শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান

স্বায়ত্তশাসিত ভারতীয় পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের গুচ্ছ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান
Remove ads

ভারতীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) ভারতের একটি স্বশাসিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমষ্টি যেখানে প্রযুক্তিবিদ্যা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক চর্চা করা হয়। ১৯৬১ সালের প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান আইনের দ্বারা এই প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঘোষিত হয়।[][] এই আইনের দ্বারা ভুবনেশ্বর, চেন্নাই, দিল্লি, গান্ধীনগর, গৌহাটি, হায়দ্রাবাদ, ইন্দোর, যোধপুর, কানপুর, খড়গপুর, মান্ডি, মুম্বাই, পাটনা, রুপার, রুর্কি, বারাণসী ইত্যাদি শহরে ১৬টি ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বয়ংশাসিত এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে একটি সাধারণভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান কাউন্সিল দ্বারা যুক্ত।[] এই কাউন্সিল সংস্থানগুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখাশোনা করে।[]

দ্রুত তথ্য অন্যান্য নাম, ধরন ...
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান, খড়গপুরের ১৯৫১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তোলা ছবি

ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে ভাইসরয়ের কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্য স্যার যোগেন্দ্র সিংহ ১৯৪৬ সালে ২২ সদস্যবিসিষ্ট একটি সমিতি তৈরি করেন যার শীর্ষপ্রতিনিধিত্ব করেন নলিনী রঞ্জন সরকার। এই সমিতি ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে "ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান" স্থাপনের প্রস্তাব দেন।১৯৫০ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত খড়গপুরের হিজলি অঞ্চলে প্রথম IIT-টি স্থাপিত হয়। ১৯৫৬ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ভারতীয় সংসদ ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান (খড়গপুর) আইন আইনের দ্বারা এই বিদ্যাপ্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঘোষণা করেন। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শ্রী জওহরলাল নেহেরু ১৯৫৬ সালে IIT খড়গপুরের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ভাষণে বলেন,[]

পরবর্তীকালে সরকার কমিটির প্রস্তাবে মুম্বাই (১৯৫৮), চেন্নাই (১৯৫৯), কানপুর (১৯৬০), দিল্লি (১৯৬১)-তে নতুন চারটি IIT স্থাপিত হয়। নতুন IIT প্রতিষ্ঠা করার জন্য "ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান" আইনে পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় রাজীব গান্ধীর প্রচেষ্টায় অসমের তৎকালীন রাজধানী গৌহাটি-তে ষষ্ঠ IIT-টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের প্রাচীনতম প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয় রুর্কি মহাবিদ্যালয় ২০০১ সালে IIT মর্যাদা লাভ করে। পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি IIT স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। ২০০৭ সালে একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় ভারতের আরও নতুন IIT স্থাপনের জন্য ৮টি রাজ্য নির্বাচন করা হয় এবং IT-BHU IIT উপাধি অর্জন করে।[]

Remove ads

সমস্ত ভারতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তালিকা

আরও তথ্য নং, নাম ...
Remove ads

সাংগাঠনিক কাঠামো

Thumb
IIT-র সাংগাঠনিক কাঠমো

ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতি পদাধিকার বলে IIT-গুলির সাংগাঠনিক কাঠামোর সর্বোচ্চ পদটি অধিকার করে থাকেন।[২২] রাষ্ট্রপতি সকল IIT- এর পরিদর্শক। মাননীয় রাষ্ট্রপতির পরেই সবথেকে ক্ষমতাশালী পদে আছে IIT Council। এই কাউন্সিল কেন্দ্রীয় সরকারের প্রৌদ্যোগিকী শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, সমস্ত IIT-র চেয়ারম্যান, সমস্ত IIT-র পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন(UGC)এর চেয়ারম্যান, CSIRএর ডিরেক্টর জেনারেল, IIScএর চেয়ারম্যান, সংসদের তিনজন সদস্য, মানবসম্পদ ও উন্নয়ন মন্ত্রালয়ের যুগ্ম কাউন্সিল সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সরকার, AICTE ও পরিদর্শক মনোনীত তিনজন সদস্য।[২৩] এই কাউন্সিলের অধীনে আছেন প্রতিটি IIT-র বোর্ড অব গভর্নর্স[২৪] এবং তাদের অধীনে আছেন পরিচালক যিনি সংশ্লিষ্ট IIT-র প্রধান।

সাম্প্রতিক পরিচালকগণের তালিকা : তালিকা

পরিচালকের পরবর্তী পদ উপ-পরিচালকের। উপ-পরিচালকের অধীনে আছেন ডিনস, বিভাগীয় প্রধান, নিবন্ধরক্ষক, ছাত্র সমিতির প্রধান ও হল ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান। নিবন্ধরক্ষক হলেন মুখ্য প্রশাসনিক অফিসার এবং তিনি দৈনিক কাজকর্ম দেখাশোনা করেন। অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক মণ্ডলী বিভাগীয় প্রধানের অধীনে থাকেন।[২৪] ওয়ার্ডেন হলেন হল ম্যানেজমেন্ট কমিটির অধীনস্থ কর্মচারী।[২৫]

শিক্ষা

অন্যান্য যে কোনো প্রৌদ্যোগিকী প্রতিষ্ঠানের থেকে IIT-গুলির সরকারের থেকে প্রাপ্ত অনুদান তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি হয়।[২৬] প্রতিটি IIT সাধারণতঃ সরকারের থেকে প্রতি বছর ৯০-১৩০ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে পায়, যেখানে অন্যান্য প্রৌদ্যোগিকী প্রতিষ্ঠানগুলি অনুদান পায় মোট ১০-২০ কোটি টাকা। প্রত্যকটি IIT-র নিজস্ব সেনেট আছে যা অধ্যাপক এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়। এই সেনেটগুলিই নিজস্ব IIT-র অভ্যন্তরীণ শিক্ষাব্যবস্থা ও গবেষণার প্রগতি একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিদর্শন করে। IIT-র পরিচালক পদাধিকার বলে এই সেনেটের শীর্ষস্থান অধিকার করে থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাগতমান মূল্যায়নের জন্য IIT-গুলি একটি ১০ পয়েন্ট স্কেল ব্যবহার করে যা CGPA নামে পরিচিত।

স্নাতক শিক্ষা

অস্নাতক ছাত্রছাত্রীদের IIT-গুলি চার বছরের B.Tech ডিগ্রি এবং পাঁচ বছরের দ্বৈত ডিগ্রি B.Tech-M.Tech প্রদান করে থাকে। এছাড়াও Int. M.Sc., Int. M.A. ডিগ্রিও প্রদান করা হয়ে থাকে। সাধারণতঃ ইলেক্ট্রনিক্স, কম্প্যুটার, বৈদ্যুতিক, ইন্স্ট্রুমেন্টেশন, যান্ত্রিক, মহাকাশ, রাসায়নিক বিভাগগুলি B.Tech অথবা B.Tech-M.Tech প্রদান করে। এছাড়াও পদার্থবিদ্যা, গণিত, রসায়ন ও জীববিদ্যাতে দ্বৈত B.S-M.S সমস্ত অস্নাতক ছাত্রছাত্রীদের নির্বাচন হয় সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা IIT-JEE নামে পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে পরীক্ষাটি JEE(Advanced) নামে পরিচিত। এই পরীক্ষাটি দুইটি স্তরে হয়। যথাঃ- JEE(Main) এবং JEE(Advanced)। JEE(Main) পরীক্ষাটিতে উত্তীর্ণ হলে তবেই JEE(Advanced) পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মেলে।

আরও তথ্য ক্রম, নাম ...

স্নাতকোত্তর শিক্ষা

IIT-গুলি স্নাতকোত্তর শিক্ষার ক্ষেত্রে M.Tech., M.B.A, M.Sc. ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। এছাড়াও কয়েকটি IIT M.Des, M.M.R.T, M.A., PGDIPL, PGDMOM ডিগ্রি দিয়ে থাকে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির জন্য প্রৌদ্যোগিকী ছাত্রছাত্রীদের GATE পরীক্ষা ও বিজ্ঞনের ছাত্রছাত্রীদের JAM পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে হয়।[২৭]

ডক্টরেট শিক্ষা

এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে গবেষণা করে Ph.D. ডিগ্রি অর্জন করা যায়। এই পাঠক্রমের ছাত্রছাত্রীদের নিজের পছন্দের বিষয়ের অধ্যাপক অনুসন্ধান করে তার অধীনে গবেষণা করতে হয়। গবেষণা সমাপ্ত হলে ছাত্রছাত্রীরা গবেষণা সংক্রান্ত একটি উপস্থাপনা দিতে বাধ্য থাকে। সেই উপস্থাপনা সর্বজনগ্রাহ্য হলে তবেই সে তার ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে। যে প্রৌদ্যোগিকী ছাত্রছাত্রী যারা Ph.D. ডিগ্রি অর্জন করে, তাদের মধ্যে ৮০% IISc, NITIIT-গুলির ছাত্রছাত্রী।

Remove ads

ছাত্র জীবন

প্রযুক্তি বিদ্যার সাথে ছাত্ররা বিভিন্ন ধরনের কাজেও নিরত থাকে, এবং খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতিতেও অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও প্রথম বর্ষের ছাত্রদের বাধ্যতামূলক ভাবে এনসিসি (NCC), এনএসএস (NSS) বা এনএসও (NSS)-র তিনটির মধ্যে কোন একটিতে অংশ নিতে হয়।[২৮] সাধারণত প্রতিটি বর্ষের ছাত্রদের আলাদা ছাত্রাবাসে রাখা হয়। ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা ছাত্রাবাসের বন্দোবস্ত রয়েছে। প্রতিটি ছাত্রাবাসেই রয়েছে খেলাধুলোর জন্য সরঞ্জাম যেমন ক্যারম, টেবিল টেনিস প্রভৃতি। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, সাঁতার প্রভৃতির ব্যবস্থাও আছে। এছাড়া হস্টেলগুলিতে অন্তরজাল-এর ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেদের মধ্যে একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করে যাতে ষোলোটি প্রতিষ্ঠান তেরোটি খেলায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে অংশগ্রহণ করে।

Remove ads

স্বীকৃতি

বর্তমানে IIT-গুলি বিশেষ সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্ত। ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী সংস্থান আইন অনুযায়ী এই মহাবিদ্যালয়গুলির প্রদত্ত উপাধিগুলি অখিল ভারতীয় প্রৌদ্যোগিকী শিক্ষা পরিষদের আওতার বাইরে রাখা হয়।[২৯] এর ফলস্বরূপ এই মহাবিদ্যালয়গুলি নিজেদের আইন প্রনয়ণ করতে সক্ষম যা শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি করায় বিশেষ সাহায্য করেছে। এছাড়া ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় যা ভালো ছাত্রদের বেছে নিতে সাহায্য করে। শিক্ষকদেরকেও কঠোর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয় যাতে গুনগত মান বজায় থাকে।[৩০] এই ব্যবস্থার ফলে আত্যন্ত উচ্চমানের শিক্ষা বজায় থাকে। দেশ বিদেশেও IIT-গুলি বিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন IIT-গুলি বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে।

Remove ads

সমালোচনা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী মহল থেকে এই মহাবিদ্যালয়গুলিকে প্রভূত সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এমনকি প্রাক্তন ছাত্ররাও মহাবিদ্যালয়ের কিছু পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। এই সমালোচনার মূল কারণ হল বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রভাব এবং ছাত্রদের বিদেশ যাওয়ার মানসিকতা।[৩১][৩২]

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে টাকার বিনিময়ে মহাবিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর ফলে যারা আর্থিক কারণে এই প্রশিক্ষণ নিতে পারে না তারা প্রবেশিকা পরীক্ষায় এক ধাপ পিছিয়ে পড়ে যা একটি পরীক্ষায় কাম্য নয়। এছাড়া এই ভাবে আসলে শিক্ষার নামে প্রহসন হয় কারণ ছাত্রদের সার্বিক শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। [৩৩]

পরীক্ষায় প্রশ্নগুলি সাধারণত সঠিক উত্তর বেছে নেওয়া ধরনের হয় যার ফলে ছাত্রদের সম্পূর্ণ মূল্যায়ন হয় না।

১৯৯০ সালের আগে অবধি সরকারের দেশের বেকারত্বের সমস্যা সমাধানের প্রতি নজর না থাকায় ছাত্ররা বিদেশে চলে যেত যার ফলে দেশের উন্নতিতে ঘাটতি থেকে যাচ্ছিল। তবে সরকার জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরে এই সমস্যা অনেক কমে এসেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রাক ১৯৯০ সময়ে প্রায় ৭০ শতাংশ ছাত্ররা বিদেশে, মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেত। কিন্তু ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই হার ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।[৩৪]

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেবল ইংরেজি এবং হিন্দিতে হয় বলে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষিত ছাত্রদের অসুবিধের মুখোমুখি হতে হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Remove ads

তথ্যসূত্র

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads