নেলসন ম্যান্ডেলা
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্ণবৈষম্য বিরোধী নেতা / From Wikipedia, the free encyclopedia
নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা (জোজা উচ্চারণ: [xoˈliːɬaɬa manˈdeːla]; ১৮ জুলাই ১৯১৮ - ৫ ডিসেম্বর ২০১৩)[1] ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী, রাজনৈতিক নেতা এবং প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দেশটির প্রথম কৃষাঙ্গ রাষ্ট্রপ্রধান। আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের আদর্শের ধারক ম্যান্ডেলা ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতরত্ন মহামান্য নেলসন ম্যান্ডেলা | |
---|---|
দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১০ই মে, ১৯৯৪ – ১৪ই জুন, ১৯৯৯ | |
ডেপুটি | থাবো এম্বেকি এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক |
পূর্বসূরী | এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক |
উত্তরসূরী | থাবো এম্বেকি |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা (১৯১৮-০৭-১৮)১৮ জুলাই ১৯১৮ এম্ভেজো, দক্ষিণ আফ্রিকা |
মৃত্যু | ৫ ডিসেম্বর ২০১৩(2013-12-05) (বয়স ৯৫) জোহানেসবার্গ, গাউটেং, দক্ষিণ আফ্রিকা |
জাতীয়তা | দক্ষিণ আফ্রিকা |
রাজনৈতিক দল | আফ্রিকার জাতীয় কংগ্রেস |
দাম্পত্য সঙ্গী | ইভিলিন ন্তকো মাসে (১৯৪৪-১৯৫৭) উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা (১৯৫৭-১৯৯৬) গ্রাসা মাচেল (১৯৯৮–বর্তমান) |
সন্তান | মাদিবা থেম্বেকিল মাগগাথো লিওয়ানিকা মাকাজিউই মাকাজিউই জিনানি জিঞ্জিসোয়া |
বাসস্থান | হাফটন এস্টেট, জোহানেসবার্গ, গাউটেং, দক্ষিণ আফ্রিকা |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ইউনিভার্সিটি অব ফোর্ট হ্যায়ার ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এক্সটার্নাল সিস্টেম ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা ভিটভাটারস্র্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | খ্রিস্টান ধর্ম (ম্যাথডিজম) |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | www |
ম্যান্ডেলা ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিটভাটারস্র্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি উপনিবেশ-বিরোধী কার্যক্রম ও আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৪৩ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন রবেন দ্বীপ, পলসমুর কারাগার ও ভিক্টর ভার্স্টার কারাগারে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চপের মুখে এবং বর্ণবাদী গৃহযুদ্ধের আতঙ্কে রাষ্ট্রপতি এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ১১ই ফেব্রুয়ারি তাকে কারামুক্ত করার নির্দেশ দেন। কারামুক্তি লাভের পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে বর্ণবাদ নিপাতের প্রচেষ্টায় শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ম্যান্ডেলা তার দল এএনসি'র হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং জয়লাভ করে রাষ্ট্রপতিত্ব গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে গণ্য ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত সরকার প্রদত্ত ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতরত্ন পুরস্কার ও ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে নোবেল শান্তি পুরস্কার।[2] তাছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারের অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তার গোত্রের নিকট মাদিবা নামে পরিচিত, যার অর্থ হল "জাতির জনক"।