Loading AI tools
এক ধরনের দুই খোলকবিশিষ্ট বা দ্বিপুটক জলজ প্রাণী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঝিনুক এক ধরনের দুই খোলকবিশিষ্ট বা দ্বিপুটক জলজ প্রাণী। এদের বাসস্থান সমুদ্র অথবা অল্প লবণাক্ত জলে হয়ে থাকে। এদের শরীরের খোলক উচ্চস্তরের চুনজাতীয় পদার্থ দিয়ে গঠিত। শরীরের কমপক্ষে একটি অংশ জলে ঢাকা থাকে। পঞ্চাশেরও অধিক প্রজাতির ঝিনুক ভক্ষণযোগ্য। এরা সকলেই বিশেষ ধরনের ছাঁকুনী কাঠামোর সাহায্যে খাদ্য গ্রহণ করে ও এর সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত জল ত্যাগ করে।
ঝিনুক | |
---|---|
ঝিনুকের চিত্র | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | অ্যানিমালিয়া |
পর্ব: | মোলাস্কা |
শ্রেণী: | বিভালভিয়া / পেলেসিপোডা |
বর্গ: | Eulamrllibranchiata |
পরিবার: | Unionidae |
গণ: | Unio / Lamellidens |
Species | |
See text |
মানুষ কর্তৃক কিছু প্রজাতির ঝিনুক বাজারজাতকরণে, রান্না-বান্না কিংবা কাঁচা ভক্ষণ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও, গৃহপালিত হাঁস-মুরগীর খাবারেও ঝিনুকের কদর রয়েছে। মুক্তা উৎপাদনকারী ঝিনুক সাধারণতঃ মানুষ খায় না; যদিও এ জাতীয় ঝিনুক খাবার উপযোগী।
কপাট, মুখ, ওষ্ঠ অংশ, ফুলকা, আবরণ অংশ, হৃদযন্ত্র, পাকস্থলী, মলনালী, মলদ্বার ইত্যাদি অংশ নিয়ে ঝিনুকের শারীরিক কাঠামো গঠিত হয়েছে। শক্ত, মজবুত খোলকের অভ্যন্তরে কোমলাঙ্গ রয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষ ছাঁকুনী দিয়ে ফুলকার সাহায্যে জল থেকে প্লাঙ্কটন, মিউকাসকে মুখের অভ্যন্তরস্থিত গহ্বরে ফাঁদে ফেলে। তারপর এগুলো খাদ্যরূপে সংগৃহীত হয়ে পাকস্থলীতে প্রবেশের মাধ্যমে হজম করে বর্জ্য পদার্থ হিসেবে মলদ্বার দিয়ে নির্গত করে। সাধারণতঃ ১০০ ডিগ্রী তাপমাত্রার ঊর্ধ্বে এরা খাদ্য গ্রহণের লক্ষ্যে সক্রিয় হয়। প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫ লিটার পর্যন্ত জল ছাঁকুনীর জন্য গ্রহণ করে। আবরণ অংশ অতি পাতলা ঝিল্লী পদার্থ দিয়ে গঠিত যা খোলশের অভ্যন্তরে অবস্থিত ও অতি পাতলা রক্তনালীর সাথে সংযুক্ত। তিন-স্তরবিশিষ্ট হৃদযন্ত্র রয়েছে। দু'টো কিডনী বা বৃক্কের সাহায্যে রক্তে বহমান বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাষিত হয়। ওষ্ঠাংশ এবং মাংসপেশীর মধ্যবর্তী বহিঃস্থ খোলসের মাধ্যমে খোল বন্ধ হয়ে থাকে।
কিছু ঝিনুক বিশেষ করে ইউরোপীয়ান ঝিনুক এবং অলিম্পিয়া ঝিনুকের দেহ স্ত্রী ও পুরুষ - উভয় লিঙ্গের অধিকারী। প্রজননতন্ত্রে ডিম্বানু এবং শুক্রাণু - উভয়ই বহমান। এ কারণে খুব সহজেই গর্ভধারণের জন্যে তারা নিজেদের শরীরে ডিম পাড়ে। একবার স্ত্রীজাতীয় ঝিনুক গর্ভধারণ করলে কয়েক মিলিয়ন ডিম পানিতে ছেড়ে দেয়। ছয় ঘণ্টার মধ্যেই লার্ভা আকৃতিতে রূপান্তরিত হয় এবং দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সাঁতার কাটতে সক্ষমতা অর্জন করে। এরপরই তারা নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থানপূর্বক এক বছরেই প্রাপ্তবয়স্কের অধিকারী হয়।[1]
ঝিনুক চিহ্নিতকরণের জন্য নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যাবলীর সাহায্যে শনাক্ত করা যায়[2] -
ঊনবিংশ শতকের শুরুতে সস্তা মূল্যমানের খাবার হিসেবে শ্রমজীবি মানুষের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা ছিল। নিউইয়র্কের পোতাশ্রয়ে ঝিনুকের বাসস্থান বিশ্বের বৃহত্তম ঝিনুক সংগ্রহশালা হিসেবে বিবেচিত।
ঝিনুকে জিঙ্ক, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়ামসহ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি১২-এর ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে খাদ্য শক্তি কম রয়েছে। এক ডজন কাঁচা ঝিনুকে মাত্র ১১০ কিলোক্যালরী শক্তি সঞ্চিত আছে। কাঁচা ভক্ষণ করলেই সবচেয়ে বেশি খাদ্য উপযোগিতা পাওয়া যায়।[3]
প্রাচীনকাল থেকেই ঝিনুক যৌন উদ্দীপনা বৃদ্ধিতে সহায়তাকারীর প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত।[4] একদল আমেরিকা এবং ইতালীয় গবেষকগণ বিশ্লষণ করে দেখিয়েছেন যে, ঝিনুকে যথেষ্ট পরিমাণে এমিনো এসিড রয়েছে যা যৌন হরমোন সৃষ্টিতে সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে।[5] উচ্চমানের জিঙ্কে টেস্টোস্টারোন রয়েছে।[6] এর খোলস ক্যালসিয়াম কার্বোনেট বা চুনজাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরী।
কাঁচা, সিদ্ধ, ভেজে, রোস্ট ইত্যাদি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের পানীয়ে এর ব্যবহার রয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.