Loading AI tools
যৌন উত্তেজনা বাড়াতে মুখ ব্যবহার করে কৃত ক্রিয়া উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শিশ্ন-মুখমৈথুন বা শিশ্নমুখমেহন (ইংরেজি: Fellatio, ফেলাশিয়ো) ((fellation, ফেলাশন)[1] নামেও পরিচিত, এবং ইংরেজি কথ্য ভাষায় ব্লো-জব, বিজে, গিভিং হেড এবং সাকিং অফ)[2]) হল যৌন সঙ্গীর মাধ্যমে বা নিজে (স্বমুখমৈথুন) লিঙ্গ (পুরুষ) মুখের মধ্যে নিয়ে যৌন উত্তেজনা উপভোগ করা। এতে শিশ্নের উদ্দীপনা সৃষ্টির জন্যে ব্যবহৃত হয় মুখ, ঠোঁট, জিহ্বা এবং/বা কণ্ঠনালী।[2] একজন ব্যক্তি যে কারো উপর শিশ্ন-মুখমৈথুন সঞ্চালিত করে তাকে প্রদায়ী সঙ্গী হিসাবে বলা হয়, এবং অপর ব্যক্তি হল গ্রাহক সঙ্গী। শিশ্ন-মুখমৈথুন তার নিজস্ব অধিকারে বহু মানুষ দ্বারা কৃত একটি যৌনাবেদনময়ী ক্রিয়া এবং একটি অন্তরঙ্গ শারীরিক আচরণ হিসাবে অভিহিত করা হয়। অনেক পুরুষদের ক্ষেত্রে, এটি হল একটি যৌন-জাগরণ যেটা যৌনসঙ্গমের আগে শুরু হতে পারে প্রদায়ী সঙ্গী দ্বারা পূর্বরাগ এবং যৌন সক্রিয়করনের মাধ্যমে।[3] এছাড়াও এই ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হতে পারে, পুরুষ গ্রাহক সঙ্গীর যৌন পরিতৃপ্তি প্রাপ্তির জন্যে, এবং স্থায়ী হতে পারে রাগমোচন ও বীর্যপাত পর্যন্ত।
যে ব্যক্তি শিশ্ন-মুখমৈথুন প্রাপ্ত হবেন তাকে অবশ্যই পুরুষ হতে হবে, যদিও তার যৌন সঙ্গী যেকোনো লিঙ্গের হতে পারে। যখন বলপূর্বক শিশ্নটি কারো মুখগহ্বরের ভেতরে প্রবিষ্ট হয়, তাকে ইরুমেশিও বলা যেতে পারে, যদিও খুব কমই পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়।[4] মৌখিক যৌনসহবাস প্রাপ্তির অংশীদার যখন মহিলা হয় তখন তাকে যোনিলেহন বলা হয়। কিছু আইনি বিচারব্যবস্থায় মুখমৈথুনকে যৌন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে অন্তর্ভেদী যৌনমিলন হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যে ব্যক্তি মুখমেহন সম্পাদন করেন তাকে অনুপ্রবিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে গণ্য করা হয়; কিন্তু অধিকাংশ দেশে নিজেই এই অনুশীলন করলে সেক্ষেত্রে আইনি নিষেধ নেই, যেমন পায়ূমৈথুন বা বিবাহ বহির্ভূত যৌনসহবাসের ক্ষেত্রে। অধিকাংশ মানুষ মুখমেহনকে কোনও যৌন সঙ্গীর কৌমার্য হানিকর হিসাবে বিবেচনা করেননা, এবং এটি সরাসরি গর্ভাবস্থার কারণ নাও হতে পারে, এমনকি যদি বীর্য পাকস্থলিতে গ্রহণও করা হয়।
ইংরেজি বিশেষ্য fellatio আসে fellātus শব্দটি থেকে, যা হয় পান করা বোধক, ল্যাটিন fellāre ক্রিয়ার অতীত কালবোধক কৃদন্ত পদ। fellatio শব্দটিতে us-টি প্রতিস্থাপিত হয়েছে io দ্বারা; শব্দরুপ কাণ্ড শেষ হয়েছে ion-এ এসে, যা ion-এর প্রত্যয় রূপ দেয় (ফরাসী ভাষায় fellation)। io(n)-রূপ সমাপ্তিটি ল্যাটিন বিশেষণ থেকে ইংরেজি বিশেষ্য নির্মাণ করতে ব্যবহৃত হয় এবং এটা নির্দেশ করতে পারে অবস্থা ও কাজটি যেখানে ল্যাটিন ক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়, অথবা হয়েছে।
তদতিরিক্ত ইংরেজি শব্দ একই ল্যাটিন মূলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। একজন ব্যক্তি যে অন্যের উপর মুখমেহন সঞ্চালিত করে তাকে একটি fellator বলা হতে পারে। কারণ ল্যাটিন এর লিঙ্গ ভিত্তিক শব্দরুপ, এই শব্দ কিছু ইংরেজি ভাষাভাষী দ্বারা সীমিত করা হতে পারে একটি পুরুষের বিবরণ দেওয়ার সময়। সমতুল্য মহিলা শব্দরূপটি হল fellatrix।
শিশ্নমুখমৈথুন-এর জন্যে অপরিহার্য দিক হল একজন পুরুষের যৌন সঙ্গীরা তাদের মুখের মধ্যে তার শিশ্ন নিয়ে নেয়, এবং তারপর তাদের মুখ উপর-নিচে সরানোর একটি তাল দ্বারা শিশ্ন-এর যোনিতে অনুপ্রবেশের ধাক্কার গতি অনুকারী আবেশ সৃষ্টি করে, সঙ্গে পিচ্ছিলকারক পদার্থ হিসাবে লালা ব্যবহার করে, এবং সযত্নে দাঁত দিয়ে কামড় দেয় অথবা আঁচড় দিয়ে যৌন আনন্দ প্রদান করে। মুখমেহন প্রাপ্তির মানুষটি তার সঙ্গীর মাথা ধরে উত্তেজনার তাল মন্থর করতে পারেন। পুরুষটির সঙ্গী লেহন, চোষন ও চুম্বন দ্বারা তার লিঙ্গটি নিয়ে মৌখিকভাবে শিশ্নমুখমৈথুন করতে পারেন অথবা অন্যথায় জিহ্বা এবং ঠোঁট ব্যবহার করেও কাজটি করতে পারেন।
কিছু কিছু মানুষের জন্য শিশ্নমুখমেহন করা কঠিন, তাদের সংবেদনশীল স্বাভাবিক কণ্ঠ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার কারণে। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন সংবেদনশীল প্রতিবর্ত ক্রিয়া আছে, কিন্তু কিছু মানুষ প্রবৃত্তি দমন করা শিখে নেয়। গভীর-কণ্ঠপ্রবেশ এমনই একটি যৌন ক্রিয়া যেখানে একটি পুরুষের সঙ্গীরা তাদের মুখের মধ্যে পুরুষটির সম্পূর্ণ খাড়া লিঙ্গ এতটাই গভীরভাবে গ্রহণ করে, যাতে সেটা সম্পূর্ণ তাদের কণ্ঠনালীর মধ্যে প্রবেশ করে।
ন্যান্সি ফ্রাইডে-এর বই, প্রেমের মধ্যে পুরুষ-পুরুষের যৌন কল্পনাগুলি: ক্রোধের উপর প্রেমের টেক্কা -তে তিনি দাবি করেন যে একজন পুরুষের অন্তরঙ্গতার স্তরে বীর্য গলদ্ধকরণের প্রবণতা খুব বেশি।[5] যে মানুষটির শিশ্নমুখমেহন প্রাপ্তি হয় সে সরাসরি যৌন উদ্দীপনা পায়; সেখানে তার সঙ্গী (পুরুষ বা মহিলা) শুধুমাত্র সহযোগীকে পরিতোষ দান করে সন্তুষ্টি আহরণ করে।
শিশ্ন-মুখমৈথুন মাঝে মাঝে চর্চা করা হয় যখন যৌন সংসর্গ একটি যৌন সঙ্গীর শারীরিক অসুবিধা তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি দম্পতি দ্বারা গর্ভাবস্থার সময় যোনি সহবাসের পরিবর্তে তারা ঘনিষ্ঠ যৌন কার্যকলাপ চাইলে এটি করা হতে পারে যাতে গর্ভাবস্থার পরবর্তী পর্যায়ের সময় যোনি গতিবিধি বিষয়ক অসুবিধা এড়ানো যায়।[6] অন্য কারণও থাকতে পারে যেকারণে একটি মহিলা যোনিগত যৌনসঙ্গম চান না, যেমন তার সতীত্ব হারানোর ভয়ে, গর্ভবতী হয়ে যাওয়া বা তিনি ঋতুমতী বা গর্ভবতী হতে পারেন এই আশঙ্কায়, এছাড়াও অন্যান্য সম্ভাব্য কারণে।
এক সূত্র থেকে জানা যায় "খুব কম মহিলাই বীর্যের প্রশংসা করেছেন"।[7] তবে বুকের দুধের মত খাদ্দাভ্যাসের উপর বীর্যের স্বাদ নির্ভর করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মাংস জাতীয় খাবার বেশি খেলে বীর্যের স্বাদ নোনতা হয়ে যায় অপরদিকে ডাল ও ফল জাতীয় খাবার বেশি খেলে বীর্যের স্বাদ মিষ্টি হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যারা ধূমপান অথবা মদ্যপান করে তাদের বীর্যের স্বাদ খুব বাজে হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি হল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা নাহলে নিম্নমানের স্বাস্থ্যবিধি দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে যেমনঃ জমা ঘাম এবং ছোটো অবশিষ্টাংশ (যেমন সুত্রকণা, মূত্র, বীর্য), যা শিশ্নমুখমৈথুন প্রদানকারীর জন্য অপ্রীতিকর বা বিশ্রী হতে পারে। কিছু দম্পতি যখন মুখমেহন করেন তখন পিচ্ছিলকারক পদার্থ বা সুবাসিত কনডম ব্যবহার করেন, যা বিভিন্ন পছন্দের সুবাসে পাওয়া যায়।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, গনোরিয়া, জন্ডিস ইত্যাদি যৌনতা বাহিত সংক্রমণ শিশ্নমুখমৈথুনের মাধ্যমে হতে পারে।[8] এইসব রোগ সংবলিত পুরুষের লিংগে ঘা অথবা ক্ষত থাকলে কিংবা এইসব রোগ সংবলিত নারীর মুখে ঘা, ক্ষত, দাঁত দিয়ে রক্ত পরা রোগ থাকলে যৌনতা বাহিত সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। তাই কনডম পরে ওরাল সেক্স করতে বলা হয়।
ওরাল সেক্স এবং হিউমান প্যাপিলমা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাঝে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। ২০০৫ মাল্মো বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা করে বলেছে, যার HPV আছে তার সাথে ওরাল সেক্স করা হয়,তাহলে ওরাল ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
শুধু শিশ্নমুখমৈথুন গর্ভাবস্থা ঘটাতে পারেনা, কারণ লিঙ্গ থেকে খাওয়া শুক্রাণু স্ত্রীদেহের জরায়ু এবং ফেলপিয়ান নালীতে প্রবেশ করে ডিম উর্বর করার কোন উপায় নেই। পেটের মধ্যে পাকস্থলিতে অ্যাসিড ও ক্ষুদ্রান্ত্র এর পাচক এনজাইম শুক্রাণু ভেঙ্গে ফেলে এবং স্পার্মাটোজোয়া মেরে ফেলে।
স্ত্রীদেরকে শিশ্নচোষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে[9] কারণ এর মাধ্যমে গর্ভকালীন অনেক জটিলতা দূর হয়, বিশেষ করে মায়ের খিচুনি ও গর্ভপাত ব্যর্থ হওয়া কমিয়ে দেয়। নির্দিষ্টভাবে একদল গবেষক প্রতিবেদন দিয়েছেন যে, গর্ভধারণের সময় মাঝেমাঝে খিচুনি হয়, যা কিনা মায়েদের জীবনের হুমকি স্বরূপ, তা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। আর যেসব নারীরা নিয়মিত স্বামীর বীর্য খাওয়ার মধ্য দিয়ে শিশ্নচোষণ শেষ করেন, তাদের জন্য এই খিচুনি হওয়ার সম্ভাবনা বিরল।
১৯৭৬ সালে কিছু ডাক্তার মহিলাদের গর্ভধারণের অষ্টম ও নবম মাসে বীর্য খেতে নিষেধ করেছিলেন, কারণ এতে অপরিণত গর্ভপাত হতে পারে,[10] কিন্তু বর্তমানে এটা নিরাপদ বলে জানা গেছে।
শিশ্নচোষণ নারীদের কুমারীত্ব রক্ষাতে প্রায়শই করা হয়। বিশেষ করে এটা তরুণী মেয়েদের কাছে খুবই প্রিয় কারণ তারা বয়ফ্রেন্ডকে মুখমৈথুন দিয়ে শুধু নিজেদের সতীত্বই রক্ষা করেনা বরং নিজেরা গর্ভবতী না হয়ে সম্পর্কের ঘনীষ্ঠতা বজায় রাখে।
শিশ্নচোষণ অধিকাংশ দেশে বৈধ। ইসলাম ধর্মে শুধুমাত্র নারীদের মাসিকের সময় যৌনমিলনে নিষেধ আছে। কিন্তু কিছু কিছু ইসলামি চিন্তাবিদের মতে এটা মাকরূহ, কারণ শিশ্নমুখমৈথুনের মাধ্যমে স্বামীর লিঙ্গ থেকে স্ত্রীর মুখে নাপাক তরল যায়। অন্যান্য ইসলামি চিন্তাবিদরা জোর দিয়ে বলেছেন মুখমৈথুনকে নিষিদ্ধ ।[11]
প্রাচীন গ্রিসে এবং আধুনিক জাপানে শিশ্নচোষণ "বাঁশি বাজানো" এর সাথে তুলনা করা হয়। প্রাচীন ভারতীয় কামাসূত্রে ওরাল সেক্স সম্পর্কে বিবরণ পাওয়া যায় সেখানে শিশ্নমুখমৈথুন সম্পর্কে বিশধ আলোচনা করা হয়।
বাদুড়দের মধ্যে শিশ্নমুখমৈথুন করা লক্ষ্য করা যায়। তাদের মধ্যে লম্বা সময় সঙ্গম করতে দেখা যায়, যদি স্ত্রী বাদুড়, পুরুষের বাদুড়ের লিঙ্গ চেটে দেয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.