শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

মহাজাতি সদন

কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

মহাজাতি সদন
Remove ads

মহাজাতি সদন হল কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহ।[] এটি মধ্য কলকাতায় মহাত্মা গান্ধী রোড মেট্রো স্টেশনের পাশে অবস্থিত। এই প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিতভাবে বাংলা নাটক মঞ্চস্থ হয়। এর সেমিনার হলে সেমিনার আয়োজিত হয়। মহাজাতি সদন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত।[] এই প্রেক্ষাগৃহের নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর[]

দ্রুত তথ্য মহাজাতি সদন, সাধারণ তথ্যাবলী ...
Thumb
মহাজাতি সদন, কলকাতা
Thumb
মহাজাতি সদনের অন্তর্বর্তী কক্ষ
Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

Thumb
মহাজাতি সদনের পরিকল্পনাকারী সুভাষচন্দ্র বসু
Thumb
মহাজাতি সদনের নামকরণ ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৯৩৭ সালের মে মাসে সুভাষচন্দ্র বসু ও তার বন্ধু অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রচন্দ্র মিত্র সুভাষচন্দ্রের এলগিন রোডের বাড়িতে স্থানীয় যুবকদের একটি সভা ডেকেছিলেন। এই সভায় সুভাষচন্দ্র কলকাতার নাগরিকদের সভাসমিতি ডাকার উপযুক্ত একটি বড়ো প্রেক্ষাগৃহ স্থাপনের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। এর কিছুদিন পর সুভাষচন্দ্র মধ্য কলকাতায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ (অধুনা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ) ও হ্যারিসন রোডের (অধুনা মহাত্মা গান্ধী রোড) সংযোগস্থলের কাছে কলকাতা পৌরসংস্থার ৩৮ কাঠা জমির সন্ধান পান। এই স্থানটিই সুভাষচন্দ্র প্রস্তাবিত প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য নির্বাচন করেন। তার আবেদনে পৌরসংস্থা ১ টাকা লিজে জমিটি সুভাষচন্দ্রকে দিয়ে দেয়।[]

সুভাষচন্দ্র প্রস্তাবিত প্রেক্ষাগৃহের নামকরণের জন্য অনুরোধ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। রবীন্দ্রনাথ প্রেক্ষাগৃহের নামকরণ করেন "মহাজাতি সদন"। শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট স্থপতি সুরেন্দ্রনাথ কর মহাজাতি সদনের নকশা তৈরির দায়িত্ব পান। সুভাষচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকেই এই প্রেক্ষাগৃহের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুরোধ জানান।[]

১৯৩৯ সালের ১৯ আগস্ট সুভাষচন্দ্র, বিধানচন্দ্র রায় প্রমুখ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথ মহাজাতি সদনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।[] ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন:[]

আজ এই মহাজাতি সদনে আমরা বাঙালী জাতির যে শক্তি প্রতিষ্ঠা করবার সংকল্প করেছি তা সেই রাষ্ট্রশক্তি নয়, যে শক্তি শত্রুমিত্র সকলের প্রতি সংশয় কণ্টকিত। জাগ্রত চিত্তকে আহ্বান করি ; যার সংস্কারমুক্ত উদার আতিথ্যে মনুষ্যত্বের সর্বাঙ্গীণ মুক্তি অকৃত্রিম সত্যতা লাভ করি। বীর্য এবং সৌন্দর্য, কর্মসিদ্ধিমতী সাধনা এবং সৃষ্টিশক্তিমতী কল্পনা, জ্ঞানের তপস্যা এবং জনসেবার আত্মনিবেদন, এখানে নিয়ে আসুক আপন আপন বিচিত্র দান।

নির্মাণকাজ

Thumb
মহাজাতি সদনের উদ্বোধক বিধানচন্দ্র রায়

১৯৪১ সালে সুভাষচন্দ্র বসু দেশত্যাগ করলে মহাজাতি সদন নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় ব্রিটিশ সরকার তাকে ফেরার ঘোষণা করে এবং তার নামে থাকা মহাজাতি সদনের জমিখণ্ডটির লিজ বাতিল করে দেয়। সুভাষচন্দ্রের দাদা শরৎচন্দ্র বসু ও নৃপেন্দ্রচন্দ্র মিত্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করেন। আদালতের রায় লিজ বাতিল বেআইনি ঘোষিত হয়।[]

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়। ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় "মহাজাতি সদন বিল" পাস হয়।[] এরপর তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় মহাজাতি সদন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ১৯৫৮ সালের ১৯ অগস্ট তিনিই মহাজাতি সদনের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেছিলেন,[]

এই গৃহ হোক সমগ্র জনসমাজের সকল শুভকর্মের প্রাণকেন্দ্র। তাঁরা যেন এখানে ভারতের মনুষ্যত্ব এবং জাতীয়তার সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের জন্য জ্ঞান ও আলোক খুঁজে পান। তাহলেই এর মহাজাতি সদন নাম হবে সার্থক।

Remove ads

প্রেক্ষাগৃহ ও প্রদর্শনী কক্ষ

মহাজাতি সদনের মূল ভবনটি চারতলা। এই বাড়ির মাঝখানে ১৩০০ আসনবিশিষ্ট একটি প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে।[] প্রেক্ষাগৃহের চারপাশেকয়েকটি হলে স্থায়ী প্রদর্শনীর ব্যবস্থা আছে। মহাজাতি সদনের মধ্যে ৫৫০ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীর আড়াই ফুট বাই দুই ফুট সাইজের তৈলচিত্র আছে।[] একতলায় মঞ্চের ডান পাশে একটি বড়ো হলে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে একটি স্থায়ী প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দোতলায় আরেকটি বড়ো হলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের ২০৪টি সাদা-কালো আলোকচিত্রের একটি বিশেষ স্থায়ী প্রদর্শনী আছে।[] তিন তলায় আরেকটি বিশাল হলে আছে ৭২টি সাদা-কালো আলোকচিত্রের বিশেষ স্থায়ী প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীটির বিষয়বস্তু হল "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন ও সংগ্রাম"।[] এছাড়া মহাজাতি সদনের মূল প্রেক্ষাগৃহের প্রবেশপথের দুধারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সুভাষচন্দ্র বসুর দুটি আবক্ষ মূর্তি রয়েছে।[] সদনের চারতলায় ১০০ আসনবিশিষ্ট একটি সভাকক্ষ আছে।[]

Remove ads

মহাজাতি সদন বিধানচন্দ্র গ্রন্থাগার

মহাজাতি সদন প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সদনে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন-সংক্রান্ত একটি গ্রন্থাগার ছিল। ১৯৬২ সালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইগুলি এই গ্রন্থাগারে দান করা হয়। এরপরই তৎকালীন অছি পরিষদ এই গ্রন্থাগারের নাম রাখেন "মহাজাতি সদন বিধানচন্দ্র গ্রন্থাগার"। মহাজাতি সদন সংলগ্ন একটি তিনতলা বাড়িতে এই গ্রন্থাগারটি চালু আছে। পূরণ চাঁদ লাহা তার সংগ্রহের পুরনো বাংলা পত্রপত্রিকা এবং সাহিত্যিক বাণী রায় তার ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইপত্রও এই গ্রন্থাগারে দান করে যান। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, বিপ্লবীদের জীবনী ইত্যাদি নিয়ে এই গ্রন্থাগারের বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২০,০০০।[]

প্রকাশনা

১৯৬৬ সালে মহাজাতি সদনের অছি পরিষদ সদনের সংগ্রহে রক্ষিত বিপ্লবীদের ছবি থেকে ২১৩ জন বিপ্লবীর ছবি বেছে নিয়ে সচিত্র জীবনী মৃত্যুঞ্জয় প্রকাশ করে।[]

অনুষ্ঠান

মহাজাতি সদনে চারটি বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়:[]

পাদটীকা

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads