গণেশপুরাণ
সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি উপপুরাণ / From Wikipedia, the free encyclopedia
গণেশপুরাণ (সংস্কৃত:गणेश पुराणम्) হল সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি উপপুরাণ। হিন্দু দেবতা গণেশের পৌরাণিক উপাখ্যান ও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এই পুরাণের প্রধান আলোচ্য বিষয়।[1] এছাড়া গণেশকে কেন্দ্র করে সৃষ্টিতত্ত্ব, বিভিন্ন রাজবংশের বংশলতিকা, রূপক কাহিনি, যোগ দর্শন-সহ সাধারণ দর্শনতত্ত্ব ও ধর্মতত্ত্বও গণেশপুরাণে আলোচিত হয়েছে।[2][3]
গণেশপুরাণ দু’টি বৃহদায়তন "খণ্ড" বা বিভাগে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডটির নাম "উপাসনাখণ্ড"। এই খণ্ডে ৯২টি অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে ধর্মতত্ত্ব ও ভক্তিযোগ। ১৬৫টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত দ্বিতীয় খণ্ডের নাম "ক্রীড়াখণ্ড"। গণেশ-সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যান ও বিভিন্ন রাজবংশের বিবরণ এই খণ্ডের আলোচ্য বিষয়।[4][5] গণেশপুরাণের অনেকগুলি পাঠান্তর পাওয়া যায়।[6] মধ্যযুগের শেষ পর্যায়ে খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের ইসলামি শাসনকালের রাজনৈতিক সংঘর্ষের যুগে এই পুরাণ রচিত ও পরিমার্জিত হয়েছিল।[7][8][9] সকল প্রধান পুরাণের বৈশিষ্ট্য ও উপাখ্যানগুলি এই পুরাণে সন্নিবেশিত হয়েছে। বেইলির মতে, অন্যান্য পুরাণগুলির মতো গণেশপুরাণেও সমসাময়িক যুগের সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটেছে।[10]
ব্রহ্ম ও ব্রহ্মাণ্ড মহাপুরাণ এবং মুদ্গল উপপুরাণের মতো গণেশপুরাণও গণেশ-সংক্রান্ত একটি বিশ্বকোষতুল্য গ্রন্থ।[1] যদিও চারটি পুরাণের মূল বিষয়বস্তু আলাদা। ব্রহ্মপুরাণ মতে গণেশ "নির্গুণ" (অর্থাৎ, সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ এই ত্রিগুণরহিত ও নিরাকার), ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ মতে গণেশ "সগুণ" (সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ এই ত্রিগুণাত্মক ও সাকার), মুদ্গলপুরাণে গণেশকে বলা হয়েছে "সম্যোগ" (পরম সত্য ও আত্মার বিমূর্ত সমন্বয়) এবং গণেশপুরাণে বলা হয়েছে যে গণেশ একাধারে সগুণ ও নির্গুণ এবং সগুণ গণেশ নির্গুণ গণেশেরই আদি রূপ।[9]
গণেশপুরাণ গ্রন্থটি গণেশ-উপাসক গাণপত্য সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ।[11][12]