অ্যাডলফ মায়ার
জার্মান কৃষিবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অ্যাডলফ এডুয়ার্ড মায়ার (৯ আগস্ট ১৮৪৩ – ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪২) একজন জার্মান কৃষিবিদ ছিলেন যিনি তামাকের মোজাইক রোগ নিয়ে কাজ করেছেন যা টোবাকো মোজাইক ভাইরাস আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
অ্যাডলফ এডুয়ার্ড মায়ার | |
---|---|
জন্ম | (১৮৪৩-০৮-০৯)৯ আগস্ট ১৮৪৩ ওল্ডেনবার্গ, জার্মানি |
মৃত্যু | ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪২(1942-12-25) (বয়স ৯৯) |
জাতীয়তা | জার্মান |
মাতৃশিক্ষায়তন | কার্লসরুয়ে প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | টোবাকো মোজাইক ভাইরাস |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | উদ্ভিদবিদ্যা, ভাইরাসবিদ্যা |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | হ্যালে-উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াগেনিংজেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্র |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | জুলিয়াস কুহন |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | দিমিত্রি আইভানোভস্কি, মার্টিনাস বাইয়েরিঙ্ক |
মায়ার ১৮৪৩ সালে ওল্ডেনবার্গের একটি হাই স্কুল শিক্ষকের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন বিখ্যাত জার্মান রসায়নবিদ লিওপোল্ড গেমেলিনের কন্যা। ১৮৬০ থেকে ১৮৬২ সাল পর্যন্ত তিনি কার্লসরুয়ে প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে জীববিদ্যা, ভূতত্ত্ব এবং রসায়ন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৮৬২ সালে তিনি হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, যেখানে ১৮৬৪ সালে তিনি জীববিজ্ঞানে পিএইচডিসহ সুমা কাম লড স্নাতকপ্রাপ্ত হন।
১৮৭৯ সালে, যখন মায়ার নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিংজেনে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তখন ওলন্দাজ কৃষকরা তাকে এমন একটি অদ্ভুত রোগ নিয়ে গবেষণা করতে বলেছিলেন যা তামাক গাছকে আক্রান্ত করে। মায়ার ১৮৮৬ সালে এই রোগের উপর একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন, যাকে তিনি "তামাকের মোজাইক রোগ" নামে নামকরণ করেন এবং সেখানে তিনি এই রোগের লক্ষণগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করেন।[1] তিনি দেখিয়েছিলেন যে আক্রান্ত তামাক গাছের রসকে ইনোকুলাম হিসাবে সুস্থ গাছে সংক্রমিত করানোর মাধ্যমে এই রোগটি ছড়ানো যায়। সেই সময়ে মনে করা হতো যে এই রোগটি খুব ছোট ব্যাকটেরিয়া বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে; তবে কয়েক বছর পর টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (টিএমভি) কে এই রোগের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
মায়ার তামাক গাছের সংক্রমিত রসে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ করার জন্য আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজার চেষ্টা করেছিলেন, তবুও তিনি কিছুই খুঁজে পাননি; যেহেতু ভাইরাস এতই ক্ষুদ্র যে তাদেরকে শুধুমাত্র আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা শনাক্ত করা যায় না। মায়ার তখন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে সংক্রামক অনুজীবটি এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। একইসাথে দাবি করেন যে তিনি বেশ কয়েকবার ফিল্টার পেপার ব্যবহার করে সংক্রমিত রস থেকে "পরিশ্রুত দ্রবণ" পেতে সক্ষম হয়েছেন যা ছিল তার ভ্রান্ত ধারণা। ১৮৯২ সালে দিমিত্রি আইভানোভস্কি এবং ১৮৯৮ সালে মার্টিনাস বাইয়েরিঙ্ক চেম্বারল্যান্ড ছাঁকনি দ্বারা পরিস্রাবণ পরীক্ষা করেছিলেন, যেখানে তারা দেখিয়েছিলেন যে টোবাকো মোজাইক রোগের সংক্রামক অনুজীবকে দ্রবণ থেকে পরিশ্রুত (ছাঁকন) করা সম্ভব নয়।
মার্টিনাস বাইয়েরিঙ্ক তামাকের মোজাইক রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবকে একটি নন-ব্যাকটেরিয়াল প্রকৃতি হিসেবে উল্লেখ করতে "ভাইরাস" শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। টোবাকো মোজাইক ভাইরাসটি ছিল প্রথম ভাইরাস যাকে ১৯৩৫ সালে প্রথম পৃথক করে কেলাসিত (স্ফটিক) করা হয়েছিল। যাইহোক, ভ্রান্ত ধারণা সত্ত্বেও, তামাকের মোজাইক রোগের উপর মায়ারের অগ্রগামী কাজ ভাইরাস আবিষ্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। এছাড়াও এটি জীববিজ্ঞানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা ভাইরাসবিদ্যার ভিত্তি তৈরি করেছিল।[2]