সাইন্টোলজি
From Wikipedia, the free encyclopedia
সাইন্টোলজি হল এক ধরনের ধর্ম বিশ্বাস যার প্রবর্তন করেন কল্পবিজ্ঞান গল্পের বিখ্যাত লেখক এল রন হাবার্ড। হাবার্ড মূলত তার বই ডাইনেটিকস-এর উপর ভিত্তি করে ধর্মটি উদ্ভাবন করেন।[6] হাবার্ড ১৯৫২ সালে ডাইনেটিকস-এর মূল বক্তব্য শরীরের সঙ্গে মন বা আত্মার সম্পর্কের ভিত্তিতে ধর্মটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে ক্যামডেন, নিউজার্সিতে চার্চ অফ সাইন্টোলজি নামে একটি গির্জা প্রতিষ্ঠা করা হয়।[7][8]
গঠিত | ১৯৫৪[2] |
---|---|
ধরন | ধর্ম / বাণিজ্যিক[3][4] |
সদরদপ্তর | গোল্ড বেস রিভারসাইট কাউন্টি, ক্যালিফোর্নিয়া[5] |
ধর্মীয় প্রযুক্তি সেন্টারের চেয়ারম্যান | ডেভিড মিসকেভিস |
ওয়েবসাইট | scientology.org |
মন্তব্য | Flagship facility: Church of Scientology International, Los Angeles, California, USA |
সাইন্টোলজিতে শিক্ষা দেওয়া হয় যে, মানুষ মরনশীল নয় কিন্তু কালের বিবর্তনে তারা নিজেদের প্রকৃতি ভুলে গিয়েছে।[9] অডিটিং নামে তাদের একটি আধ্যাত্মিক পুনর্বাসন পদ্ধতির পরামর্শ দেওয়া হয়, এতে অনুশীলনকারীদের তাদের অতীত বেদনাদায়ক বা আঘাতমূলক অভিজ্ঞতা পুনরায় সীমিত সময়ের জন্য দেওয়া হয় যাতে তারা আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ করে সবসময় হাসি-খুশি থাকতে পারে।[10] বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক বিষয়বস্তু ও অডিটিং প্রক্রিয়া গির্জার সদস্যদের বিনামূল্যে দেওয়া হয় এবং গির্জার পক্ষ থেকে বলা হয় এটি নির্দিষ্ট দানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।[11][12] ডাইনেটিকসের উদ্দেশ্য হলো মানুষের মন বা আত্মার কিছু চিন্তা-ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করা, যা দিয়ে মানুষ কষ্ট পায়। কোনোভাবে এটা থেকে মুক্তি যদি মিলে যায়, তাহলে মানুষের জীবন হয়ে ওঠে অনেক সুন্দর। সাইন্টোলজি ধর্মের অনুসারীরা এই আদর্শই মেনে চলেন। সাইন্টোলজি বিভিন্ন দেশ যেমন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি,[13][14] দক্ষিণ আফ্রিকা,[15] অস্ট্রেলিয়া,[16] সুইডেন,[17] নিউজিল্যান্ড,[18][19] পর্তুগাল[20] ও স্পেনে[21][22][23][24][25] বৈধ ট্যাক্সবিহীন ধর্ম হিসেবে পরিচিত। চার্চ অফ সাইন্টোলজি এটাকে প্রকৃত ধর্ম হিসেবে প্রচার চালায়।[26] অপরদিকে সুইজারল্যান্ডে এটিকে বাণিজ্য সংস্থা হিসেবে, ফ্রান্সে বিরোধী দল, চিলিতে প্রবলভাবে আসক্ত (কাল্ট) ধর্মীয় গোষ্ঠী ও নরওয়েতে অলাভজনক সংস্থা হিসেবে মনে করা হয়। মূলত, ধর্মটির প্রকারভেদ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে।
সাইন্টোলজির প্রয়োগ সম্প্রসারণ করার জন্য অসংখ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে,[27] তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো চার্চ অফ সাইন্টোলজি। সাইন্টোলজি বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডমূল সেবা প্রদান করে থাকে।[27][28] যারমধ্যে, নারকোনন মাদক-বিরোধী প্রকল্প, ক্রাইমিনন জেলখানা পুনর্বাসন প্রকল্প, কারিগরি শিক্ষা প্রকল্প। এছাড়া দ্য ওয়ে হেপিনেস ফাউন্ডেশন কর্তৃক সদস্যদের জন্য দ্য ওয়ে টু হেপিনেস (সুখী হওয়ার উপায়) নামে নৈতিক উপদেশমূলক একটি বই বিতরন করা হয়।[29]
সাইন্টোলজি হলো বিংশ শতাব্দীতে শুরু হওয়া অন্যতম প্রধান বিতর্কিত ধর্মীয় আন্দোলন। সাইন্টোলজির গির্জাগুলোর বিরোদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ করা হয় তারা বিভিন্ন অস্বাভাবিক বা উদ্ভট কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। এর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড যেমন, ব্রেইনওয়াশ, প্রায়ই তার সদস্যদের প্রতারিত করা,[30] এর সমালোচকদের বা শত্রুদের মানসিকভাবে হয়রানি, চরিত্র হনন ও ব্যয়বহুল মোকদ্দমায় জড়ানোর ফলে অনেকেই এই নতুন ধর্মীয় বিশ্বাসকে সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন।[12][31][32] এর জবাবে সাইন্টোলজির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাইন্টোলজিই হল সত্য ধর্মীয় বিশ্বাস কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে এর বিরোদ্ধে ভুল, কালিমালিপ্ত তথ্য প্রচার করা হয়।[33] সাইন্টোলজি চার্চ ধারাবাহিকভাবে তার সমালোচকদের বিরোদ্ধে মামলা মোকদ্দমা অব্যহত রেখেছে এবং এর অনুসারীরা তাদের উপর অত্যাচার অব্যহত রেখেছে বলে অনেকেই এর নিন্দা করে থাকেন।[34][35] এছাড়াও সাইন্টোলজির বিশ্বাস নিয়েও বিতর্ক রয়েছে যে, মানুষের আত্মা পৃথিবীতে থাকার পূর্বে অন্য একটি গ্রহে ছিল এবং মৃত্যুর পরও অণ্য একটি গ্রহের বাসিন্দা হয়ে জন্ম নিবে[36] এবং এই সম্পর্কিত কিছু কিছু বিশ্বাস অনুশীলনকারীদের উদ্ভূত করে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা চার্চ অফ সাইন্টোলজিকে হাজার হাজার ডলার অনুদান প্রদান করেন।[37][38] সাইন্টোলজিদের দ্বারা অনুষ্ঠিত আরেকটি বিতর্কিত বিশ্বাস হলো, মনোরোগবিদ্যা চর্চা করা ধ্বংসাত্মক ও অবমাননাকর এবং অবশ্যই বাদ দিতে হবে।[39][40]