ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান (ইংরেজি: Yellowstone National Park) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাতীয় উদ্যান। ১৮৭২ সালের ১ মার্চ রাষ্ট্রপতি ইউলিসিস এস. গ্র্যান্টের সাক্ষরানুক্রমে মার্কিন কংগ্রেস একটি আইন পাস করে এই উদ্যানটি প্রতিষ্ঠা করেন।[3][4] এটি প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইয়োমিং রাজ্যে অবস্থিত হলেও, পরে মন্টানা ও ইডাহোতেও প্রসারিত হয়। ইয়েলোস্টোন বিশ্বের প্রথম জাতীয় উদ্যান। এটি বন্যপ্রাণী ও বিভিন্ন প্রকার ভূতাপমাত্রাগত বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রসিদ্ধ। ওল্ড ফেইথফুল গেজার এই উদ্যানের জনপ্রিয় দ্রষ্টব্যস্থলগুলির অন্যতম।[1] এখানে বিভিন্ন প্রকার পরিবেশব্যবস্থা দেখা গেলেও, এগুলির মধ্যে সাবআলপাইন বনভূমি প্রধান।
ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান Yellowstone National Park | |
---|---|
অবস্থান | Park County, Wyoming Teton County, Wyoming Gallatin County, Montana Park County, Montana Fremont County, Idaho |
স্থানাঙ্ক | ৪৪°৩৬′ উত্তর ১১০°৩০′ পশ্চিম |
অঞ্চল | 3,472 sq mi (8,987 km2) [1] |
পরিদর্শন | 3,295,187 [2] (2009তে) |
পরিচালকবর্গ | U.S. National Park Service |
আইইউসিএন শ্রেণীবিভাগ II (জাতীয় উদ্যান) | |
মনোনীত | March 1, 1872 |
ধরন | Natural |
নির্ণায়ক | vii, viii, ix, x |
মনোনীত | 1978 (2nd session) |
সূত্র নং | 28 |
Region | The Americas |
স্থানীয় আমেরিকানরা ইয়েলোস্টোন অঞ্চলে প্রায় ১১,০০০ বছর ধরে বসবাস করেছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে লুইস ও ক্লার্ক অভিযানের সময় এই অঞ্চলটি পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকে মধ্যভাগ পর্যন্ত পর্বতচারীরা মাঝে মাঝে এখানে এলেও, সুসংহত অভিযান শুরু হয় ১৮৬০-এর দশকে। প্রতিষ্ঠার পর উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় মার্কিন সেনাবাহিনীকে। ১৯১৭ সালে ন্যাশানাল পার্ক সার্ভিসের (১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত) হাতে উদ্যানের দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয়। এখানকার শতাধিক স্থাপনা পুরাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে সংরক্ষিত হচ্ছে। গবেষকগণ এক হাজারটিরও বেশি প্রত্নক্ষেত্র পরীক্ষা করে দেখেছেন।
ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৩,৪৬৮ বর্গমাইল (৮,৯৮০ বর্গকিলোমিটার)। উদ্যানের মধ্যে রয়েছে হ্রদ, ক্যানিয়ন, নদনদী ও পর্বতমালা।[1] ইয়েলোস্টন হ্রদ উত্তর আমেরিকার বৃহত্তম হ্রদগুলির অন্যতম। এটি মহাদেশের বৃহত্তম মহাআগ্নেয়গিরি ইয়েলোস্টোন ক্যালডেরার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। ক্যালডেরাটিকে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মনে করা হয়। বিগত দুই মিলিয়ন বছরে বহুবার এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত হয়েছে। আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা এখানকার ভূতাপমাত্রাগত বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য বহুলাংশে দায়ী।[5] লাভা স্রোত ও আগ্নেয়গিরি থেকে উৎক্ষিপ্ত পাথরে সমগ্র ইয়েলোস্টোন অঞ্চলটি ঢাকা। এটি বৃহত্তর ইয়েলোস্টোন পরিবেশব্যবস্থার অন্তর্গত, যা উত্তর জলবায়ু অঞ্চলের বৃহত্তম বিদ্যমান এবং প্রায় সামগ্রিক একটি অংশ।[6]
নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যান স্তন্যপায়ী, পাখি, মাছ ও সরীসৃপদের শতাধিক প্রজাতির বাসস্থান। এগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি আবার বিপন্ন প্রজাতি।[1] বিরাট বনভূমি ও তৃণভূমিতে নানান দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ দেখা যায়। গ্রিজলি বিয়ার, গ্রে উলফ, আমেরিকান বাইসন ও এক এখানে বাস করে। মাঝে মাঝে দাবানল দেখা যায়। ১৯৮৮ সালের দাবানলে উদ্যানের এক-তৃতীয়াংশ ভস্মীভূত হয়েছিল। এখানে অনেকে হাইকিং, ক্যাম্পিং, বোটিং, মাধ ধরা বা দিবাভ্রমণের জন্যেও আসেন। পাকা রাস্তা থাকায় প্রধান দ্রষ্টব্যস্থলগুলির কাছে যাওয়া খুবই সহজ। শীতকালে বরফ পড়ার সময়ও এখানে অনেক পর্যটক আসেন।