শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

রাখাইন রাজ্য

মিয়ানমারের একটি প্রদেশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

রাখাইন রাজ্যmap
Remove ads

রাখাইন রাজ্য (বর্মী: ရခိုင်ပြည်နယ် রাখাইন উচ্চারণ [ɹəkʰàiɴ pɹènè] রাখাইঁ প্রেনে; বর্মী উচ্চারণ: [jəkʰàiɴ pjìnɛ̀] ইয়াখাইঁ প্‌য়িনে; সাবেক আরাকান অঞ্চল) বার্মার একটি প্রদেশ, পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। এর উত্তরে ছিন রাজ্য, পূর্বে ম্যাগওয়ে অঞ্চল, ব্যাগো অঞ্চল এবং আয়েইয়ারওয়াদি অঞ্চল, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিমে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগ। আরাকান পর্বত, যার সর্বোচ্চ চূড়া ভিক্টোরিয়া শৃঙ্গের উচ্চতা ৩,০৬৩ মিটার (১০,০৪৯ ফুট), রাখাইন প্রদেশকে মূল বার্মা থেকে পৃথক করে রেখেছে। রাখাইন রাজ্যে চেদুবা এবং মাইঙ্গান দ্বীপের মত বড় কিছু দ্বীপ আছে। রাখাইন রাজ্যের আয়তন ৩৬,৭৬২ বর্গকিলোমিটার (১৪,১৯৪ বর্গমাইল) এবং এর রাজধানীর নাম সিতওয়ে (বর্মী: စစ်တွေ রাখাইন উচ্চারণ সাইক্‌টুয়ে; সিক্‌টুয়ে; সাবেক আকিয়াব)।[]

দ্রুত তথ্য রাখাইন রাজ্য আরাকান রাজ্য, মিয়ানমা প্রতিলিপি ...
Remove ads

নামকরণ

ধারণা করা হয় রাখাইন শব্দটি এসেছে পালিশব্দ “রাক্ষপুরা” (সংস্কৃত : রাক্ষসপুরা) থেকে যার অর্থ রাক্ষসদের দেশ।[] খুব সম্ভবত এই অঞ্চলে বাস করা নেগ্রিটো অধিবাসিদের জন্য এই নাম দেয়া হয়। রাখাইন রাজ্য নিজেদের ঐতিহ্য এবং নৈতিকতা ধরে রাখতে এই নামটিই বহাল রেখেছে। তাদের ভাষায় রাখাইন শব্দের অর্থ, যে নিজের জাতিসত্ত্বা ধরে রাখে।[] রাখাইন ভাষায় তারা তাদের দেশকে রাখাইনপ্রে। রাখাইন আদিবাসিরা অবশ্য বলে রাখাইনথা।

ধারণা করা হয় যে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সময়ে 'রাখাইন' নামটি পর্তুগিজ অপভ্রংশে 'আরাকান' নামে পরিবর্তিত হয়, যা এখনো ইংরেজিতে সমানভাবে জনপ্রিয়।[]

Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

রাখাইনের ইতিহাস ৭টি ভাগে বিভক্ত। সেগুলো হলোঃ ধনিয়াওয়াদি,ওয়াইথালি,লেমরো,ম্রাউক ইউ,১৭৮৫ সাল থেকে ১৮২৬ সাল পর্যন্ত বার্মিজ দখলদারিত্বের স্বাধীন রাজ্য,১৮২৬ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন এবং ১৯৪৮ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত স্বাধীন বার্মার অংশ।

১৭৮৪ সালে কোনবং রাজবংশ রাখাইন রাজ্য জয় করে। ১৮২৬ সালে,প্রথম অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের পর যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরাকান রাজ্য ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ১৮৮৬ সালে,বার্মাকে ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে রাখাইন রাজ্য ব্রিটিশ ভারতের বার্মা প্রদেশের অংশ হয়ে উঠে। ১৯৩৭ সালে রাখাইন রাজ্যটি ব্রিটিশ ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

১৯৪৮ সালে,রাখাইন বার্মার(বর্তমানে মিয়ানমার) একটি স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। ১৯৫০ এর দশক থেকে,বিচ্ছিন্নতা এবং আরাকানের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান আন্দোলন হয় রাখাইনে। এই আন্দোলনকে প্রশমিত করার জন্য,১৯৭৪ সালে,নে উইন সরকারের নতুন সংবিধান রাখাইন (আরাকান) বিভাগকে একটি ইউনিয়ন রাজ্যের মর্যাদা দেয়। ১৯৮৯ সালে, সামরিক জান্তা দ্বারা আরাকান রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে "রাখাইন" করা হয়।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ২০১২

২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা এবং রাখাইনদের মধ্যে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়। দাঙ্গাটির সূত্রপাত হয় জাতিগত কোন্দলকে কেন্দ্র করে,উভয় পক্ষই এতে জড়িত হয়ে পরে।[] অক্টোবর মাসে এটি সকল নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধের দাঙ্গা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।[] দাঙ্গার তাৎক্ষণিক কারণ জানানো হয়, এক রাখাইন তরুণীকে কয়েকজন মুসলিম কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যার ফলে রাখাইন বৌদ্ধদের দ্বারা ১০ জন মুসলিম রোহিঙ্গাকে আহত করা। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে,মায়ানমার সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দাঙ্গা কবলিত এলাকায় কারফিউ জারি করে এবং সৈন্য মোতায়েন করে। ১০ জুন রাখাইনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং সামরিক বাহিনীকে ঐ অঞ্চলের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।[][১০] ২০১২ সালের ২২শে অগাস্ট সরকারিভাবে ৮৮ জনের নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়। যাদের মধ্যে রোহিঙ্গা ৫৬ এবং ৬০ রাখাইন জন। আনুমানিক ৯০,০০০ লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।[১১] প্রায় ২,৫২৮টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল রোহিঙ্গাদের।[১২] দাঙ্গায় বার্মিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বে্র অভিযোগ পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক তরফাভাবে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক গণ গ্রেফতার এবং ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠে।[১৩]

রোহিঙ্গা সংকট (২০১৬-বর্তমান)

অক্টোবর ২০১৬ সালে থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে সহিংস সংঘর্ষ শুরু হয়। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দ্বারা বিদ্রোহী হামলার ফলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গা বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটায়।[১৪][১৫] তারা অক্টোবর ২০১৬ থেকে জুন ২০১৭ এর মধ্যে "ক্লিয়ারেন্স অপারেশন" শুরু করে। জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মতে এ অপারেশনে ১,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী।[১৬] এই সংঘাত আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্ম দেয় এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কর্তৃক এটিকে জাতিগত নির্মূল হিসেবে বর্ণনা করা হয়।[১৭][১৮] ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় এবং কয়েক লক্ষ বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়, আনুমানিক ৫০০,০০০ শরণার্থী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ নাগাদ বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।[১৯] বর্তমানে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছে।[২০]

Remove ads

শিক্ষাব্যবস্থা

ইয়াঙ্গুন এবং মান্দালয়ের বাইরে মায়ানমারে শিক্ষাসুবিধা অতি মাত্রায় অপ্রতুল। রাখাইন রাজ্যের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারী বিদ্যালয়ের সারাংশ তুলে ধরা হলোঃ[২১]

আরও তথ্য ২০১৩-১৪ শিক্ষাবছর, প্রাথমিক ...

রাজ্যের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়

স্বাস্থ্যসেবা

মায়ানমারের স্বাস্থ্যসেবার মান খুবই করুণ। সামরিক জান্তা সরকার তাদের জিডিপির শতকরা ০.৫%-৩% স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করে যা পৃথিবী দেশসমূহের মধ্যে সব থেকে কম।[২২][২৩] স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্য হলেও সরকারি ক্লিনিক এবং হাসপাতালসমূহে রোগীকে ওষুধ এবং চিকিৎসার খরচ বহন করতে হয়। ইয়াঙ্গুন এবং মান্ডালায় এর বাইরে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের দৈন্য দশা, রাখাইন রাজ্যের মত দুর্গম স্থানে নেই বললেই চলে। রাখাইন রাজ্যের হাসপাতালে অল্প কিছু বিছানা আছে। নিচে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্যসেবার তথ্য তুলে ধরা হলোঃ[২৪]

আরও তথ্য ২০০২-২০০৩, # হাসপাতাল ...
Remove ads

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads