হ্যামলেট
শেক্সপিয়ার রচিত সর্ববৃহৎ ট্রাজেডি নাটক / From Wikipedia, the free encyclopedia
হ্যামলেট বা দ্য ট্র্যাজেডি অফ হ্যামলেট, প্রিন্স অব ডেনমার্ক সংক্ষেপে হ্যামলেট নামে বহুল পরিচিত একটি শেক্সপিয়রীয় ট্র্যাজেডি যা ১৫৯৯ এবং ১৬০১ সালের মাঝে কোন একসময় রচিত হয়েছিল। এটি ২৯,৫৫১ টি শব্দ নিয়ে শেক্সপিয়র রচিত সবচেয়ে দীর্ঘতম নাটক। ডেনমার্ক সাম্রাজ্যের পটভূমিতে রচিত নাটকটি যুবরাজ হ্যামলেট ও তার চাচা ক্লদিয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ স্পৃহাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে যিনি সিংহাসন দখলের জন্য হ্যামলেটের পিতাকে হত্যা করেছিলেন এবং হ্যামলেটের জন্মদাত্রী মাকে বিয়ে করেছিলেন।
দ্য ট্র্যাজেডি অফ হ্যামলেট, প্রিন্স অফ ডেনমার্ক | |
---|---|
রচয়িতা | উইলিয়াম শেকসপিয়র |
চরিত্র | |
মূল ভাষা | ইংরেজি |
বর্গ | শেকসপিয়রীয় বিয়োগান্ত নাটক |
প্রেক্ষাপট | ডেনমার্ক |
হ্যামলেট কে বিশ্ব সাহিত্যের একটি অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রভাব বিস্তারকারী সৃষ্টিকর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয় যার গল্পটি অসংখ্যবার বলবার পরও এর মাধুর্য অনিঃশেষ। অনেকেই তাদের লেখনীতে এর গল্পকে নানাভাবে ধারণ বা আত্মীকরণ বা এডাপ্ট করেছেন।[1] শেক্সপিয়ারের জীবনে হ্যামলেট ছিল সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় ট্র্যাজেডি নাটকগুলোর মধ্যে একটি।[2] সেই সাথে ১৮৭৯ সাল থেকে বর্তমান অব্দি রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানি ও এর উত্তরসূরি স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-এভন এর তালিকার শীর্ষে থাকা সবচেয়ে বেশিবার মঞ্চায়িত নাটকও এটি।[3] জোহান ওলফগ্যাঙ ভন গ্যোয়েটে, চার্লস ডিকেন্স থেকে শুরু করে জেমস জথেস এবং আইরিস মুরডক পর্যন্ত বহু লেখক নাটকটি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সিনডারেলা র পর এটিই বিশ্বে সবচেয়ে বেশিবার চিত্রায়িত গল্প।[4]
শেকসপিয়ারের হ্যামলেট এর মূল গল্পটি উৎসারিত হয়েছিল খুব সম্ভবত এমলেথ নামক একটি উপকথা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যা ১৩ শতকের কাহিনীকার স্যাক্সো গ্রামাটকাসের রচিত গেস্টা ডেনোরামে সংকলিত রয়েছে। পরবর্তীতে ১৬ শতকের পণ্ডিত ফ্রাঙ্কোয়েস ডি বেলফরেস্টও গল্পটি পুনরায় বলেছেন। শেকসপিয়ার সম্ভবত এলিজাবেথান নাটক 'উর-হ্যামলেট ' দ্বারাও আকৃষ্ট হয়ে থাকেতে পারেন। যদিও কিছু কিছু পণ্ডিত মনে করেন শেকসপিয়ারই মূলত 'উর-হ্যামলেট ' রচনা করেছিলেন এবং পরে একে সংস্কার করে আজকের 'হ্যামলেট' নাটকে রূপদান করেন। তৎকালীন কিংবদন্তি অভিনেতা রিচার্ড বার্বেজকে মূল চরিত্র হিসেবে কল্পনা করে তিনি বিয়োগান্ত নাটকটি সাজিয়েছিলেন। আর রচিত হওয়ার পর গত চারশ বছর ধরে প্রতিটি শতাব্দীতে হ্যামলেট চরিত্রটি অগণিত কিংবদন্তি অভিনেতা স্বরূপ দিয়ে আসছেন।
নাটকটির ভিন্ন ভিন্ন তিনটি আদি ভার্সন বা রূপ এখন পর্যন্ত বর্তমান আছে: ফার্স্ট কোয়ার্টো (কিউ ১, ১৬০৩); সেকেন্ড কোয়ার্টো (কিউ ২, ১৬০৪) এবং ফার্স্ট ফোলিও (এফ ১, ১৬২৩)। প্রতিটি ভার্সন কথোপকথন ও পরিপূর্ণ চিত্রায়ন সংবলিত এবং পরস্পর থেকে পৃথক। নাটকটির কাঠামো ও চরিত্রায়নের গভীরতা স্বাভাবিকভাবেই সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণকে প্রাণিত করেছে। যেমন, হ্যামলেট কেন তার চাচাকে হত্যা করতে গিয়ে দ্বিধা করেছিলেন: শতাব্দী পুরোনো এই বিতর্কের প্রসঙ্গটিই উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে। অনেকের কাছে বিষয়টি নিতান্তই নাটকের প্লট প্রলম্বিত করবার একটি চেষ্টা মাত্র। আবার বাকিরা একে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা, পরিকল্পিত প্রতিশোধ এবং ব্যর্থ আকাঙ্খার মতো জটিল দার্শনিক ও নৈতিক বিষয়গুলোর নাট্যরূপ হিসেবেও ব্যাখ্যা করতে চাইছেন। খুব সম্প্রতি মনোবিশ্লেষণবাদী সমালোচকরা হ্যামলেটের অবচেতনামূলক বা অসচেতন আকাঙ্খাগুলো নিয়ে গবেষণা করছেন। অন্যদিকে ওফেলিয়া ও গারট্রুডের মতো প্রায়-হীনভাবে উপস্থাপিত চরিত্রগুলো নিয়েও নারীবাদী সমালোচকেরা নতুন করে ভাবছেন।