উমিয়া টাউন হল
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উমিয়া টাউন হল ১৮৮৮ সালের অগ্নিকান্ডের পর নির্মিত হয়েছিল। এটি অগ্নিকান্ডে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া পূর্বের টাউন হলের (১৬৬০ সালে নির্মিত) স্থানে নির্মিত হয়। এটি ১৮৯০ সালে সমাপ্তির মুখ দেখে।[1] স্টকহোমের স্থপতি ফ্রেডরিক ওলাস লিন্ডস্ট্রম এর স্থাপত্যের দায়িত্বে ছিলেন। শহুরে অঞ্চল উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অধীনে লিন্ডস্ট্রম এই টাউন হলকে নদীতীরের পরেই স্থান দেন। এর প্রধান স্তম্ভ উমে নদীর উপকূলের দিকে (যা শহরের প্রধান প্রবেশমুখ এবং এখনও নাব্য) অবস্থিত।
উমিয়া টাউন হল | |
---|---|
Umeå rådhus | |
সাধারণ তথ্য | |
অবস্থা | সুইডেনের চিহ্নিত ভবন (২৬শে জানুয়ারি, ১৯৮১ থেকে[1]) |
ধরন | টাউন হল |
স্থাপত্য রীতি | ওলন্দাজ [[রেনেসাঁ পুনঃপ্রবর্তন স্থাপত্য]] |
ঠিকানা | রাধুস্টোরগেট |
শহর | উমিয়া |
দেশ | সুইডেন |
স্থানাঙ্ক | ৬৩°৪৯′৩০″ উত্তর ২০°১৫′৪৬″ পূর্ব |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি | ১৮৯০[1] |
স্বত্বাধিকারী | উমিয়া কমুন |
নকশা এবং নির্মাণ | |
স্থপতি | ফ্রেডরিক ওলাস লিন্ডস্ট্রম |
১৬০০ সালের দিকে উমিয়ার হাতেগোণা কয়েকটি ভবন ছিল; গীর্জা, বিদ্যালয় এবং টাউন হল।[2] টাউন হলটি রাধুস্টোরগেটের (টাউন হল স্কোয়ার) উত্তরে অবস্থিত,[3] এবং এখানেই বিচার বিভাগ, শহর প্রশাসন এবং অন্যান্য সাধারণ কার্যাবলী সম্পাদিত হত।[2] টাউন হলটি একটি একতলা ভবন ছিল, এখানে তিনটি জানালা ছিল যা স্কোয়ারের দিকে দাঁড়িয়ে থাকে এবং একটি উঁচু হিপড বাড়িত র ত্রিকোণ ধার আছে যার ওপর রয়েছে ছাদ লণ্ঠন।[3]
গ্রেট উত্তরীয় যুদ্ধকালীন সময়ে রাশীয়দের মাধ্যমে শহরটি সম্পূর্ণরূপে পুড়ে যায়, কিন্তু ১৭২১ সালের শান্তির পর টাউন হল স্কোয়ারের উত্তরের শেষ মাথায় একটু নতুন টাউন হল তৈরির কথা ভাবা হয় ও নির্মিত হয়।[4] নতুন টাউন হলটি দুই তলার সাথে দুই উইং এবং একটি ঘড়ি ও আকর্ষণীয় ঘড়ির ছোট টাওয়ার দিয়ে গঠিত। নিচতলায় সিটি সেলার ছিল, যা একটি সরাই বা রেস্তঁরা হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং একটি দেনাদার এর কারাগারও এখানে ছিল। উপরের দিকে বলরুম ছিল এবং বৈঠকের জন্য ছোট একটি কক্ষ ছিল।[4] পশ্চিমের পাশে দুইটি কক্ষ ছিল যা শিক্ষামূলক কাজের জন্য ব্যবহৃত হত।[5]
টাউন হল স্কোয়ারের উত্তরের ব্লকে ১৮১৪ সালে একটি বড় ও নতুন টাউন হল নির্মাণ করা হয়। এ ভবনটি দোতলা ছিল এবং এর বহির্ভাগ দক্ষিণে ছিল। ভবনের নকশা করেন স্যামুয়েল এনান্ডার যিনি ওভারিনটেন্ডেন্টস্যামবেতেত (সুপারিনটেনডেন্ট বোর্ড) এরও স্থপতি ছিলেন।[6] ১৭৭৬ সালে বলবৎকৃত রয়েল বিল্ডিং রেগুলেশন অনুযায়ী, পাবলিক ভবনগুলোকে পাথর দ্বারা নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু উমিয়ার বিধান মোতাবেক এগুলো কাঠ দিয়েই তৈরি হয়।[6]
নিচতলায় ছিল সিটি সেলার, নিলাম ঘর, এবং রিমান্ড কারাগার। উপরের দিকে পূর্বের অর্ধেক দিকে ছিল বিশাল হল ও সাধারণ খাবারের ঘর, কথোপকথন কক্ষ ও একটি অট্রিয়াম। পশ্চিমের অর্ধাংশে ম্যাজিস্ট্রেটের সেশন হল ও শহরের বয়োবৃদ্ধদের জন্য সাধারণ কক্ষ ছিল।[6]
উপরের তলার কক্ষের উচ্চতা নিচতলা ও ভবনের বহির্দিকের চেয়ে বেশি ছিল এবং একটি কঠোর এবং মসৃণ সাম্রাজ্যের শৈলী দ্বারা নির্মিত ছিল,[7] এর উপরের দিকের পরিসীমা আরো বেশি ছিল।[6]
১৮০০ সালের মধ্যদিকে উমিয়া একটি অর্থনৈতিক উন্নতির মুখ দেখে যার ফলে সাধারণ ভবনগুলো সংস্কারের মুখ দেখে, টাউন হল সাদা রঙ দিয়ে মূর্ছিত হয় এবং স্তম্ভগুলো ছয়টি প্রকাণ্ড ডরিয়ান আয়তাকার স্তম্ভদ্বারা তৈরি হয়।[7] ১৮৮০ সালে একটি টেলিগ্রাফ স্টেশন টাউন হলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।[8]
ফ্রেডরিক ওলাস লিন্ডস্ট্রম - যিনি ১৮৮৯-৯০ সালে উমিয়া শহর গীর্জার নীলনকশা তৈরি করেছিলেন, এই টাউন হল নির্মাণের জন্যও নিয়োজিত হন লিন্ডস্ট্রম ওলন্দাজ রেনেসাঁ ধাঁচকেই পছন্দ করেছিলেন, যাতে একটি নির্দিষ্ট অপ্রতিসাম্যতা রয়েছে।[9] এর নানা চূড়া একাধিক উচ্চতা ও আকারে তৈরি হয়েছিল। অন্যথায় এর স্থম্ভ টান এবং লাল ইট দিয়ে নির্মিত। এর পোর্টালগুলো জানালাকে ঘিরে ছিল এবং অন্যান্যকিছু হালকা বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। অর্থনৈতিক কারণে কিছু স্থানে সস্তা পেটা লোহা দিয়ে তৈরি হয়েছে। এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তেলরংও ব্যবহৃত হয়েছে।[10]
বেশ জোরালো গুরুত্ব টাউন হলের আশপাশের অঞ্চলের উপর স্থাপন করা হয়। এরমধ্যে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে টাউন হল থেকে উত্তর দিকে একটি নতুন এসপ্লানেডও তৈরি হয়েছে। এছাড়াও উপকূলের দিকে একটি পার্ক নির্মাণ করে টাউন হলকে দেয়া হয়, যা নদীর তীরের ওপর সৌধের ন্যায় অবস্থিত।[11]
১৮৯০ সালের মাঝেরদিকে উচ্চ নরল্যান্ডের প্রধান লাইন উমিয়াতে পৌছলে একটি অকল্পনীয় সমস্যা দেখা দেয়। ঠিক করা হয়েছিল যে নতুন রেলওয়ে স্টেশন টাউন হলের ঈষৎ উত্তর দিকে নির্মিত হবে; অর্থাৎ টাউন হলের পিছনের দিকে। তবে তাহলে রেলওয়ে উদ্বোধনকালে তাহলে রাজাকে টাউন হলের পিছনের দিক দেখতে হবে, যা সম্ভবপর ছিল না। একারণে ১৮৮৬ সালে রাজা দ্বিতীয় অস্কার-এর আগমনের পূর্বেই উত্তরমুখী অপর একটি প্রবেশদ্বার তৈরি করা হয় যা এখন রাধুস্টোরগেট (টাউন হল স্কোয়ার) রূপে রয়েছে এবং এর প্রধান প্রবেশপথ দুটো।[12]
২রা জুলাই, ১৮৯২ সালে ভিক্টর রিয়েডবার্গ ও জর্জ ভন রোসেন উমিয়া সিটি কাউন্সিলে ভাস্কর্যবিদ অস্কার বার্গের সুপারিশ লেখেন। বার্গ বিচারের দেবী জাস্টিটিয়ার ভাস্কর্য নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। ভাস্কর্যে পশ্চিমদিকের ত্রিকোণ ধারে কিছু আঁকা বিষয়ও থাকবে যা পুরাতন পুলিশ স্টেশনের ওপরে থাকবে এবং বর্তমানে এখানে দেয়াল উঠেছে। ১৮৮৮ সালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সিটি কাউন্সিল ঠিক করে যে এই খরচ তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হবে না। একই কারণে হেলমার অসলান্ডের ভাই এলি অসলান্ড ৫০০ ক্রাউনে ভাস্কর্যটি নির্মাণের প্রস্তাবও ত্যাগ করা হয়। তাই, টাউন হলের পশ্চিম পাশের বাড়ির ত্রিকোণ ধারে অবস্থিত আজকের কুলুঙ্গি কোন মূর্তি ছাড়া খালি দাঁড়িয়ে রয়েছে।[13]
টাউন হল সিটি কাউন্সিল এবং প্রশাসনিক সমাবেশ কক্ষ ধারণ করে। ভবনের পশ্চিম অংশ বিচারিক এবং নির্বাহী সিস্টেম এর জন্য প্রাথমিকভাবে জন্য সংরক্ষিত ছিল; এর সাথে পুলিশ স্টেশ্ন ও প্রধান তলা ও আদালত কক্ষের ওপরের দিকে গ্রেপ্তারমূলক কাজও করা হত। এরপরে ভবনের সম্পূর্ণ পশ্চিম অংশ উমিয়া জেলা আদালত-এর জন্য ব্যবহৃত হয়। কয়েক বছর ধরে এর নিচতলা টেলিগ্রাফ স্টেশন ও ডাকঘর ধারণ করত। এর বেজমেন্ট নিলাম ঘর হিসেবে দীর্ঘকাল ব্যবহৃত হয়।[14]
স্টোরগাটান (প্রধান সড়ক) ও টাউন হলের দক্ষিণ দিকে (নদীর দিকে) এর মাঝে উমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা দ্বিতীয় গুস্তভ আডলফের বাস্ট রয়েছে। বাস্টটি ব্রোঞ্জ দিয়ে গঠিত এবং একটি গ্রানাইট থামালের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। থামালটির গারস ("Gustavus Adolphus Rex Sueciae") এর মনোগ্রাম সমেত একটি বৃহৎ পদকও থাকে। এর মোট উচ্চতা ৩ মিটারের ন্যায়, এবং এই বাস্টটি শিল্পী ওটো স্ট্যান্ডম্যান কর্তৃক অঙ্কিত। ভ্যাস্টারবটেন রেজিমেন্তের ৩০০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২০শে আগস্ট, ১৯২৪ সালে এই ভাস্কর্যটি উন্মোচিত হয়।[15]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.