শ-শতক
ব্রিটেন
ইউরোপ মহাদেশ
জার্মানি
প্রাচ্য
বুদ্ধিজীবী শব্দটির সবচেয়ে প্রাচীন উল্লেখ পাওয়া যায় ভারতীয় ধর্মীয় পান্ডুলিপি মহাভারতে, দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায়। মহাভারতের বর্ণনাতে, অর্জুন ও রাজা-মহারাজাদের আগমনের পরপরই সভাস্থলে উপস্থিত হয় ‘নিপুণা বুদ্ধিজীবীন’ নামক ব্যক্তিগণ, যারা সয়ম্বরদের লক্ষভেদের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয়প্রকাশক আলোচনায় ব্যস্ত ছিল।[৭]
সাম্রাজ্যবাদী চীনে ২০৬ খৃস্টপূর্ব হতে ১৯১২ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে, স্থানীয় বুদ্ধিজীবীরা নিয়োজিত হতেন স্কলার অফিসিয়াল বা পণ্ডিত-দাপ্তরিক (পণ্ডিত ভদ্রমহোদয় বা স্কলার জেন্টেলম্যান) হিসেবে, যারা ছিলেন চীনের সম্রাট কর্তৃক দৈনিক সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য নিয়োজিত কর্মচারী। এসকল বেসামরিক কর্মচারী শিক্ষাগত ডিগ্রী অর্জন করতেন সাম্রাজ্যের রাজকীয় পরীক্ষার মাধ্যমে, এবং পাশাপাশি তারা ছিলেন দক্ষ হস্তলিপিবিদ এবং তারা কনফুসীয় দর্শন জানতেন। ইতিহাস-রচয়িতা উইং-সিত চ্যান অভিমত দেন:
সহজভাবে বললে, এসকল পণ্ডিত-ভদ্রোমহোদয়ের বিবরণ-সংবলিত নথি ছিল অন্যতম উল্লেখযোগ্য নথি। ১৮ শতকের ইউরোপে এটি যথেষ্ট প্রশংসিত ও অনুকরণীয় বিষয় ছিল। বলতেই হবে, জনগণের সরকার থেকে আইনের সরকারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করার মধ্য দিয়ে এটি চীনকে একটি ভয়াবহ সমস্যা এনে দিয়েছিল, এবং চীনা সরকারের ব্যক্তিগত বিবেচনা একটি অভিশাপ হয়ে উঠেছিল। [৮]
জোসিয়ন কোরিয়ায় (১৩৯২-১৯১০), বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন লিটারেটি, যারা লিখতে পড়তে জানতেন, এবং কনফুসীয় ব্যবস্থা অনুযায়ী চুঙ্গিন (মধ্যস্ততাকারী লোক) হিসেবে পদমর্যাদা পেতেন। সামাজিকভাবে, তারা পেটিটে বোর্গিয়োসিয়ে নামক সংবিধান পরিচালনা করতেন, এটি লিখতেন পণ্ডিত-আমলাগণ (পণ্ডিত, পেশাদার কর্মী ও কারিগরি কর্মচারী), যারা জোসিয়ন রাজবংশের রাজকীয় নিয়মকানুন পরিচালনা করতেন।[৯]
ইন্টেলিজেনশিয়া
জিন-পল সার্টার সামাজিক শ্রেণি হিসেবে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, বুদ্ধিজীবীরা হল তাদের সময়ের নৈতিক চেতনা; তাই তাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব হল সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা, এবং তাদের চেতনা অনুযায়ী তাদের নিজ নিজ সমাজের প্রতি স্বাধীনভাবে এসকল বিষয়ে কথা বলা।[১০]
মার্ক্সবাদী দৃষ্টিকোণ
গণবুদ্ধিজীবী
গণবুদ্ধিজীবী বলতে এমন বুদ্ধিজীবীদের বোঝায় যারা পড়াশোনা সংক্রান্ত পেশার পাশাপাশি সমাজের সরকারি ও জনগণের বিষয়-সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনায় অংশ নিয়ে থাকে।
সামাজিক পরিমন্ডল
একাডেমিক পরিমন্ডল
সামাজিক নীতি নির্ধারণে ভূমিকা
জনগণের নীতি নির্ধারণীর ব্যাপারে, জনসেবী বুদ্ধিজীবীগণ জ্ঞানগর্ভ গবেষণার সঙ্গে সামাজিক সমস্যা সমাধানের ব্যবহারিক বিষয়ের সমন্বয় ঘটান।
Remove ads
সমালোচনা
লর্ড রাসেল এর উত্তরে ব্রিটিশ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল সংজ্ঞায়িত করেছেন, "আমি নিজেকে কখনই বুদ্ধিজীবী বলিনি এবং আমার উপস্থিতিতে কেউ আমাকে তা বলার সাহস করেনি। আমি মনে করি কোন বুদ্ধিজীবীকে এমন কোন ব্যক্তি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যিনি নিজের যতটুকু বুদ্ধি রয়েছে তার চেয়ে বেশি দেখানোর ভান করেন এবং আমি আশা করি এই সংজ্ঞাটি আমার উপযুক্ত নয়। " [১১]
রিচার্ড হাফস্ট্যাটার রসিকতা করে বলেন, "বুদ্ধিজীবী এমন ব্যক্তি যিনি সহজ উত্তরগুলিকে আরও কঠিন প্রশ্নে পরিণত করতে পছন্দ করেন।"[১১]
ইন্টেলিজেনশিয়া
মার্কিন ইতিতাসবিদ নরম্যান স্টোন বলেন বুদ্ধিজীবী সামাজিক শ্রেণি সমাজের বাস্তবতাকে ভুলভাবে বোঝে এবং এ কারণে তারা যৌক্তিক প্রতারণা, আদর্শিক বোকামি এবং আদর্শ মতবাদ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত দুর্বল পরিকল্পনার ভ্রান্তিতে ভোগে।[১২]
Remove ads
আরও দেখুন
- ১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড।
- শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস (বাংলাদেশ)।
- শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।
- বুদ্ধিজীবী শহীদ মিনার (মিরপুর)।
- বুদ্ধিজীবীতাবাদ।
- বুদ্ধিদীপ্তকরণ, কোন বিষয়কে আবেগের পরিবর্তে যুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণের প্রক্রিয়া।
- বুদ্ধিজীবীতা-বিরুদ্ধবাদ, বুদ্ধিজীবীতা বিরোধী মতবাদ।
- আঁতেল, বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ফরাসি-ভাষা-উদ্ভূত বাংলা বিদ্রূপাত্মক শব্দ।
- এগহেড, বুদ্ধিজীবীদের প্রতি মার্কিন বিদ্রূপাত্মক শব্দ।
Remove ads
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads