শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
আগস্ট ১৯৭৫ (চলচ্চিত্র)
বাংলাদেশী রাজনৈতিক চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
আগস্ট ১৯৭৫[৩] একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড পরবর্তী ঘটনা নিয়ে নির্মিত বাংলাদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংগঠিত বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের রাত ও পরের দিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালা বদলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে চলচ্চিত্রটির কাহিনি রচিত। শাপলা মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের ব্যানারে এই রাজনৈতিক রোমাঞ্চধর্মী চলচ্চিত্রটি সেলিম খান, আফছার উদ্দিন ভূঁইয়া, কাজী মিজানুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত।[১] শামীম আহমেদ রনি'র চিত্রনাট্যে ছবিটি যৌথ পরিচালনা করেছেন সেলিম খান ও শামীম আহমেদ রনি।[২] শহীদুজ্জামান সেলিম, তৌকির আহমেদ, তাসকিন রহমান, তানভিন সুইটি, দিলারা জামান ও মাসুমা রহমান নাবিলা প্রমুখ উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহে অভিনয় করেছেন। গোপনীয়তার সাথে ২০২০ সালের ১০ হতে ২৯ জুলাই চলচ্চিত্রটির মুখ্য চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়।[৩][৪] চলচ্চিত্রে ইমন সাহা ও সুমন কল্যাণের সুরারোপিত গান ও আবহ সঙ্গীতের ব্যবহার হয়েছে।
চলচ্চিত্রটির নির্মাণ শেষে প্রদর্শনীর ছাড়পত্র পেতে এক বছর সময় লাগে। এটির কাহিনি ঐতিহাসিকভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড চূড়ান্ত ছাড়পত্র অনুমোদনের আগে বেশ কয়েকবার নিরীক্ষা করেছিল।[৫] চলচ্চিত্রটি ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবসে সিনাবাজে এবং ১ সপ্তাহ পরে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহ সমূহে বাণিজ্যিক মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি একটি উৎসব হতে সেরা চরিত্রাভিনেতা বিভাগ হতে একটি পুরস্কার অর্জন করে।
Remove ads
গল্পসূত্র
আগস্ট ১৯৭৫ ছায়াচিত্রের মূল প্রেক্ষাপট ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তনের প্রারম্ভিক ঘটনাবলী। ১৫ আগস্ট শেষ রাত থেকে ১৬ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মরদেহ দাফনের আগ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনা[৩], হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ ও হত্যা পরবর্তী আওয়ামী লীগের চারজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনসুর আলী, সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আ হ ম কামারুজ্জামানদের অবস্থান ও পরিণতি নিয়ে এটির কাহিনি আবর্তিত।
Remove ads
অভিনয়শিল্পী
সারাংশ
প্রসঙ্গ
প্রধান চরিত্র
- তৌকির আহমেদ - তাজউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[৩][৬][৭]
- আনিসুর রহমান মিলন - কনস্টেবল সিরাজুল হক, শেখ মুজিবুর রহমানকে দাফনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ।[২][৩]
- মাসুমা রহমান নাবিলা - বেবী মওদুদ, বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।[৮]
- তানভিন সুইটি - সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন, তাজউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী। শেখ মুজিব হত্যা পরবর্তী আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক।[৯]
- মাজনুন মিজান - মেজর শরিফুল হক ডালিম, শেখ মুজিব হত্যার সাথে জড়িত সেনা সদস্য।[১০]
- জয়ন্ত চট্টপাধ্যায় - মাওলানা আব্দুল হালিম, শেখ মুজিবের জানাজার ইমাম।[১১]
- শাহেদ আলী[১২] - প্রনব চন্দ্র রায়, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার ঘোষণা বাংলাদেশ বেতারে প্রচারের সময় দায়িত্বে থাকা 'শিফট-ইন-চার্জ'।
- দিলারা জামান - হেদায়েতুন্নেসা, বেবী মওদুদের মা। হত্যাকাণ্ডের দিন বেবী মওদুদের সাথে অবস্থান করেছিলেন।[১৩]
- ফজলুর রহমান বাবু - একজন বায়োস্কোপ ওয়ালা, যিনি বায়োস্কোপে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী দেখান।[৩]
- শহীদুজ্জামান সেলিম - খন্দকার মোশতাক আহমেদ, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেয়া রাজনীতিবিদ।[১৪][১৫]
অন্যান্য
- খোরশেদ আলম খসরু
- কল্লোল চৌধুরী
- তুষার খান
- জয়ন্তী
- আহসানুল হক মিনু
- শেলী
- আলতাফ
- রফিক
- শেখ শামীম
- আনোয়ার
- বারেক
- রাশেদ
কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি
- আশরাফুল আশীষ - মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, তৎকালীন ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ।[১৩]
- খান আসিফুর রহমান আগুন - মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কে-ফোর্সের অধিনায়ক।[১][১৬]
- তাসকিন রহমান - কর্নেল কাজী হায়দার, শেখ মুজিবুর রহমানকে সমাধিস্থ করা ১৭ সেনা সদস্যদের দলনেতা।[১৭]
- মুনিরা মিঠু - মৌলভী আব্দুল হাকিমের স্ত্রী
- ফারুক আহমেদ - কাঠমিস্ত্রী
এছাড়া আরমান পারভেজ মুরাদ, প্রাণ রায়, আমান রেজা সহ বিভিন্ন চরিত্রে ৭৫ জন শিল্পী অভিনয় করেছেন।[১][১৮]
Remove ads
প্রযোজনা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
দেড় বছর সময় নিয়েআগস্ট ১৯৭৫-এর চিত্রনাট্য প্রস্তুত করা হয়।[২] চিত্রনাট্যে প্রাথমিক নাম ১৯৭৫ - অ্যান আনটোল্ড স্টোরি ছিল। গল্পের সূচনা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা পরবর্তী ঘটনা হতে, তাই চিত্রনাট্যে শেখ মুজিব পরিবারের কোন চরিত্র রাখা হয়নি।[৪] প্রাথমিকভাবে শহীদুজ্জামান সেলিম, তৌকির আহমেদ ও মাসুমা রহমান নাবিলা'র এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সংশ্লিষ্টতা প্রকাশিত হয়।[১৯] এছাড়াও পূর্ণিমা ও ফজলুর রহমান বাবুকে এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তবে তারা যোগ দেননি।[২০][২১][২২] পরবর্তীতে বাবু একটি গানে কন্ঠ দিয়েছিলেন এবং ঐ গানের চিত্রায়নে বায়োস্কোপওয়ালার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[৩][১১] অন্যান্য শিল্পীদের নাম ট্রেইলার ও টিজারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ১০ জুলাই হতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)-তে এই চলচ্চিত্রের মুখ্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়।[৪][২৩] ১৪ দিনের কার্যসূচিতে ধারণ করা আগস্ট ১৯৭৫ প্রথমে স্বল্পদৈর্ঘ্যে নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও পরবর্তীকালে চলচ্চিত্রটি পূর্ণদৈর্ঘ্যে বর্ধিত হয়েছে।[২][৭] ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্পর্শকাতর বিষয় মর্মে বেশীরভাগ চিত্রগ্রহণ গোপনে করা হয়েছে।[৪] ২৯ জুলাই চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়।[৩] ২০২০ সালের ২ আগস্ট প্রথম পোস্টার প্রকাশের আগে নাম পরিবর্তন করে আগস্ট ১৯৭৫ করা হয়।[১] সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রটি নির্মাণে প্রায় দুই কোটি ছিয়াশি লাখ বাংলাদেশি টাকা ব্যয় হয়।[২]
সঙ্গীত
সারাংশ
প্রসঙ্গ
আগস্ট ১৯৭৫ ইতিহাস নির্ভর চলচ্চিত্র। কাহিনির সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুইটি গান আছে। ইমন সাহা একটি গানের সুর ও সঙ্গীত প্রযোজনা করেছেন। তার প্রযোজিত 'প্রহসন' শিরোনামের গানে কন্ঠ দিয়েছেন বাপ্পা মজুমদার।[১৫][২৪] এছাড়াও সুদীপ কুমার দীপ রচিত 'মুজিব একজনা' শিরোনামের আরেকটি গানের সুর করেছেন সুমন কল্যাণ। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে রচিত এই গানে ফজলুর রহমান বাবু কন্ঠ দিয়েছেন।[১][২২][২৫]
মুজিব একজনা গানটি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম, ছেলেবেলা, রাজনীতিতে যোগদান থেকে শুরু করে ১৯৫২'র ভাষা অন্দোলন, ১৯৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬'র ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯'র গণঅভুত্থান, ৭০'র নির্বাচন, মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সব ঘটনায় তাঁর সংস্লিষ্টতা নিয়ে লিখিত। পূঁথি ও কীর্ত্তন পাঠের আদলে সুর আরোপিত। শাপলা মিডিয়া, ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট গানটির ভিডিও তাদের আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে অবমুক্ত করে।[২৬]
Remove ads
প্রচারণা ও মুক্তি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
শাপলা মিডিয়া তাদের অন্যান্য প্রযোজনার মত এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। চিত্রগ্রহণের সময়ও কলাকুশলী, প্রযোজক ও নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা চলচ্চিত্রটির বিষয় গোপন রেখেছিলেন। চিত্রগ্রহণ শুরুর ১০ দিন পর ছায়াছবিটির মুখ্য অভিনেত্রী নাবিলা তার সামাজিক মাধ্যমে এই ছবির বিষয়ে প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। তারপর গণমাধ্যমে প্রচার পায়।[৪] ২০২০ সালের ২ আগস্ট পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে শাপলা মিডিয়া তাদের নিজস্ব উদ্যোগে চলচ্চিত্রটির প্রচারণা শুরু করে।[১] ৬ আগস্ট আরো একটি পোস্টার ও টিজার প্রকাশ[১৮][২৭] ও সেন্সরের জন্য আবেদন করে।[২৮] আগস্ট ১৯৭৫ নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রদর্শনের অনুমতি অর্জনে একাধিক নিরীক্ষা ও তথ্যগত সঠিকতা যাচাইয়ের কারণে এক বছরের বেশি সময় লেগেছিল। ২০২০ সালের জুলাই হতে প্রদর্শনের ছাড়পত্র অর্জনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। চলচ্চিত্রটির বিষয়বস্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংবেদনশীল হওয়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃক বেশ কয়েকবার নিরীক্ষিত হয়; বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট চলচ্চিত্রটির ঐতিহাসিক সঠিকতা নিরীক্ষা করে। তথ্যগত ভুল সংশোধনের পর[৫] ছায়াছবিটি ২০২১ সালের ১০ আগস্ট চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের চূড়ান্ত ছাড়পত্র পায়।[২৯][৩০]
আগস্ট ১৯৭৫ চলচ্চিত্রটি ২০২০ সালে আগস্টে মুক্তির জন্য পরিকল্পিত ছিল।[২২] একবছর পিছিয়ে ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবসে চলচ্চিত্রটি শাপলা মিডিয়ার চাহিদা ভিডিও সেবা সিনেবাজে [৩১][৩২] এবং ২২ আগস্ট প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[৩৩] বিনোদন মাধ্যমের বাইরে, চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সকল বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে প্রদর্শনের জন্য নির্দেশনা পেয়েছিল।[৩৪]
Remove ads
প্রশংসা
দ্বিতীয় সিনেমেকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এই চলচ্চিত্রে মাওলানা আব্দুল হালিম এবং টুঙ্গিপাড়া মিয়া ভাই ছবিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাবার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য জয়ন্ত জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় 'সেরা অভিনেতা (চরিত্র)' শাখায় পুরস্কার জয় করেন।[৩৫]
Remove ads
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads