আরব–বাইজেন্টাইন যুদ্ধ
From Wikipedia, the free encyclopedia
আরব–বাইজেন্টাইন যুদ্ধ সপ্তম থেকে একাদশ শতকে আরব মুসলিম ও পূর্ব রোমান বা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধসমূহকে একত্রে বলা হয়। সপ্তম শতকে রাশিদুন ও উমাইয়া খিলাফতের সময় শুরু হওয়া মুসলিম বিজয় অভিযানের মাধ্যমে এই যুদ্ধগুলো শুরু হয়। এরপর একাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এগুলো তাদের উত্তরসুরিদের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে।
আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: মুসলিম বিজয় | |||||||||
গ্রিক ফায়ার, বাইজেন্টাইন নৌবাহিনী কর্তৃক আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধে ব্যবহার হয়। | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য Ghassanids[1] Mardaites Armenian principalities Bulgarian Empire Kingdom of Italy Italian city-states |
রাশিদুন খিলাফত উমাইয়া খিলাফত আব্বাসীয় খিলাফত আগলাবি সিসিলি আমিরাত বারি আমিরাত ক্রিট আমিরাত আলেপ্পোর হামদানি রাজবংশ ফাতেমীয় খিলাফত আলেপ্পোর মিরদাসি | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
হেরাক্লিয়াস থিওডর ট্রিথিরিয়াস † গ্রেগরি দ্য পেট্রিসিয়ান † দ্বিতীয় কন্সটান্স চতুর্থ কনস্টান্টাইন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান লিওন্টিওস হেরাক্লিয়াস পঞ্চম কনস্টান্টাইন পঞ্চম লিও আর্মেনিয়ান মিখাইল লেচেনোড্রাকন টাটজাটস প্রথম নিকেফরস থিওফিলস মেনুয়েল দ্য আর্মেনিয়ান নিকেটাস অরফাস হিমেরিওস জন করকয়াস বারডাস ফোকাস দ্য এলডার দ্বিতীয় নিকেফরস ফোকাস লিও ফোকাস দ্য ইয়ঙ্গার প্রথম জন জিমস্কাস মাইকেল বুরটজাস দ্বিতীয় বাসিল নিকেফরস অরানস জর্জ মেনিয়াকাস |
জাফর ইবনে আবি তালিব † | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
বসরায় ৮০০০[2] ইয়ারমুকে ৫০০০০[3] হাজিরে প্রায় ৭০০০[4] আয়রন ব্রিজে ১০০০০+[5] |
দাথিনে ৩০০[6] বসরায় ১৩০[2] ইয়ারমুকে ৩০০০[3] কনস্টান্টিনোপলে প্রায় ৫০০০০[7] সাথে ২৫০০ জাহাজ |
৬৩০ এর দশকে আরব উপদ্বীপ থেকে আরব মুসলিমদের অভিযানের ফলে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য তার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সিরিয়া ও মিশর মুসলিমদের কাছে হারায়। উমাইয়া খিলাফতের অধীনে পরবর্তী পঞ্চাশ বছর মুসলিমরা বাইজেন্টাইন অধীনস্থ এশিয়া মাইনরে অভিযান চালায়, দুইবার বাইজেন্টাইনদের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল হুমকির সম্মুখীন হয় এবং বাইজেন্টাইন অধিভুক্ত আফ্রিকা দখল করে নেয়। ৭১৮ সালে কনস্টান্টিনোপল অবরোধ ব্যর্থ হওয়ার পর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়। এসময় এশিয়া মাইনরের পূর্বদিকে তোরোস পর্বতমালা একটি সীমানা হিসেবে পরিগণিত হয়। আব্বাসীয় খিলাফতের অধীনে দূত বিনিময় ও বিভিন্ন মেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক আরো স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু প্রায় বার্ষিক হামলা ও পাল্টা হামলার মাধ্যমে সংঘর্ষ লেগেই ছিল। দশম শতকে এসব হামলায় আব্বাসীয় সরকার বা স্থানীয় শাসক উভয়েই উৎসাহ দেয়।
প্রথম শতাব্দীতে বাইজেন্টাইনরা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয় এবং খোলা মাঠে যুদ্ধ এড়িয়ে চলে। তারা সুরক্ষিত দুর্গে অবস্থান নিত। ৭৪০ এর পর থেকে তারা পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। কিন্তু এসময়ও আব্বাসীয়রা এশিয়া মাইনরে বড় আকারের ও বিধ্বংসী আক্রমণের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে সক্ষম ছিল। ৮৬১ এর পর থেকে আব্বাসীয়দের পতন ও বিভাজন এবং মেসিডোনীয় রাজবংশের অধীনে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শক্তিবৃদ্ধির ফলে স্রোত উল্টো দিকে ঘুরে যায়। ৯২০ থেকে ৯৭৬ এর মোট পঞ্চাশ বছরের মধ্যে বাইজেন্টাইনরা মুসলিমদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হয় এবং উত্তর সিরিয়া ও বৃহত্তর আর্মেনিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। বাইজেন্টাইন-আরব যুদ্ধের শেষ শতক ফাতেমীয়দের সাথে সীমান্তবর্তী সংঘর্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। কিন্তু ১০৬০ সালের পর সেলজুক তুর্কিদের আগমনের আগ পর্যন্ত সীমানা একইরকম ছিল।
মুসলিমরা সাগরপথেও চেষ্টা চালায়। ৬৫০ এর দশক থেকে বিভিন্ন দ্বীপ ও উপকূলীয় অঞ্চলে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের ফলে সমগ্র ভূমধ্যসাগর যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। নবম ও দশম শতাব্দীতে ক্রিট, মাল্টা ও সিসিলি মুসলিম অভিযান সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌছায়। একই সাথে মুসলিম নৌবহর ফ্রান্স, ডালমেশিয়া ও এমনকি কনস্টান্টিনোপলের শহরতলীতে পৌছে যায়।