ক্যালসিয়াম
একটি মৌলিক পদার্থ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ক্যালশিয়াম হচ্ছে Ca প্রতীকযুক্ত একটি মৌলিক পদার্থ, যার পারমাণবিক সংখ্যা ২০। ক্যালসিয়াম একটি ক্ষারীয় ধাতব পদার্থ। এজন্য ক্যালসিয়াম বেশ সক্রিয় ধাতু, যা বায়ুর সংস্পর্শে আসার পরে গাঢ় অক্সাইড-নাইট্রাইড স্তর গঠন করে। এর গাঠনিক ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলির অধিকাংশই মিলে যায় এর চেয়ে কিছু ভারি ও সদৃশ মৌল স্ট্রনশিয়াম এবং বেরিয়ামের সাথে। পরিমাণের দিক থেকে এটি পৃথিবীর ভূত্বকের উপাদানগুলোর ভেতরে পঞ্চম অবস্থানে আছে। একইসাথে প্রাচুর্যের দিক থেকে পৃথিবীতে প্রাপ্ত ধাতুসমূহের ভেতরে এটি তৃতীয় অবস্থানে আছে, অর্থাৎ লোহা এবং অ্যালুমিনিয়ামের পরই এর অবস্থান। পৃথিবীতে সর্বাধিক পরিমাণে পাওয়া যায় এমন ক্যালসিয়াম যৌগটি হলো ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, যা চুনাপাথর নামে পরিচিত। এটি সমুদ্রে প্রাপ্ত জীবাশ্মের অবশিষ্টাংশে পাওয়া যায়, যে জীবাশ্মগুলো সৃষ্ট হয়েছিলো সমুদ্র সৃষ্টির প্রারম্ভিক সময়ে। এর পাশাপাশি জিপসাম, অ্যানহাইড্রাইট, ফ্লোরাইট এবং অ্যাপাটাইট ক্যালসিয়ামের উৎস। ক্যালসিয়াম নামটি লাতিন শব্দ Calx Lime থেকে এসেছে। তৎকালে চুনাপাথরকে উত্তপ্ত করলে এটি পাওয়া যেত।
কিছু ক্যালসিয়াম যৌগ প্রাচীন মানুষদের কাছে পরিচিত ছিল, যদিও তাদের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সতেরো শতক পর্যন্ত অজানাই ছিল। ১৮০৮ সালে হামফ্রে ডেভি ক্যালসিয়ামের অক্সাইড যৌগের তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ ক্যালসিয়ামকে প্রথমবারের মতো পৃথক করেন। তিনিই এই উপাদানটির নাম ক্যালসিয়াম রেখেছিলেন। ক্যালসিয়ামের যৌগগুলো বিভিন্ন শিল্পে ব্যাপভাবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়: ঔষধ শিল্পে মানবদেহের পরিপূরক খাদ্য হিসেবে, কাগজ শিল্পে ব্লিচ হিসাবে, সিমেন্ট ও বৈদ্যুতিক ইনসুলেটররের উপাদান হিসাবে এবং সাবান তৈরিতে ক্যালসিয়াম দরকার হয়। অন্যদিকে, বিশুদ্ধ ক্যালসিয়ামেরও সীমিত কিছু ব্যবহার রয়েছে, কারণ এটি অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। ইস্পাত তৈরিতে মিশ্রণকারী উপাদান হিসাবে সামান্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম ব্যবহৃত হয়। আবার, গাড়ির ব্যাটারি তৈরিতেও ক্যালসিয়াম ও সীসার সংকর ব্যবহৃত হয়।
মানবদেহে পাওয়া যায় এমন উপাদানগুলোর মধ্যে, মৌলের দিক হতে ক্যালসিয়ামের অবস্থান পঞ্চম এবং ধাতুর দিক থেকে প্রথম। ক্যালসিয়াম আয়নসমূহ জীব এবং জীবকোষের শারীরবৃত্তীয় এবং জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানবদেহের হাড় গঠনে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।বাজারে বিভিন্ন ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ পাওয়া যায়।