শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
রেনেসাঁ
ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক কাল, পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
র্যনেসঁস[ক] (ফরাসি: Renaissance, উচ্চারণ [ʁənɛsɑ̃s] ; ইউকে: /rɪˈneɪsəns/, ইউএস: /ˈrɛnəsɑːns/ ( ); ইতালীয়: Rinascimento, উচ্চারণ [rinaʃʃiˈmento] ),[১][২][৩] যা পুনর্জন্ম, পুনর্জাগরণ বা নবজাগরণ নামেও পরিচিত, হল একটি ঐতিহাসিক কাল ও ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন, যা মূলত ১৫শ ও ১৬শ শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত ছিল। এটি মধ্যযুগ থেকে আধুনিকত্বে রূপান্তরের সূচক ছিল এবং ধ্রুপদী সভ্যতার ধারণা ও সাফল্যকে পুনরুজ্জীবিত ও অতিক্রম করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে চিহ্নিত হয়েছিল। ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তনর সাথে যুক্ত হয়ে শিল্প, স্থাপত্য, রাজনীতি, সাহিত্য, আবিষ্কার, বিজ্ঞানসহ বহু ক্ষেত্রে র্যনেসঁস প্রভাব ফেলেছিল। প্রথমে এটি ফ্লোরেন্তীয় গণরাষ্ট্রে কেন্দ্রীভূত ছিল, পরে ইতালির অন্যান্য অংশে এবং অবশেষে সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ইতালীয় রিনাশ্শিতা (‘পুনর্জন্ম’) শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয় জোর্জো ভাজারির শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও স্থপতিদের জীবনী (আনু. ১৫৫০) বইয়ে, আর অনুরূপ ফরাসি শব্দ র্যনেসঁস ইংরেজি ভাষায় ১৮৩০-এর দশকে উক্ত যুগকে বোঝাতে গৃহীত হয়।[৪][খ]

পুনর্জাগরণের বৌদ্ধিক ভিত্তি গড়ে উঠেছিল মানবতাবাদের নিজস্ব রূপ থেকে, যা রোমক উমানিতাসের (hūmānitās) ধারণা এবং প্রাচীন গ্রীক দর্শনের পুনরাবিষ্কারের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল; যেমন প্রোতাগোরাস বলেছিলেন, “মানুষই সকল কিছুর মানদণ্ড।” যদিও ধাতব মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার ১৫শ শতাব্দীর শেষদিকে ধারণার প্রসারকে ত্বরান্বিত করেছিল, ইউরোপজুড়ে পরিবর্তন একরূপ ছিল না: ইতালিতে ১৩শ শতাব্দীর শেষদিকে দান্তে আলিগিয়েরির রচনা ও জোত্তো দি বন্দোনের চিত্রকলার মাধ্যমে এর প্রথম চিহ্ন দেখা যায়।
একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে পুনর্জাগরণ এনেছিল করেছিল সাহিত্যিক লাতিনের নবজাগরণ এবং লোকভাষিক সাহিত্যের বিকাশ। ১৪শ শতাব্দীতে ফ্রাঞ্চেস্কো পেত্রার্কার কৃতিত্বে ধরা হয় ধ্রুপদী উৎস থেকে জ্ঞান আহরণের পুনর্জাগরণকে। চিত্রকলায় রৈখিক পরিপ্রেক্ষ ও প্রাকৃতিক বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলার অন্যান্য কৌশলের বিকাশ এবং শিক্ষা সংস্কার ধীরেধীরে কিন্তু ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ও মিকেলাঞ্জেলোর মতো বহুবিদ্যাবিশারদেরা শিল্পে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন, যাদের থেকে “র্যনেসঁস মানব” শব্দটির উৎপত্তি ঘটে।[৫][৬] রাজনীতিতে পুনর্জাগরণ কূটনীতির রীতি ও প্রথার বিকাশে অবদান রাখে; আর বিজ্ঞানে পর্যবেক্ষণ ও আরোহী যুক্তির ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি করে। এ সময় অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিক বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রেও বিপ্লব ঘটে, পাশাপাশি আধুনিক ব্যাংকিং ও হিসাববিজ্ঞানের প্রবর্তন ঘটে।[৭]
Remove ads
রেনেসাঁর সূত্রপাত
রেনেসাঁ ফরাসি শব্দ। এর অর্থ হলো পুনর্জন্ম বা পুনর্জাগরণ। ইউরোপে মধ্যযুগীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছায়। যার ফলে কুসংস্কার, অজ্ঞতা, বিবেকহীনতার সৃষ্টি হয় এবং স্বাধীন ও মুক্তচিন্তার দ্বার রুদ্ধ হয়। ফলে ব্যক্তি মানসিকতার বিকাশ ব্যাহত হয়। তাদের মধ্যে সুষ্ঠ চিন্তা-চেতনা, দূর্বার অনুসন্ধিৎসা ও অবারিত জ্ঞানের দ্বার না থাকায় ব্যক্তি মনের প্রকৃত বিকাশ অসম্ভব হয়। এ দুর্বিসহঃ অবস্থা থেকে মুক্তি লাভের জন্যই রেনেসাঁর সূত্রপাত হয়। আর এই রেনেসাঁ বলতে বুঝি অন্ধকারাচ্ছন্ন মধ্যযুগ থেকে উদ্ধার প্রাপ্তি।[৮]
Remove ads
ইতালিতে রেনেসাঁ সংঘটিত হওয়ার কারণ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর কনস্টান্টিনোপলকে কেন্দ্র করে নতুন সভ্যতা গড়ে ওঠে এবং তা পশ্চিম ইউরোপে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন নগররাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়। এসমস্ত নগররাষ্ট্র একটি অপেক্ষা অন্যটি অধিকতর উন্নতি লাভ করতে থাকে। এতে যে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয় তাই রেনেসাঁ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ইউরোপের অন্যান্য দেশের চেয়ে ইতালি এতে সর্বাগ্রে অবস্থান নেয়। প্রকৃতপক্ষে রেনেসাঁ সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই ইতালির অর্থনীতি যথেষ্ট শক্ত ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠে। যদিও রেনেসাঁ শুধু ইতালিতেই নয় এর আহবান ইতালির সীমা ছাড়িয়ে আল্পস পর্বতের উত্তরে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, পর্তুগাল, হল্যান্ড, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশেও বিস্তার লাভ করেছিল। কিন্তু প্রথমে ইতালিতেই রেনেসাঁ সংঘটিত হওয়ার পিছনে কতগুলো বিশেষ কারণ অবশ্যই ছিল।
১. ভৌগোলিক কারণ:
ইতালির ভৌগোলিক অবস্থান ইতালিবাসীকে রেনেসাঁর দিকে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিল। ভূমধ্য সাগরের মধ্যস্থলে অবস্থিত হওয়ার কারণে ঐ অঞ্চলের বাণিজ্য ও সংস্কৃতির স্বাভাবিক কেন্দ্রস্থল ছিল ইতালি। ক্রুসেডের সূত্র ধরে ইউরোপ ও আরব দেশের মধ্যে যে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে ওঠেছিল তার সবচেয়ে বেশি সুযোগ গ্রহণ করেছিল ইতালি।
২. কনস্টান্টিনোপলের পতন:
১৪৫৩ খ্রীষ্টাব্দে উসমানীয় সাম্রাজ্য]] যখন কনস্টান্টিনোপল দখল করে তখন সেখানকার পন্ডিতগণ ইতালিতে চলে আসে। তাঁদের আগমন ইতালিতে রেনেসাঁ সৃষ্টির পথকে আরও অধিক সহজ করে দেয়। বোকাচ্ছিও, পেত্রার্ক প্রভৃতি হিউম্যানিষ্টদের চেষ্টায় ইতালিতে যে সাহিত্য ও শিল্পনুরাগ জেগেছিল কনস্টান্টিনোপল হতে পণ্ডিতদের আগমনের ফলে সেই অনুরাগ এক ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লাভ করে।
৩. ইতালীয় শহরের প্রভাব:
ইতালীয় শহরগুলো মধ্যযুগে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে। এই সকল শহরেই মধ্যযুগীয় সভ্যতা সর্বপ্রথম আধুনিক যুগের বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করতে শুরু করে।
৪. রোমান সভ্যতার সাথে যোগাযোগ:
ইতালিতে রেনেসাঁ শুরু হওয়ার অপর একটি কারণ ছিল ইতালির উপদ্বীপের সাথে রোম নগরের ঘনিষ্ঠতা। ইতালি উপর প্রাচীন রোমান সংস্কৃতি ও সভ্যতার গভীর প্রভাব ইতালিবাসীদের স্বভাবতই প্রাচীনকালের রোমান সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবান করে তুলেছিল। ইউরোপের অন্য দেশে প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে পঞ্চদশ শতাব্দীর চিন্তাধারার কোন প্রকার যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু ইতালিতে প্রাচীন গ্রিক রোমান সভ্যতা হতে পরবর্তী কালের ধ্যান-ধারণা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়নি। তাই প্রাচীন সভ্যতার সাথে এই যোগাযোগ রেনেসাঁসের পথ সহজ করে দিয়েছিল অনেকটাই।
৫. ইতালির ধর্মাধিষ্ঠানের প্রভাব:
রোমান সাম্রাজ্যে রাজনৈতিক একতা বিনষ্ট হওয়ার পরও রোমান খ্রীষ্ট ধর্মাধিষ্ঠান রোমের প্রাচীন ঐতিহ্য ও গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখতে যথেষ্ট সাহায্য করেছিল। এটি ভিন্ন রাজনৈতিক দুর্যোগে ধর্মাধিষ্ঠান গুলোর শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা অক্ষুণ্ণ রেখেছিল। লাতিন ভাষার উন্নতি সাধনে রোমের ধর্মাধিষ্ঠানের দান নেহাত কম ছিল না।
৬. হিউম্যানিষ্টদের প্রভাব:
রেনেসাঁসের পথ প্রদর্শকের অনেকেই ছিলেন ইতালিবাসী। সাহিত্য, শিল্পকলা প্রভৃতি প্রত্যেক দিক দিয়েই ইতালি প্রতিভাবান ব্যক্তিদের জন্মস্থানে পরিণত হয়েছিল। পেত্রার্ক, বোকাচ্চিও প্রভৃতি মানবতাবাদী সাহিত্যিকদের সকলেই ছিলেন ইতালির লোক।
৭. বিভিন্ন জাতির মিলন ক্ষেত্র হওয়ার প্রভাব:
রোমান সাম্রাজ্য ধ্বংসের সময় (৪৭৬) হতে ইতালি গথ, লোম্বার্ড, ফ্রাঙ্ক, সারমেন, নর্মান ও জার্মান প্রভৃতি জাতির মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এই সূত্রে রোমান, বাইজান্টাইন, আরব, জার্মান প্রভৃতি বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতার যোগাযোগের ফলে ইতালিতে এক নব চেতনা ও সংস্কৃতির ব্যাপক উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল।
৮. ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষাদান:
গির্জা এবং বিভিন্ন শহরে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষাদান শুরু হওয়ার ফলে মানুষের বাস্তব জীবনেও সুখকর, আধ্যাত্মিক উন্নতি ছাড়াও যে মানুষের জীবনের অপর একটি দিক রয়েছে এবং আত্মার অবনতি না ঘটেও যে মানুষ সহজ সরল সুখকর জীবন যাপন করতে পারে এই ধারণা ইতালির বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্রে সর্বপ্রথম জাগরিত হয়েছিল। এই ধারণাই ইতালিবাসীকে রেনেসাঁর বীজ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করে দিয়ে ছিল।
৯. রোমান সভ্যতার চিহ্ন:
রেনেসাঁ শুরু হওয়ার পর এর গতি এবং ব্যাপ্ততাকে সাহায্য করবার মত প্রাচীন সভ্যতা, সাহিত্য, শিল্প প্রভৃতির চিহ্ন ইতালিতে যথেষ্ট ছিল। ইতালির প্রায় সর্বত্রই ভাস্কর্য, স্থাপত্য, শিল্পকলার চিহ্ন ছিল।
১০. টাইপ মেশিন ও মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার:
পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে ইউরোপে মুদ্রণযন্ত্রের ব্যবহার শুরু হলে সাহিত্য ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় রচনা হয়। গুটেন বার্গের আবিষ্কার দ্বারা ১৪৫৪-৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ল্যাটিন ভাষায় বাইবেল ছাপানো হয়। মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার ছিল রেনেসাঁ বিস্তারে এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা। ছাপাখানা স্থাপিত হবার ফলে প্রচুর পরিমাণে পুস্তক ছাপা হওয়ার ফলে সকলেই পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। বই পুস্তক অধ্যয়নের ফলে অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষের মধ্যে নবচেতনার জন্ম হয়।
১১. রেনেসাঁ যুগের চিত্রশিল্পীর প্রভাব:
এ সময়ে শিল্পকলায় জত্তো, মেসাচ্চিও, দোনাতেল্লো, জ্যান-ভ্যান আইক, ব্রুনেলেস্কি, মিকেল এঞ্জলো, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, রাফয়েল, গিবার্টি প্রমুখ শিল্পীর আবির্ভাব ঘটে। এঁদের মধ্যে জত্তো চিত্রকলায় ত্রিমাত্রিকতার সৃষ্টি করেন, ব্রুনেলেস্কি পরিপ্রেক্ষিত আর জ্যান-ভ্যান আইক তেল রং আবিষ্কারের ফলে চিত্রকলা এগিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। এই সময়ের শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ছিল একাধারে চিত্রশিল্পী, স্থপতি, ভাস্কর, কবি, সাহিত্যিক, সঙ্গীতজ্ঞ ও বৈজ্ঞানিক। তিনি ছিলেন রেনেসাঁসের প্রতীকি স্বরূপ। তার আঁকা ‘মোনালিসা’ ও ‘শেষ ভোজ’ শিল্পীদের কাছে আজও বিষ্ময়ের বস্তু। রাফায়েলের ‘এঞ্জেল’ ও মিকেল এ্যাঞ্জেলোর ‘শেষ বিচার’ চিত্রগুলো শিল্পীদের অমূল্য সম্পদ।
১২. রেনেসাঁ যুগের বিজ্ঞান:
কোপার্নিকাস ছিলেন রেনেসাঁ যুগের বিজ্ঞানী। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরে এই সত্য তিনিই আবিষ্কার করেছিলেন। এই যুগে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম দূরবীক্ষণ যন্ত্র ও দোলক এবং স্যার আইজাক নিউটন তার বিখ্যাত ‘মহাকর্ষ নীতি’ আবিষ্কার করার মাধ্যমে জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যুগান্তর আনয়ন করেন।
Remove ads
রেনেসাঁর কয়েকজন চিত্রশিল্পী:
সারাংশ
প্রসঙ্গ
১. লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি:
রেনেসাঁ যে ক’জন মহান ব্যক্তির সৃষ্টি করেছিল তার মধ্যে নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ ছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। উচ্চ রেনেসাঁ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ তিনজন সৃজনশীল শিল্পীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য ও বিশ্বজনীন। তাঁকে শুধু রেনেসাঁ যুগেই নয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ একজন শিল্পী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি এমন মানসিক শক্তিতে বলিয়ান ছিলেন যে সেসময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ছিলেন এক বিস্ময়। তার বুদ্ধিবৃত্তি এমন উচ্চস্তরের ছিল যে, সে সময়ের দেহ বিজ্ঞান, নৌ-বিদ্যা এবং বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনক ছিলেন তিনি। কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তিনি স্থির থাকতে পারেননি। তার কাজের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মূলে রয়েছে রঙের ব্যবহার, উদ্ভাবনী কৌশল, শরীরস্থান, আলো, উদ্ভিদতত্ত¡ এবং ভ‚-তত্ত¡ সম্পর্কে তার বিস্তারিত জ্ঞান। একাধারে কবি, দার্শনিক, প্রকৌশলী, স্থপতিবিদ, ভাস্কর, সঙ্গীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রশিল্পী, দেহতত্ত¡বিদসহ অন্যান্য পরিচয়েও সুবিদিত এই মানব ইতিহাসের বহু আবিষ্কারের পথিকৃৎ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণোজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।[৯]
২. মাইকেল এঞ্জেলো:
মাইকেল এঞ্জেলো রেনেসাঁ যুগের একজন ইতালীয় ভাস্কর, চিত্রকর, স্থপতি এবং কবি। তার পুরো নাম মিকেল এঞ্জেলো দি লোদোভিকো বুনোরত্তি সিমোনি। তার বৈচিত্রময়তার ব্যাপ্তি এবং বিস্তৃতির কারণে তাঁকে রেনেসাঁ মানব বলে বর্ননা করা হয়। তার জীবিতকালেই তাঁকে শ্রেষ্ঠ জীবিত শিল্পী হিসেবে বিবেচনা করা হত এবং ইতিহাসেও তাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পীদের একজন হিসেবে ধরা হয়। ষোড়শ শতাব্দীর শিল্পীদের মধ্যে তারই বিভিন্ন কাজ ও খসড়া চিত্র বেশি পরিমাণে সংরক্ষিত আছে।
৩. রাফায়েল:
উচ্চ রেনেসাঁর শিল্পীগণের মধ্যে স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী ছিলেন রাফায়েল। তার বেড়ে ওঠার ধরনটি ছিল অনেকটা পঞ্চদশ শতাব্দীর শিল্পীদের মতো। যদিও তিনি লিওনার্দো ও মিকেল এঞ্জেলোর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন তথাপি তিনি নিজে এক স্বকীয় ধারা নির্মাণ করতে সক্ষম হন। উপরন্তু উচ্চ রেনেসাঁর শিল্পকর্মের সাথে তার শিল্পকর্ম যথেষ্ট সাযুজ্যপূর্ণ। যাঁর কাছ থেকেই শিখুন না কেন তার শক্তিশালী রীতি সবসময়ই তার শিল্পকর্মের মাঝে অনুধাবন করা যায়।
পাদটীকা
- এই শব্দটির প্রতিবর্ণায়নে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণে প্রদত্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।
- অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান উদ্ধৃত করেছে W Dyce এবং C H Wilson-এর Letter to Lord Meadowbank (1837): "A style possessing many points of rude resemblance with the more elegant and refined character of the art of the renaissance in Italy." এবং পরের বছর Civil Engineer & Architect's Journal-এ: "Not that we consider the style of the Renaissance to be either pure or good per se." দেখুন Oxford English Dictionary, "Renaissance"
Remove ads
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads