শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন

বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনmap
Remove ads

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে বাংলাদেশের সিলেট জেলার সিলেট সদর উপজেলায় অবস্থিত সিলেট বিভাগের প্রধান ও বৃহত্তম রেলওয়ে স্টেশন। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের ৫ম বৃহত্তম রেল স্টেশন।

দ্রুত তথ্য সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, অবস্থান ...
Thumb
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের শেষ বিন্দু
Remove ads

অবস্থান

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনটি সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক এবং সিলেট বাইপাস সড়কের মধ্যখানে পড়েছে। এটি সিলেটের কদমতলি বাস টার্মিনালের পাশেই অবস্থিত। সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় এবং ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত সুরমা নদীর ওপর নির্মিত ক্বীন ব্রীজ থেকে এই স্টেশনটি প্রায় আধা কিলোমিটারের চেয়েও কম দূরত্বে অবস্থিত।

ইতিহাস

আসামে চা রোপণকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৮৯১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কম্পানী কর্তৃক বাংলার পূর্ব দিকে রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করে। আসামের সিলেট জেলায় কুলাউড়া হতে সিলেট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করে এবং সিলেট রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। পরবর্তীতে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক বাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ করা হয়।

কুলাউড়া–সিলেট রেলপথ অংশটি ১৯১২–১৫ সালে উদ্বোধন করা হয়।[] এর ফলে পরবর্তীতে কুলাউড়া–সিলেট রেলপথ চালু হলে তৎকালীন কুলাউড়া স্টেশনটি জংশন স্টেশনে রুপান্তরিত হয়।

সিলেট–ছাতক বাজার রেলপথ ১৯৫৪ সালে প্রবর্তন করা হয়।[]

Remove ads

পরিষেবা

রেল ব্যবস্থা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে দুই দিকে রেলপথ গিয়েছে, যথা: উত্তর-পশ্চিমে সিলেট–ছাতক রেলপথ এবং দক্ষিণ-পূর্বে সিলেট–কুলাউড়া রেলপথ। সিলেট–কুলাউড়া রেলপথটি কুলাউড়া–শায়েস্তাগঞ্জআখাউড়া রেলপথ এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম এবং ঢাকা উভয় দিক থেকেই সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মিটার গেজ রেলপথের সাথে সংযুক্ত।

আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইন ডুয়েলগেজে রূপান্তর হচ্ছে।[] ২৩৯ কিলোমিটারের এ রেললাইন ডুয়েলগেজে রূপান্তর করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। চীন সরকার এ প্রকল্পে ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে। সরকারি তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে পাঁচ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।[] বর্তমানে আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত রেললাইন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা না হলে ঢাকা থেকে সিলেট এবং চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের মধ্যে রেল যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হবে। ট্র্যাক কাঠামো, পাহাড়ি এলাকার আঁকাবাঁকা রেলপথ এবং পরিচালনা জটিলতার কারণে এ পথে বর্তমানে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে রেল চলাচল করে। ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা গেলে ব্রডগেজে ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটারগেজে গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। এতে ঢাকা থেকে সিলেট এবং চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পৌঁছানোর সময় আড়াই ঘণ্টা কমে যাবে।[]

এ ছাড়া এর মাধ্যমে আসামের সঙ্গে রেল যোগাযোগের সুযোগও তৈরি হবে। এখন এ রুটে চলছে ১৩ জোড়া ট্রেন। প্রকল্প শেষ হলে ট্রেন চলবে ২৬ জোড়া, যা আগামী ২০৩৫ সাল পর্যন্ত চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।[]

বাংলাদেশ রেলওয়ের সব মিটারগেজ রেললাইনকে ব্রডগেজ বা ডুয়েলগেজে রূপান্তরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে।[] প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে।[] এরপর প্রকল্পের প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) তৈরি করা হয়, যা ২০১৬ সালের ২১ মার্চ অনুমোদিত হয়।[] পরে বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প বিবেচনা করে এটি সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়।[] জিটুজি (সরকার টু সরকার) পদ্ধতি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয় ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ও চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।[] ঢাকায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।[]

বাংলাদেশ রেলওয়েকে একই গেজের রূপান্তরের অংশ হিসেবে আখাউড়া থেকে সিলেট রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়।[]

ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে।[] পুনর্বাসন করা হবে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে আখাউড়া সংলগ্ন শাহবাজপুর পর্যন্ত রেলপথ।[] এই দুই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।[] দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।[] ভারতের ঋণে (এলওসি) প্রকল্প দুটি নির্মিত হচ্ছে।[] প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।[]

Remove ads

রেল সেবা

সিলেট এবং রাজধানী ঢাকার মধ্যে সরাসরি কিছু রেল সেবা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সিলেট–ঢাকা রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, মেইল ট্রেন সুরমা এক্সপ্রেস। এই পথে ওয়ান-ওয়ে ভ্রমণে সাত ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগে।[] সিলেট থেকে চট্টগ্রামেও এই পথে ট্রেন চলাচল করে,[] তার মধ্যে রয়েছে সিলেট–চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন পাহাড়িকা এক্সপ্রেসউদয়ন এক্সপ্রেস, মেইল ট্রেন জালালাবাদ এক্সপ্রেস এবং আখাউড়া–সিলেট রেলপথে চলাচলকারী লোকাল ট্রেন কুশিয়ারা এক্সপ্রেস

এখানে উল্লেখ্য যে, ২০০৩ সাল থেকে পূর্ববর্তী বিগত বছর গুলোতে হবিগঞ্জ বাজারশায়েস্তাগঞ্জবাল্লা রেলপথে লোকাল ট্রেন চলাচল করতো, ২০০৩ সালে হবিগঞ্জ বাজারশায়েস্তাগঞ্জবাল্লা রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় সেই লোকাল ট্রেন এখন সিলেট–আখাউড়া রুটে চলে।[]

সিলেট ভিত্তিক ট্রেনসমূহ

বর্তমানে সিলেট ভিত্তিক ৪টি আন্তনগর এবং ২টি লোকাল ট্রেন রয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো হলো: ৭১৭-৭৪০ জয়ন্তিকা-উপবন এক্সপ্রেস (ঢাকা-সিলেট), ৭১৯-৭২০ পাহাড়িকা এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-সিলেট), ৭২৩-৭২৪ উদয়ন এক্সপ্রেস (চট্টগ্রাম-সিলেট), ৭৭৩-৭৭৪ কালনী এক্সপ্রেস (ঢাকা-সিলেট)। আর লোকালগুলো হলো সুরমা মেইল এবং ছাতক বাজার লোকাল।

Remove ads

স্টেশন শৈলী

Thumb
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন

সিলেটের নতুন রেলওয়ে স্টেশন ২০০৪ সালে উদ্বোধন করা হয়। এ.কে. রফিক উদ্দিন আহমেদ, এই প্রকল্পের প্রধান স্থপতি হিসেবে প্রকৌশল এবং প্ল্যানিং কনসাল্টেন্ট লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব করেন।[]

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের শৈলী কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের শৈলীর কিছুটা প্রতিফলন। এই পদ্ম-আকৃতির কাঠামো মূল ভবনকে ছাতার মত আচ্ছাদন করে। স্টেশনে দুটি টিকেট কাউন্টার রয়েছে। স্টেশনে ৫টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে এবং টিকিট কাউন্টারের পাশে একাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। টিকেট কাউন্টারের কাছাকাছি কিছু ফাস্ট ফুডের দোকান রয়েছে। পুরাতন প্ল্যাটফর্মকে রেলওয়ে থানায় পরিণত করা হয়েছে।

স্টেশনের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী, স্টেশন মাস্টার, একজন স্টেশন ব্যবস্থাপক রয়েছে। প্রতিদিন, হাজার হাজার মানুষ স্টেশনের মাধ্যমে আসা যাওয়া করে। মানুষ সরাসরি এই স্টেশন থেকে ছাতক, কুলাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ, আখাউড়া, ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানে যেতে পারে। ট্রেনগুলি এসে থামলে এবং যাত্রা শুরু করার আগে প্ল্যাটফর্মগুলি সর্বদা জনবহুল থাকে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং এলাকার নিয়ন্ত্রণে স্টেশনের ভেতরে এবং বাইরে প্রচুর পুলিশ এবং রক্ষী বাহিনী রয়েছে। ৩নং প্ল্যাটফর্মের পুরাতন অংশ রেলওয়ে থানায় পরিণত করা হয়েছে।

Remove ads

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads