নটর ডেম কলেজ, ঢাকা
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান / From Wikipedia, the free encyclopedia
নটর ডেম কলেজ (শুনুনⓘ) (সংক্ষেপে এনডিসি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত পবিত্র ক্রুশ সন্ন্যাস সংঘের ধর্মযাজকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত একটি উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[3] ভারত বিভাজনের পর কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে সরকারের আমন্ত্রণ পেয়ে তৎকালীন আর্চবিশপ লরেন্স গ্রেনারের তৎপরতায় ও পবিত্র ক্রুশ সন্ন্যাস সংঘের সিদ্ধান্ত অনুসারে রোমান ক্যাথলিক পাদ্রি সম্প্রদায় কর্তৃক ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা নভেম্বর ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবর্ধিত রূপ হিসাবে সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের নিকটবর্তী মতিঝিল থানার অন্তর্গত আরামবাগে স্থানান্তরিত করা হয় এবং যিশু খ্রিষ্টের মাতা মেরির নামে কলেজটি উৎসর্গ করে নটর ডেম কলেজ নাম রাখা হয়। ফরাসি শব্দগুচ্ছ “নোত্র দাম”-এর অর্থ আমাদের মহীয়সী নারী হলেও নটর ডেম কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পূর্ণাঙ্গরূপে ছেলেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
লাতিন: Notre Dame College, Dhaka | |
প্রাক্তন নাম | সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজ |
---|---|
নীতিবাক্য | |
ধরন | বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজ |
স্থাপিত | ৩ নভেম্বর ১৯৪৯; ৭৪ বছর আগে (1949-11-03)[1] |
মূল প্রতিষ্ঠান | পবিত্র ক্রুশ সন্ন্যাস সংঘ |
ধর্মীয় অধিভুক্তি | খ্রিষ্টান ক্যাথলিক গির্জা |
বৃত্তিদান | খ্রিষ্টান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী |
অধ্যক্ষ | হেমন্ত পিউস রোজারিও[2] |
উপাধ্যক্ষ | লেনার্ড শংকর রোজারিও |
শিক্ষার্থী | ৬৫৮৯ |
অবস্থান | , ২৩.৭৩০৪° উত্তর ৯০.৪২০৭° পূর্ব / 23.7304; 90.4207 |
শিক্ষাঙ্গন | শহর |
ভাষা | বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম |
পোশাকের রঙ | ক্রিম (শার্ট) কালো (প্যান্ট) |
ক্রীড়াবিষয়ক | স্প্রিন্ট, দীর্ঘ লম্ফ, উচ্চ লম্ফ |
সংক্ষিপ্ত নাম | এনডিসি |
অধিভুক্তি | |
ক্রীড়া | বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, ক্রিকেট |
ওয়েবসাইট | ndc |
মানচিত্রে নটর ডেম কলেজের অবস্থান |
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে নটর ডেম কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। প্রতিষ্ঠাকালে শুধু মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ থাকলেও ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বি.এ এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে বি.এস.সি চালু করা হয়। তবে ১৯৭২-৭৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে বি.এস.সি কোর্স বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক ও বি.এ কোর্স চালু আছে। ১৯৯২ সালে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কলেজটি চারবার (১৯৫৯, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে) জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।[4] খ্রিষ্টান মিশনারি কর্তৃক পরিচালিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মূলত খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার জন্য পরিচালিত হলেও[5][6] এটি সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের জন্য উন্মুক্ত এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাঙালি মুসলিম। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী মুসলিম।[5] নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা “নটরডেমিয়ান” নামে পরিচিত।
২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নেওয়ার সুযোগ পাওয়া চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নটর ডেম কলেজ একটি।[7] পাঁচ একরের উপর স্থাপিত কলেজটিতে বর্তমানে তিনটি ছয়তলাবিশিষ্ট ও একটি তিনতলাবিশিষ্ট শিক্ষাভবন, চারতলাবিশিষ্ট একটি আবাসিক ছাত্রাবাস ও ধর্মযাজকদের জন্য একটি যাজকাবাস রয়েছে। সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ২৫টি ক্লাব পরিচালনা করে।[8]