উত্তর ভারত
ভারতের উত্তরাংশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
উত্তর ভারত ভারতের উত্তর অংশ নিয়ে গঠিত এক অঞ্চল। এর প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সিন্ধু-গঙ্গা সমভূমি ও হিমালয় পর্বতমালা, এবং হিমালয় পর্বতমালা উত্তর ভারতকে তিব্বত মালভূমি ও মধ্য এশিয়া থেকে পৃথক করে রাখে। প্রশাসনিক আলোচনায় উত্তর ভারত বলতে অনেকসময় গঙ্গা-যমুনা দোয়াব থেকে থর মরুভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলকে বোঝাতে পারে।[12] ঐতিহাসিকভাবে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর অংশকে বোঝায় যেখানে ইন্দো-আর্য ভাষাভাষী ব্যক্তি সংখ্যাগরিষ্ঠ।
উত্তর ভারত | |
---|---|
অঞ্চল | |
বিভিন্ন সংজ্ঞা অনুযায়ী উত্তর ভারতের মানচিত্র | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (বিভিন্ন সরকারি সংজ্ঞানুযায়ী)[1][2][3] | |
যেসব রাজ্যকে কখনো কখনো উত্তর ভারতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়[4][5][6][7][8][9][10][11] | |
বৃহত্তম শহর | দিল্লি |
বিশেষণ | উত্তর ভারতীয় |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
সরকারি ভাষা |
এই উত্তর ভারত অঞ্চলের বিভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্য এবং চণ্ডীগড়, জম্মু ও কাশ্মীর, দিল্লি ও লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে উত্তর আঞ্চলিক পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করেছে।[1][13] সংস্কৃতি মন্ত্রক তার উত্তর সাংস্কৃতিক অঞ্চলে উত্তরাখণ্ডকে অন্তর্ভুক্ত করেছে কিন্তু দিল্লিকে বহির্ভূত করেছে,[2] আবার ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ তার সংজ্ঞায় দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।[3] অন্যান্য যেসব রাজ্যকে কখনো কখনো উত্তর ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাদের মধ্যে গুজরাত, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও মধ্যপ্রদেশ অন্তর্গত।[4][5][6][7][8][9][10][11]
সিন্ধু সভ্যতার পতন এবং মধ্য এশিয়া থেকে উত্তর ভারতে ইন্দো-আর্য অভিপ্রয়াণের ফলে ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ, উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি ও উত্তর ভারতীয় রন্ধনশৈলীর উদ্ভব হয়েছিল। ২০০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইন্দো-ইরানি জনগোষ্ঠী উত্তরপশ্চিম হয়ে এই অঞ্চলে ধীরে ধীরে প্রবেশ করেছিল এবং এর ফলে প্রত্ন-ইন্দো-ইরানি ভাষা থেকে ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের উদ্ভব হয়েছিল। উত্তর ভারত প্রাচীন বৈদিক সংস্কৃতি, মহাজনপদ, মৌর্য সাম্রাজ্য, গুপ্ত সাম্রাজ্য ইত্যাদির কেন্দ্র ছিল। পরে দিল্লী সালতানাত, মুঘল সাম্রাজ্য ও ব্রিটিশ শাসন উত্তর ভারতে শাসনকার্য চালিয়েছিল। উত্তর ভারতের সংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং এখানে ছোট চার ধাম, হরিদ্বার, বারাণসী, অযোধ্যা, মথুরা, প্রয়াগরাজ, কাটরা ইত্যাদি হিন্দু তীর্থস্থান, সারনাথ ও কুশিনগর বৌদ্ধ তীর্থস্থান, শিখদের হরমন্দির সাহিব এবং বিভিন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে, যেমন নন্দা দেবী জাতীয় উদ্যান, খাজুরাহো মন্দির চত্বর, রাজস্থানের পাহাড়ি দুর্গ, জয়পুরের যন্তরমন্তর, কুতুব মিনার, লালকেল্লা, আগ্রা দুর্গ, ফতেহপুর সিক্রি, তাজমহল ইত্যাদি। হিন্দু ও মুসলিম ধার্মিক পরম্পরার মিশ্রণের ফলে উত্তর ভারতের সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছে।[14]