সংস্কৃতির প্রতিভূ
কোনও সংস্কৃতির সদস্যদের স্বীকৃত ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি, বস্তু বা স্থা / From Wikipedia, the free encyclopedia
কোনও সংস্কৃতির প্রতিভূ বলতে এমন কোনও ব্যক্তি,বস্তু, স্থান বা ধারণাকে বোঝায়, যাকে কোনও মানব সংস্কৃতির সদস্যদের সিংহভাগ ঐ সংস্কৃতির একটি প্রতিনিধি হিসেবে চিহ্নিত ও স্বীকৃতি দান করে। প্রতিভূ চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়াটি বস্তুনিষ্ঠ নয়, বরং ব্যক্তিনিষ্ঠ। কোনও সংস্কৃতির সদস্যদের চোখে আপাতদৃষ্টিতে কিছু মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হলে কেউ বা কোনও কিছুকে "প্রতিভূ" হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে। সাধারণত অসাধারণ মাত্রায় ব্যাপকভাবে পরিচিত কোনও ব্যক্তি বা বস্তু যদি বহুসংখ্যক লোকের কাছে স্থান ও কালের সীমা ছাড়িয়ে বহু-বিভিন্নভাবে অর্থবহ হয়ে ওঠে ও তার আদি অর্থ, কার্য, পরিপ্রেক্ষিত ও তাৎপর্যকে অতিক্রম করে, তবে তাকে প্রতিভূর মর্যাদা দেওয়া হতে পারে।[1] সংস্কৃতির প্রতিভূগুলিকে কোনও সংস্কৃতির মাইলফলক বা কষ্টিপাথর হিসেবে ও সেটির অনন্য পরিচয় ও ঐতিহ্যের প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করা হতে পারে। সংস্কৃতির প্রতিভূরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উদযাপনে ব্যবহৃত হতে পারে। আবার এগুলিকে পণ্য ও সেবার বাণিজ্যিকীকরণেও ব্যবহার করা হতে পারে। সাধারণত এগুলি বৃহৎ সংখ্যক লোকের সামষ্টিক স্মৃতিতে বিরাজ করে ও টিকে থাকে, আকর্ষণীয় হয়, অতীতবিধুরতার সৃষ্টি করে এবং বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন অর্থ বহন করে।[2]
রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী ও বিখ্যাত ব্যক্তি, বিশিষ্ট স্থান ও স্মৃতিসৌধকে সাংস্কৃতিক প্রতিভূর কিছু উদাহরণ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। যেমন আইফেল টাওয়ার ফ্রান্সের, ফুজি পর্বত জাপানের ও স্ট্যাচু অভ লিবার্টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতির প্রতিভূ হিসেবে পরিগণিত হয়।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ও অন্যান্য স্থানে "প্রতিভূ" শব্দটি দিয়ে বহু বিভিন্ন প্রকারের ব্যক্তি, স্থান ও বস্তুকে চরিত্রায়িত করা হতে পারে। কোনও কোনও ভাষ্যকার বিশ্বাস করেন যে ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্বে "প্রতিভূ" কথাটির ইংরেজি পরিভাষা "আইকন" শব্দটি অতিব্যবহৃত হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ শিল্পকলা ঐতিহাসিক মার্টিন কেম্পের মতে "আইকন (প্রতিভূ) পরিভাষাটি এখন এমন উদারহস্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয় এবং এমনভাবে ক্ষণস্থায়ী ও স্থানীয় খ্যাতিবিশিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর উপর প্রয়োগ করা হয় যে এটির গুরুত্ব হ্রাস পেতে শুরু করেছে।"[3]