আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র
দৃশ্যমান আলো ব্যবহার করে ক্রিয়াশীল অণুবীক্ষণ যন্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র এমন একটি যন্ত্র, যেটি দৃশ্যমান আলোতে ক্রিয়া করে। লেন্সের সাহায্যে যন্ত্রটি ছোট জিনিসকে বড় করে দেখতে সাহায্য করে। আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র সবচেয়ে পুরাতন অণুবীক্ষণ যন্ত্র। সপ্তদশ শতাব্দীতে যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়। সাধারণভাবে যেসব আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর গঠন খুব সরল হয়ে থাকে। কিন্তু যন্ত্রের রেজোল্যুশন (প্রতিবিম্বগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ ছবি তোলা) ও কনট্রাস্ট (নমুনার উপাদানসমূহের বর্ণপার্থক্য নিরূপণ, যার ফলে অধিক স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠন সম্ভব) ক্ষমতা নির্ণয়ে আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বস্তুটিকে মঞ্চ বা স্টেজের উপর রাখা হয় এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্রে একটি বা দুইটি আইপিসের মাধ্যমে একে দেখা সম্ভব হয়। উচ্চশক্তির আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে আইপিসগুলো একই প্রতিবিম্ব গঠন করে। তবে স্টিরিও অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সামান্য ভিন্ন প্রতিবিম্ব গঠন করে ত্রিমাত্রিক প্রভাব সৃষ্টি করা হয়। প্রতিবিম্ব ধারণের জন্য মাইক্রোগ্রাফ নামক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
নমুনাবস্তুটিকে বিভিন্নভাবে আলোকিত করা যায়। স্বচ্ছ বস্তুকে নিচ থেকে আলোকিত করা যায়; অপরপক্ষে কঠিন বস্তুগুলোকে অবজেক্টিভ লেন্সের মধ্য দিয়ে, কিংবা চতুর্দিক থেকে আলোকিত করা যায়। বস্তুর স্ফটিক কাঠামো অনুধাবনের জন্য পোলারায়িত আলো ব্যবহার করা হয়। দশা-বর্ণপার্থক্য নিরূপণের মাধ্যমে (Phase-contrast) ভিন্ন ভিন্ন প্রতিসরণাঙ্কের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছবি তোলা সম্ভব হয়।
ভিন্ন ভিন্ন বিবর্ধনের অবজেক্টিভ লেন্সগুলো টারেটের উপর স্থাপন করা হয়। এর ফলে বস্তুগুলোকে নির্দিষ্ট জায়গায় ঘুরানো সম্ভব হয় এবং বস্তুকে ঠিকমত বড় করে দেখানো যায়। আলোকরশ্মিগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিম্বগঠনক্ষমতা সীমিত হওয়ায় অণুবীক্ষণ যন্ত্রগুলোকে সাধারণত ১০০০এক্স বিবর্ধনমাত্রায় রাখা হয়। আইপিসের বিবর্ধন (ধরে নেওয়া যাক, ১০এক্স) ও অবজেক্টিভ লেন্সের বিবর্ধনের গুণফল-ই হলো (ধরে নেওয়া যাক, ১০০এক্স) আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাত্রা। পারিপার্শ্বিক পরিবেশে মাত্রার মানের পরিবর্তন ঘটতে পারে। যেমন - তেলের ব্যবহার কিংবা অতিবেগুনি রশ্মি বিবর্ধন বাড়িয়ে দিতে পারে।
শনাক্তকারী ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র,সঞ্চালন ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ও অভিবীক্ষণ শলাকা অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দৃশ্যমান আলো ব্যবহৃত হয় না। এর ফলে অধিক বিবর্ধন পাওয়া সম্ভব হয়।