চেক প্রজাতন্ত্র
মধ্য ইউরোপের একটি রাষ্ট্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
চেক প্রজাতন্ত্র,[lower-alpha 1][12](সংক্ষিপ্ত নাম চেকিয়া[lower-alpha 2][13] এবং ঐতিহাসিকভাবে বোহেমিয়া নামে পরিচিত[14]) মধ্য ইউরোপের একটি ভূবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটির দক্ষিণে অস্ট্রিয়া, পশ্চিমে জার্মানি, উত্তর-পূর্বে পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্বে স্লোভাকিয়া অবস্থিত। চেক প্রজাতন্ত্র দেশটিতে রয়েছে পাহাড়ি ভূমি যা প্রায় ৭৮,৮৭১ বর্গকিলোমিটার (৩০,৪৫২ বর্গমাইল) অঞ্চলে বিস্তৃত এবং এর অধিকাংশেই নাতিশীতোষ্ণ মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় জলবায়ু বিদ্যমান। দেশের মধ্যভাগে অবস্থিত বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম প্রাগ। অন্যান্য শহরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বার্নো ও অস্ত্রাভা।
চেক প্রজাতন্ত্র | |
---|---|
নীতিবাক্য: Pravda vítězí ("সত্যের জয়") | |
চেক প্রজাতন্ত্র-এর অবস্থান (গাঢ় সবুজ) – ইউরোপে (সবুজ & গাঢ় ধূসর) | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | প্রাগ ৫০°০৫′ উত্তর ১৪°২৮′ পূর্ব |
সরকারি ভাষা | চেক[1] |
সরকারিভাবে স্বীকৃত ভাষাসমূহ[2][3] | তালিকা |
নৃগোষ্ঠী (২০২১)[4] |
|
ধর্ম (২০২১)[5] |
|
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | চেক |
সরকার | এককেন্দ্রিক সংসদীয় গণতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | মিলোশ জেমান |
• প্রধানমন্ত্রী | পেট্রা ফিয়ালা |
আইন-সভা | সংসদ |
• উচ্চকক্ষ | সিনেট |
• নিম্নকক্ষ | চেম্বার অব ডেপুটি |
গঠন ইতিহাস | |
• বোহেমিয়ায় নৃপতির শাসন | আনু. ৮৭০ |
• বোহেমিয়া রাজ্য | ১১৯৮ |
২৮ অক্টোবর ১৯১৮ | |
• চেক প্রজাতন্ত্র | ১ জানুয়ারি ১৯৯৩ |
আয়তন | |
• মোট | ৭৮,৮৭১ কিমি২ (৩০,৪৫২ মা২) (১১৫তম) |
• পানি (%) | ২.১২ (২০২০ সালের হিসাবে)[6] |
জনসংখ্যা | |
• ২০২১ আনুমানিক | ১০,৭০১,৭৭৭[7] (৮৬তম) |
• ২০২১ আদমশুমারি | ১০,৫২৪,১৬৭[4] |
• ঘনত্ব | ১৩৬/কিমি২ (৩৫২.২/বর্গমাইল) (৬২তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০২২ আনুমানিক |
• মোট | $৫০৩.৬১৩ বিলিয়ন[8] (৩৬তম) |
• মাথাপিছু | $৪৬,৮১১[8] (২৯তম) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০২২ আনুমানিক |
• মোট | $৩০২.০৬১ বিলিয়ন[8] (৩৬তম) |
• মাথাপিছু | $২৮,০৭৭[8] (৩৪তম) |
জিনি (২০১৯) | ২৪.০[9] নিম্ন · ৫ম |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯) | ০.৯০০[10] অতি উচ্চ · ২৭তম |
মুদ্রা | চেক কোরুনা (সিজেডকে) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+১ (সিইটি) |
ইউটিসি+২ (সিইএসটি) | |
তারিখ বিন্যাস | দ.ম.বববব |
গাড়ী চালনার দিক | ডান |
কলিং কোড | +৪২০[খ] |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | সিজেড |
ইন্টারনেট টিএলডি | .সিজেড[গ] |
|
নবম শতাব্দীর শেষের দিকে মোরাভিয়ার অধীনে বোহেমিয়ার ডাচি প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে ১০০২ সালে রোমান সাম্রাজ্যের একটি ইম্পেরিয়াল রাজ্য হিসাবে এটি স্বীকৃত হয়েছিলো এবং ১১৯৮ সালে এটি একটি রাজ্যে পরিণত হয়।[15][16] ১৫২৬ সালে মোহাচের যুদ্ধের পর, বোহেমিয়ার পুরো সাম্রাজ্যটি ধীরে ধীরে হাবসবার্গ রাজতন্ত্রের সাথে একীভূত হয়। এসময় প্রোটেস্ট্যান্ট বোহেমিয়ান বিদ্রোহ ত্রিশ বছরব্যাপী হোয়াইট মাউন্টেনের যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। যুদ্ধের পর হাবসবার্গরা তাদের শাসনকে সুসংহত করে। ১৮০৬ সালে রোমান সাম্রাজ্যের বিলুপ্তির সাথে সাথে এসব ভূমি অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে, চেক ভূমি আরও শিল্পোন্নত হয়ে ওঠে এবং ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির পতনের পরে এর বেশিরভাগ অংশ প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠে।[17] চেকোস্লোভাকিয়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের একমাত্র দেশ ছিল যা আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়কালে সংসদীয় গণতন্ত্র বজায় রেখেছিল।[18] ১৯৩৮ সালের মিউনিখ চুক্তির পর নাৎসি জার্মানি পদ্ধতিগতভাবে চেক ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ১৯৪৫ সালে চেকোস্লোভাকিয়া পুনরুদ্ধার করা হয় এবং ১৯৪৮ সালে একটি অভ্যুত্থানের পরে এটি পূর্ব ব্লকের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সরকার ও অর্থনীতির উদারীকরণের প্রচেষ্টা ১৯৬৮ সালের প্রাগ বসন্তের সময় সোভিয়েত-নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে দমন করা হয়। ১৯৮৯ সালের নভেম্বরের মখমল বিপ্লব দেশে কমিউনিস্ট শাসনের অবসান ঘটায়। ১ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যায় এবং এর সাংবিধানিক রাজ্যগুলি চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
চেক প্রজাতন্ত্র একটি একক সংসদীয় গণতন্ত্র দেশ এবং একটি অগ্রসর, উচ্চ আয়ের সামাজিক বাজার অর্থনীতির উন্নত দেশ। ইউরোপীয় সামাজিক মডেল, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং বেতন-মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। এটি জাতিসংঘের অসমতা-সামঞ্জস্যমূলক মানব উন্নয়ন সূচকে ১২তম এবং বিশ্বব্যাংকের মানব মূলধন সূচকে ২৪তম স্থানে রয়েছে। এটি ৯ম নিরাপদ ও সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ৩১তম। চেক প্রজাতন্ত্র ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি), ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (ওএসসিই) এবং কাউন্সিল অব ইউরোপ (সিওই) এর সদস্য।