পালঘাট জেলা
কেরলের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কেরলের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পালঘাট জেলা হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কেরল রাজ্যের ১৪ টি জেলার একটি জেলা৷ জেলাটির জেলাসদর পালঘাট শহরে অবস্থিত৷ এটি পূর্বতন মালাবার জেলার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের অংশ ছিলো৷ ২০০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে অদ্যাপি এই জেলাটি ছিলো ক্ষেত্রফলের বিচারে কেরালার বৃহত্তম জেলা৷
পালঘাট জেলা পালক্কাড় জেলা কেরালার প্রবেশদ্বার | |
---|---|
কেরলের জেলা | |
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: মালাম্পি বাঁধ, পালঘাট কেল্লা, ভিক্টোরিয়া কলেজ, অট্টপাড়ি , মীনবল্লম জলপ্রপাত, চিতালির বলদ যুদ্ধ | |
কেরালা রাজ্যে পালঘাট জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১০.৭৭৫° উত্তর ৭৬.৬৫১° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কেরালা |
সদর | পালঘাট |
সরকার | |
• সমাহর্তা | ডি.বালমুরলী আইএএস |
• পুলিশ সুপার | দেবেশ কুমার বেহেরা, আইপিএস |
• ডিএফও | নরেন্দ্রনাথ বেলুরী, আইএফএস |
আয়তন | |
• মোট | ৪,৪৭৮ বর্গকিমি (১,৭২৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২৮,০৯,৯৩৪[1] |
• ক্রম | ৬ |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | মালয়ালম, ইংরাজি |
• প্রচলিত | মালয়ালম, তামিল |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন | পালঘাট:KL-09 (কেএল-০৯), আলাতুর:KL-49 (কেএল-৪৯), মান্নারঘাট:KL-50 (কেএল-৫০), ওট্টমপালম:KL-51 (কেএল-৫১), পত্তাম্বি:KL-52 (কেএল-৫২), চিত্তুর:KL-70 (কেএল-৭০) |
সাক্ষরতার হাহ | ৯৪.৪৮%[1] |
ওয়েবসাইট | www |
জেলাটির উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে মালাপ্পুরম জেলা, দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে ত্রিশূর জেলা, উত্তর দিকে রয়েছে তামিলনাড়ু রাজ্যের নীলগিরি জেলা এবং পূর্ব দিকে রয়েছে কোয়েম্বাটুর জেলা৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই জেলাটির নগরায়ণ হার ছিলো ২৪.৪০ শতাংশ৷ জেলাটিকে "কেরালার শস্যাগার" বলে অভিহিত করা হয়৷
পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বরাবর দক্ষিণ দিকে পালঘাটে গিরিপথ থাকার দরুন এটিকে কেরালার প্রবেশদ্বার বলা হয়৷ জেলাটির মোট ক্ষেত্রফল ৪,৪৮০ কিমি২ (১,৭৩০ মা২), যা সমগ্র জেলার ১১.৫ শতাংশ ক্ষেত্রফল অধিকার করে রয়েছে৷ ৪,৪৮০ কিমি২ (১,৭৩০ মা২) মোট ক্ষেত্রফলের মধ্যে মোট বনভূমি ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ক্ষেত্রফল ১,৩৬০ কিমি২ (৫৩০ মা২)৷ জেলাটির অধিকাংশ অঞ্চলই মধ্যভূমি অঞ্চলে অবস্থিত যা গড়ে ৭৫–২৫০ মি অথবা ২৪৬–৮২০ ফু উচ্চতা বিশিষ্ট৷ আবার দক্ষিণ দিকের চিত্তুর তালুকের নেল্লিয়মপতি-পরম্বিকুলাম অঞ্চল এবং উত্তরের অট্টপাড়ি-মালাম্পি অঞ্চল তুলনামুলক উঁচু এবং ভৌগোলিকভাবে উচ্চভূমি অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত, এর গড় উচ্চতা ২৫০ মি অথবা ৮২০ ফু৷
গ্রীষ্মকালীন মাসগুলি বাদে পালঘাট অঞ্চলটিতে সারাবছরই মনোরম ও নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া লক্ষ্য করা যায়৷ জেলাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ বৃষ্টি হয় এমন কি গড় অধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত দক্ষিণ কেরালার থেকে এই জেলার গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অধিক৷ জেলাটিতে রয়েছে একাধিক ছোটো ও মাঝারি আকারে নদী, এগুলির মধ্যে বেশির্ভাগই ভরতপুড়া নদীর উপনদী৷ এই নদীগুলির প্রবাহে বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক বাঁধ৷ এগুলির মধ্যে বৃহত্তম মালাম্পি বাঁধ এবং সর্বাধিক ধারণক্ষমতা যুক্ত পরম্বিকুলাম বাঁধ উল্লেখযোগ্য৷[2]
অতীতে পালঘাট বা স্থানীয় ভাষায় পালক্কাড় নামটি পালক্কাট্টুসেরি নামে পরিচিত ছিল।[3] অনেকে মনে করেন পালঘাট নামটি 'পাল' শব্দটি থেকে এসেছে। পূর্বে এই অঞ্চলটিতে প্রচুর পরিমাণে স্থানীয় ভাষায় 'পাল' নামক একটি গাছ পাওয়া যেত, হয়তো এই পাল গাছের বনভূমিকে নির্দেশ করতে পালক্কাড় বা অপভ্রংশে পালঘাট শব্দটি এসে থাকতে পারে। আবার অনেকে এও মনে করেন ওই শহরে অবস্থিত জৈন মন্দির খোদাই করা পবিত্র পালি লিপির সাথে এই অঞ্চলের নামটি জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। [4] ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে কালিকটের জামোরিন রাজাদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করার জন্য পালঘাটের রাজা মহীশূরের শাসক হায়দার আলীর সাহায্যপ্রার্থী হন। পরবর্তীকালে তার পুত্র টিপু সুলতান পালঘাট জেলার উপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন।
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ৭,৬৩,৯১৭ | — |
১৯১১ | ৮,১৯,৭২৬ | +০.৭১% |
১৯২১ | ৮,৫৩,৯৮৮ | +০.৪১% |
১৯৩১ | ৯,৪১,২৮৬ | +০.৯৮% |
১৯৪১ | ১০,২৫,০৫৮ | +০.৮৬% |
১৯৫১ | ১২,১৪,২০৮ | +১.৭১% |
১৯৬১ | ১৩,৬৯,৫০৮ | +১.২১% |
১৯৭১ | ১৬,৮৫,৩৪৭ | +২.১% |
১৯৮১ | ২০,৪৪,৩৯৯ | +১.৯৫% |
১৯৯১ | ২৩,৮২,২৩৫ | +১.৫৪% |
২০০১ | ২৬,১৭,৪৮২ | +০.৯৫% |
২০১১ | ২৮,০৯,৯৩৪ | +০.৭১% |
উৎস:[5] |
২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে কেরালার পালঘাট জেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ২৮,০৯,৯৪৩ জন,[1] যা লাতিন আমেরিকার জামাইকা রাষ্ট্র [6] বা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। [7] ওই বছর ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার বিচারে পালঘাট জেলাটি ১৩৮তম স্থান অধিকার করেছে।[1] জেলাটির জনঘনত্ব ৬২৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,৬২০ জন/বর্গমাইল)[1] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই জেলাটির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৩৯ শতাংশ।[1] পালঘাট জেলায় প্রতি হাজার পুরুষে ১০৬৭ জন মহিলা বাস করেন।[1] জেলাটির সর্বমোট সাক্ষরতার হার ৮৯.৩১ শতাংশ যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯৩.১০ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৮৫.৭৯ শতাংশ। সাক্ষরতার হারে এই জেলাটি কেরালার অন্যান্য জেলার তুলনায় সর্বনিম্ন। [8] However, Palakkad city has a higher literacy rate of 94.20%[1]
পালঘাট জেলায় রয়েছে বারোটি বিধানসভা কেন্দ্র এবং তিনটি লোকসভা কেন্দ্র। [10][11][12]
ক্রমিক | নির্বাচন কেন্দ্র | সদস্য | দল | জোট |
---|---|---|---|---|
১ | ত্রিতালা | ভি টি বলরাম | জা কং | ইউডিএফ |
ক্রমিক | নির্বাচন কেন্দ্র | সদস্য | দল | জোট |
---|---|---|---|---|
২ | পত্তাম্বি | মুহাম্মদ মহসিন | সিপিআই | এলডিএফ |
৩ | শোরনূর বা ষড়নূর | পি কে শশী | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
৪ | ওট্টপালম | পি উণ্ণি | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
৫ | কোঙ্গড় | কেভি বিজয়দাস | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
৬ | মান্নারঘাট | এন শামসুদ্দীন | আইইউএমএল | ইউডিএফ |
৭ | মালাম্পি | ভি এস অচ্যুতানন্দন | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
৮ | পালঘাট | শাফি পরম্বি | জা কং | ইউডিএফ |
ক্রমিক | নির্বাচন কেন্দ্র | সদস্য | দল | জোট |
---|---|---|---|---|
৯ | তরূর | এ কে বালন | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
১০ | চিত্তুর | কে কৃষ্ণণকুট্টি | জেডি(এস) | এলডিএফ |
১১ | নেন্মারা | কে বাবু | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
১২ | আলাতুর | কে ডি প্রসেনণ | সিপিআই(এম) | এলডিএফ |
পালঘাট শহরে রয়েছে দুটি রেলওয়ে স্টেশন, এগুলি হলো: পালঘাট টাউন এবং পালঘাট জংশন রেলওয়ে স্টেশন৷ দক্ষিণ রেলওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন হলো পালঘাট জংশন৷ দক্ষিণ রেলওয়ের পালঘাট বিভাগের সদরদপ্তরটি এই রেলওয়ে স্টেশনের নিকটেই অবস্থিত৷ ভারতের অন্যান্য স্থান থেকে কেরালার দিকে আসা ট্রেনগুলিকে কেরালার উত্তর এবং দক্ষিণদিকে প্রেরণ করা হয় পালঘাট জেলায় অবস্থিত শোরনূর জংশন রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে৷ এখান থেকে কালিকট, এর্নাকুলাম, তিরুবনন্তপুরম, শোরানূর এবং নীলাম্বুর পর্যন্ত রেল পরিষেবা রয়েছে৷ শোরানূর জংশন রেলওয়ে স্টেশন থেকে মাঙ্গালুরু অবধি এবং কোঙ্কণ রেলওয়ের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় গোয়া এবং মুম্বাই ভ্রমণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷
সড়কপথে পালঘাট দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে মধ্যম প্রকৃতির পরিবহন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত৷ The সালেম থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত ৪৭ নং জাতীয় সড়ক এবং পালঘাট থেকে কালিকটগামী ২১৩ নং জাতীয় সড়ক এই জেলার ওপর দিয়ে দীর্ঘায়িত৷ অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলো ৪৭ ও ১৭ নং জাতীয় সড়ক সংযোগকারী পালঘাট থেকে পোন্নানিগামী সড়ক৷
নিকটবর্তী বিমানবন্দরটি হলো জেলাসদর পালঘাট থেকে ৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল) দূরে কোয়েম্বাটুরে অবস্থিত কোয়েম্বাটুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর৷ পালঘাট শহর থেকে কালিকটে অবস্থিত কালিকট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ১০৩ কিলোমিটার (৬৪ মাইল) এবং কোচিতে অবস্থিত কোচিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ১১১ কিলোমিটার (৬৯ মাইল) সড়ক দূরত্বে অবস্থিত৷ ফলে পালঘাট সহজেই বিমানপথে দেশের একাধিক বৃহত্তর স্থান ও কিছু আন্তর্জাতিক স্থানের সাথে বিমানপথে যুক্ত৷ পালঘাট জেলাতে ভবিষ্যতের জন্য একটি অন্তর্দেশীয় বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে৷ নিকটবর্তী বিমানবন্দরগুলিতে এয়ার ইণ্ডিয়া, স্পাইসজেট, কিংফিশার এয়ার লাইন, গোএয়ার, প্যারামাউণ্ট এয়ারওয়েজ, এয়ার আরবীয়ার মতো বৃহত্তর সংস্থাগুলি পরিষেবা দান করছে৷
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.