শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও পণ্ডিত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১০ নভেম্বর, ১৮৪৮ – ৬ আগস্ট, ১৯২৫) ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরে এ দলটিকে নিয়ে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁকে রাষ্ট্রগুরু সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।

Remove ads
পারিবারিক জীবন
১৮৪৮ সালের ১০ নভেম্বর কলকাতায় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম। তার বাবা দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ঐ যুগের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক।
শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষা পাশ করেন। অতঃপর ১৮৭১ সালে তিনি সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবনে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সিলেটে আসেন। [১] তিনি তার নির্ধারিত দায়িত্ব সঠিকভাবে চালাতে পারেননি ও অগ্রসর হতে চান না - এ অজুহাতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোরালোভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে তিনি পুনরায় ইংল্যান্ডে গমন করেন। তিনি যেমন ছিলেন একজন স্বভাবজাত লেখক তদ্রূপ বাগ্মী হিসেবেও তিনি ছিলেন বিশেষভাবে পরিচিত ।
জুন, ১৮৭৫ সালে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে মনোনিবেশ ঘটান। ইংরেজির প্রফেসর হিসেবে প্রথমে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন এবং পরে ফ্রী চার্চ কলেজে নিয়োজিত ছিলেন। সর্বশেষে রিপন কলেজে যোগ দেন। পরবর্তীকালে এই রিপন কলেজই তার নামে নামকরণ করা হয় সুরেন্দ্রনাথ কলেজ হিসেবে। [২]
Remove ads
রাজনৈতিক জীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
২৬ জুলাই, ১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ সর্ব ভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত সভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। [৩] ১৮৭৮ সাল হতে তিনি দি বেঙ্গলি শিরোনামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন এবং নির্ভিক ও ঔৎসুক চিত্তে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশেষ করে জাতীয় সংস্কৃতি, একতা, স্বাধীনতা ও মুক্তির বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন।
এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় বিধানসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা কর্পোরেশনেরও সদস্য হিসেবে ছিলেন।
তার সুদক্ষ ও সুচারু নেতৃত্বের ফলে ভারত সভা অল্প সময়েই পরিস্ফুটিত হয়। ১৮৮৩ সাল থেকে ভারতের সকল এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিতভাবে বার্ষিক সভা পরিচালনা করতেন তিনি। ১৮৮৫ সালে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা পায় এবং এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্যও ভারত সভার সাথে মিল থাকায় ১৮৮৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ২য় অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন ভারত সভাকে কংগ্রেসের সাথে একীভূত করা প্রয়োজন। তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে দুইবার - ১৮৯৫ এবং ১৯০2 সালে এর সভাপতিত্ব করেন।
১৯০৫ সালে সুরেন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন [৪] এবং স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এর ফলে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। পরবর্তীতে তিনি মতানৈক্যজনিত কারণে ১৯১৮ সালে কংগ্রেস থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এবং মধ্যপন্থী হিসেবে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে একীকরণের জন্য তিনি উদ্যোগী হন। ১৯২১ সালে তিনি নাইট উপাধি লাভ করেন [৫] এবং বাংলায় তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত দেশের সেবায় মনোনিবেশ করেন।
সমাজ সংস্কারে
শিক্ষক হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে অত্যন্ত মূল্যবান ভূমিকা পালন করেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। উনবিংশ শতকে রাজা রামমোহন রায়ের নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুনর্জাগরণের আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট ছিলেন।
কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে সে সকল উদ্যোগ তেমন একটা সফলতা পায়নি! এছাড়াও সমাজ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে অংশগ্রহণ হিসেবে, বিশেষত বিধবা বিবাহ, মেয়েদের অধিক বয়সে বিবাহ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন।
Remove ads
মৃত্যু
৬ই আগস্ট, ১৯২৫; স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৭ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads