Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শঙ্খনিধি হাউজ বা শঙ্খনিধি মন্দির পুরান ঢাকার টিপু সুলতান রোডে অবস্থিত একটি শতবর্ষী পুরাতন ভবন। এই ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঐতিহ্যবাহী ৩২ টি ভবনের তালিকা এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ৯৩ টি ঐতিহাসিক নান্দনিক ভবনের তালিকার অন্তর্ভুক্ত। [1]
শঙ্খনিধি হাউজ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | ঢাকা জেলা |
অবস্থান | |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থাপত্য | |
সৃষ্টিকারী | লালমোহন সাহা |
বিশ শতকের শুরুর দিকে লালমোহন সাহা বণিক, ভজহরি সাহা বণিক ও গৌর নিতাই সাহা বণিক ব্যাবসায় বেশ উন্নতি লাভ করেন। বিত্তশালী হওয়ার পর তারা বণিক উপাধি বর্জন করে ‘শঙ্খনিধি’ (শঙ্খের বাহক) উপাধি গ্রহণ করেন। ১৯২০-১৯২৬ সালের দিকে তারা ঢাকার কিছু ভূসম্পত্তির মালিক হন এবং সেখানে কিছু ভবন নির্মিত হয়। ঢাকার টিপু সুলতান রোড থেকে ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এই ভবনগুলো গড়ে ওঠে। বণিক ভ্রাতৃত্রয়ের মধ্যে লালমোহন সাহা ১৯২১ সালে শঙ্খনিধি হাউস নির্মাণ করেন।[2][3]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভবনের হিন্দু অধিবাসীগণ ভারতে চলে যায় এবং ভবনটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিকারে আসে। এটি দেবোত্তর সম্পত্তির অন্তর্গত ও এই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রমাণও ভূমি দফতরে সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় ভবনটি অযৌক্তিকভাবে ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করে। ১৯৮০ সালে শঙ্খনিধি হাউস প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৯১ সালে শঙ্খনিধি হাউসের একাংশ ও নাচঘর ভেঙে ফেলা হয়।[2]
শঙ্খনিধি হাউস একটি দ্বিতল ভবন। এতে গোথিক-ইন্ডিয়ান ও ইন্দো-সারাসিন রীতির প্রভাব দেখা যায়। এর সম্মুখভাগে একটি কারুকাজ করা সুদৃশ্য ফটক রয়েছে। কেন্দ্রে রয়েছে ষড়ভুজাকৃতি স্তম্ভ। ভবনের দুইপাশে তিনটি করে প্রবেশ পথ বিদ্যমান। দেয়ালের পলেস্তারায় দৃষ্টিনন্দন লতাপাতা ও ফুলের নকশা নজর কাড়ে। ভবনের উত্তরদিকে রয়েছে একটি মন্দির।
বর্তমানে শঙ্খনিধি হাউস অরক্ষিত অবস্থায় দখলদারদের কবলে পড়ে নিজের জৌলুস হারিয়ে কোনোমতে টিকে আছে। দখলদারদের কেউ কেউ গ্যারেজ ও দোকানপাট বসিয়েছে, কেউ বা সপরিবারে বসবাস করছে।[4] ২০১১ সালের ডিসেম্বরে দখলদাররা উত্তরদিকের মন্দির ভাঙতে শুরু করে এবং দোতলার ছাদ সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে। বর্তমানে (সেপ্টেম্বর ২০১৬) মন্দিরের দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
প্রায় ৫০০ বৎসরের পুরাতন ঢাকার ৩৮ নং, টিপু সুলতান রোড লালমোহন সাহা ষ্ট্রীট ( ঠাকুর বাড়ী ) ওয়ারীর শঙ্খনিধি হাউসের শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ জিঁউ মন্দির বা শঙ্খনিধি মন্দিরটিতে রাধাগোবিন্দ জিউর পূজা করা হত । ১১ অক্টোবর, ২০২১ শঙ্খনিধি মন্দির কমিটি শঙ্খনিধি হাউসে সকালে শারদীয় দূর্গাপূজা গেলে জবরদখলকারী মুসলিমরা বাঁধা দেয় ।[5]ফলে ষষ্ঠীতে মন্দিরে প্রতিমা নিয়ে প্রবেশ সম্ভব হয় না । ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে হিন্দুদের উপরে লাঠিচার্জ করে । এক পর্যায়ে মারাত্মক আহত করা হয় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাজন মিশ্রকে। মহিলাদের ওপরেও আঘাত করা হয় । প্রতিমা নিয়ে সারাদিন রাস্তায় বসে থাকার পরেও প্রতিমা নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না হিন্দুরা। হিন্দুরা তাই রাস্তাতেই প্রতিমা স্থাপন করে পুজো করার প্রস্তুতি নেয় ।[6] [7]এরপর বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক সেখানে আসেন । তিনি হিন্দুদের পুজোয় বাধা ও পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন । হিন্দুদের প্রতিবাদে বাধ্য হয়ে সোমবার রাতে পুলিশ ওয়ারির টিপু সুলতান রোডে বলদা গার্ডেনের পাশে রাস্তার উপরে পুজো করার অনুমতি দেয়।[8] এই ঘটনায় আওয়ামি লিগের স্থানীয় সাংসদ এবং প্রশাসনের প্রতিনিধিরা শঙ্খনিধি মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তির উপর অবৈধ লিজ বাতিল , মন্দির থেকে অবৈধ জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ ও ঐতিহাসিক মন্দিরটি পুনরায় চালুর আশ্বাস দেয়। এতে জাতীয় হিন্দু মহাজোট সন্তোষ প্রকাশ করে ।[9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.