শরিয়ত
ইসলামের ধর্মীয় আইনশাস্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
শরিয়ত (আরবি: شريعة, আরবি উচ্চারণ: [ʃaˈriːʕa] শারি'আহ্ বা শারি'আত; "কর্মপদ্ধতি") বা ইসলামি আইন বা শরিয়ত আইন হচ্ছে জীবনপদ্ধতি ও ধর্মীয় আইন যা ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি অনুষঙ্গ। ইসলামি পরিভাষাকোষ অনুযায়ী, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ এবং নবি হযরত মুহাম্মাদ(সঃ) যেসব আদেশ-নিষেধ, নিয়ম-নীতি ও পথনির্দেশনা মুসলমানদের জন্য প্রদান করেছেন, তার সমষ্টিই হচ্ছে শরিয়ত। এটি ইসলাম ধর্মের নিয়ম-কানুন হতে উৎসরিত, প্রধানত কুরআন ও হাদিস হতে, যা ইসলামের দৃষ্টিতে যথাক্রমে আল্লাহ ও তার রাসূল হযরত মুহাম্মাদে(সঃ) এর দিক নির্দেশনার উৎস। আরবিতে, স্রষ্টার অমোঘ স্বর্গীয় আইন বুঝাতে শরিয়ত শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
শরিয়ত সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
অতঃপর আমি আপনাকে [মুহাম্মাদকে (সাঃ)] কর্মপদ্ধতির উপর (শরিয়তের উপর) প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং আপনি তাই অনুসরণ করুন; আর আপনি মূর্খদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করবেন না।' [সুরাতুল জাসিয়া:আয়াত-১৮][1]
আরবি ভাষায় শরীয়া বলতে পথ বোঝায়। আল্লাহকে খুশি করার লক্ষ্যে মানুষের জন্য অনুকরণীয় আচরণবিধি। শরীয়া বলবৎ হলে ব্যক্তি, মানুষ ও সমাজের সকল ক্ষেত্র শরীয়তের অনুশাসন অনুযায়ী পরিচালিত হবে। শরীয়তের আওতায় ব্যবসায়-বাণিজ্য, পারিবারিক আইন, নৈতিকতা, অপরাধ ও শাস্তি, দান-খয়রাত সহ সবই রয়েছে। প্রচলিত ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে এই ইসলামী শরীয়তের বিধানগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত।
শরিয়ার ভূমিকা বিশ্বজুড়ে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। উত্তর আমেরিকার কিছু বিচারব্যবস্থা শরিয়া ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা পাস করেছে, যা ধর্মীয় বা বিদেশী আইনের উপর বিধিনিষেধ হিসাবে তৈরি করা হয়েছে। শরিয়া গণতন্ত্র, মানবাধিকার, চিন্তার স্বাধীনতা, নারীর অধিকার, এলজিবিটি অধিকার এবং ব্যাংকিংয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিয়ে চলমান বিতর্ক রয়েছে। স্ট্রাসবার্গে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত (ECtHR) বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে রায় দিয়েছে যে শরিয়া "গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির সাথে বেমানান"।[2][3]