শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

অক্ষয় তৃতীয়া

বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

অক্ষয় তৃতীয়া
Remove ads

অক্ষয় তৃতীয়া (সংস্কৃত: अक्षय तृतीय) হল হিন্দু পঞ্জিকার বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। এটি হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি।[][] এই শুভদিনে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নিয়েছিলেন, এ জন্য এই দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালন করা হয়।[] বেদব্যাসগণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। কুবেরের এই দিন লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে, এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।[]

দ্রুত তথ্য অক্ষয় তৃতীয়া, অন্য নাম ...

এই তিথি হতে পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথ নির্মাণ শুরু হয়। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে, এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। কেদার-বদ্রী-গঙ্গোত্রী-যমুনোত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এইদিনেই তার দ্বার উদ্‌ঘাটন হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল আধুনিককালে এই তিথিতে সোনার বা রূপার গয়না কেনা হয়। মনে করা হয়, এই শুভ তিথিতে রত্ন বা জিনিসপত্র কিনলে গৃহে শুভ যোগ হবে। সুখ-শান্তি ও সম্পদ বৃদ্ধি হবে, এই আশাতেই এদিন মানুষ কিছু না কিছু কিনে থাকেন।[][][]

Remove ads

নামকরণ

সংস্কৃত ভাষায়, "অক্ষয়" (अक्षय) শব্দটি "অবিনশ্বর, ক্ষয় নাই যাহার, সমৃদ্ধি, প্রত্যাশা, আনন্দ, সাফল্য", "ত্রিত্য" এবং তৃতীয়া অর্থ "চাঁদের তৃতীয় দিন"।[] হিন্দু পঞ্জিকায় বসন্তের বৈশাখ মাসের "তৃতীয় চন্দ্র দিন" এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।

হিন্দু ঐতিহ্য

সারাংশ
প্রসঙ্গ
দ্রুত তথ্য

এই উৎসবটি ঋষি দূর্বাসা সহ অসংখ্য ঋষিদের দর্শনের সময় দেবতা কৃষ্ণ দ্বারা দ্রৌপদীর কাছে অক্ষয়পাত্রের উপস্থাপনা সম্পর্কিত। বনবাসের সময় পাণ্ডব রাজপুত্ররা খাবারের অভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন এবং তাদের অতিথিদের প্রথাগত আতিথেয়তা প্রসারিত করতে না পারায় তাদের স্ত্রী দ্রৌপদী এতে কষ্ট পেয়েছিলেন। জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব যুধিষ্ঠির সূর্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, যিনি তাকে এই বাটি দিয়েছিলেন। যতক্ষণ না দ্রৌপদী তাদের সমস্ত অতিথিদের পরিবেশন করবেন ততক্ষণ তা পূর্ণ থাকবে। সহজে ক্রুদ্ধ ঋষি দূর্বাসার দর্শনের সময় কৃষ্ণ বাটি থেকে একটি ছোট কণা খেয়েছিলেন যা ঋষির ক্রোধকে বঞ্চিত করেছিল এবং পাণ্ডবদের তার অভিশাপ থেকে রক্ষা করেছিল।[]

অক্ষয় তৃতীয়াকে হিন্দুরা বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্মদিন বলে বিশ্বাস করে। তিনি বৈষ্ণব মন্দিরে পূজনীয়। যারা পরশুরামের সম্মানে এটি পালন করে তারা কখনও কখনও এই উৎসবকে পরশুরাম জয়ন্তী বলে উল্লেখ করে।[] বিকল্পভাবে, কেউ কেউ বিষ্ণুর অষ্টম অবতার কৃষ্ণের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবদ্ধ করে।

শ্রুতি আছে এই যে, ঋষি ব্যাস অক্ষয় তৃতীয়ায় দেবতা গণেশকে হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে পাঠ করা শুরু করেছিলেন। আরেকটি শ্রুতি যে এই দিনে গঙ্গা নদী পৃথিবীতে নেমে এসেছিল। ছোট চার ধাম তীর্থযাত্রার সময় অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ উপলক্ষ্যে যমুনোত্রী মন্দির এবং গঙ্গোত্রী মন্দির খোলা হয়, হিমালয় অঞ্চলের ভারী তুষারপাত-ভারাক্রান্ত শীতের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে। অক্ষয় তৃতীয়ার অভিজিৎ মুহুর্তে মন্দিরগুলি খোলা হয়।[১০]

Thumb
অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ উপলক্ষে যমুনোত্রী মন্দির এবং গঙ্গোত্রী মন্দির খোলা হয়।

নিয়ম আচার

অক্ষয় তৃতীয়ার ফর্দ: এদিন অনেক বাড়িতেই পুজো করা হয়। অনেকেই জানেন না যে এই পুজোতে কী কী লাগবে। তাই এই পুজোর জন্য যা যা উপকরণ দরকার, তার একটি ফর্দ দেওয়া হল।

যেমন- সিদুঁর, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চগর্ব্য, তিল, হরিতকী, ফুল, দুর্ব্বা, তুলসী, বিল্বপত্র, ধূপ, প্রদীপ, ধূনা, মধুপর্ক বাটি ২, আসনাঙ্গুরীয় ২, দই, মধু, চিনি, ঘি, পুজোর জন্য কাপড় ১, শাটী ১, নৈবেদ্য ২,কুচো নৈবেদ্য ১, সভোজ্য জলপূর্ণ ঘট ১, বস্ত্র ১, পাখা ১, দক্ষিণা।

Remove ads

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads