শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব

ফুটবল ক্লাব উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব
Remove ads

ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব (ইংরেজি: Manchester City F.C.; সাধারণত ম্যানচেস্টার সিটি এফসি এবং সংক্ষেপে ম্যানচেস্টার সিটি নামে পরিচিত) হচ্ছে ম্যানচেস্টার ভিত্তিক একটি ইংরেজ পেশাদার ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবটি বর্তমানে ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের ফুটবল লিগ প্রিমিয়ার লিগে প্রতিযোগিতা করে। এই ক্লাবটি ১৮৮০ সালে সেন্ট মার্ক'স নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫৩,৪০০ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট সিটি অব ম্যানচেস্টার স্টেডিয়ামে দ্য সিটিজেনস নামে পরিচিত ক্লাবটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে।[] বর্তমানে এই ক্লাবের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন স্পেনীয় সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় পেপ গার্দিওলা এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন খালদুন আল মুবারক[] বর্তমানে ইংরেজ রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কাইল ওয়াকার এই ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।[][] ম্যানচেস্টার সিটি হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, যারা ২০২২–২৩ মৌসুমে ক্লাবের ইতিহাসে ৭ম বারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছিল।

দ্রুত তথ্য পূর্ণ নাম, ডাকনাম ...

ঘরোয়া ফুটবলে, ম্যানচেস্টার সিটি এপর্যন্ত ৩৭টি শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে নয়টি প্রিমিয়ার লিগ, সাতটি এফএ কাপ এবং আটটি ইএফএল কাপ শিরোপা রয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়, এপর্যন্ত ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে একটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটি ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ এবং একটি উয়েফা সুপার কাপ শিরোপা রয়েছে। দাভিদ সিলভা, সার্জিও আগুয়েরো, জো করিগান, রহিম স্টার্লিং এবং শন গোটারের মতো খেলোয়াড়গণ ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
১৮৮৪ সালে সেইন্ট মার্কস (গর্টন) – জার্সিতে মালটিস ক্রসের কারণ এখনও অজানা।[]

১৮৯৯ সালে ইংরেজ ফুটবলের দ্বিতীয় বিভাগ জয়ের মাধ্যমে সিটি তাদের প্রথম সম্মাননা অর্জন করে এবং এর মাধ্যমে তারা ইংরেজ ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর প্রথম বিভাগে উঠে আসে। সিটি তাদের প্রথম কোন বড় সম্মাননা জিতে ১৯০৪ সালের ২৩ এপ্রিল। ক্রিস্টাল প্যালেসে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সকে ১–০ গোলে পরাজিত করে তারা এফএ কাপ শিরোপা জিতে। সে বছর তারা লিগে রানার-আপ হয়। ম্যানচেস্টার সিটিই ম্যানচেস্টার শহরের প্রথম ক্লাব হিসেবে বড় কোন শিরোপা জিতে।[১০] এফএ কাপ জয়ের পরবর্তী মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। যার পরিণতিস্বরূপ ১৭ জন খেলোয়াড়কে ছাটাই করা হয়। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে দলের অধিনায়ক বিলি মেরেডিথও ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে চলে যান।[১১] ১৯২০ সালে হাইড রোডের একটি অগ্নিকান্ডে প্রধান স্ট্যান্ড ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, ফলে ১৯২৩ সালে ক্লাবটি মস সাইডে তাদের নতুন বিশেষভাবে নির্মিত স্টেডিয়াম মেইন রোডে স্থানান্তরিত হয়।[১২]

Thumb
১৯০৪ সালে এফএ কাপ জিতা ম্যানচেস্টার সিটি দল।

১৯৩০ এর দশকে ম্যানচেস্টার সিটি টানা দুইটি এফএ কাপের ফাইনালে পৌছায়। ১৯৩৩ সালে এভারটনের বিপক্ষে তারা পরাজিত হয় এবং ১৯৩৪ সালে পোর্টসমাউকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।[১৩] ১৯৩৪ সালের এফএ কাপের ৬ষ্ঠ পর্বে স্টোক সিটির বিপক্ষে খেলায় মেইন রোডে ইংরেজ ফুটবলের ইতিহাসে কোন ক্লাবের নিজেদের মাঠে সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড গঠিত হয়। ঐ খেলার সময় মেইন রোডে ৮৪,৫৬৯ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এবং এই রেকর্ডটি এখন পর্যন্ত টিকে আছে।[১৪] সিটি ১৯৩৭ সালে প্রথমবারের মত প্রথম বিভাগের শিরোপা জিতে, কিন্তু পরবর্তী মৌসুমেই তাদের দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে, যদিও তারা ঐ মৌসুমে লিগের অন্য যেকোন দলের চেয়ে অধিক সংখ্যক গোল করেছিল।[১৫] ২০ বছর পর, রিভি প্ল্যান নামক একটি নতুন কৌশলে পরিকল্পিত ম্যানচেস্টার সিটি দল পুনরায় টানা দুইটি এফএ কাপের ফাইনালে পৌছায়। ১৯৩০ এর দশকের মত এবারও তারা প্রথমটিতে ১৯৫৫ সালে নিউকাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে পরাজিত হয় এবং পরের বছর ১৯৫৬ সালে বার্মিংহাম সিটিকে ৩–১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে। এই ফাইনালটি সর্বকালের সেরা ফাইনালগুলোর মধ্যে অন্যতম। খেলায় ম্যানচেস্টার সিটির গোলরক্ষক বার্ট টাউটমানের ঘাড় ভেঙ্গে গেলেও, তিনি অজ্ঞাতসারে খেলতে থাকেন, যার ফলে খেলাটির কথা এখনও স্মরণ করা হয়[১৬]

১৯৬৩ সালে দ্বিতীয় বিভাগে অবনমনের পর, সিটির বিবর্ণ ভবিষ্যতের শঙ্কা দেখা দেয়। ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে সুইনডাউন টাউনের বিপক্ষে খেলায় মাঠে মাত্র ৮,০১৫ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন, যা সিটির নিজেদের মাঠে সর্বনিম্ন দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড।[১৭] ১৯৬৫ সালের গ্রীষ্মে, জো মার্সার এবং ম্যালকম অ্যালিসনের ব্যবস্থাপনা দলকে নিযুক্ত করা হয়। মার্সারের অধীনে প্রথম মৌসুমেই সিটি দ্বিতীয় বিভাগের শিরোপা জিতে এবং তারা মাইক সামারবিকলিন বেলের মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের দলে ভিড়ায়।[১৮] দুই মৌসুম পর, ১৯৬৭–৬৮ তে, ম্যানচেস্টার সিটি দ্বিতীয়বারের মত লিগ শিরোপা জিতে। তাদের শিরোপা নির্ধারিত হয় লিগের একদম শেষ খেলায়। তারা ঐ খেলায় নিউকাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৪–৩ গোলে জয় লাভ করে।[১৯] তাদের জিতা পরবর্তী শিরোপাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৬৯ সালের এফএ কাপ, ১৯৭০ সালের ইউরোপীয় কাপ উইনার্স কাপ[২০] ঐ মৌসুমে সিটি লিগ কাপ শিরোপাও জিতে। এর মাধ্যমে তারা দ্বিতীয় ইংরেজ ক্লাব হিসেবে একই মৌসুমে একটি ইউরোপীয় শিরোপা ও একটি ঘরোয়া শিরোপা জিতার গৌরব অর্জন করে।

ক্লাবটির ১৯৭০ এর দশক ভালোই কাটে। তারা দুইটি মৌসুমে লিগ চ্যাম্পিয়নদের থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পেছনে থেকে লিগ শেষ করে এবং ১৯৭৪ সালে লিগ কাপের ফাইনালে পৌছায়।[২১] এছাড়া এসময় সিটি সমর্থকদের কাছে অতি স্মরণীয় একটা খেলাও অনুষ্ঠিত হয়: ১৯৭৩–৭৪ মৌসুমের শেষ খেলায় ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যানচেস্টার সিটি তাদের ঘোর প্রতিদ্বন্দী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মুখোমুখী হয়। অবনমন ঠেকানোর জন্য ইউনাইটেডের কাছে জয়ের কোন বিকল্প ছিল না। কিন্তু তাদেরকে হতাশায় ডুবায় তাদেরই প্রাক্তন খেলোয়াড় ডেনিস ল। তার একমাত্র গোলেই সিটি ১–০ গোলে জয় লাভ করে এবং এতে ইউনাইটেডের অবনমন নিশ্চিত হয়।[২২][২৩] ক্লাবটির সবচেয়ে সফল সময়ের শেষ শিরোপা ছিল ১৯৭৬ সালের লিগ কাপ। তারা নিউকাসল ইউনাইটেডকে হারিয়ে ঐ শিরোপা জিতেছিল।

১৯৬০ ও ৭০ এর দশকের সফলতার পর ক্লাবটির দীর্ঘকালীন অধঃপতন ঘটে। ১৯৭৯ সালে ম্যালকম অ্যালিসন দ্বিতীয়বারের মত ক্লাবের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তিনি স্টিভ ড্যালের মত অসফল খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নষ্ট করেন। এরপর কয়েক বছর ঘন ঘন ম্যানেজার পরিবর্তন করা হয়। ১৯৮০’র দশকেই সাত জন ম্যানেজারকে পরিবর্তন করা হয়। ১৯৮১ সালে জন বন্ডের অধীনে এফএ কাপের ফাইনালে পৌছায় সিটি, তবে ফাইনালের রিপ্লে খেলায় টটেনহামের বিপক্ষে পরাজিত হয় তারা। ১৯৮০’র দশকে ক্লাবটির দুইবার দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে (১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে)। তবে তারা ১৯৮৯ সালে পুনরায় প্রথম বিভাগে ফিরে আসে এবং ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে পিটার রেইডের অধীনে পঞ্চম স্থানে থেকে লিগ শেষ করে।[২৪] অবশ্য, এটি কেবলমাত্র একটি অস্থায়ী অবকাশ ছিল। রেইড চলে যাওয়ার পর সিটি পুনরায় নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগের প্রতিষ্ঠা হলে তারা তাতে অংশগ্রহণ করে, অর্থাৎ‍, তারা প্রিমিয়ার লিগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্লাব ছিল। প্রিমিয়ার লিগের প্রথম মৌসুমে নবম হওয়ার পর তিনটি মৌসুমে তাদেরকে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে যেতে হয়, এবং এরপর ১৯৯৬ সালে তাদের দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে। ইংরেজ ফুটবলের সে সময়কার দ্বিতীয় বিভাগ অর্থাৎ‍ ফুটবল লিগ প্রথম বিভাগে দুই মৌসুম কাটানোর পর তাদের তৃতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে। ম্যানচেস্টার সিটির ইউরোপীয় শিরোপা বিজয়ী দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে নিজ দেশের ঘরোয়া লিগের তৃতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে।

অবনমনের পর, নতুন চেয়ারম্যান ডেভিড বার্নস্টাইন নতুন ধরনের আর্থনৈতিক শৃঙ্খলা প্রবর্তন করেন।[২৫] ম্যানেজার জো রয়লির অধীনে প্রথম মৌসুমেই প্রথম বিভাগে উঠে আসে ম্যানচেস্টার সিটি। গিলিংহ্যামের বিপক্ষে প্লে-অফে নাটকীয় জয় পায় তারা। তবে ২০০১ সালে তাদের পুনরায় দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন ঘটে। রয়লির স্থলাভিষিক্ত হন কেভিন কিগান এবং সিটি ২০০১–০২ ডিভিশন এক চ্যাম্পিয়নশিপ জিতার মাধ্যমে পুনরায় প্রথম বিভাগে উঠে আসে। এছাড়া ঐ মৌসুমে ক্লাবটির ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন এবং সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডও প্রতিষ্ঠিত হয়।[২৬] ২০০২–০৩ মৌসুমে মেইন রোডে সিটির শেষ মৌসুম ছিল। এ মৌসুমে তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে একটি খেলায় ৩–১ গোলে জয় লাভ করে। এবং এর মাধ্যমে ডার্বি খেলায় তাদের টানা ১৩ বছরের জয় ক্ষরার অবসান ঘটে।[২৭] এছাড়া সিটি ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত কোন ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। ২০০৩ সালের ক্লোজ মৌসুমে ক্লাবটি সিটি অফ ম্যানচেস্টার স্টেডিয়ামে চলে আসে। নতুন স্টেডিয়ামে আসার পর সিটির প্রথম চার মৌসুমে কাটে লিগ টেবিলের মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ স্ভেন-ইয়োরান ইয়েরিকসন ২০০৭ সালে ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ক্লাবটির প্রথম বিদেশী কোচ।[২৮] মৌসুমের প্রথমার্ধ খুব ভালোভাবে কাটালেও শেষার্ধে গিয়ে দলের ছন্দপতন ঘটে এবং ২০০৮ সালের জুনে ইয়েরিকসনকে পদচ্যুত করা হয়।[২৯] দুই দিন পরের নতুন ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন মার্ক হিউজস[৩০]

২০০৮ সালের দিকে ক্লাবটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। এর এক বছর আগে ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন থাসকিন সিনাওয়াত্রা। তবে রাজনৈতিক কারণে তিনিও ক্লাবের ভাগ্য বদলাতে পারেননি।[৩১] এরপর ২০০৮ সালের আগস্টে, ক্লাবটিকে কিনে নেয় আবু ধাবি ইউনাইটেড গ্রুপ। এই অধিগ্রহণের পর বড় মাপের খেলোয়াড়দের জন্য প্রস্তাবের ফুলঝুড়ি ছুটতে থাকে। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ৩২.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে রবিনিয়োকে ক্রয় করার মাধ্যমে ব্রিটিশ ফুটবলে তারা নতুন রেকর্ড গড়ে।[৩২] এত অর্থ ব্যয়ের পরও সফলতা অধরাই রয়ে যায় এবং লিগে তারা ১০ম স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে। অবশ্য, উয়েফা কাপে তারা কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত পৌছায়। ২০০৯ সালে গ্রীষ্মে, গ্যারেথ ব্যারি, রোকে সান্তা ক্রুজ, কোলো টোরে, এমানুয়েল আদাবায়ের, কার্লোস তেবেস এবং জোলিয়ন লেসকটের মত খেলোয়াড়দের ক্রয় করতে ১০০ মিলিয়নেরও অধিক ইউরো খরচ করে ক্লাবটি।[৩৩] ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে মার্ক হিউজস কে সরিয়ে দলের ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় রবের্তো মানচিনিকে[৩৪][৩৫] ঐ মৌসুমে সিটি পঞ্চম স্থানে থেকে লিগ শেষ করে এবং অল্পের জন্য পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ হাতছাড়া করে, তবে তারা ২০১০–১১ মৌসুমে ইউরোপা লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

Thumb
২০১১ চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটি এবং বায়ার্ন মিউনিখের মধ্যকার খেলার একটি মুহূর্ত।

পরের মৌসুমেও নতুন খেলোয়াড়দের জন্য বিনিয়োগ অব্যহত থাকে। নগর প্রতিদ্বন্দী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে সিটি ২০১১ এফএ কাপের ফাইনালে পৌছায়। ৩০ বছরের মধ্যে এই প্রথম তারা কোন বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে পৌছায়।[৩৬] ফাইনালে তারা স্টোক সিটিকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে পঞ্চমবারের মত এফএ কাপ শিরোপা জিতে। ১৯৭৬ সালে লিগ কাপ জিতার পর এটিই তাদের প্রথম বড় কোন শিরোপা। একই সপ্তাহে প্রিমিয়ার লিগে টটেনহাম হটস্পারকে হারিয়ে তারা পরবর্তী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগেও জায়গা করে নেয়।[৩৭] ২০১০–১১ মৌসুমের শেষ দিনে তারা আর্সেনালকে ছাড়িয়ে লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে চলে আসে এবং সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব নিশ্চিত করে। ২০১১–১২ মৌসুমেও ক্লাবের সফলতার ধারা অব্যহত থাকে। তারা হোয়াইট হার্ট লেনে টটেনহাম হটস্পারকে ৫–১ গোলে পরাজিত করে এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে তাদের নিজেদের স্টেডিয়ামেই ৬–১ গোলে বিধ্বস্ত করে। তবে ক্লাবের এই দূর্দান্ত ফর্ম মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এসে হ্রাস পেয়ে যায় এবং লিগের মাত্র ছয়টি খেলা বাকি থাকতে সিটি তাদের প্রতিদ্বন্দীর থেকে আট পয়েন্ট পিছিয়ে যায়। তবে লিগের দুইটি খেলা বাকি থাকতে তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে পয়েন্ট সমতায় চলে আসে। এমনকি লিগের শেষ দিন পর্যন্ত তাদের পয়েন্ট সমান ছিল। সিটির শুধু প্রয়োজন ছিল অবনমন শঙ্কায় ভূগতে থাকা কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে বিজয়। কিন্তু সেই খেলায় তারা ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পরও ২–১ গোলে পিছিয়ে ছিল। অন্যদিকে ইউনাইটেডের কিছু খেলোয়াড় খেলা শেষে লিগ শিরোপা জয়ের কথা ভেবে উল্লাস করছিল। তবে ইনজুরি সময়ে জেকো ও আগুয়েরোর গোলে এগিয়ে যায় সিটি। এর মধ্যে আগুয়েরোর গোলটি ছিল খেলার একদম শেষ মিনিটে। এবং এই শেষ মিনিটের জয়ে ৪৪ বছরের মধ্যে প্রথম লিগ শিরোপা জিতে সিটি। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ প্রতিষ্ঠার পর তারা পঞ্চম দল হিসেবে এই শিরোপা জিতে। যুক্তরাজ্য এবং সেই সাথে সারা বিশ্বের কিছু সংবাদ মাধ্যম এটিকে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের সেরা মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করে।[৩৮][৩৯] খেলাটি আরও স্মরণীয় হয়ে ওঠে সিটির প্রাক্তন খেলোয়াড় জোই বার্টনের কারণে। খেলায় তিনি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই তিন জন আলাদা খেলোয়াড়কে ট্যাকল করেন যার সবগুলোই ছিল লাল কার্ড পাওয়ার মত। এরপর তাকে ১২টি খেলার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।[৪০]

Remove ads

খেলোয়াড়গণ

সারাংশ
প্রসঙ্গ

বর্তমান দল

টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।

আরও তথ্য নং, অবস্থান ...

প্রথম দলে উপস্থিতিসহ অন্যান্য খেলোয়াড়

টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।

আরও তথ্য নং, অবস্থান ...

ধারে অন্য দলে

টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।

আরও তথ্য নং, অবস্থান ...

বহিষ্কৃত

টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।

আরও তথ্য নং, অবস্থান ...

তুলে রাখা জার্সি

২০০৩ সাল থেকে ম্যানচেস্টার সিটি তাদের ২৩ নাম্বার জার্সিটি কাউকে দেয়নি। এই জার্সিটি তুলে রাখা হয়েছে সে সময়ে লিওঁতে ধারে খেলতে যাওয়া সিটির ক্যামেরুনিয়ান মিডফিল্ডার মার্ক-ভিভিয়েন ফোয়ের সম্মানে, যিনি ২০০৩ সালের ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলা চলাকালীন আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।

আরও তথ্য নং, অবস্থান ...
Remove ads

বর্তমান কর্মকর্তাগণ

পরিচালনা পরিষদ

আরও তথ্য অবস্থান, নাম ...

যৌথ পরিচালন

আরও তথ্য অবস্থান, নাম ...

দল ব্যবস্থাপনা

Thumb
ম্যানচেস্টার সিটির বর্তমান ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা
আরও তথ্য অবস্থান, নাম ...

উল্লেখযোগ্য ম্যানেজার

৭ মে ২০১৪ অনুসারে[৪১][৪২]
আরও তথ্য নাম, কার্যকাল শুরু ...

সম্মাননা

ঘরোয়া

Thumb
২০১১-১২ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতার পর শিরোপা হাতে অধিনায়ক ভিন্সেন্ট কোম্পানি।

ইউরোপ

ডাবল এবং ট্রেবল

Remove ads

ক্লাব রেকর্ড

  • রেকর্ড লিগ বিজয় – ১১–৩ বনাম লিংকন সিটি (২৩ মার্চ ১৮৯৫, এক খেলায় সর্বোচ্চ গোল) ১০–০ বনাম ডারউইন (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯, সর্বোচ্চ গোলের ব্যবধানে বিজয়)[৪৩]
  • রেকর্ড এফএ কাপ বিজয় – ১২–০ বনাম লিভারপুল স্ট্যানলি (৪ অক্টোবর ১৮৯৯)[৪৪]
  • রেকর্ড লিগ পরাজয় – ০–৮ বনাম বার্টন ওয়ান্ডারার্স (২৬ ডিসেম্বর ১৮৯৪), ০–৮ বনাম উল্ভারহাম্পটন ওয়ান্ডারার্স (২৩ ডিসেম্বর ১৯৩৩), ১–৯ বনাম এভারটন (৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৬), ২–১০ বনাম স্মল হিথ (১৭ মার্চ ১৮৯৩)[৪৩]
  • রেকর্ড এফএ কাপ বিজয় – 0–৬ বনাম প্রেস্টন নর্থ ইনড (৩০ জানুয়ারি ১৮৯৭), ২–৮ বনাম ব্র্যাডফর্ড পার্ক এভিনিউ (৩০ জানুয়ারি ১৯৪৬)[৪৪]
  • ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ উপস্থিতি – ৮৪,৫৬৯ বনাম স্টোক সিটি (৩ মার্চ ১৯৩৪)[৪৫] (ইংরেজ ফুটবলের ইতিহাসে কোন ক্লাবের নিজেদের মাঠে সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতি, যা এখনও স্থায়ী আছে।)
  • সর্বোচ্চ লিগ উপস্থিতি – ৫৬১ + ৩ বদলি, অ্যালান ওকস ১৯৫৮–৭৬[৪৬]
  • সর্বমোট সর্বোচ্চ উপস্থিতি – ৬৭৬ + ৪ বদলি, অ্যালান ওকস ১৯৫৮–৭৬[৪৬]
  • সর্বোচ্চ গোলদাতা – ১৯৯, সার্হিও আগুয়েরো ২০১১–
  • এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা – ৩৮, টমি জনসন 1928–29[৪৭]
  • পরিশোধিত রেকর্ড স্থানান্তর ফি – £৩৮ মিলিয়ন, সার্হিও আগুয়েরোর জন্য আতলেতিকো মাদ্রিদে, জুলাই ২০১১[৪৮]
  • প্রাপ্ত রেকর্ড স্থানান্তর ফি – £২১ মিলিয়ন, শন রাইট-ফিলিপসের জন্য চেলসির কাছে থেকে, জুলাই ২০০৫[৪৯]
Remove ads

সংসৃষ্ট ক্লাবসমূহ

সহ-মালিকানা

২০১৩ সালের ২১ মে ঘোষণা করা হয় যে ম্যানচেস্টার সিটি মার্কিন বেসবল ফ্রাঞ্চাইজ নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিসের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে মেজর লিগ সকারের ২০তম দল হিসেবে নিউ ইয়র্ক সিটি ফুটবল ক্লাব চালু করতে যাচ্ছে।
  • অস্ট্রেলিয়া মেলবোর্ন সিটি ফুটবল ক্লাব (২০১৪–বর্তমান)[৫১]
২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি ঘোষণা করা হয় যে ম্যানচেস্টার সিটি অস্ট্রেলিয়ান এ-লিগের দল মেলবোর্ন হার্ট ফুটবল ক্লাবকে অধিগ্রহণ করার জন্য অস্ট্রেলিয়ান রাগবি লিগের ফ্রাঞ্চাইজ মেলবোর্ন স্টোর্মের অংশীদারিত্ব গ্রহণ করেছে। ক্লাবটির নতুন নাম হতে পারে মেলবোর্ন সিটি ফুটবল ক্লাব।
  • জাপান ইয়োকোহামা এফ. ম্যারিনোস (২০১৪-বরতমান)[৫২]

২০১৪ সালের ২০ মে ঘোষণা করা হয় যে ম্যানচেস্টার সিটি জাপানের গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিশান এর সাথে অংশিদারিত্তের সুত্রে জে-লিগের দল ইয়োকোহামা এফ. ম্যারিনোস এর অংশীদারত্ব গ্রহণ করেছে।

Remove ads

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads