শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি

ভারতের রাজনৈতিক দল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি
Remove ads

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) হল ভারতের একটি অন্যতম প্রধান ও পুরনো রাজনৈতিক দল। এটি কমিউনিস্ট পার্টির ভারতীয় শাখা। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি কবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তা নিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনে দুটি মত প্রচলিত আছে। সিপিআই ১৯২৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর তারিখটিকে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু সিপিআই ভেঙে গঠিত দল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) ।(সিপিআইএম) মনে করে সিপিআই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২০ সালে।

দ্রুত তথ্য ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি भारत की कम्युनिस्ट पार्टीCommunist Party of India, মহাসচিব ...
Thumb
২০০৯ সালের ভারতের সাধারণ নির্বাচনের সময় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থকেরা।
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ব্রিটিশ ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলন

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মতে দল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুর পার্টি কনফারেন্সের সময়। কিন্তু ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) মনে করে ১৯২০ সালের ১৭ অক্টোবর কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের দ্বিতীয় কংগ্রেসের পর তুর্কিস্তান অটোনমাস সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকের তাসখন্দে সিপিআই প্রতিষ্ঠিত হয়। দলের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্যরা ছিলেন মানবেন্দ্রনাথ রায়, ইভলিন ট্রেন্ট রায় (মানবেন্দ্রনাথ রায়ের স্ত্রী), অবনী মুখোপাধ্যায়, রোজা ফিটিনগফ (অবনী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী), মহম্মদ আলি (আহমেদ হাসান), মহম্মদ শাফিক সিদ্দিকি, ভোপালের রফিক আহমেদ, এম. পি. বি. টি. আচার্যউত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সুলতান আহমেদ খান তারিন[][][] সিপিআই-এর মতে ভারতীয়রা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিদেশিদের সাহায্যে অনেকগুলি কমিউনিস্ট গোষ্ঠী স্থাপন করেছিল। তাসখন্দের গোষ্ঠীটি সেগুলির অন্যতম।

সিপিআই ভারতের মধ্যে সংগঠন গড়ে তুলতে প্রয়াসী হয়। মানবেন্দ্রনাথ রায় বাংলার অনুশীলনযুগান্তর গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাংলা (মুজফফর আহমেদের নেতৃত্বে), বোম্বাই (এস. এ. ডাঙ্গের নেতৃত্বে), মাদ্রাজ (সিঙ্গারাভেলু চেত্তিয়ারের নেতৃত্বে), যুক্তপ্রদেশ (শৌকত উসমানির নেতৃত্বে) ও পাঞ্জাবসিন্ধুপ্রদেশ (গুলাম হুসেনের নেতৃত্বে) ছোটো ছোটো কমিউনিস্ট গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। এঁদের মধ্যে একমাত্র উসমানিই সিপিআই-এর দলীয় সদস্য হয়েছিলেন।[]

১৯২০-এর দশক ও ১৯৩০-এর দশকের গোড়ার দিকে দলের সাংগঠনিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। বিভিন্ন কমিউনিস্ট গোষ্ঠী সীমাবদ্ধ জাতীয় সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ সব ধরনের কমিউনিস্ট ক্রিয়াকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সেই জন্য দলের মধ্যে ঐক্যস্থাপন খুব কঠিন ছিল। ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সালের মধ্যে কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিরুদ্ধে তিনটি ষড়যন্ত্র মামলা রুজু করা হয়। এগুলি হল পেশোয়ার ষড়যন্ত্র মামলা, মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা ও কানপুর বলশেভিক ষড়যন্ত্র মামলা। এই প্রথম তিন মামলায় রাশিয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুহাজির কমিউনিস্টদের বিচার হয়। যদিও কানপুর মামলাটি অধিকতর বেশি পরিমাণে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছিল। ১৯২৪ সালের ১৭ মার্চ এই মামলায় মানবেন্দ্রনাথ রায়, এস. এ. ডাঙ্গে, মুজফফর আহমেদ, নলিনী গুপ্ত, শৌকত উসমানি, সিঙ্গারাভেলু চেত্তিয়ার, গুলাম হুসেন ও আর. সি. শর্মাকে অভিযুক্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল এই যে তারা ‘একটি সহিংস বিপ্লবের মাধ্যমে ভারতকে ব্রিটেনের সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে সম্রাটকে ব্রিটিশ ভারতের সার্বভৌমত্ব থেকে বঞ্চিত করার’ চেষ্টা করছেন। দৈনিক সংবাদপত্রগুলির পাতায় পাতায় কমিউনিস্টদের বিপ্লবী পরিকল্পনার বিবরণ ছাপা হতে শুরু করে। সেই প্রথম ভারতীয়রা সাম্যবাদ, সাম্যবাদী মতাদর্শ এবং ভারতে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারে।[]

সিঙ্গারাভেলু চেত্তিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কারণে মুক্তি পান। মানবেন্দ্রনাথ রায় জার্মানিতে ছিলেন এবং আর. সি. শর্মা ছিলেন ফরাসি উপনিবেশ পন্ডিচেরিতে। তাই তাদের গ্রেফতার করা যায়নি। গুলাম হুসেন স্বীকার করে নেন যে তিনি কাবুলে রাশিয়ানদের থেকে অর্থ নিয়েছিলেন। তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। মুজফফর আহমেদ, নলিনী গুপ্ত, শৌকত উসমানি ও ডাঙ্গেকে কয়েক দফায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলাটি ভারতীয়দের কাছে সাম্যবাদকে পরিচিত করে তোলার জন্য অনেকাংশে দায়ী।[] ১৯২৭ সালে ডাঙ্গে মুক্তি পান।

১৯২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে একটি কমিউনিস্ট কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের অনুমান অনুসারে, ৫০০ জন সেই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছিল। কনফারেন্সের আহ্বায়ক ছিলেন সত্যভক্ত নামে এক ব্যক্তি। কনফারেন্সে সত্যভক্ত কমিনটার্নের অধীনে থাকার পরিবর্তে একটি ‘জাতীয় সাম্যবাদে’র পক্ষে মত প্রকাশ করেন। কিন্তু ভোটে তাঁর মত পরাজিত হলে তিনি এর প্রতিবাদে কনফারেন্সের স্থান পরিত্যাগ করেন। এই কনফারেন্সে ‘ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি’ নামটি গৃহীত হয়। লেবার কিসান পার্টি অফ হিন্দুস্তান (এলকেপিএইচ) প্রভৃতি কয়েকটি গোষ্ঠী সিপিআই-এর সঙ্গে মিশে যায়।[] নবগঠিত সিপিআই-এর সাংগঠনিক শক্তি কম হলেও এটি ভারতে কাজ চালানোর মতো সংগঠন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।

১৯২৬ সালে বাংলার ওয়ার্কার অ্যান্ড পিজন্টস পার্টির সম্মেলনের পর নিষিদ্ধ হলে সিপিআই এই দলের সদস্যদের প্রাদেশিক ওয়ার্কার অ্যান্ড পিজেন্টস পার্টিগুলিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এই দলগুলির মাধ্যমেই যাবতীয় প্রকাশ্য কমিউনিস্ট কার্যকলাপ চলত।[]

১৯২৮ সালে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের ষষ্ঠ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। ১৯২৭ সালে কুওমিনটাং চীনা কমিউনিস্টদের বিরোধিতা করেছিলেন। চীনা কমিউনিস্টরা ঔপনিবেশিক দেশগুলির জাতীয় বুর্জোয়া দলগুলির সঙ্গে জোট বাঁধার নীতি গ্রহণ করেছিল। ষষ্ঠ কমিনটার্ন কংগ্রেসের ঔপনিবেশিক তত্ত্ব অনুসারে ভারতীয় কমিউনিস্টদের ডাক দেওয়া হয় ‘জাতীয়-সংশোধনবাদী নেতৃবৃন্দের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এবং ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জাতীয় সংশোধনবাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য এবং স্বরাজবাদী, গান্ধীবাদী ইত্যাদি সকল ধরনের নিষ্ক্রিয় প্রতিবাদী শব্দগুলির বিরোধিতা করার জন্য’।[] কংগ্রেস যদিও চীনা কুওমিংটাং ও ভারতীয় স্বরাজ্য দলের মধ্যে পার্থক্য আছে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং স্বরাজ্য দলকে নির্ভরযোগ্য বন্ধু বা প্রত্যক্ষ শত্রু কোনোটি তকমা দিতে অস্বীকার করে। কংগ্রেসে ভারতীয় কমিউনিস্টদের ডাক দেওয়া হয় জাতীয় বুর্জোয়া শক্তি ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের বিরোধের জায়গাগুলি ব্যবহার করার জন্য।[১০] এছাড়া কংগ্রেসে ডব্লিউপিপি-র সমালোচনা করা হয়। ৩ জুলাই, ১৯২৯  ১৯ জুলাই, ১৯২৯ তারিখের কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের কার্যনির্বাহী সমিতির দশম প্লেনাম অনুসারে, ভারতীয় কমিউনিস্টদের ডব্লিউপিপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশ কার্যকর করা হলে ডব্লিউপিপি ভেঙে যায়।[১১]

১৯২৯ সালের ২০ মার্চ ডব্লিউপিপি, সিপিআই ও অন্যান্য শ্রমিক নেতাদের ভারতের নানা অঞ্চল থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলাটি মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। কমিউনিস্ট নেতাদের কারারুদ্ধ করা হয়। চার বছর ধরে তাদের বিচার চলে।[১২][১৩]

১৯৩৪ সালে সিপিআই-এর প্রধান কর্মস্থল ছিল বোম্বাই, কলকাতা ও পাঞ্জাব। দল মাদ্রাজেও কার্যকলাপ বিস্তার করছিল। আমির হায়দার খান অন্ধ্র ও তামিল ছাত্রদের একটি গোষ্ঠীকে সিপিআই-এর অন্তর্ভুক্ত করেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন পি. সুন্দরায়া[১৪]

১৯৩৩ সালে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা থেকে নেতারা অব্যহতি পেলে পার্টি পুনরায় সংগঠিত হয়। দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। ১৯৩৪ সালে দলটিকে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় অংশ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হয়।[১৫]

১৯৩৪ সালে ভারতীয় বামপন্থী নেতারা কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি (সিএসপি) গঠন করলে সিপিআই এই দলটিকে সমাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী আখ্যা দেয়।[]

কমিনটার্ন জনপ্রিয় ফ্রন্ট রাজনীতির দিকে নীতি পরিবর্তন করলে ভারতীয় কমিউনিস্টরা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে পরিবর্তন আনেন। কমিউনিস্টরা কংগ্রেসের বামপন্থী শাখা কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। সিএসপিতে যোগদানের মাধ্যমে সিপিআই সিএসপির গণপরিষদের দাবি মেনে নেয়। এই দাবি দুই বছর আগে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। যদিও সিপিআই-এর ব্যাখ্যা অনুসারে একটি গণপরিষদ সোভিয়েতের সমতুল্য ছিল না।[১৬]

১৯৩৭ সালের জুলাই মাসে সিপিআই-এর প্রথম কেরল শাখাটি কালিকটে একটি গোপন বৈঠকে গঠিত হয়। এই বৈঠকে পাঁচ জন উপস্থিত ছিলেন। এঁরা হলেন পি. কৃষ্ণ পিল্লাই, ই. এম. এস. নাম্বুদিরিপাদ, এন. সি. শেখর, কে. দামোদরন ও এস. ভি. ঘাটে। এঁদের মধ্যে প্রথম চার জন ছিলেন কেরলে সিএসপি-এর সদস্য। ঘাটে ছিলেন সিপিআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি মাদ্রাজ থেকে এসেছিলেন।[১৭] কেরলে সিএসপি ও সিপিআই-এর মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। সেই সময় পি. সুন্দরায়া (সেই সময় মাদ্রাজের বাসিন্দা ও সিপিআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য) নাম্বুদিরিপাদ ও কৃষ্ণ পিল্লাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সুন্দরায়া ও ঘাটে কয়েকবার কেরলে আসেন এবং সেখানকার সিএসপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। কংগ্রেস, সিএসপি ও সারা ভারত কৃষক সভার জাতীয় সম্মেলনগুলিতে এই যোগাযোগ আরও দৃঢ় হয়।[১৪]

১৯৩৬-১৯৩৭ সালে সোশ্যালিস্ট ও কমিউনিস্টদের মধ্যে সহযোগিতার পরিমাণ সর্বাধিক বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৬ সালের জানুয়ারি মাসে মিরাটে আয়োজিত সিএসপি-র ২য় কংগ্রেসে একটি তত্ত্ব গৃহীত হয় এবং এই তত্ত্ব অনুসারে ঘোষণা করা হয় ‘মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদের ভিত্তিতে একটি সংযুক্ত ভারতীয় সমাজতান্ত্রিক দল’ গঠন করা দরকার।[১৮] ফৈজপুরে আয়োজিত সিএসপি-র ৩য় কংগ্রেসে কয়েকজন কমিউনিস্ট সিএসপি-র জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতিতে স্থান পান।[১৯]

কেরলে কমিউনিস্টরা সিএসপি-র উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। অল্প কিছু সময়ের জন্য সেখানে তারা কংগ্রেসকেও নিয়ন্ত্রণ করে। নাম্বুদিরিপাদ ও জেড. এ. আহমেদ – এই দুই কমিউনিস্ট সিএসপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সচিব হন। সিএসপি-র কার্যনির্বাহী সমিতিতে সিপিআই-এর আরও সদস্য ছিলেন।[১৬]

১৯৪০ সালে সিপিআই-এর রামগড় কংগ্রেস কনফারেন্সে দল ‘প্রলেতারিয়ান পথে’র কথা ঘোষণা করে। এর মাধ্যমে যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিয়ে সাধারণ ধর্মঘট, সরকারকে আর্থিক সুযোগসুবিধা দান বন্ধ করা এবং সশস্ত্র বিদ্রোহে মানুষকে উৎসাহিত করার ডাক দেওয়া হয়। সিএসপি জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতি রামগড়ে সমবেত হয়ে সকল কমিউনিস্টকে সিএসপিকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।[২০]

১৯৪২ সালের জুলাই মাসে সিপিআই আইনি স্বীকৃতি লাভ করে।[২১] অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের উপর কমিউনিস্টদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়। একই সময় কমিউনিস্টরা তাদের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধিতা সম্পর্কে রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন।

১৯৪৬ সালে সিপিআই একক শক্তিতে প্রাদেশিক আইনসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ১৫৮৫টি আসনের মধ্যে ১০৮টি আসনে লড়ে তারা আটটি আসন পায়। সিপিআই-এর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ছিল ৬৬৬,৭২৩। উল্লেখ্য, ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮৬% এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। দল বাংলায় তিনটি আসনে লড়ে তিনটিতেই জয় লাভ করে। সিপিআই প্রার্থী সোমনাথ লাহিড়ী গণপরিষদে নির্বাচিত হন।[২২]

১৯৪৬ সালে সিপিআই তেভাগা আন্দোলন নামে বাংলায় সামন্ত্রতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি জঙ্গি আন্দোলন শুরু করে।

স্বাধীন ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলন

১৯৬২ সালে চীন ও ভারতের মধ্যে যে যুদ্ধ হয়,সেই যুদ্ধের পক্ষে ও বিপক্ষে তৎকালীন সিপিআই-এর ভেতর অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ১৯৬৪ সালের কংগ্রেসে তার বহিঃপ্রকাশ হয়। ফলে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে সি পি আই(এম)নাম নিয়ে নতুন সংগঠন গড়া হয় এবং সি পি আই কে সংশোধনবাদী আখ্যায়িত করা হয়। সুতরাং আজ ২০১৯ সালে সি পি আই(এম)এর শত বর্ষ পালন করে তা তাসখন্দের প্রথম ঐতিহাসিক ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস অনুসারে।

Remove ads

বিশিষ্ট নেতৃবর্গ

  • বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়, (এপ্রিল, ১৯১০ - ১১ এপ্রিল, ১৯৭১) ছিলেন জমিদারতন্ত্র বিরোধী কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক নেতা ও সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ।
  • ভূপেশ গুপ্ত, (২০ অক্টোবর, ১৯১৪ - ৬ আগস্ট, ১৯৮১) ছিলেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা।
  • অজয় ঘোষ ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও তাত্ত্বিক নেতা।
  • সোমনাথ লাহিড়ী (১ সেপ্টেম্বর, ১৯০৯ - ১৯ অক্টোবর ১৯৮৪) প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা, সুলেখক ও সংবিধান রচয়িতা গণপরিষদের একমাত্র সাম্যবাদী সদস্য।
  • ভবানী সেন ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক, পলিটব্যুরো সদস্য ও খ্যাতনামা বামপন্থী বুদ্ধিজীবী।
  • অর্ধেন্দুভূষণ বর্ধন, (২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯২৪) ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সি পি আই) প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক।
Remove ads

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল

বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল

আরও দেখুন

কংগ্রেসসমূহ

ভারতের কম্যুনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেস বসে ১৯৪৮ সালে কলকাতার মহম্মদ আলি পার্ক চত্বরে।এই কংগ্রেসে সম্পাদক নির্বাচিত হন বি. টি. রণদিভে

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads