শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (২৩ জুন,১৮৫৪ - ১৫ মে, ১৯৩৬) ভারতের যশস্বী বাঙালি শিল্পপতি ও সুদক্ষ প্রকৌশলী ছিলেন।[১]
Remove ads
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের বর্তমানের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার ভ্যাবলা গ্রামের এক সাধারণ গৃহস্থর পরিবারের। তার পিতা ভগবানচন্দ্র বারাসতে মোক্তারী করতেন। গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হওয়ার বয়সেই, যখন মাত্র বছর ছয়েক তার বয়স সেই সময় ভগবানচন্দ্র পরলোক গমন করেন। কেবল মাতার প্রয়াসে ও তত্ত্বাবধানে পিতার কর্মক্ষেত্র বারাসতে পিতার এক শুভানুধ্যায়ী ব্যক্তির সহায়তায় ভর্তি হলেন বারাসতের এক স্কুলে। লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী ছিলেন তিনি। পরে কলকাতায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে লন্ডন মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা করে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কোন রকম চাকরি লাভের চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত না করে প্রকৌশল পড়ার জন্য কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন।
Remove ads
কর্মজীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
প্রেসিডেন্সি কলেজে তিন বৎসরের পড়াশোনা শেষে নিত্য অভাব অনটনের পরিবারে চাকরি না নেওয়ার কারণে সেই আত্মীয়ের কলকাতার আশ্রয় হারাতে হয়। সহায় সম্বলহীন ও বন্ধুহীন অবস্থায় এক সময় কলকাতার পথকেই অবলম্বন করতে হয় তাঁকে।
পরে স্বাধীন ব্যবসার উদ্দেশ্যে একজন অংশীদার নিয়ে ঠিকাদারি শুরু করেন। ইতোমধ্যে তার উৎসাহ ও আগ্রহ দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন সেই সময়কার কলকাতা পুরসভার প্রধান ইঞ্জিনিয়ার স্যার ব্র্যাডফোর্ড লেসলি সাহেব। তিনি যে কাজের বরাত দিতেন তা যথাসময়ে ও নিপুণতায় সুসম্পন্ন করতেন রাজেন্দ্রনাথ। ক্রমে তিনি একজন সুদক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার হয়ে ওঠেন। শুরুতে যে ব্রিটিশ ঠিকাদার কোম্পানির ওভারসিয়ার রূপে কাজে নেমেছিলেন সেই মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানিরই অংশীদার ও সর্বময় মালিক হয়ে যান। আজকের আধুনিক কলকাতা মহানগরীর অন্যতম গর্ব ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সৌধ ও পলতা ওয়াটার ওয়ার্কস, রাজভবনের বিপরীতে এসপ্লানেড ম্যানসন, বি বা দী বাগের চার্টার্ড ব্যাঙ্ক বিডিং, মহীশূর প্যালেস, ইত্যাদি নির্মিত হয়েছিল রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানেই। তার দূরদর্শিতার ও কৃতিত্বর পরিচয় পাওয়া যায়, কলকাতার সাথে কৃষিপ্রধান জেলার যোগাযোগের জন্য আমতা, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, বারাসত বসিরহাট ইত্যাদির মধ্যে মার্টিন রেলপথ নির্মাণ।
বর্তমান হাওড়া ব্রিজ তথা রবীন্দ্র সেতু নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি সে সময়ে গঠিত হয়েছিল তার সভাপতি হিসাবে তিনি লন্ডন যান এবং এর নির্মাণের জন্য উপযুক্ত পরামর্শ দেন। তার তত্ত্বাবধানেই ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে বেলুড়মঠে রামকৃষ্ণ মন্দিরও স্থাপিত হয়।
Remove ads
ব্যক্তিগত জীবন
আত্মীয় স্বজনের পীড়াপীড়িতে বিধবা মা তার অল্প বয়সে যাদুমতীর সাথে বিবাহ দেন। তার এই বাল্য বিবাহের ক্ষোভ সারাজীবন ভুলতে পারেন নি। পরবর্তীকালে যখনই সুযোগ পেতেন বাল্য বিবাহের পাপ থেকে দূরে থাকার জন্য তরুণদের উপদেশ দিতেন। রাজেন্দ্রনাথের তিন সন্তান। ভারতের খ্যাতনামা শিল্পপতি ও দেশে ভারী শিল্পস্থাপনের সূচনাকারী স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তার সুযোগ্য দ্বিতীয় পুত্র। অন্য দুজন হলেন জিতেন্দ্রনাথ ও মহেন্দ্রনাথ। প্রভূত অর্থ, বিত্ত ও ক্ষমতার অধিকারী হয়ে নিজের অশ্রুসজল বাল্যকৈশোরের কথা ভোলেন নি। জনহিতকর কাজে এবং নিজের জন্মভূমি বসিরহাটের উন্নতিকল্পে বহু অর্থ দান করেন।
সম্মাননা ও স্মারক

১৯২১ খ্রিস্টাব্দে প্রিন্স অব ওয়েলস ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সৌধের উদ্বোধন করেন। তার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'নাইট' উপাধি লাভ করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার শেরিফ হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি.এসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) উপাধিতে ভূষিত করে। কলকাতা মহানগরীর কেন্দ্রস্থলের পূর্বতন 'মিশন রো' 'আর এন মুখার্জি রোড' বা 'রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জি রোড' নামে এখন পরিচিত। এছাড়া ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সৌধ সংলগ্ন উদ্যান চত্বরে রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের একটি মূর্তি স্থাপিত হয়েছে।
Remove ads
মৃত্যু
রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই মে তারিখে কলকাতায় প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads