হোক্কাইদো (北海道 হোক্কাইদোও, আক্ষরিক "উত্তর সমুদ্রের বর্ত্ম")(জাপানি: [হোক্কাইদোও] () হল জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ এবং বৃহত্তম ও সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত প্রশাসনিক অঞ্চল। অতীতে এই দ্বীপের বিভিন্ন নাম ছিল, যেমন এযো, ইয়েযো, ইয়েসো প্রভৃতি। হোক্কাইদো )হোনশু দ্বীপ থেকে ৎসুগারু প্রণালী দ্বারা বিচ্ছিন্ন।[1] সমুদ্রের নিচে সেইকান্ সুড়ঙ্গের মাধ্যমে দুই দ্বীপের মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। রাজধানী শহর সাপ্পোরো হল হোক্কাইদোর বৃহত্তম নগর। এটি সমগ্র দ্বীপে সরকারী অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রত্যয়িত একমাত্র নগরও বটে।
হোক্কাইদো 北海道 | |
---|---|
প্রশাসনিক অঞ্চল | |
জাপানি প্রতিলিপি | |
• জাপানি | 北海道 |
• রোমাজি | Hokkaidō |
আইনু প্রতিলিপি | |
• আইনু | アィヌ・モシリ |
• রোমাজি | আইনু-মোসির |
দেশ | জাপান |
অঞ্চল | হোক্কাইদো |
দ্বীপ | হোক্কাইদো |
রাজধানী | সাপ্পোরো |
সরকার | |
• গভর্নর | হারুমি তাকাহাশি |
আয়তন | |
• মোট | ৮৩,৪৫৩.৫৭ বর্গকিমি (৩২,২২১.৬০ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ১ম |
জনসংখ্যা (৩০শে জুন, ২০১৬) | |
• মোট | ৫৩,৮১,৭১১ |
• ক্রম | ৮ম |
• জনঘনত্ব | ৬৪.৪৯/বর্গকিমি (১৬৭.০/বর্গমাইল) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | JP-01 |
জেলা | ৭৪ টি |
পৌরসভা | ১৭৯ টি |
ফুল | হামানাসু (রুগোসা গোলাপ, রোজা রুগোসা) |
গাছ | এযোমাৎসু (জেযো স্প্রুস, পিসিয়া জেজোয়েন্সিস) |
পাখি | তাঞ্চোও (লালঝুঁটি সারস, গ্রুস জাপোনেন্সিস) |
মাছ | সী ব্রীম |
ওয়েবসাইট | www |
স্থানীয় নাম: 北海道(本島) | |
---|---|
ভূগোল | |
অবস্থান | প্রশান্ত মহাসাগর, জাপান সাগর ও ওখট্স্ক সাগর দ্বারা বেষ্টিত |
স্থানাঙ্ক | ৪৩° উত্তর ১৪২° পূর্ব |
দ্বীপপুঞ্জ | জাপান দ্বীপপুঞ্জ |
আয়তন | [রূপান্তর: অকার্যকর সংখ্যা] |
সর্বোচ্চ উচ্চতা | ২,২৯০ মিটার (৭,৫১০ ফুট) |
সর্বোচ্চ বিন্দু | আসাহি-দাকে |
প্রশাসন | |
জাপান | |
প্রশাসনিক অঞ্চল | হোক্কাইদো |
বৃহত্তর বসতি | সাপ্পোরো (জনসংখ্যা 1,890,561) |
জনপরিসংখ্যান | |
জনসংখ্যা | আনুমানিক ৫৬,০০,০০০ |
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহ | আইনু, জাপানি |
ইতিহাস
আইনু, নিভ্খ্ এবং ওরোক জনজাতি ছিল প্রাগৈতিহাসিক হোক্কাইদো দ্বীপে[2] প্রথম বসতি স্থাপক মানব জনগোষ্ঠী।[3] নথিবদ্ধ ইতিহাসে হোক্কাইদোর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ৭২০ খ্রিঃ রচিত নিহন শোকি বইতে। এই গ্রন্থ অনুযায়ী ৬৫৮ থেকে ৬৬০ খ্রিঃ সময়কালে আবে নো হিরাফু নামক জনৈক সামরিক অধিকর্তা এক বিশাল নৌবহর ও সেনাবাহিনী নিয়ে উত্তরের সমুদ্রে অভিযান চালান এবং মিশিহাসে ও এমিশি জনগোষ্ঠীর সংস্পর্শে আসেন। হিরাফু যে সমস্ত জায়গায় গিয়েছিলেন সেগুলোর মধ্যে একটা ছিল ওয়াতারিশিমা (渡島)। এই স্থানটিকে অনেকে বর্তমান হোক্কাইদো বলে মনে করেন। অবশ্য এই গ্রন্থটির তথ্য সম্পর্কে অনেক রকম ব্যাখ্যা আছে। একটি ব্যাখ্যা অনুযায়ী ওয়াতারিশিমার এমিশি জনগোষ্ঠীই এখনকার হোক্কাইদোবাসী আইনু। নারা ও হেইয়ান যুগে (৭১০-১১৮৫ খ্রিঃ) দেওয়া প্রদেশ নামক জাপান সরকারের একটি ঘাঁটির সঙ্গে আইনুরা বাণিজ্য করত। মধ্যযুগ থেকে হোক্কাইদোর অধিবাসীদের এযো বলে ডাকা শুরু হয় এবং হোক্কাইদোর নাম হয় এযোচি[4] এযোচি (蝦夷地, আক্ষরিক "এযো-ভূমি") বা এযোগাশিমা (蝦夷ヶ島, আক্ষরিক "এযোদের দ্বীপ")। এযোদের মূল জীবিকা ছিল শিকার ও মাছ ধরা। চাল ও লোহা তারা জাপানিদের কাছ থেকে আমদানি করত।
মুরোমাচি যুগে (১৩৩৬-১৫৭৩) জাপানিরা ওশিমা উপদ্বীপের দক্ষিণে একটি জনপদ স্থাপন করে। যুদ্ধ এড়াতে ক্রমশ বেশি সংখ্যায় জাপানিরা এই জনপদে আসতে শুরু করলে জাপানি ও আইনুদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এই বিবাদ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে পুরোদস্তুর যুদ্ধের চেহারা নেয়। ১৪৫৭ খ্রিঃ তাকেদা নোবুহিরোর হাতে আইনু নেতা কোশামাইন নিহত হন এবং জাপানিরা আইনুদের পরাস্ত করে।[2] নোবুহিরোর উত্তরসূরীরা হোক্কাইদোতে মাৎসুমে পরিবারের শাসন কায়েম করেন। এই পরিবার আযুচি-মোমোইয়ামা ও এদো যুগে (১৫৬৮-১৮৬৮ খ্রিঃ) আইনুদের সাথে বাণিজ্যের একচ্ছত্র অধিকার লাভ করে। মাৎসুমে পরিবারের সমৃদ্ধি এই বাণিজ্যের উপরেই নির্ভরশীল ছিল। দক্ষিণ এযোচির উপর ১৮৬৮ পর্যন্ত তাদের কর্তৃত্ব বজায় ছিল।
মাৎসুমে পরিবারের শাসন জাপানে সামন্ততন্ত্রের বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার্য। হোনশু দ্বীপের উত্তরে উত্তর ফুজিওয়ারা, আকিতা ইত্যাদি পরিবার ছিল কার্যত স্বাধীন, এবং তারা সম্রাট ও তার প্রতিনিধি শোগুনতন্ত্রের প্রতি নামমাত্র আনুগত্য স্বীকার করত। হোক্কাইদোর সামন্ত প্রভুরা কখনও কখনও মধ্যযুগীয় জাপানি শাসনকাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে শোগুনতন্ত্রের সঙ্গে মানানসই উপাধি নিতেন, আবার কখনও আপাত অ-জাপানি খেতাব গ্রহণ করতেন। বাস্তবিক, অনেক স্থানীয় সামন্তপ্রভুই ততদিনে জাপানি সমাজের অঙ্গীভূত হলেও এমিশি যোদ্ধাদের বংশধর ছিলেন।[5] মাৎসুমে পরিবার অন্যান্য জাপানি জনগোষ্ঠীর মতই য়ামাতো জাতির উত্তরসূরী ছিল, কিন্তু উত্তর হোনশুর বাসিন্দা এমিশিরা ছিল আইনু বংশজাত। কিন্তু মাৎসুমে পরিবারের শাসনের সময় অধিকাংশ এমিশিই য়ামাতোদের সাথে মেলামেশার ফলে শারীরিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে য়ামাতোদের নিকটবর্তী হয়ে পড়েছিল। এর ফলে স্থানীয় জনবিন্যাসের ইতিহাসে প্রতিস্থাপন তত্ত্ব, অর্থাৎ আদিম জোমোন জনগোষ্ঠী পরবর্তী য়ায়োই জনগোষ্ঠীর আগমনে লোপ পায় এই মতবাদের[6] পরিবর্তে পরিবর্তন তত্ত্ব, অর্থাৎ জোমোনদের থেকেই য়ায়োইদের উদ্ভব হয় এই মতবাদের প্রচলন স্বাভাবিক হিসেবে প্রতিভাত হতে পেরেছিল।
সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে আইনুদের অসংখ্য বিদ্রোহ অনুষ্ঠিত হয়, যাদের মধ্যে মুখ্য ছিল ১৬৬৯-১৬৭২ এর শাকুশাইনের বিদ্রোহ। ১৭৮৯ এ অনুষ্ঠিত মেনাশি-কুনাশির বিদ্রোহও দমন করা হয়। এই বিদ্রোহের পর থেকে জাপানি ও আইনু শব্দ দুটি স্পষ্টভাবে দুই পৃথক জনজাতিকে শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হতে থাকে এবং মাৎসুমে পরিবার নিজেদেরকে 'বিশুদ্ধ জাপানি' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৭৯৯-১৮২১ ও ১৮৫৫-১৮৫৮ খ্রিঃ এদো শোগুনতন্ত্র রাশিয়ার কাছ থেকে আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় হোক্কাইদোর উপর সরাসরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.