রাগমোচন
From Wikipedia, the free encyclopedia
রাগমোচন (গ্রীক οργασμός orgasmos থেকে, অর্থ "উত্তেজনা" বা "উচ্ছ্বাস") বলতে বোঝানো হয় যৌন প্রতিক্রিয়া চক্রে পুঞ্জীভূত যৌন উত্তেজনার আকস্মিক ভারমুক্তি। এসময় শ্রোণী অঞ্চলের মাংসপেশির ছন্দোময় সংকোচনের মাধ্যমে দেহে চরম যৌনসুখ অনুভূত হয়।[1][2][3] নারী এবং পুরুষ উভয়েরই রাগমোচন ঘটে থাকে। রাগমোচন মানবদেহের স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রাগমোচনের সময় মানবদেহে আরও বিবিধ ক্রিয়া ঘটতে পারে যেমন: শরীরের কিছু জায়গায় মাংসপেশির অনৈচ্ছিক সংকোচন, সাধারণ সুখকর অনুভূতি, বারবার শরীরের নড়াচড়া বা তড়িৎ ক্রমিক গতি এবং মুখে নানান ধরনের শব্দের উৎপত্তি।[2] রাগমোচনের পরবর্তি সময়টি (একে রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ডও বলা হয়) একটি নিস্তেজ পরিস্থিতি যার মূল কারণ হল অক্সিটোসিন, প্রোল্যাক্টীন এবং এন্ডোরফিনস নামক নিউরোহরমোনের নিঃসরণ।[4]
রাগমোচন যেকোন ধরনের শারীরিক যৌন উদ্দীপনার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে, যেমন পুরুষের ক্ষেত্রে শিশ্ন (এক্ষত্রে বীর্যপাত ঘটে থাকে) এবং নারীর ক্ষেত্রে ভগাঙ্কুরের উদ্দীপনার মাধ্যমে।[2][5][6] এই যৌন উত্তেজনা হস্তমৈথুনের মাধ্যমে নিজে নিজে লাভ করা হতে পারে অথবা কোন সঙ্গীর সাহায্য অন্তর্ভেদী অথবা অ-অন্তর্ভেদী প্রক্রিয়ায় অথবা অন্য যেকোন যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে হতে পারে।
রাগমোচনের শারীরিক প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ব্যাপক। যৌনক্রিয়ায় বহু মানসিক প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেমন প্রোল্যাকটিন নিঃসরনের ফলে নিস্তেজ অবস্থার সৃষ্টি হওয়া, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সাময়িক পরিবর্তন যেমন সেরেব্রাল কর্টেক্স এর একটি বড় অংশের মেটাবলিক বা শ্বসনিক কার্যক্রমের অস্থায়ী হ্রাস যেখানে মস্তিষ্কের লিম্বিক অঞ্চলে মেটাবলিক কার্যক্রমের কোন পরিবর্তন ঘটে না বা বৃদ্ধি পায়।[7] রাগমোচন বিষয়ক যৌনসমস্যার পরিধিও বড়, যেমন এনরগাজমিয়া। এগুলো রাগমোচনের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে, যেমন রাগমোচন এবং এর পৌনঃপুনিকতা যৌন সম্পর্কে সন্তুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বা অপ্রাসঙ্গিক এমন বিশ্বাস[8] এবং রাগমোচন বিষয়ক বিষয়ক জৈববিজ্ঞানিক এবং বিবর্তনগত তত্ত্বসমূহ।[9][10]
মানুষ ভিন্ন অন্যান্য প্রাণীদের রাগমোচন বিষয়ে মানুষের রাগমোচনের তুলনায় অনেক কম গবেষণা হয়, কিন্তু এই বিষয়ে গবেষণা চলছে।