Loading AI tools
ইংরেজ ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আব্রাহাম অ্যাব ওয়াডিংটন (ইংরেজি: Abe Waddington; জন্ম: ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৩ - মৃত্যু: ২৮ অক্টোবর, ১৯৫৯) ইয়র্কশায়ারের ক্লেটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২০ থেকে ১৯২১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | আব্রাহাম ওয়াডিংটন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ক্লেটন, ব্রাডফোর্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৩|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৮ অক্টোবর ১৯৫৯ ৬৬) স্কারবোরা, উত্তর ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | অ্যাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৮৪) | ১৭ ডিসেম্বর ১৯২০ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯১৯ - ১৯২৭ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ এপ্রিল ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন আব্রাহাম ওয়াডিংটন নামে পরিচিত অ্যাব ওয়াডিংটন।
১৯১৯ সাল থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত অ্যাব ওয়াডিংটনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯১৯ থেকে ১৯২৭ সময়কালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ২৫৫টি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৬৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। খেলাগুলোয় অংশ নিয়ে বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করে ৮৫২টি উইকেট লাভ করেছিলেন। বলকে তিনি সুইং করাতে পারতেন। অপ্রত্যাশিতভাবে তিনি তার সময়কালে প্রতিপক্ষীয় ব্যাটসম্যানকে লক্ষ্য করে উত্ত্যক্ত করতেন ও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলতেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রথম খেলতে শুরু করেন তিনি। এ সময়ে দলটি আঘাত ও অবসর গ্রহণের কারণে বেশ দূর্বলতর ছিল। ১৯১৯ সালে নিজস্ব প্রথম মৌসুমে খুব দ্রুত নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন। শতাধিক উইকেট পান তিনি। ঐ বছরে ইয়র্কশায়ারের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। ১৯২০ সালে এ ধারা অব্যাহত রাখেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯২০-২১ মৌসুমে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্যে মনোনীত হন। পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের দুই টেস্টে খেলার সুযোগ পান তিনি। তবে, ইংল্যান্ড দল প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন অবস্থায় ছিল। খেলার কৌশল ধারা একেবারেই ভিন্নতর ছিল। ওয়াডিংটন মাত্র একটি উইকেট পেয়েছিলেন। এরপর আর তাকে ইংল্যান্ড দলে খেলানো হয়নি।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন অ্যাব ওয়াডিংটন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯২০ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১ তারিখে মেলবোর্নে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা থেকে উপেক্ষিত থাকার পরও ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ঠিকই স্বকীয়তা বজায় রাখতে সমর্থ হন। দূর্বলতর কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষেই অধিক সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। তবে, প্রায়শঃই খেলায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত দলের বিপক্ষে তিনি সফল হননি ও মিডলসেক্সের বিপক্ষে খেলায় দর্শকদের বিরূপ মন্তব্যের শিকার হন।
ক্রমাগত আঘাতের কারণে তার খেলার মান ক্রমশঃই দূর্বলতর হতে থাকে। অবশেষে, ১৯২৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন অ্যাব ওয়াডিংটন। এরপর তিনি লীগ ক্রিকেটে অংশ নিতে থাকেন। চর্বি পরিশোধনকারী ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তাসত্ত্বেও, ইয়র্কশায়ারীয় ক্রিকেটে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন।
১৯২০-এর দশকের সূচনালগ্নে হলিফ্যাক্স টাউনের পক্ষে গোলরক্ষক হিসেবে বেশ কয়েকটি ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর শৌখিন গল্ফার হিসেবে কিছু সফলতা লাভ করেন। বেশ কয়েকবার পুলিশের সাথে সংঘাতের কারণে জেরার মুখোমুখি হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধকালীন কর্মীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক অভিযুক্ত হন। তবে, তিনি দোষী সাব্যস্ত হননি। ২৮ অক্টোবর, ১৯৫৯ তারিখে ৬৬ বছর বয়সে উত্তর ইয়র্কশায়ারের স্কারবোরা এলাকায় অ্যাব ওয়াডিংটনের দেহাবসান ঘটে।
আব্রাহাম ওয়াডিংটন[ও 1] ব্রাডফোর্ডের ক্লেটন এলাকায় ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৩ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ ছিলেন।[2] তাদের পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন চর্বি পরিশোধনকারী ব্যবসা ছিল। তার পিতা স্যাম এ ব্যবসা পরিচালনা করতেন।[2][3] বিদ্যালয় জীবন ত্যাগ করার পর ওয়াডিংটন পারিবারিক খামারে লরি চালক হিসেবে যোগদান করেন। পাশাপাশি, মাঝেমধ্যে পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানেও কাজ করতেন। ১১ বছর বয়সে পশ্চিম ব্রাডফোর্ড লীগে ক্রসলি হলের পক্ষে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। কিশোর বয়সে ব্রাডফোর্ড লীগে লিজেট গ্রীন ও পরবর্তীতে লেইস্টারডাইকে খেলেন। ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে স্থানীয়দের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। ১৯১৩ সালে লেইস্টারডাইকের লীগ চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন।[2] ১৯১৪ মৌসুমে ওয়াকফিল্ডে যোগদানের পূর্বে দলের পক্ষে ১২.০০ গড়ে ৯৮ উইকেট দখল করেছিলেন।[4] আগস্ট, ১৯১৪ সালে ইয়র্কশায়ার দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। এ পর্যায়ে ভবিষ্যতের প্রথম একাদশের দলীয় সঙ্গী হার্বার্ট সাটক্লিফ ও সেস টাইসনের সাথে একত্রে খেলেন। তবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে কাউন্টি দলের পক্ষে আর কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার।[2][5]
যুদ্ধ শুরু হলে অ্যাব ওয়াডিংটন পশ্চিম ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্রাডফোর্ড পলস ব্যাটেলিয়নে লর্ড কিচনার্স নিউ আর্মিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগদান করেন।[4][6] ১ জুলাই, ১৯১৬ তারিখের সোমের যুদ্ধের প্রথম দিনেই সেরে গোলার আঘাতে আহত হন ও নিরপেক্ষ এলাকায় অন্যান্য সৈনিকের সাথে নিয়ে যাওয়া হয়।[4][6] এ সময়ে ইয়র্কশায়ারীয় ক্রিকেটার মেজর বুথকে গুরুতর আহত হিসেবে তার সাথে রাখা হয়। বুথের মৃত্যুকালে তিনি কাছেই ছিলেন। এ অভিজ্ঞতাটি তিনি জীবনের বাদ-বাকী সময় মনে ধরে রেখেছিলেন।[6] সুস্থ হবার পর রয়্যাল ফ্লাইং কোরে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছিল।[4][7]
১৯১৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা পুণরায় শুরু হলে ইয়র্কশায়ারের বোলিং আক্রমণ বহুলাংশে হ্রাস পায়। এরজন্যে খেলোয়াড়দের অবসর গ্রহণ ও যুদ্ধে নিহত হবার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। পাশাপাশি, জর্জ হার্স্ট তার সেরা সময় অতিবাহিত করে ফেলেছেন। ফলশ্রুতিতে, ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ নতুন ফাস্ট বোলারদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি অনুভব করে।[6][8] মে ও জুন মাসে ব্যাটিং উপযোগী পিচে প্রতিপক্ষকে অল-আউট করতে বেশ হিমশিম খেতে থাকে। দলের ফলাফলের ক্রমশঃ অবনতি ঘটতে থাকে ও জুন মাসে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা দলটি পরাজিত হয়। উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকে বিষয়টি অনেকাংশে কালো অধ্যায়ের ন্যায় ছিল।[9]
মৌসুমের ঐ পর্যায়ে ইয়র্কশায়ারীয় ক্রিকেটার রয় কিলনার ও আর্থার ডলফিন সোমের যুদ্ধে আহত হবার পরও তারা উভয়েই ওয়াডিংটনকে দলে অন্তর্ভূক্তির প্রশ্নে ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেন। খুব সম্ভবতঃ তারা সেনাবাহিনীতে থাকাকালে ক্রিকেট খেলায় তার ক্রীড়াশৈলীতে মুগ্ধ হয়েছিলেন।[6] ব্রাডফোর্ড লীগে লেইস্টারডাইকে খেলা থেকে ফেরার পথে[4] জুলাই মাসের শুরুতে ইয়র্কশায়ার দলে খেলার জন্যে ওয়াডিংটনকে দলে যুক্ত করে। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অভিষেক ঘটে তার। ২৬ ওভারে ৪/২৬ লাভ করেন তিনি। পরের খেলায় অংশ নেননি। এরপর, নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় এসেক্সের বিপক্ষে নয় উইকেট পান। তন্মধ্যে, খেলার দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।[4][5] ওয়াডিংটনের অন্তর্ভূক্তির পর থেকে ইয়র্কশায়ারের খেলার মানের উত্তরণ ঘটতে থাকে ও দলটি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে। উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, ওয়াডিংটনের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাকে ছাড়া ইয়র্কশায়ার দলের চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় একেবারেই অসম্ভব ছিল।[9] তিনি ও উইলফ্রেড রোডস অত্যন্ত কার্যকর বোলিং আক্রমণ গড়ে তুলেন। উইজডেনের মতে, রোডস ও ওয়াডিংটনের সাথে অল্প কয়েক সপ্তাহের জন্যে ই. আর. উইলসন ও এমট রবিনসন তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করে একাদশ দলটিকে উত্তরোত্তর সফলতা এনে দিতে থাকেন।[9] এতে ওয়াডিংটন সম্পর্কে মন্তব্য করা হয় যে, বামহাতি মিডিয়াম পেস থেকে ফাস্ট বোলিং করতেন। বেশ শ্রম দিয়ে কিংবা অবিশ্রান্ত প্রচেষ্টায় আলতোভাবে বলগুলো ছুড়তেন। বলগুলো পিচে পড়ে তীক্ষ্ণভাবে বাউন্স খেতো। প্রতিবেদকের মতে, ওয়াডিংটনের প্রথম মৌসুমটি ব্যতিক্রমীপন্থায় প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর ছিল ও তিনি অমূল্য সম্পদের দিকে নিজেকে নিয়ে যেতে থাকেন।[9] ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের লিপিবদ্ধ ইতিহাসে ডেরেক হজসন মন্তব্য করেন যে, ওয়াডিংটনের বিচিত্রমূখী বৈশিষ্ট্যের কারণে তাকে সফলতা এনে দিয়েছে। তিনি ব্যাটসম্যান বরাবর বোলিং করতেন।[10] ১৮.৭৪ গড়ে ১০০ উইকেট নিয়ে ঐ মৌসুম শেষ করেন। তন্মধ্যে, আটবার পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন।[11] এরফলে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসের ছয়জন বোলারের অন্যতম হিসেবে অভিষেক মৌসুমে শত উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন।[12]
১৯২০ সালে ইয়র্কশায়ার দল চ্যাম্পিয়নশীপে চতুর্থ স্থানে চলে যায়।[13] দলের বোলিং আক্রমণের গুরুদায়িত্ব আরও একবার ওয়াডিংটন ও রোডসের কাঁধে চলে আসে। অন্য বোলারেরা খুব কমই তাদেরকে সহায়তা করেছিলেন।[14] মৌসুমের শুরুতে দূর্দান্তভাবে যাত্রা শুরু করলেও দলটি বছরের শেষদিকে ভেঙ্গে পড়ে।[15] উইজডেনের মতে, রোডস ও ওয়াডিংটন বেশ সফল ছিলেন। বিশেষতঃ দূর্বল কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে ওয়াডিংটন বেশ জ্বলে উঠেছিলেন।[14] ঐ মৌসুমে ১৬.৭৯ গড়ে ১৪১ উইকেট পান।[11] নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে দুইটি খেলায় সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। প্রথম খেলায় ১১ উইকেট ও দ্বিতীয় খেলায় ৪৮ রান খরচায় ১৩ উইকেট পান। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ৭/১৮ পেয়েছিলেন ও হ্যাট্রিক লাভ করেন।[ও 2][5][16] মৌসুমের শেষদিকে পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে স্কারবোরা উৎসবে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। ১৯২০-২১ মৌসুমের শীতকালে এমসিসি’র সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এ সফরে চারজন ইয়র্কশায়ারীয় খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন তিনি।[ও 3][18] হজসনের ভাষ্যমতে, তাকে অনেকাংশে প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে সেরা আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।[10]
১৯২০-২১ মৌসুমে জে. ডব্লিউ. এইচ. টি. ডগলাসের নেতৃত্বে এমসিসি দল অস্ট্রেলিয়া গমন করে। কার্যত এ সফরটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দল একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করে ও পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীদেরকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল।[19] উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, দলের এ বিপর্যয়ে মূখ্যতঃ বোলিং বিভাগই দায়ী ছিল।[19] এমসিসি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধের পরপরই এ সফর আয়োজন ও ক্রিকেটবোদ্ধারা অস্ট্রেলীয় পরিবেশে দূর্বলমানের বোলিং এবং সচরাচর ব্যাটিং উপযোগী শক্ত ও ভালোমানের পিচ তৈরির কথা বলেন।[19]
নভেম্বরের শুরুতে প্রথম-শ্রেণীর খেলা আয়োজনের পূর্বে অ্যাব ওয়াডিংটনকে ফোড়ার কারণে অস্ত্রোপচার করতে হয়।[20] ফলশ্রুতিতে, প্রথম পাঁচটি খেলায় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।[21] প্রথম টেস্টের পূর্বে তিনি মাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন। তবে, বেশ কয়েকটি গুরুত্বহীন খেলায় উইকেট লাভে তৎপরতা দেখিয়েছেন।[5] প্রথম টেস্টে খেলার সুযোগ পান। চার্লি ম্যাককার্টনিকে আউট করে খেলার প্রথম উইকেট পান। তবে, ৮৮ রান খরচ করলেও আর তিনি সাফল্য পাননি। তন্মধ্যে, শেষ পর্যায়ে পায়ের আঘাতে তার খেলা ব্যাহত হয়ে পড়ে।[22][23] সিরিজের চতুর্থ টেস্টের পূর্ব-পর্যন্ত আর খেলতে পারেননি। এ পর্যায়ে পাঁচ ওভারে ৩১ রান দেন।[5] এ সফরে ৪৬.৭১ গড়ে সাত উইকেট পান। একমাত্র টেস্ট উইকেটের জন্যে তাকে ১১৯ রান খরচ করতে হয়েছিল।[5][11] এ সফরের খেলায় ওয়াডিংটনকে বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। প্রচণ্ড গরমে তিনি খেই হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীবিহীন কান্ট্রি দলের বিপক্ষে অধিকাংশ খেলায় অংশ নেয়ায় সুখীবোধ করেননি তিনি। অনেকগুলো খেলায় প্রতিপক্ষের ফিল্ডিংয়ে এগারোজনেরও অধিক খেলোয়াড় মাঠে অবস্থান নেন। এ সফরের বিষয়ে গণমাধ্যমে ডগলাসকে বোলারদেরকে কাজে লাগানোর বিষয়ে প্রবল সমালোচনায় লিপ্ত হয়। তবে, ইয়র্কশায়ার দল ঠিকই স্বল্পকালের মধ্যেই ওয়াডিংটনকে উইকেট লাভে নিযুক্ত করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, ডগলাস তাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় রান বাঁচাতে বোলিং করতে উদ্বুদ্ধ করে। এরফলে, এ ধরনের বোলিংয়ের সাথে ওয়াডিংটন একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলেন।[10][24] একেবারেই ব্যর্থ বিবেচিত হওয়ার বিষয়ে[10] উইজডেনের মন্তব্যে উল্লেখ করা হয় যে, তার জন্যে এ সফরটি প্রকৃতই হতাশাব্যঞ্জক ছিল।[25] এরপর আর তাকে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি ও কখনো দলে আমন্ত্রণ জানানোর মতো অবস্থার সৃষ্টি করেননি।[24] কেবলমাত্র একবারই এ সফরে ব্যাটিং করে সফলতা পেয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম প্রথম-শ্রেণীর অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন।[5]
১৯২১ সালে অ্যাব ওয়াডিংটন ১৮.৯৪ গড়ে ১০৫ উইকেট দখল করেছিলেন।[11] পেস বোলার জর্জ ম্যাকাউলি’র দলে অন্তর্ভূক্তির ফলে তিনি আরও সহযোগিতা লাভ করেন।[24] তবে, উইজডেনে শেষদিকের সংস্করণে তার খেলার মান ঐ বছরে দূর্বলতর হবার কথা উল্লেখ করা হয়।[25] ১৯২১ সালের পর্যালোচনায় অ্যালমেনাকে উল্লেখ করা হয় যে, চ্যাম্পিয়নশীপে ইয়র্কশায়ার দলে সেরা বোলিং আক্রমণ নিয়ে পূর্ণ শক্তিধর দলের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিল।[26] তবে, মৌসুম শেষে দলটি তৃতীয় স্থান অধিকার করে।[13] পরের বছর ওয়াডিংটন ও ইয়র্কশায়ার দল আরও সফলতার স্বাক্ষর রাখে।[25] কাউন্টি দলটি তাদের উপর্যুপরী চারটি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপার প্রথমটি লাভ করে।[13] ওয়াডিংটন ১৬.০৮ গড়ে ১৩৩ উইকেট লাভ করতে সক্ষম হন।[11] প্রায়শঃই তিনি গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলোয় নিজেকে আরও মেলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন। উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, ইয়র্কশায়ার দল প্রত্যেক পর্যায়েই অত্যন্ত ভালোমানের খেলা উপহার দিয়েছিল। তবে, তাদের প্রধান শক্তিমত্তা অভিজ্ঞতা ও বৈচিত্র্যমণ্ডিত বোলিংয়ের মধ্যে লুক্কায়িত ছিল। ওয়াডিংটন অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। প্রায়শঃই শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে বেশ সফল হয়েছিলেন যা তিনি পূর্বে দেখাতে পারেননি। তিনি অভূতপূর্ব সফলতা পেয়েছিলেন। একবার ও কমপক্ষে একবার সুইং বোলিং করে প্রতিপক্ষকে কাপুকাত করেছিলেন। জর্জ হার্স্টের ভাষায়, তিনি তার সেরা খেলা খেলেছিলেন।[25] নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে ৮/৩৪ পান। এ পরিসংখ্যানটি পরবর্তীকালে তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যানরূপে বিবেচিত হয়েছিল। সাসেক্সের বিপক্ষে ৭/৬ বোলিং করে প্রতিপক্ষকে ২০ রানে গুটিয়ে দিতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ৮/৩৫ লাভ করেন। ইস্টবোর্নে উৎসবের খেলার মাধ্যমে মৌসুমটি শেষ করেন। এ পর্যায়ে তিনি নর্থের সদস্যরূপে সাউথের মোকাবেলা করেন ও সাবেক রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে গড়া দলের পক্ষে একটি খেলায় অংশ নেন।[5]
১৯২৩ বেশ ভালোমানের বোলিং গড় থাকা সত্ত্বেও কম কার্যকর ছিলেন। অনেকক্ষেত্রে ধারাবাহিকতাবিহীন অবস্থায় খেলেন।[27] জুলাই মাসে হাডার্সফিল্ডের ফারটাউন গ্রাউন্ডে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে বোলিংকালে ভেজা মাঠে পড়ে যান। এরফলে, কাঁধে জোড়ালো আঘাত পান ও কার্যত ঐ মৌসুমে তার খেলা শেষ হয় যায়।[10][28] ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে একটি খেলা বাদে তিনি মাত্র ছয় ওভার বোলিং করেছিলেন।[5] সেপ্টেম্বরে, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া হাতের হাড়ের চিকিৎসার্থে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।[29] এ আঘাতের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনে বিরাট প্রভাব ফেলে ও তার বোলিংয়ের কার্যকারী আর পূর্বের ন্যায় হয়ে উঠেনি।[4][30] আঘাত লাভের পূর্বে ১৯২৩ সালে ১৮.২৩ গড়ে ৬৫ উইকেট পেয়েছিলেন।[11] ঐ মৌসুমে ব্যাট হাতে নিজস্ব সেরা ব্যাটিং করেন। কোন মৌসুমেই ১২-এর অধিক গড়ে রান সংগ্রহ করতে না পারলেও এ মৌসুমে ২৪.৩৮ গড়ে ৩১৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান।[31]
১৯২৪ সালে পুণরায় খেলার জগতে ফিরে আসেন। শুরুরদিকের কয়েকটি খেলায় কিঞ্চিৎ ভালোমানের বোলিং করেছিলেন।[5] তবে, লর্ডসে মিডলসেক্সের বিপক্ষে সর্বাত্মক প্রয়াস চালান। ৪২ ওভার বোলিং করে ৩/১১৬ পান। ঐ খেলায় ইয়র্কশায়ার দল পরাজিত হয়েছিল। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় অনুপস্থিত ছিলেন বা প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।[ও 4] কিন্তু এ খেলার রেশ মৌসুমের শেষদিকে প্রভাব ফেলে।[32][33] শেফিল্ডে জুলাইয়ে ফিরতি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ইয়র্কশায়ার খেলোয়াড়দেরকে বেশ দৃঢ়প্রত্যয়ীভাব লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু, খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। ক্রিকেটবোদ্ধাদের অভিমত, ইয়র্কশায়ারীয় বোলারেরা মাত্রাতিরিক্ত আবেদন করে ও আম্পায়ার কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়। অন্যদিকে, মিডলসেক্সের খেলোয়াড়দেরকে দর্শকেরা ঘিরে রেখেছিল। সাংবাদিক আলফ্রেড পুলিন এ খেলাটিকে দূর্বলমানের ও বাজে দৃষ্টিভঙ্গীর প্রদর্শনীরূপে মন্তব্য করেন।[33]
আম্পায়ারদ্বয় এমসিসি বরাবরে ওয়াডিংটনের বিরূপ আচরণ নিয়ে প্রতিবেদন রচনা করেন। ওয়াডিংটন দুঃখপ্রকাশ করলেও এমসিসি আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে দোষীসাব্যস্ত করে।[33][34] ইয়র্কশায়ারের সভাপতি লর্ড হক এমসিসি সম্পাদকের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করে চিঠি লেখেন।[33] এ খেলার পর মিডলসেক্স কর্তৃপক্ষ ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে পরবর্তী খেলাগুলোয় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার হুমকি দেয়।[ও 5] গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ইয়র্কশায়ার অধিনায়ক জিওফ্রে উইলসনকে অধিনায়কত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হবে ও ওয়াডিংটনকে বাদ দেয়া হবে।[30]
১৯২৪ সালের শেষদিকে ইয়র্কশায়ার দল আরও একটি বিতর্কিত খেলার মুখোমুখি হয়। এবার সারে দল মাঠে দুর্ব্যবহারের শিকার হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোন অভিযোগ তুলে ধরেনি।[10] উইজডেন সম্পাদকের অভিমত, ইয়র্কশায়ারের সমস্যার জন্যে কয়েকজন খেলোয়াড় দায়ী।[35] মৌসুম শেষে জিওফ্রে উইলসন পদত্যাগ করেন।[36] এ সকল ঘটনার খেসারত স্বরূপ সম্ভবতঃ ম্যাকাউলিকে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে ঠাঁই দেয়া হয়নি।[35] ইয়র্কশায়ারের ক্রিকেটার ও সাংবাদিক বিল বোস পরবর্তীকালে এক নিবন্ধে ওয়াডিংটনের দিকে দৃষ্টিপাত করেন ও ঐ সময়ে আঘাতপ্রাপ্ত জে. ডব্লিউ. হার্নকে দায়ী করেন। তবে, বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরেননি যে ঘটনাটি ১৯২৪ সালের শেফিল্ডের খেলায় হয়েছিল কি-না।[37] এ মৌসুম শেষে ওয়াডিংটন ২১.৫৫ গড়ে ৬৯ উইকেট লাভ করেন। তবে, আঘাতের পর তিনি কম কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।[11][38]
১৯২৫ সালে নিজস্ব শেষ মৌসুমে শতাধিক উইকেট পান। তবে, তার খেলার মান মিশ্রতায় ভরপুর ছিল। কিছু খেলায় বেশ ভালোমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন।[39] উইজডেনে ইয়র্কশায়ারের চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ের বিষয়ে তাদের বোলারদেরকে কৃতিত্ব দেয় ও মন্তব্য করে যে, ওয়াডিংটন তার মেধাগুণে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।[40] সর্বমোট ২০.২৪ গড়ে ১০৯ উইকেট পান তিনি।[11] ১৯২৬ সালে তিনিসহ অন্যান্য বোলারদের ভূমিকা কম সফলতা পায়। ফলশ্রুতিতে, ইয়র্কশায়ার দল দ্বিতীয় স্থানে চলে আসে।[13][41] উইজডেনে তার বোলিংয়ের মান কমে যাওয়ার কথা তুলে ধরলেও তিনি তার ছন্দে ফিরে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।[41] ২৩.৩০ গড়ে ৭৮ উইকেট পান তিনি।[11] এ পর্যায়ে ব্যাট হাতে এক মৌসুমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের সন্ধান পান। দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংসসহ ৫২৫ রান তুলেন।[31] ১৯২৬-২৭ মৌসুমের শীতকালে ভারত গমন করেন ও সেখানে ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[30]
১৯২৭ সালে তার বোলিংয়ের মান আরও অধঃমুখী হয়। এ পর্যায়ে উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, তার রেকর্ড দুর্বলতর হচ্ছে ও খুব কম সময়ই নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছিলেন।[42] অন্যান্য বোলারের ক্ষেত্রেও এ ধারা বহমান ছিল ও পাশাপাশি গা ছাড়া মনোভাবের কারণে ইয়র্কশায়ার দল পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে চলে যায়।[13][43] ওয়াডিংটন ৩২.০২ গড়ে ৪৫ উইকেট লাভ করেন।[11] বেশ কয়েকবার অনেক রান খরচ করে ফেলেন।[44] তাসত্ত্বেও, নিজস্ব শেষ মৌসুমে একমাত্র প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি করেন। ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১১৪ রানের ইনিংসে খেলেছিলেন তিনি।[30] নর্থের সদস্যরূপে ব্যক্তিগত শেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ফোকস্টোন উৎসবে সাউথের বিপক্ষে ১৬ ওভার বোলিং করেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি তিনি।[45] ঐ মৌসুম শেষ হবার পর ওয়াডিংটনকে নতুন করে চুক্তির প্রস্তাবনা দেয়া হয়। কিন্তু, বোলিংয়ে দূর্বলতা ও ক্রমাগত কাঁধের আঘাতপ্রাপ্তির কথা বিবেচনা করে করে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এ ভাবেই তার কাউন্টি ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।[30] সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ১৯.৭৫ গড়ে ৮৫২ উইকেট ও চারটি অর্ধ-শতরানসহ একটি শতরান সহযোগে ১২.৮৯ গড়ে ২,৫২৭ রান তুলেন তিনি।[1] পরের মৌসুমে ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ স্মারকসূচক £১,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং প্রদান করে।[46]
সুনিয়ন্ত্রিত পন্থা অবলম্বন করে অ্যাব ওয়াডিংটন বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। চমৎকারভাবে নিশানা বরাবর বলকে সুইং করতেন। বলে বৈচিত্র্যতা আনয়ণে অফ-কাটার মারতেন ও বোলিংকালে বলে বাউন্স করে গতি আনয়ণ করতেন।[16][47] প্রায়শঃই রাউন্ড দি উইকেট বরাবর বোলিং করতেন। উইকেটের অন সাইড থেকে বাঁকানো অবস্থায় দৌঁড়তেন। আম্পায়ারের পিছন থেকে দৌঁড়ে বলকে বোলিং ক্রিজের এক প্রান্ত থেকে ছুড়তেন। ব্যাটসম্যানকে তার কৌণিকভাবে তীক্ষ্ণ বলকে মোকাবেলা করতে হতো। কখনোবা লেগ সাইডে ফিল্ডারদের বৃত্তাকারে রেখে শর্ট ডেলিভারি মারতেন।[10][48] তার বোলিং অনেকাংশে সতীর্থ বামহাতি পেসার এবং তার খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে উপদেষ্টা ও কোচ জর্জ হার্স্টের অনুরূপ ছিল।[49] কিন্তু, ডেরেক হজসন লক্ষ্য করেছেন যে, দুইজনে ব্যক্তিত্বের ধারা ভিন্ন ধাঁচের ছিল। হার্স্টের তুলনায় তিনি বেশ মেজাজী ছিলেন।[10] ওয়াডিংটনের বোলিং ভঙ্গীমা দর্শনীয় ও পরিপূর্ণতায় ভরপুর ছিল।[4] সাংবাদিক ও ক্রিকেট লেখক নেভিল কারদাসের অভিমত, তিনি গৌরবামণ্ডিত ছন্দময় ছিলেন।[50] এতোটাই উৎকর্ষমানের ছিলেন যে, সাধারণভাবে কেউ তার চমৎকার বোলিংশৈলীকে অস্বীকার করতে পারবেন না।[48] কারদাস মন্তব্য করেন যে, সর্বদাই তিনি আশাবাদী ছিলেন যে, প্রকৃত সফলতা তিনি লাভ করবেনই। কিন্তু, বারংবার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতেন।[48]
চূড়ান্ত মৌসুমে অ্যাব ওয়াডিংটন তার একমাত্র প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি লাভ করলেও সুন্দর ব্যাটিংশৈলী অবলম্বন করেও তিনি নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।[24] নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন।[51] দায়িত্বজ্ঞানহীন অবস্থায় শট খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরে আসতেন।[10] হার্বার্ট সাটক্লিফের মতে, যদি তিনি বোলার না হতেন তাহলে ওয়াডিংটন নিজেকে শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন; তিনি আরো লিখেছেন যে, বোলিংশৈলীর ন্যায় ব্যাটিংশৈলীতে তিনি দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপন করেছেন।[52] তবে, সাটক্লিফের মতে, ওয়াডিংটনের ধৈর্য্যের অভাব ছিল। নিশ্চিতভাবেই ৩০ কিংবা ৪০ রান তোলার যোগ্যতা তার ছিল। কিন্তু, বাজে শটে তাকে বিদেয় নিতে হয়েছিল।[52]
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর পারিবারিক ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেন।[30] ১৯২৮ সালে বার্মিংহাম লীগে ওয়েস্ট ব্রোমউইচ ডার্টমাউথ সিসি’র পক্ষে পেশাদারী পর্যায়ে খেলেন।[53] ১৯২৯ ও ১৯৩০ সালে অ্যাক্রিংটনের পক্ষে খেলেন। ইয়র্কশায়ার দলের বেশ কয়েকজন সদস্যের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক বজায় রাখতেন। ১৯২৮ সালে রয় কিলনারের শোকসভায় পলবাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ইয়র্কশায়ারের খেলোয়াড় ও ইংরেজ অধিনায়ক লেন হাটন ওয়াডিংটনকে এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রণ করে নিয়ে যান। সমুদ্র পথে দলটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইতালিতে নিহত ইয়র্কশায়ারীয় বোলার হেডলি ভেরিটি’র সমাধিস্থল পরিদর্শন করে।[30][54] খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণসহ অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচবার গমন করেন।[55]
অন্যান্য খেলায়ও অ্যাব ওয়াডিংটন সফলতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ফুটবল খেলায় শৌখিন অবস্থায় খেলতেন ও গোলরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯২০-২১ মৌসুমে ব্রাডফোর্ড সিটির পক্ষে খেলেন। তবে, কোন খেলায় অংশ নেননি। ১৯২১-২২ মৌসুমে হলিফ্যাক্স টাউনের পক্ষে ফুটবল লীগের সাত খেলায় অংশ নেন।[2][4][56] ইয়র্কশায়ারের পক্ষে গল্ফার হিসেবে হেনরি কটনের সাথে একত্রে খেলতেন।[2][4] ১৯৩৫ ও ১৯৩৯ সালে ওপেন চ্যাম্পিয়নশীপের বাছাইপর্বে অংশ নেন।[57][58] সাটক্লিফ লিখেছেন যে, শীর্ষস্থানীয় গল্ফারেরা তাকে বলেছিলেন যে, ওয়াডিংটন যদি ক্রিকেটার না হতেন তাহলে গল্ফার হিসেবে স্বীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারতেন। তবে, সচেতনতার অভাবে তিনি সাফল্য পাননি।[52]
ব্যক্তিগত জীবনে দুইবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ১৯২৫ সালে মাবেল ফাওয়েল নাম্নী এক রমণীকে বিয়ে করেন। তবে, ইয়র্কশায়ারের কোন দলীয় সঙ্গী এ বিষয়ে জানতেন না।[3] ১৯৫২ সালে ডরিস গারফোর্থকে বিয়ে করেন। এ অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের সাথে জড়িত অনেক সাবেক খেলোয়াড়ের উপস্থিত ছিল।[59] দীর্ঘদিন অসুস্থতার কবলে পড়েন। উত্তর ইয়র্কশায়ারের পরিচর্যা গৃহে অ্যাব ওয়াডিংটনের দেহাবসান ঘটে। ব্রাডফোর্ডে তাকে সমাহিত করা হয়।[60][61]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.