নারিকেল
উদ্ভিদের প্রজাতি / From Wikipedia, the free encyclopedia
নারিকেল, নারকোল, নারকেল বা ডাব (বৈজ্ঞানিক নাম: Cocos nucifera)[1] পাম গাছের পরিবারের (আরেকেসি) সদস্য ও ""কোকোস"" গণের একমাত্র জীবিত প্রজাতি।[2] "নারকেল" শব্দটি পুরো নারকেল, বীজ বা ফলকে বোঝায়, যা উদ্ভিদগতভাবে বাদাম নয়, বরং শাঁসালো ফল। "কোকোনাট" নামটি (প্রাচীনরূপে কোকোয়ানাট) এসেছে পুরানো পর্তুগিজ শব্দ কোকো থেকে, যার অর্থ "মাথা" বা "খুলি"।[3] নারকেল শেলের উপর খাঁজকাটা ৩ টি চিহ্ন রয়েছে যা মুখের বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ,ফলে এটির এরূপ নামকরন। এদের উপকূলীয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সর্বত্র পাওয়া যায় এবং এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বিশ্বের সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে।
নারিকেল Cocos nucifera | |
---|---|
নারিকেল (কোকোস নুসিফেরা) | |
Secure | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | মনোকটস |
শ্রেণীবিহীন: | কমেলিনিডস |
বর্গ: | আরেকেলিস |
পরিবার: | আরেকেসিয়া |
উপপরিবার: | আরেকোইডিয়া |
গোত্র: | কোকোইয়া |
গণ: | কোকোস |
প্রজাতি: | সি. নুসিফেরা |
দ্বিপদী নাম | |
কোকোস নুসিফেরা L. | |
চাষের আগে 'কোকোস নিউসিফেরা' এর স্থানীয় পরিসীমা। |
এটা বিশ্বের একটি অন্যতম দরকারি গাছ এবং এটিকে প্রায়ই "জীবনের গাছ" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি মানুষ খাদ্য, জ্বালানী, প্রসাধনী, ভেষজ ঔষধ সরবরাহ, দালান নির্মান সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করে এবং এর রয়েছে আরও নানাবিধ ব্যবহার। এর পরিণত বীজের ভিতরের মাংস, পাশাপাশি এটি থেকে উত্তোলিত নারকেল দুধ ; গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বহু লোকের ডায়েটের নিয়মিত অংশ। নারকেল অন্যান্য ফল থেকে আলাদা কারণ তাদের এন্ডোস্পার্মে প্রচুর পরিমাণে স্বচ্ছ তরল থাকে যার নাম নারকেল জল বা নারকেল রস বা নারকেলের দুধ। পরিপক্ব নারকেল ভোজ্য হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে । এর বীজের ভিতরের মাংস ও দুধ থেকে প্রক্রিয়াজাতকৃত তেল ; শক্ত খোল থেকে কয়লা, এবং ছোবড়া থেকে কোকোপিট তৈরি হয়। এর শক্ত বহিরাবরন,ছোবড়া এবং লম্বা পাতা বিভিন্ন জিনিস ও সাজসজ্জা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় । এর থেকে প্রাপ্ত তেল এবং দুধ সাধারণত রান্নায় ব্যবহৃত হয় - বিশেষ করে কোনোকিছু ভাজায় ; পাশাপাশি সাবান এবং প্রসাধনীও তৈরি হয়।
সমাজে নারকেলের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে,[4][5] বিশেষত ভারতে, যেখানে এটি হিন্দু আচারে ব্যবহৃত হয়। এটা হিন্দু ধর্মে বিবাহ ও পূজা অনুষ্ঠানের ভিত্তি তৈরি করে, ভিয়েতনামের এক ধর্মের নামই নারকেল ধর্ম এবং বিভিন্ন পুরাণে নারকেলের কথা পাওয়া যায়। পরিপক্ব নারকেল দ্বারা মৃত্যুও হতে পারে।[4][6] নারকেল হাজার বছর ধরে মানুষ ব্যবহার করে আসছে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা তাদের বর্তমানে বিশাল পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে। নারকেলের প্রথম উৎস কোথায় তা নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বগুলি উল্লেখ করে যে এটি এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপে প্রথম উৎপন্ন। গাছগুলি ৩০ মিটার (৯৮ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হয় এবং প্রতি বছর ৭৫ টি পর্যন্ত ফল হতে পারে, তবে সাধারণত ৩০ টির মত ফল হয়। এর গাছের ঠান্ডা আবহাওয়া অসহিষ্ণু । প্রচুর বৃষ্টিপাত ও পাশাপাশি পুরো সূর্যালোক এর পছন্দ। অনেক পোকা ও কীটপতঙ্গ এর বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য একটি উপদ্রব হয়ে দাঁড়ায়। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং ভারত বিশ্বের মোট চাহিদার প্রায় ৭৫% নারকেল সরবরাহ করে।