আইসিস
From Wikipedia, the free encyclopedia
আইসিস অথবা আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্যভাবে আসেট (প্রাচীন গ্রিক: Ἶσις) হল প্রাচীন মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসে মাতৃত্ব, যাদু এবং ঊর্বরতার দেবী। মূলত মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসের দেবী হলেও, আইসিসের উপাসনা প্রাচীন মিশরের বাইরে গ্রিক-রোমান বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছিল। আদর্শ মা, স্ত্রী, প্রকৃতি ও যাদুর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আইসিসের উপাসনা করা হত। দাস, কারীগর, পাপী তাপী জন থেকে শুরু করে ধনবান, অভিজাত, শাসনকর্তা, কুমারী নারী - সবার প্রার্থনাই আইসিস শুনতেন।[1]
আইসিস | |
---|---|
মাতৃত্ব, যাদু এবং ঊর্বরতার দেবী | |
প্রধান অর্চনাকেন্দ্র center | ফিলা, Abydos |
প্রতীক | সিংহাসন, গো-শৃংগ বিশিষ্ট সূর্য চাকতি এবং সিকামোর গাছ |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
মাতাপিতা | গেব এবং নুট |
সহোদর | ওসাইরিস,সেত এবং নেপথিস |
সঙ্গী | ওসাইরিস |
সন্তান | হোরাস এবং আনুবিস (পালিত সন্তান আনুবিস) |
লিখিত ভাবে আইসিসের উপাসনার উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ এর অল্প কিছু কাল পরেই, পঞ্চম রাজবংশের সময়ে। শুরুর দিকে, মিশরীয় পুরাণ অনুসারে আইসিস হলেন নুট ও গেবের প্রথমা কন্যা, হোরাসের মা। কালের প্রবাহে হাথরের কিছু বৈশিষ্ট্যও আইসিসের মধ্যে আসতে দেখা যায়। পরের দিকে দেখা যায়, আইসিসের একজন ভাইও রয়েছেন, ওসাইরিস, যিনি পরে তার স্বামী হন এবং তারা জন্ম দেন তাদের সন্তান হোরাস কে। ওসাইরিসের পূনর্জাগরণের ঘটনায় আইসিসের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। অপর এক দেবতা, সেতের এর হাতে ওসাইরিসের মৃত্যু হয়। আইসিস নিজের যাদু ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সেই মৃতদেহের সমস্ত বিচ্ছিন্ন অংশ গুলো জড়ো করেন এবং তাতে প্রাণ সঞ্চালণ করেন।[2] পরবর্তীতে পুরাণের এই ঘটনা মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাসের উপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
আইসিসের অন্যান্য পরিচয়ের মধ্যে রয়েছে সারল্যের দেবী, মৃতদের রক্ষাকারিনী, শিশুদের দেবী যার থেকে সবকিছুর শুরু হয়, রুটি, পানীয় এবং সবুজ ক্ষেতের দেবী। পরের দিকে মিশরীয় পুরাণে এই বিশ্বাস দেখা যায় যে, স্বামী ওসাইরিসকে হারানোর শোকে ক্রন্দরতা আইসিসের অশ্রূ থেকেই নীল নদ প্লাবিত হয়। প্রতি বছর ওসাইরিসের মৃত্যু এবং পুনর্জাগরণকে বিভিন্ন রকম আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্যাপন করা হত। মিশর ছাড়িয়ে আইসিসের উপাসনা ছড়িয়ে পড়েছিল গ্রিক-রোমান বিশ্বেও। খ্রিস্টিয় মতবাদের প্রচার শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আইসিসের উপাসনা চালু ছিল সে সব অঞ্চলে।[3]