Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লগি বৈঠা আন্দোলন বা লগি বৈঠা র্যালি হল ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আহ্বায়িত একটি রাজনৈতিক সমাবেশ, যা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গৃহীত কিছু অভিযুক্ত সিদ্ধান্তের কারণে সঙ্ঘটিত হয়।[1] এটি ২০০৬-০৮ সময়কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের একটি অংশ।
উক্ত সমাবেশের মূল দাবি ছিল ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার কথা ছিল তার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বিচারপতি কে. এম. হাসানকে নিয়োগ প্রদান না করা। তিনি এক সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগের মতে, কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন সে জন্য বিএনপি সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়েছিল। ২৮ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতা ছাড়লেও অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোর অভিযোগ ছিল যে, তিনি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার নির্দেশে চলছিল।
আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলগুলো ২৮ অক্টোবর পল্টন এলাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ ডাক দেয়, সেখানে অনেকে লগি-বৈঠা নিয়ে হাজির হয়। একই দিন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বায়তুল মুকাররম মসজিদের উত্তর গেটে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ ছিলো। ফলে চলমান সংঘর্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে, ঐ দিন থেকে পরবর্তী একমাসের মধ্যে ৪০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়[2] এবং সংবাদমাধ্যমে হত্যা ও আক্রমণের বেশ কিছু স্পর্শকাতর ভিডিওচিত্র প্রকাশিত হয়।[3][4] জামায়াতে ইসলামী দাবি করে যে, এ মোকাবেলায় তাদেরই বেশি সংখ্যক নেতাকর্মী নিহত হয়েছে।[5] টানা তিন-চার দিন বিএনপি-জামায়াত বিরোধীরা গুলিস্তান-পল্টন এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর মধ্যে বিচারপতি কে এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান,[6] যার ফলে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী দলগুলোর দাবি রক্ষিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি মঈন ইউ আহমেদের সহায়তায় ইয়াজউদ্দিন আহমেদ কর্তৃক জরুরি আইন জারি হয় এবং ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়।[7]
২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল ৪৬ জন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিট দাখিলের পর ২২ এপ্রিল ২০০৭ মহানগর হাকিম মীর আলী রেজা মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন। চার্জশিট গ্রহণ করার পরপর আদালত পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। পরদিন ২৩ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মীর আলী রেজা পরোয়ানা স্থগিত করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তাদের দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাক্ষীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ৯ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আবু সাঈদ পল্টন থানায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসককে একটি পত্র দেয়। ১৭ আগস্ট আদালত মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করে।[8]
এর পূর্বে ১০ অক্টোবর বরিশাল শহরের ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লগি বৈঠা দিয়ে আক্রমণের অভিযোগ এনে মামলা করা হয় এবং ২০১১ সালের ৮ই জুন বিভাগীয় আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সকল অভিযুক্তকে খালাস দেওয়া হয়।[9]
পরবর্তীতে বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া, সাদেক হোসেন খোকা, ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামীসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সভা সমাবেশে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্নসময় বক্তব্য প্রদানকালে উক্ত আন্দোলনকে নেতিবাচকরূপে তুলে ধরেন।[10][11][12][13][14]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.