শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ
Remove ads

বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ হল বেলুচিস্তান অঞ্চলে পাকিস্তান ও ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে বেলুচ জাতীয়তাবাদীদের একটি বিদ্রোহ। [৩৩][৩৪][৩৫] যা দক্ষিণ-পশ্চিমে পাকিস্তানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের বেলুচেস্তান প্রদেশ এবং দক্ষিণ আফগানিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলজুড়ে অবস্থিত।

দ্রুত তথ্য বেলুচিস্তানে বিদ্রোহ, তারিখ ...
Thumb
পাকিস্তানের প্রধান জাতিগোষ্ঠী: বেলুচ (গোলাপী), পাঞ্জাবি (বাদামী), পশতুন (সবুজ), সিন্ধি (হলুদ)
Remove ads

ইতিহাস

আয়তনের দিক থেকে বেলুচিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ। বেলুচিস্তানের আয়তন ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ কিলোমিটার, যা পাকিস্তানের মোট আয়তনের প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে ছোট। রাজধানী হচ্ছে কোয়েটা। ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের বিবেচনায় পাকিস্তানের জন্য এই প্রদেশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বালুচিস্তানের উত্তর-পূর্ব দিকে আছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া, পূর্ব আর দক্ষিণ-পূর্বদিকে সিন্ধু, দক্ষিণে আরব সাগর, পশ্চিমদিকে ইরান, আর উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে আছে আফগানিস্তান। প্রদেশের প্রধান জাতিগোষ্ঠী হচ্ছে বালুচ এবং পশতুন। তাছাড়া রয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যেমন- ব্রাহুইস, হাজারা, সিন্ধী, পাঞ্জাবি, উজবেক।[৩৬]

Remove ads

বৈষম্যের অভিযোগ

বালুচিস্তানের রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ। বিশেষ করে গ্যাস,কয়লা, তামা এবং সোনার বিশাল মজুদ।[৩৭][৩৮] বালুচ জাতীয়তাবাদীরা বহু বছর ধরে অভিযোগ করে যাচ্ছে যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার তাদের শোষণ করছে এবং বালুচিস্তানকে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। অর্থনৈতিকভাবে বালুচিস্তান এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। পাকিস্তানের সরকারি চাকুরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বালুচদের বিরুদ্ধে বৈষম্যেরও ব্যাপক অভিযোগ আছে।[৩৯]

Remove ads

স্বাধীন বেলুচিস্তানের স্বপ্ন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

পাকিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল বেলুচিস্তানেই, স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পর ১৯৪৮ সালে। বেলুচিস্তানে যে চারটি প্রিন্সলি স্টেট ছিল, তার তিনটি ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তানে যোগ দেয়- মাকরা, লাস বেলা এবং খারান।[৪০] কিন্তু চতুর্থ একটি প্রিন্সলি স্টেট, খান অব কালাতের শাসক আহমদ ইয়ার খান প্রথমে পাকিস্তানের যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ সালে যখন তিনি পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য রাজি হন, তখন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন তার ভাই প্রিন্স আগা আবদুল করিম বালুচ। তারাই বেলুচিস্তানে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা করেন।[৪১]

বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির সংঘাত নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু সেই সংঘাতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হলেও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা সুদূরপরাহত। স্বাধীন বেলুচিস্তানের জন্য প্রতিবেশী ইরান ও আফগানিস্তানের সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু ইরান ও আফগানিস্তানের পক্ষে ওই সমর্থন দেওয়া কখনও সম্ভব নয় কারণ, পাকিস্তানের বেলুচরা স্বাধীনতা অর্জন করলে ইরান ও আফগানিস্তানের বেলুচরা স্বাধীন বেলুচিস্তানে যোগ দিতে চাইবে। ফলে, ইরান ও আফগানিস্তানের মানচিত্রের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। [৩৬] তাছাড়া বেলুচ আন্দোলনের নেতৃত্ব বহু ধারায় বিভক্ত, নেতাদের মধ্যে মতবিরোধও তীব্র। বেলুচিস্তানে বা পাকিস্তানের ভেতরেও তাদের তেমন কোনও বড় নেতা নেই। ফলে বেলুচদের আন্দোলনে কোনও অভিন্ন কর্মসূচিও নেই। [৪২]

চীনের ভূমিকা

চীনের একাধিক কাজ চলছে বেলুচিস্তানে। চীনের ওয়ান রোড ইনিশিয়েটিভের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বালুচিস্তানের গোয়াদার বন্দর প্রকল্প। চীনের অর্থায়নে চায়না পাকিস্তান ইকনোমিক করিডোর বা সিপেক নামের এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য গোয়াদার বন্দরকে পশ্চিম চীনের সঙ্গে যুক্ত করা। এর ফলে বন্দরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হবে। পাকিস্তানের রাজনীতিক এবং সেনা কর্মকর্তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেলুচিস্তানের অর্থনীতি পাল্টানোর কথা বলেন। কিন্তু বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো মনে করে, এ থেকে স্থানীয়রা কোনভাবেই লাভবান হবে না। তারা বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করতে নিয়মিতই এই প্রকল্পের কাজে বাধা দিতে হামলা চালায়। কিন্তু চীন এই প্রকল্প অব্যাহত রাখতে চায় এবং পাকিস্তান সরকারও যে কোন মূল্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করে প্রকল্পটি শেষ করতে চায়।[৪০][৪১]

বেলুচিস্তানের স্বর্ণের খনিগুলোও অব্যবস্থাপনার মতো নানা অজুহাতে প্রাদেশিক সরকারকে নিষ্ক্রিয় করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনি হাতে নিয়েছে। চীনের কোম্পানিগুলো স্বর্ণ উত্তোলনের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। মূল্যবান সম্পদ আরোহণের দায়িত্বে রয়েছে চীনা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিগুলো।[৪০]

Remove ads

মানবাধিকার লঙ্ঘন

বেলুচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। যতবারই স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ হয়েছে ততবারই পাকিস্তানি সেনারা বেলুচদের নির্বিচারে হত্যা করেছে। বেলুচরা পাকিস্তানের শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রতিবারই বেলুচ স্বাধীনতাকামী জনগণের উপর নির্মম দমননীতি প্রয়োগ করেছে। হাজার হাজার বেলুচিস্তানের মানুষ হারিয়ে গেছে।[৪০] বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা যায়, গড়ে প্রায় প্রতিটি বেলুচ পরিবারের একজন করে মানুষ গুম হয়েছে।[৪৩] তাছাড়া, পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আছে। নারীদের ধরে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এমনই মারাত্মক অভিযোগ পাকিস্তানের বিভিন্ন মানবাধিকারকর্মীর।[৪৪][৪৫] বেলুচিস্তানে সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা ঠিকমত তাদের কাজ করতে পারেন না। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বালুচিস্তানে শত শত রাজনৈতিক কর্মী এবং সন্দেহভাজন ব্যাক্তিদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এবং পরে তাদের লাশ খুঁজে পাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেছে। তাদের অভিযোগ এর পেছনে আছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।[৪১]

Remove ads

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads